Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

ম্যুরালে প্রান্তিক মানুষের গল্প, যেভাবে রেঙে উঠল মোহাম্মদপুর!

মূলত প্রান্তিক মানুষগুলোর কন্ঠস্বর তুলে ধরে তাদের গল্প মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টিই প্রতিফলিত হয় এ শিল্পীদের করা ম্যুরালচিত্র প্রকল্পে।
ম্যুরালে প্রান্তিক মানুষের গল্প, যেভাবে রেঙে উঠল মোহাম্মদপুর!

ফিচার

আসমা সুলতানা প্রভা
13 April, 2024, 10:00 am
Last modified: 13 April, 2024, 10:00 am

Related News

  • বেক্সিমকোর পর নাসা গ্রুপকেও সহায়তার সিদ্ধান্ত সরকারের, কারখানা সচল রাখতে উদ্যোগ
  • ‘সুলতানের চর দখল ছবি হারিয়ে গেল! বলছিলেন এগুলি নিয়ে যান—সাহস করিনি সেদিন!’ 
  • ‘বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবিসমগ্র’: প্রজন্ম পেরোনো শিল্পযাত্রায় অনন্য যারা
  • পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে ফাঁকি, রাশিয়ার বোমা কারখানা যেভাবে কিনেছে সিমেন্সের প্রযুক্তি
  • হারিয়ে যাওয়ার আগে জয়নুল, সুলতানদের ছবি পুনরুদ্ধারের লড়াই

ম্যুরালে প্রান্তিক মানুষের গল্প, যেভাবে রেঙে উঠল মোহাম্মদপুর!

মূলত প্রান্তিক মানুষগুলোর কন্ঠস্বর তুলে ধরে তাদের গল্প মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টিই প্রতিফলিত হয় এ শিল্পীদের করা ম্যুরালচিত্র প্রকল্পে।
আসমা সুলতানা প্রভা
13 April, 2024, 10:00 am
Last modified: 13 April, 2024, 10:00 am

এইতো কিছু বছর আগেও মানুষের মুখাবয়ব দেয়ালে শোভা পাবে এমন বিষয় ছিল কল্পনার মতোই। কেউ সে চেষ্টা করতে গেলেই সম্মুখীন হতেন বিভিন্ন বাধার। কেউ কেউ সাহস করলেও কাজ এগোয়নি সেভাবে। আশপাশের মানুষের 'জাত গেল, জাত গেল' রবের ভয়ে সাধারণ কেউ আর এই কাজ করার 'দুঃসাহস' করেননি কখনো।

তবে সবাই কি আর দমে যায়? কেউ কেউ দস্যিও হয়। নিয়ম ভেঙে নতুন প্রথা সৃষ্টি করতে পিছপা হন না তাই। দিবারা মাহবুব এবং টাইয়ারা ফারহানা তারেক সে দস্যিদেরই দলে। তাই হাজার বছর ধরে চলমান থাকা দেয়ালচিত্র শিল্পে যেন প্রাণ দিলেন নতুন করে। তাদের দলগত প্রচেষ্টায় গত ২৩ মার্চ মোহাম্মদপুরের একটি ভবনের পুরো দেয়ালজুড়ে করা হয় ম্যুরাল আর্ট বা দেয়ালচিত্র। ৩–৪ দিন সময় নিয়ে করা সে চিত্রে স্থান করে নেয় জেনেভা ক্যাম্পের সেসব নারী, যাদের জীবন সংগ্রাম নিয়ে অবগত নন নব্য সমাজের অনেকেই।

ক্যাম্পের এই 'প্রতিদিনের নায়িকা'দের জীবন-সংগ্রাম উদযাপন করার লক্ষ্যে অনুপ্রেরণামূলক ম্যুরালটি আঁকেন ফেয়ারলেস কালেক্টিভ-এর বাংলাদেশি একদল নারী শিল্পী। টাইয়ারার সাথে এই কাজে যুক্ত ছিলেন পাপিয়া সারোয়ার দিঠি, সাইদ মাইশা, প্রতিতি ইকবাল এবং মেহজাবীন হাসান মৌরিসহ ১০–১১ জন। এই প্রতিভাবান শিল্পীদলের পরিশ্রম এবং দক্ষতার কল্যাণে একটি অসাধারণ ম্যুরালচিত্র স্থান করে নিয়েছে মোহাম্মদপুর এলাকায়।

কাজটি করা হয় ফেয়ারলেস কালেকটিভ-এর আর্থিক সহায়তায়। এটি একটি নারীকেন্দ্রিক সংগঠন যা প্রান্তিক সব গোষ্ঠীদের নিয়ে কাজ করে থাকে। ইতোমধ্যে এটি বিশ্বের ১৬টি দেশে প্রান্তিক সম্প্রদায় নিয়ে কাজ করেছে। তার মধ্যে উল্লেখযোগ্য হলো ভারতের মুসলিম এবং দলিত সম্প্রদায়,  ব্রাজিল ও উত্তর আমেরিকার আদিবাসী সম্প্রদায়, পাকিস্তানের গণ সহিংসতায় ভুক্তভোগী সম্প্রদায়, সিরিয়ান ও ফিলিস্তিনি উদ্বাস্তু, তিউনিসিয়া এবং ইন্দোনেশিয়ার বিচিত্র সম্প্রদায়কে কেন্দ্র করে আঁকা  একাধিক ম্যুরালচিত্র।

মোহাম্মদপুরের এই দেয়ালচিত্রে জেনেভা ক্যাম্পের নারীদের জীবন তুলে ধরা হয়েছে। ছবি: সৌজন্যেপ্রাপ্ত

দক্ষিণ এশিয়ার বিভিন্ন দেশে এই সংগঠনের রয়েছে একাধিক প্রতিনিধি। টাইয়ারা ফারহানা সেই প্রতিনিধিদের একজন। এই সেক্টরে কাজ করছেন ১০ বছর ধরে। তার পড়াশোনা ইউনিভার্সিটি অব লিবারেল আর্টস-এর মিডিয়া স্টাডিজ এবং জার্নালিজম নিয়ে। কিন্ত বেছে নিয়েছেন একেবারে ভিন্ন একটি পেশা। সবসময় এমন একটি কমিউনিটি নিয়ে কাজ করতে চেয়েছেন যাদের খুব কাছ থেকে দেখেছেন। যাদের নিয়ে তিনি জানেন। অজানা কাউকে নিয়ে কাজ করতে নারাজ এই শিল্পী।

শুরুর দিকে সংগঠনের পক্ষ থেকে ফ্রান্সের একটি সম্প্রদায়কে নিয়ে কাজ করেন তিনি। শর্ত মোতাবেক এই সংগঠনের ফেলোশিপের দুইটা ধাপ থাকে। তাদের নির্বাচন করা কোনো নির্দিষ্ট জায়গায় ছবি আঁকার কাজ করা এবং নিজ দেশের যেকোনো এলাকায় একটি প্রান্তিক সম্প্রদায়কে নিয়ে করা। সে কাজেরই অংশ হিসেবে পরবর্তীসময়ে মোহাম্মদপুরে ম্যুরালচিত্রটি আঁকা হয়।

'আমার বড় হওয়া এই এলাকায়। ছোটবেলা থেকেই তাদের দেখে অভ্যস্ত। ফলে ওদের নিয়ে অনেক জানি। ভাবলাম যাদের নিয়ে অনেক জানাশোনা আছে তাদেরকে ছবি এঁকে উদযাপন করাটাই হবে উচিত কাজ। কাউন্সিলর মাইনোরিটিস নামের একটি এনজিও এই কাজে সহযোগিতা করে অনেক। ঢাকার মাইনোরিটিদের নিয়ে কাজ করে তারা। এটি আঁকার জন্য আমি অনেকগুলো ভবনের দেয়াল চেয়েছিলাম। কেউই রাজি হয়নি সেসময়। তাছাড়া এটি দুই বছর এভাবেই রাখতে হবে জানার পরে আরও অনাগ্রহ দেখায়। পরে আমার বাবা-মায়ের অনুমতিতে নিজেদের বিল্ডিংয়েই করি কাজটা,' মোহাম্মদপুরে করা নিজের ম্যুরালচিত্র নিয়ে বলছিলেন টাইয়ারা।

এই কাজ করতে কাউন্সিলর মাইনোরিটিস-এর সহায়তায় ২০ জন মহিলার সাথে কথা হয় তাদের। সেখানে ক্যাম্পের এই নারীরা তাদের জীবনের গল্প বলেন। সেসব গল্পকে উপজীব্য করে ছবি আঁকার কাজে নেমে পড়েন টাইয়ারার দলবল। তবে এই কাজে সম্পৃক্ত শিল্পীদের কারোরই ছিলনা 'আর্ট' বিষয়ে একাডেমিক ডিগ্রি। প্রায় সকলেই শখের বশে শুরু করেছিলেন এই যাত্রা।

জেনেভা ক্যাম্পের মানুষদের একাংশ। ছবি: সৌজন্যেপ্রাপ্ত

সুইডেনের প্রিন্সেসও দেখে যান বাংলাদেশের ম্যুরাল

এই যেমন দিবারা মাহবুব। কখনো আঁকাআঁকি করবেন এমন ভাবনা-চিন্তাই ছিল না তার। পড়াশোনা নৃবিজ্ঞান নিয়ে। ৮–৯ বছর আগে নিজের একাকী সময়কে উপভোগ্য করে তুলতে ছবি আঁকার কাজ শুরু করেছিলেন তিনি। এভাবে একটা সময় সম্পূর্ণ নিজের চেষ্টায় আঁকাআঁকি করতে শিখে যান। তবে প্রথম প্রথম এলোমেলো হলেও কয়েক বছর পরে নিজেকে দক্ষ করে তোলেন এই কাজে। যুক্ত হন ফেয়ারলেস কালেক্টিভের সাথে। বাংলাদেশে তার করা প্রথম দেয়ালচিত্র বসুন্ধরা এলাকায়। তার সেই ম্যুরাল চিত্রে ফুটে ওঠে 'চাইল্ড ম্যারেজ' বা বাল্যবিবাহের দৃশ্যপট।

তিনি বলেন, 'আমি সবসময় অন্যরকম কিছু করতে চাইতাম এবং তা মানুষের জন্যই করতে চাইতাম। এইজন্য কাজ করেছি কক্সবাজার এবং জর্ডানের রিফিউজির সাথে। ভিজ্যুয়াল সবকিছুই আমার খুব পছন্দের। তাই কোনো গল্প মানুষের সামনে দৃশ্যমান করে তোলার কাজটিও বেশ উপভোগ করি। সেজন্য এই চিত্রশিল্পের কাজ বেছে নেওয়া।'

এইতো সেদিন খুলনায় দিবারার করা দীর্ঘ একটি ম্যুরালচিত্র নজর কাড়ে সবার। ইউএনডিপির অধীনে করেন সেটি। 'এল' আকৃতির একটি দেয়ালে একই গল্পের দুটো দিক তুলে ধরেন সেখানে। দেয়ালের একপাশে ফুটে ওঠে সিডর বা অন্যান্য ঘুর্ণিঝড়ের কবলে পড়ে মানুষের অসহায়ত্বের চিত্র এবং অন্যপাশে দুর্যোগ কাটিয়ে আবার তাদের শান্তির জীবনে ফিরে যাওয়ার গল্প। তার আঁকা এই ম্যুরাল দেখে সুইডেনের প্রিন্সেস ভিক্টোরিয়াও মুগ্ধ না হয়ে পারেননি। দিবারা প্রশংসার সাগরে ভেসেছেন এই কাজের মাধ্যমে। শ্রীলঙ্কার কলম্বোতে তার আঁকা একটি ম্যুরালও সাড়া তৈরি করে বেশ। সেখানকার বস্তিতে বসবাসকৃত একটি প্রান্তিক গোষ্ঠীকে নিয়ে কাজটি  করেছিলেন তিনি।

প্রান্তিক মানুষই মুখ্য

মূলত প্রান্তিক মানুষগুলোর কন্ঠস্বর তুলে ধরে তাদের গল্প মানুষের কাছে পৌঁছে দেওয়ার বিষয়টিই প্রতিফলিত হয় এ শিল্পীদের করা ম্যুরালচিত্র প্রকল্পে। মোহাম্মদপুরের ক্ষেত্রেও সেটির বাস্তবায়ন হয়। টাইয়ারা বলেন, 'এ দেশে আমরা সাধারণত বিজ্ঞাপন এবং রাজনীতিবিদদের বড় আকারের চিত্র দেখতে পাই, কিন্তু কখনো প্রান্তিক বা সংখ্যালঘুদের নিয়ে সেভাবে কাজ করতে দেখিনি। এসব মানুষ নিয়েও সবাই জানুক এবং একটি অন্তর্ভুক্তিমুলক বিশ্ব তৈরি হোক সে চেষ্টাই করছি আমরা।'

টাইয়ারার নেতৃত্বে করা মোহাম্মদপুরের ম্যুরালচিত্র। ছবি: সৌজন্যেপ্রাপ্ত

বিহারী সম্প্রদায়ের দৈনন্দিন জীবনে যেসব অদেখা যোদ্ধারা আছেন, তাদেরকে মানুষের কাছে তুলে ধরাই ছিল তাদের প্রধান উদ্দেশ্য। এ মানুষগুলো আমাদের সমাজের প্রতিটি কাজের ক্ষেত্রে কত গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করেন, হয়তো অনেকেই জানেন না। বা সেভাবে কেউ জানতেও চান না। অথচ এরা না থাকলে হয়তো অনেক কাজই ঠিকঠাকভাবে সম্পন্ন হতো না। কেউ কেউ তো তাদের কাজকর্মকে বড় কিছু বলেও মনে করেন না। সে মানুষগুলোই যে এক একজন 'যোদ্ধা' সেটাই তুলে ধরা হয়েছে চিত্রে।

দিবারা মাহবুব যোগ করেন, 'এটি শুধুমাত্র কোনো শিল্প নয়। বরং এইসব চিত্রের পরতে পরতে ফুটে ওঠে মানুষের ভেতরকার গল্প। এমন সব সম্প্রদায়কে তুলে ধরি এই লক্ষ্যে যে, মানুষ তাদের নিয়ে আরেকটু ভাবুক, আরেকটু চিন্তা করুক। তাদের প্রতি দয়াশীল হোক।'

প্রাচীন কাল থেকে চলে আসা শিল্প

ম্যুরাল নতুন কোনো শিল্প নয়। বহুকাল ধরে ছবি এঁকে মাটির দেয়াল সজ্জিত করার প্রথা চলে আসছে গ্রাম-বাংলায়। এখনো অনেক গ্রামের ঘরবাড়ির দেয়ালে দেয়ালে দেখতে পাওয়া যায় রঙিন সব দেয়ালচিত্রের। তবে তা সংখ্যায় কম। একটা সময় পর্যন্ত মাটির ঘর সাজানোর অন্যতম অনুষঙ্গ ছিল এই শিল্প। সেসময় এই কাজে কারোরই প্রাতিষ্ঠানিক শিক্ষা ছিল না। আঁকাআঁকিতে পটু হলেই তার ডাক পড়তো পাড়ার দশ বাড়ি থেকে। এমনকি আলাদা করে বেশ সম্মানও করা হতো শিল্পীদের। তাদের নিপুণ হাতে দেয়ালে বড় করে ফুটে উঠতো পশু-পাখি, পাছপালা, মাঠ-ঘাটের ছবি।

একে অন্যের দেখাদেখিতে ঘরের সামনের দেয়ালে ছবি আকিঁয়ে নিতেন অনেকেই। আবার হিন্দু সম্প্রদায়ের ঘরে দেখা যেত পটচিত্রের। পুরো দেয়ালজুড়ে গ্রামীণ মানুষের দৈনন্দিন জীবনের গল্পগুলোও ফুটে উঠত জীবন্তভাবে। তবে মুসলমানদের বেলায় তা ছিল ভিন্ন। ঘরের দেয়ালে মানুষের মুখাবয়ব আঁকাকে পাপ বলেই অবহিত করা হতো। ধর্মীয় দিক ভেবেই এমনটা করতেন সেসব মানুষরা। তাই ফুল-পাখি, লতা-পাতা এসব চিত্রই ঠাঁই করে নিত তাদের বাড়ির দেয়ালে।

খুলনায় করা দিবারা মাহবুবের ম্যুরালচিত্র। ছবি: সৌজন্যেপ্রাপ্ত

ম্যুরালচিত্রের ইতিহাস এক বিশাল সময়ের পরিসরে ব্যাপ্ত। কারণ এ শিল্প অতি প্রাচীন। সেই তখন থেকে গুহার দেয়ালে চিত্র এঁকে মানুষ তার আদিমতম অভিব্যক্তি প্রকাশ করত। ভাষা সৃষ্টিরও আগে মানুষ নিজের চিন্তা ভাবনা, ভেতরের কথা প্রকাশ করে গেছে ছবির মাধ্যমে। আজ থেকে প্রায় ৪০ হাজার বছর আগে প্রাচীন গুহার দেয়ালে-দেয়ালে স্থান করে নিয়েছে বিভিন্ন রকম দেয়ালচিত্র। বলা হয়, প্রাচীন মানুষরা এই কাজ করতেন নিজেদের যোগাযোগের সুবিধার বিষয় মাথায় রেখে। হাজার বছরেরও পুরাতন এই দেয়ালচিত্র অঙ্কন করার ধারা দীর্ঘদিন বহাল থেকেছে গ্রাম-গঞ্জে। এখন আর গ্রাম-বাংলায় দেখা মেলে না মাটির ঘরের। আধুনিকতার ছাপ সেখানেও স্পষ্ট। তবুও দেয়ালচিত্র আকার প্রথা বিলুপ্ত হয়নি একেবারে।

বিশ্বব্যাপী জনপ্রিয় একটি শিল্প মাধ্যম হলো দেয়ালচিত্র। বাংলাদেশেও ষাটের দশক থেকে জনপ্রিয় হতে শুরু করে এটি। তবে তা পুরোপুরি পাবলিক আর্টের সংজ্ঞা পূরণ করতে পারেনি কখনো। কারণ যেসব দেয়ালচিত্র আঁকা হতো তার সিংহভাগই ছিল রাজনৈতিক। ঢাকা শহরের রাস্তায় চলার পথে এমন অনেক মুরাল চিত্রের দেখা মেলে যেখানে শিল্পীরা ফুটিয়ে তুলেছে মুক্তিযুদ্ধের গল্প এবং বাংলার অপরূপ প্রাকৃতিক রুপ। কোনো একটি নির্দিষ্ট  সম্প্রদায় বা প্রান্তিক মানুষদের চালচিত্র সেভাবে ফুটে উঠেনি কখনো। দিবারা বলেন, 'আমার জানামতে কোনো একটি কমিউনিটির দৈনন্দিন জীবন তুলে ধরে আমরাই মনে হয় বাংলাদেশে প্রথম কাজ করেছি।'

ম্যুরাল আর্ট আসলে কী?

তবে টাইয়ারা বা দিবারার মত উদ্যমী শিল্পীরা আছেন বলেই হয়তো নতুন করে প্রাণের দেখা পেল এটি। চারপাশে ভালোভাবে ডালপালাও মেলতে শুরু করেছে ইতোমধ্যে। ঢাকা এবং ঢাকার বাইরে নানা জায়গায় ম্যুরাল বা দেয়ালচিত্র এখন নান্দনিকতার আরেক নাম। কিন্তু এখনো ম্যুরালচিত্র আসলে কী তা নিয়ে খুব মানুষের মধ্যেই আছে জানাশোনা।

মূলত ম্যুরাল আর্ট হলো একটি চিত্রকলা, যা দেয়াল, ছাদ বা অন্যান্য স্থায়ী কোনো পৃষ্ঠতলে আঁকা হয়। সহজ বাংলায় বলা যায় দেয়ালচিত্র।

দুবাইয়ে দিবারার আঁকা ম্যুরাল। ছবি: সৌজন্যেপ্রাপ্ত

সাধারণত কে বা কারা দেখবেন তাদের ভাবনার সাথে মিল রেখেই আঁকা হয় চিত্র। পুরো ম্যুরাল আর্ট কে এমন ভাবে আঁকা হয়, দেখে মনে হবে প্রত্যেকটি চিত্র একে অপরের সাথে মেলবন্ধন সৃষ্টি করে। ধাপে ধাপে গল্প বলার মতই কিছুটা। তবে এই ম্যুরাল আর্ট হতে হবে স্থায়ী। অর্থাৎ কোনো কিছু এঁকে সাথে সাথে মুছে ফেলা এই শিল্পের বৈশিষ্ট্য নয়। অস্থায়ী দেয়ালে কিছু আঁঁকা হলে তাকে ম্যুরাল বলা যাবে না।

কেমন পৃথিবী চাই, সেটা নিয়েই ভাবা উচিত

ফেয়ারলেস কালেক্টিভের হয়ে টাইয়ারা জীবনের প্রথম ম্যুরালটি করেন ফ্রান্সের মার্সেই শহরে। তিনি আর তার দলের অন্যান্য সহযোগীর উদ্যোগে ৪০০ মিটার দৈঘ্যের বিশাল এক ম্যুরাল আঁকা হয় সেখানে। অভিবাসীদের নিয়েই করা হয় সেটি। এরপর ধাপে ধাপে দেশের অভ্যন্তরেও অনেক ম্যুরালচিত্রের কাজ করেন তিনি।

মোহাম্মদপুর ম্যুরালের অভিজ্ঞতা নিয়ে তিনি বলেন, "যখন জেনেভা ক্যাম্পের সাতজন নারীর চেহারা দেয়ালে আঁকি, তখন তাদের মধ্যে যে উচ্ছ্বাস দেখেছিলাম তা অকৃত্রিম। এই যে মানুষের মধ্যে খুশির জোগান দেওয়া, 'আন্ডার সেলিব্রেটেড' এ মানুষদের 'সেলিব্রেট' করে দেয়াল রাঙিয়ে তোলা, এখানেই মূলত শিল্পের সার্থকতা।"

তিনি বিশ্বাস করেন কেমন পৃথিবী আমরা চাই সেটা নিয়েই ভাবা উচিত প্রতিটি মানুষের। আর্ট এমন একটি বিষয় যা সবাইকে এক করে, যা সবার জন্য। এখানে কোনো ভেদ থাকার প্রয়োজন নেই। পুরো দেশের প্রতিটি প্রান্তিক মানুষের জীবনাচরণ  সেই আর্ট দিয়ে উদযাপন করাই আপাতত মূল লক্ষ্য টাইয়ারাদের।

Related Topics

টপ নিউজ

ম্যুরাল / দেয়ালচিত্র / দেওয়ালচিত্র / শিল্প / চিত্রকর্ম

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ইলাস্ট্রেশন: টিবিএস
    বিশ্বের আর কোথাও কি মেট্রোরেলের পিয়ার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়েছে?—যা উত্তর দিল এআই
  • আল–আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ 
    আল–আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ 
  • ছবি: ইন্সটাগ্রাম থেকে নেয়া
    ‘এটা বাংলাদেশ নয়’: পর্তুগালে বাংলাদেশকে কটাক্ষ করে বিলবোর্ডে প্রার্থীর নির্বাচনি প্রচারণা
  • ২৪ অক্টোবর, ২০২৫; এশিয়া সফর শুরুর আগে হোয়াইট হাউসের দক্ষিণ লনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
    ২০২৮ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনে না, তবে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার ইঙ্গিত ট্রাম্পের
  • কিশোরের অন্ত্রে জমে থাকা উচ্চ শক্তির চুম্বকের টুকরোগুলোর এক্স-রে ছবি । সূত্র: নিউজিল্যান্ড মেডিকেল জার্নাল/এএফপি
    ১৩ বছরের এক ছেলে কয়েক ডজন শক্তিশালী চুম্বক গিলে ফেলার পর যা ঘটল!
  • ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি আরফান আলী। ইলাস্ট্রেশন: টিবিএস
    কিছু ব্যাংক ডিজিটালাইজেশন করেনি বোর্ডের দোহাই দিয়ে, অথচ ব্যাংকের ভল্ট খুলে দিয়েছে: ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি

Related News

  • বেক্সিমকোর পর নাসা গ্রুপকেও সহায়তার সিদ্ধান্ত সরকারের, কারখানা সচল রাখতে উদ্যোগ
  • ‘সুলতানের চর দখল ছবি হারিয়ে গেল! বলছিলেন এগুলি নিয়ে যান—সাহস করিনি সেদিন!’ 
  • ‘বাংলাদেশের দুষ্প্রাপ্য ছবিসমগ্র’: প্রজন্ম পেরোনো শিল্পযাত্রায় অনন্য যারা
  • পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞাকে ফাঁকি, রাশিয়ার বোমা কারখানা যেভাবে কিনেছে সিমেন্সের প্রযুক্তি
  • হারিয়ে যাওয়ার আগে জয়নুল, সুলতানদের ছবি পুনরুদ্ধারের লড়াই

Most Read

1
ইলাস্ট্রেশন: টিবিএস
অফবিট

বিশ্বের আর কোথাও কি মেট্রোরেলের পিয়ার থেকে বিয়ারিং প্যাড খুলে পড়েছে?—যা উত্তর দিল এআই

2
আল–আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ 
বাংলাদেশ

আল–আরাফাহ ইসলামী ব্যাংকের এমডিকে অপসারণ 

3
ছবি: ইন্সটাগ্রাম থেকে নেয়া
আন্তর্জাতিক

‘এটা বাংলাদেশ নয়’: পর্তুগালে বাংলাদেশকে কটাক্ষ করে বিলবোর্ডে প্রার্থীর নির্বাচনি প্রচারণা

4
২৪ অক্টোবর, ২০২৫; এশিয়া সফর শুরুর আগে হোয়াইট হাউসের দক্ষিণ লনে সাংবাদিকদের সঙ্গে কথা বলার সময় ডোনাল্ড ট্রাম্প। ছবি: রয়টার্স
আন্তর্জাতিক

২০২৮ সালে ভাইস প্রেসিডেন্ট পদে নির্বাচনে না, তবে তৃতীয় মেয়াদে প্রেসিডেন্ট প্রার্থিতার ইঙ্গিত ট্রাম্পের

5
কিশোরের অন্ত্রে জমে থাকা উচ্চ শক্তির চুম্বকের টুকরোগুলোর এক্স-রে ছবি । সূত্র: নিউজিল্যান্ড মেডিকেল জার্নাল/এএফপি
আন্তর্জাতিক

১৩ বছরের এক ছেলে কয়েক ডজন শক্তিশালী চুম্বক গিলে ফেলার পর যা ঘটল!

6
ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি আরফান আলী। ইলাস্ট্রেশন: টিবিএস
বাংলাদেশ

কিছু ব্যাংক ডিজিটালাইজেশন করেনি বোর্ডের দোহাই দিয়ে, অথচ ব্যাংকের ভল্ট খুলে দিয়েছে: ব্যাংক এশিয়ার সাবেক এমডি

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab