Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

চুম্বক দিয়ে রুটি-রোজগার: বুড়িগঙ্গার ব্যতিক্রমী এক পেশা ‘চুম্বক মারা’

গাঙ্গুলি প্রসাদের বয়স এখন ষাটের কিছু বেশি। ছোটবেলা থেকেই পানিতে দাপিয়ে বেড়াতেন বলে কেউ কেউ গাঙের গাঙ্গুলি বলে ডাকতেন। সাঁতারে তার গতির মতো ক্ষিপ্রতা ছিলনা কারোরই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে সময় কাটাতেন। পানির নিচেও নি:শ্বাস আটকে বসে থাকতে পারতেন ২-৩ মিনিটেরও বেশি সময়। শৈশব থেকেই যেন নদীর তলদেশের সঙ্গে সখ্য গড়েছিলেন তিনি। তাই জীবিকা হিসেবেও বেছে নেন নদীর তলদেশকেই।
চুম্বক দিয়ে রুটি-রোজগার: বুড়িগঙ্গার ব্যতিক্রমী এক পেশা ‘চুম্বক মারা’

ফিচার

আসমা সুলতানা প্রভা & সালেহ শফিক
31 December, 2024, 02:45 pm
Last modified: 03 January, 2025, 01:16 pm

Related News

  • অন্য জেলা থেকে ঢাকায় কাঁচা চামড়া পরিবহন ঈদের দিনসহ ১০ দিন নিষিদ্ধ
  • বৈরী আবহাওয়া: ঢাকামুখী চার ফ্লাইট শাহ আমানতে জরুরি অবতরণ
  • ছিনতাইকারী সন্দেহে রাজধানীর দারুসসালামে ২ যুবককে পিটিয়ে হত্যা
  • রাজধানীতে আজ একাধিক কর্মসূচি, এড়িয়ে চলবেন যেসব সড়ক 
  • ঢাকাসহ ৯ জেলায় বজ্রঝড়ের সতর্কবার্তা: বিএমডি

চুম্বক দিয়ে রুটি-রোজগার: বুড়িগঙ্গার ব্যতিক্রমী এক পেশা ‘চুম্বক মারা’

গাঙ্গুলি প্রসাদের বয়স এখন ষাটের কিছু বেশি। ছোটবেলা থেকেই পানিতে দাপিয়ে বেড়াতেন বলে কেউ কেউ গাঙের গাঙ্গুলি বলে ডাকতেন। সাঁতারে তার গতির মতো ক্ষিপ্রতা ছিলনা কারোরই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে সময় কাটাতেন। পানির নিচেও নি:শ্বাস আটকে বসে থাকতে পারতেন ২-৩ মিনিটেরও বেশি সময়। শৈশব থেকেই যেন নদীর তলদেশের সঙ্গে সখ্য গড়েছিলেন তিনি। তাই জীবিকা হিসেবেও বেছে নেন নদীর তলদেশকেই।
আসমা সুলতানা প্রভা & সালেহ শফিক
31 December, 2024, 02:45 pm
Last modified: 03 January, 2025, 01:16 pm

এই বুড়িগঙ্গা 'চুম্বক মারা' লোকদের নাকি খালি হাতে ফেরায়নি কখনো। ছবি: আসমা সুলতানা প্রভা

ঢাকার প্রাণ বুড়িগঙ্গা নদী। এই নদীকে ঘিরে কতশত মানুষের জীবিকা। নদীর এপার-ওপারে বাস করা মানুষের একটি বড় অংশ বেঁচে আছে কেবল এটিকে অবলম্বন করে। নদীকেন্দ্রিক হরেক রকম পেশার মানুষের দেখা মেলে এখানেই। 

এই যেমন– নদীর তলদেশে ছড়িয়ে-ছিটিয়ে থাকা লোহা-লক্কড়, পিতল, তামা আর কখনও কখনও স্বর্ণ কিংবা রূপা খুঁজে বের করার কাজ করেন কেরানীগঞ্জ, সদরঘাট, নয়াবাজারের কিছু মানুষ। এসব জিনিস তোলার কাজে তারা ব্যবহার করেন চুম্বক। ছোটখাটো নয়, কয়েক কেজি ওজনের এসব চুম্বক নদীতে ফেলে তুলে আনেন ভারী ভারী লোহা। স্থানীয়রা তাদের ডাকেন 'চুম্বকমারার লোক' বলে। 

নদীতে চুম্বক ফেলে পাওয়া লোহার টুকরো কিংবা ভারী ধাতু বিক্রি করে জীবন চালান তারা। গাঙ্গুলি প্রসাদ, মো: হাবিব, নূর আলম— এদের সবাই বুড়িগঙ্গার এই প্রাচীন পেশার সাক্ষী। যদিও সময়ের সাথে নদীতে ধাতব বস্তু কমে আসায় এবং আধুনিক প্রযুক্তির আগমনে, এই পেশার মানুষগুলোর জীবনে নেমে এসেছে পরিবর্তনের বৈরি হাওয়া। 

পানির টানে ভেসে আসে লোহা-লক্কড়

এই কাজে এককালে মাহের ছিলেন গাঙ্গুলি। সবার আগে চুম্বক মারার কাজ তিনিই শুরু করেছিলেন। তার দেখাদেখিতে আগ্রহ পান অন্যরা। নৌকা চালানোর কাজ বাদ দিয়ে এই পেশায় যুক্ত হন অনেকেই। 

কয়েক কেজি ওজনের চুম্বক দড়িতে বেঁধে ফেলে দিতেন নদীর তলদেশে। পানির টানে যত লোহা-লক্কড় ভেসে আসতো, তা শক্ত হয়ে লেগে যেতো চুম্বকের গায়ে। খুঁজে পাওয়া সেসব মালামাল ভাঙ্গারিদের কাছে বিক্রি হত কেজি দরে। লোহা হলে ৪৫-৪৭ টাকা কেজি এবং তামা হলে ৯০০-১১০০ টাকা কেজি।

এভাবে বেশ মোটা অঙ্কের টাকা আয় হতো তাদের। আবার অতিরিক্ত পরিশ্রমও নেই। কিছু কিছু লোহা দড়ি টেনে তোলা যেতো, আর কিছু ভারী লোহা আনতে হতো ডুব দিয়ে। অবশ্য সেক্ষেত্রে একটু কষ্ট পোহাতে হতো তাদের। তবে গাঙ্গুলির কাছে তা ছিল একেবারে তুচ্ছ ব্যাপার। এমনটাই শোনা গেলো তার মুখে। 

গাঙ্গুলি প্রসাদের বয়স এখন ষাটের কিছু বেশি। ছোটবেলা থেকেই পানিতে দাপিয়ে বেড়াতেন বলে কেউ কেউ গাঙের গাঙ্গুলি বলে ডাকতেন। সাঁতারে তার গতির মতো ক্ষিপ্রতা ছিলনা কারোরই। ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে সময় কাটাতেন। পানির নিচেও নি:শ্বাস আটকে বসে থাকতে পারতেন ২-৩ মিনিটেরও বেশি সময়। শৈশব থেকেই যেন নদীর তলদেশের সঙ্গে সখ্য গড়েছিলেন তিনি। তাই জীবিকা হিসেবে সে তলদেশকেই বেছে নেন। 

১৯৭১ সাল। পাকিস্তানি  হানাদার বাহিনীর কবল থেকে বাঁচতে নিজ দেশ ময়মনসিংহ ছেড়ে বাবা মায়ের সাথে ঢাকায় পাড়ি জমান গাঙ্গুলি।  বয়স তখন পাঁচ বা সাত হবে। এসে পুরান ঢাকার বুড়িগঙ্গার তীরে মাথা গোঁজার ঠাঁই করে নেন তার বাবা। সে থেকে নদীর পাড়েই বসবাস তার। 

দেখতে দেখতে কখন পঞ্চাশ বছরেরও বেশি সময় অতিক্রম হলো সেটি যেন অবাক করে তাকেও।  থাকেন কেরানীগঞ্জ। এলাকার ছোট বড় সকলের পরিচিত মুখ হলেন গাঙ্গুলি। সদা হাস্যোজ্জ্বল মুখ এবং লাল টকটকে চোখের দিকে তাকিয়ে বোঝা যায় নদীর সাথে তার লেনাদেনা বহু পুরোনো। নদী কখনো তাকে পর করেনি। তাই তিনিও আপন করে নিয়েছেন জলে ভাসা জীবনকে। 

নদীর সাথে অদ্ভুত এক সখ্য গাঙ্গুলির। ছবি: আসমা সুলতানা প্রভা

১৩ কেজি ওজনের চুম্বক!

মাঝি হিসেবে কাজ শুরু করেছিলেন একটু বড় হওয়ার পরপরই। পরে নদীতে চুম্বক ফেলে লোহা তোলার কাজ শুরু করেন। সে সময়ে ১৩ কেজি ওজনের একটি চুম্বক কিনেছিলেন গাঙ্গুলি। দাম হিসেবে গুনতে হয়েছিল ১৫-১৬ হাজার টাকা!

এত দাম দিয়ে কিনেছিলেন মানে লাভও তেমন হতো নিশ্চয়? এই জিজ্ঞাসায় গাঙ্গুলির সরল স্বীকারোক্তি, "এমন কোনো দিন যায় নাই, যেদিন দুই-আড়াই হাজার ট্যাহা পাই নাই। মাঝে মাঝে তার চাইতেও বেশি পাইতাম৷ সে ৩০ বছর আগের দুই হাজার মানে মেলা ট্যাহা। সব কিইন্নাও শেষ করোন যাইতো না।"

চুম্বকের টানে নদীর তলদেশ থেকে কুড়িয়ে পাওয়া লোহা বিক্রি করেই চলত তার সংসার। স্ত্রী ও দুই সন্তান নিয়ে তার পরিবার। অভাব বলতে কিছু ছিল না আগে। বেশ ভালোভাবেই দিন কেটে যেতো তাদের। তবে এখনের ব্যাপার ভিন্ন। ৬,০০০ টাকা বাসা ভাড়া, খাবার খরচ ১০,০০০ সহ মাসে প্রায় ৩০ হাজারের মত দরকার হয় তার। এখন এত ইনকামও নেই। ফলে একাধিক কাজে নেমেছেন তিনি— কখনো নৌকা চালান, কখনো ডুবুরির কাজ করেন, আবার কখনো চুম্বক মারার কাজও চালিয়ে যান। 

শীতের সময়ে বসে থাকেন ৩ মাস

আগে অক্সিজেন ছাড়াই ডুব দিতেন নদীতে। এখন অবশ্য তা আর পারেন না। বয়সের ছাপ তার চোখেমুখে স্পষ্ট। ফলে গায়ের জোর যে কমেছে, তা আর বলার অপেক্ষা রাখে না। এখন এক মিনিটের বেশি পানির নিচে থাকতে পারেন না। নি:শ্বাসে টান লাগে তার। আগে শীতের সময়ে চুম্বক ফেলতেন। এখন অবশ্য গরমকালেই করেন তা। 

শীতের সময়ে বসে থাকেন ৩ মাস। ওই সময় কোনো কাজই করেননা গাঙ্গুলি। ছেলের আয়ে চলে কোনোরকম। চুম্বক মারার কাজ করেন গরমকালে। সাথে ডুবুরির কাজও। তার অভিজ্ঞতা বলে, গরমকালে নদীতে পানির টান বেশি থাকায় ধাতব জিনিসও বেশি পাওয়া যায়। তবে শীতের সময়েও কাজের ডাক আসলে করে দেন। 

"শীতকালে চুম্বক মারি না। ঠান্ডায় শরীর জইম্মা যায়। নি:শ্বাস বন্ধ হইয়া যায়। শরীরে জ্বর জ্বর থাহে। তয় গরমকালে ডুব দিতে সুবিধা হয়, অনেকবার ডুব মারলেও ঠান্ডা লাগে না," বললেন গাঙ্গুলি।

এর মধ্যে তার ১৩ কেজি ওজনের চুম্বকটি চুরি হয়ে যায়। পেশাটিও প্রায় ছেড়ে দিয়েছিলেন। তবে এখন অক্সিজেন মাস্ক পরে নামেন। করেন ডুবুরির কাজ। এখন আর নি:শ্বাস নিতে কষ্ট হয় না। অক্সিজেন নিয়ে নদীর নিচ থেকে তুলে আনেন মানুষের হারিয়ে যাওয়া মূল্যবান জিনিসপত্র।

কখনও মালামাল, কখনও লাশ

কারো কিছু হারিয়ে গেলে, বা জাহাজের কোনো মেশিন বা মটর পড়ে গেলে, বা কারো স্বর্ণ-রূপা খুঁজে দেওয়ার জন্য ডাক পড়ে গাঙ্গুলিদের। শুধু তাই নয়। নদীর পানিতে পড়ে কোনো মানুষ হারিয়ে গেলে বা লাশ খুঁজে দেওয়ার কাজও করেন তারা। এইতো কিছু মাস আগেও সিলেট থেকে ডাক পড়ে গাঙ্গুলির। লাশ তুলে দেওয়ার কাজ করেন সেবার। 

মন খারাপের গল্পকে আড়াল করতে এবার তিনি চমকে যাবার মত আরেক গল্প শোনালেন। জানালেন, "একদিন চুম্বক মারি মাইঝ নদীতে। ওই দিন জাহাজের বড় একটা পাংখা পাই। এক টনেরও বেশি ওজন আছিলো অইডায়। বেইচা দিয়া সেইবার চল্লিশ হাজারের কাছাকাছি ট্যাহা পাইসিলাম। আমার অহনো মনে আছে অইদিনের কথা।"

চুম্বক ফেলার পাশাপাশি নৌকাও চালান নূর আলম।ছবি: আসমা সুলতানা প্রভা

একদিনে আয় ৩৫-৪০ হাজার টাকা

একদিনে ৩৫-৪০ হাজার পাওয়ার ঘটনা কেবল গাঙ্গুলির সাথেই নয়, নূর আলমের জীবনেও এসেছিল এমন মুহূর্ত। একদিনের কাজেই ৩৫ হাজার টাকা ইনকাম করার গল্প তার জীবনের স্মরণীয় একটি অধ্যায়। 

তিনি জানান, "একবার সদরঘাটে চুম্বক মারি। তুলতে গিয়া দেহি অনেক ভারী জিনিস। পরে দেহি অইটা একটা জাহাজের মোটর। অই মোটরের কয়েল আছিলো ২৬ কেজি ওজনের তামা। শুধু তামা বেইচা ২৭ হাজার ট্যাহা পাই। আর সব মিলায়ে ৩৫ হাজার।"

এই প্রসঙ্গে গাঙ্গুলি বলেন, "উপরওয়ালা যেদিন দেয়, হাত ভইরা দেয়। মাঝেমইধ্যে ১০ দিনের ট্যাহা একদিনে পাই।"

গাঙ্গুলিকে দেখে চুম্বক মারার কাজ শিখেছিলেন যারা, তাদের মধ্যে একজন নূর আলম। নূর আলমের বাড়ি শরীয়তপুর। সেখান থেকে ঢাকায় আসেন দূর সম্পর্কের এক ভাই, জাম শরীফের মাধ্যমে। 

আগে গ্রামেই বাইতেন নৌকা। কখনো কখনো মাছ ধরার কাজও করতেন। এক সময় মাছের ব্যবসায়ও নেমে পড়েন। কিন্তু ভাগ্য সে যাত্রায় সহায় ছিল না তার। লোকসানে পড়ে জীবিকার তাগিতে চলে আসেন ঢাকায়। সেই থেকেই ঢাকায় বসবাস ৫৩ বছর বয়সী নূর আলমের। দুই ছেলে, এক মেয়ে ও স্ত্রীকে নিয়ে থাকেন কেরানীগঞ্জের চৌধুরীপাড়ায়।

ঢাকায় এসে প্রথমে নৌকা চালানো শুরু করেন নূর আলম। তারপর অবসরে চুম্বক মারার কাজও শিখে নেন। এরপর টাকা জমিয়ে সাড়ে চার কেজি ওজনের একটা চুম্বক কেনেন। ৪টা চুম্বক এক করে সেটি বানিয়েছিলেন তিনি। ২০২০ সালে সেটি কিনতে তার চুকাতে হয়েছিল ২৫-২৬ হাজার টাকা। 

এই চুম্বক থেকে নূর আলমের দৈনিক আয় হতো হাজার টাকা উপরে। আবার কোনো কোনোদিন এত বেশিই হতো, পুরো মাস চালিয়ে নিতে পারতেন অনায়াসে। 

আগে প্রতিদিন ১৫-২০ কেজি লোহা, তালা, চাবি, তাবিজ ইত্যাদি পাওয়া যেত নদীতে। কিন্তু এখন নদীর তলদেশ প্রায় খালি। এখন এত বেশি লোহা লক্কড় পাওয়া যায় না। তবে তাই বলে খালি হাতে ফেরার ইতিহাসও নাকি নেই। 

নূর আলম বলেন, "চুম্বক এমন জিনিস, আপনি যদি মারেন, কিছু না কিছু পাইবেনই। কিছু না কিছু আপনারে দিবেই দিবে।"

যত ভাংচুর তত লাভ

বুড়িগঙ্গার তলদেশে এখনও কিছু মূল্যবান ধাতু পাওয়া যায়। ব্রিজ নির্মাণের আগে অনেক ভারী ধাতব নদীতে পড়ত। তখন পেশাটির চাহিদা ছিল বেশি। যেমনটা গাঙ্গুলি জানালেন, "আগে মনে করেন ব্রিজটা হওয়ার আগে এখানে মারামারি, পারাপার অনেক বেশি ছিল। জিনিসপত্র ভাংচুর হইতো বা পইড়া যাইতো। তখন বেশি জিনিস চুম্বকে আইতো। এহন তো আর ওইসব নাই। ভাংচুরও হয় না। যত বেশি ভাংচুর তত বেশি লাভ।"

পোস্তগোলা থেকে নয়াবাজার— নদীর কোন জায়গায় মালামাল বেশি পান— সেটি জানতে চাইলে গাঙ্গুলি বলেন, "বেশি মাল কই পাইবেন এইডা আসলে ভাগ্যের উপর নির্ভর করে। দেখা যায়, এক জায়গায় লংকর পাইলাম, অন্য জায়গায় একটা পাংখা। কোন জায়গায় কী পাওন যাইবো এইডা কওন যায় না।"

তবে নূর আলমের ভাষ্যে সদরঘাটেই বেশি মালামাল পাওয়া যায়। কারণ নদীর এই ঘাটে জাহাজ বা লঞ্চের চলাচল থাকে বেশি। ফলে মাঝেমধ্যে জিনিসপত্র ভেঙে পড়ে যায়। সেসবই পান তারা।

এখন এই অক্সিজেন মেশিনই ভরসা গাঙ্গুলির। ছবি: আসমা সুলতানা প্রভা

৩০-৩৫ জন এখনও আছেন

পুরো বুড়িগঙ্গার কোন জায়গায় কতো পানি, সেটির হিসাবও বেশ সুক্ষ্মভাবে জানা আছে তাদের।

নূর আলম জানালেন, "এই নদীতে মনে করেন, এক এক জায়গায় আছে ৩৫ হাত, ১২ হাত, ১৫ হাত পানি। ৭০-৮০ হাত পানিও আছে ওয়াইজ ঘাটে। সবচেয়ে বেশি পানি মিটফোর্ড ঘাটে। আবার চরের মাথা, কলামোড়া ঘাটেও অনেক পানি আছে।"

এই পানিতে চুম্বক ফেলতে তারা ১০০ হাত লম্বা দড়ির ব্যবহার করেন। নূর আলমেরও আছে এমন একটা। সেটি দিয়েই চুম্বক ফেলেন নদীতে। বিকেল হলে তা টেনে তোলেন। অবশ্য গত ৪-৫ মাসে চুম্বক মারার কাজ করেননি তিনি। এর মাঝে ট্রলার কিনে সেটি চালান। আপাতত এটাই তার রুটি-রুজি।

আধুনিক অক্সিজেন মেশিন এবং ডুবুরি পদ্ধতির কারণে চুম্বকমানবদের গুরুত্ব কমে গেছে কিছুটা। তবে এখনো ৩০-৩৫ জন এই পেশার সাথে যুক্ত আছেন। এদের মধ্যে একজন মহিলাও রয়েছেন। আগে সংখ্যায় আরও বেশি ছিলেন। রোজগার কমেছে বলে সময়ের সাথে সাথে অনেকেই বিদায় জানিয়েছেন এই পেশাকে। 

মো. হাবিবও তাই জানালেন। বয়স ৬৫ এর মত হবে। তিনিও থাকেন কেরানীগঞ্জে। চুম্বক ফেলার কাজ তিনি ৩০ বছর ধরে করেছেন। অবশ্য এখন আর নিয়মিত করেন না। স্থায়ী পেশা হিসেবে বেছে নিয়েছেন নৌকা চালানোর কাজ।

বুড়িগঙ্গা খালি হাতে ফেরায় না

হাবিব বলেন, "এখন নদীতে আগের মত কাম নাই। মাল পাওয়া যায় না বলে অনেকেই কাজ ছাইড়া দিসে। আগে তো অক্সিজেন ছাড়াই কাজ করতাম আমরা। এখন অক্সিজেনের মেশিন আইসা আমাদের দাম কইমা গেসে। অই মেশিন দিয়া তো সবাই কাম করতে পারে। আপনেও পারবেন।"

গাঙ্গুলিরাই প্রথম এই পেশার গোড়াপত্তন করেন। আবার বংশপরম্পরায় তাদের সন্তানদের কেউই এই পেশার সাথে জড়িত নন। আয় কমে যাওয়ার কারণেই হয়তো তারা আগ্রহ দেখাননি সেভাবে। 

তবুও এই পেশার প্রতি ভালোবাসা ফুরোয়নি নুর আলম বা গাঙ্গুলিদের। নূর আলম বলেন, "চুম্বক ফেলার কারণে নদীর লগে আমাদের একটা সম্পর্ক হইয়া গেসে। মায়া ছাড়তে পারি না।"

"এই বুড়িগঙ্গা কাউরে খালি হাতে ফেরায় নাই। এইহানে যত মানুষ আছে এই নদী সবাইরে কিছু না কিছু দিসে। আমাদেরও দিসে। তয় এইডা সত্য, আগের মতো লাভ আর নাই," বললেন গাঙ্গুলি।
 

Related Topics

টপ নিউজ

চুম্বক / চুম্বক পেশা / বুড়িগঙ্গা / ঢাকা / পেশা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • চীনের কাছ থেকে এবার স্টেলথ ফাইটার পাচ্ছে পাকিস্তান
  • পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যার ফলে যেভাবে সৃষ্টি হয়েছিল ভূমধ্যসাগর
  • নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগামী ঈদুল ফিতরের পর এক মাস সময় যথেষ্ট: বদিউল আলম মজুমদার
  • অনিরাময়যোগ্য রোগী যারা, কেমন কাটবে তাদের ঈদ
  • কোভিড-১৯: আবারও জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক পরার পরামর্শ
  • কসাই নিয়ে কাড়াকাড়ি!

Related News

  • অন্য জেলা থেকে ঢাকায় কাঁচা চামড়া পরিবহন ঈদের দিনসহ ১০ দিন নিষিদ্ধ
  • বৈরী আবহাওয়া: ঢাকামুখী চার ফ্লাইট শাহ আমানতে জরুরি অবতরণ
  • ছিনতাইকারী সন্দেহে রাজধানীর দারুসসালামে ২ যুবককে পিটিয়ে হত্যা
  • রাজধানীতে আজ একাধিক কর্মসূচি, এড়িয়ে চলবেন যেসব সড়ক 
  • ঢাকাসহ ৯ জেলায় বজ্রঝড়ের সতর্কবার্তা: বিএমডি

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

চীনের কাছ থেকে এবার স্টেলথ ফাইটার পাচ্ছে পাকিস্তান

2
আন্তর্জাতিক

পৃথিবীর ইতিহাসের সবচেয়ে বড় বন্যার ফলে যেভাবে সৃষ্টি হয়েছিল ভূমধ্যসাগর

3
বাংলাদেশ

নির্বাচন আয়োজনের জন্য আগামী ঈদুল ফিতরের পর এক মাস সময় যথেষ্ট: বদিউল আলম মজুমদার

4
ফিচার

অনিরাময়যোগ্য রোগী যারা, কেমন কাটবে তাদের ঈদ

5
বাংলাদেশ

কোভিড-১৯: আবারও জনসমাগমপূর্ণ এলাকায় মাস্ক পরার পরামর্শ

6
ফিচার

কসাই নিয়ে কাড়াকাড়ি!

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab