Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Monday
June 23, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
MONDAY, JUNE 23, 2025
প্রাচীনতম সেলুন ট্রুফিট এন্ড হিল: যেভাবে বাকিংহাম প্যালেস থেকে গুলশানে

ফিচার

আসমা সুলতানা প্রভা
15 September, 2023, 02:20 pm
Last modified: 19 September, 2023, 06:34 pm

Related News

  • বাটি ছাঁট থেকে রোনাল্ডো কাট: সেলুনগুলো যেভাবে বদলে যাচ্ছে জেন্টস পারলারে
  • ভারতবর্ষের পায়জামা যেভাবে পশ্চিমা পায়জামা হয়ে উঠল
  • ১৭০ বছর পর রাজ পরিবারের খাবার সরবরাহকারীর তালিকা থেকে বাদ পড়লো ক্যাডবেরি চকলেট
  • মারা গেল বিশ্বের সর্ববৃহৎ বন্দি শতবর্ষী কুমির
  • মারা গেছেন ওয়ান ডিরেকশন ব্যান্ডের শিল্পী লিয়াম পেইন

প্রাচীনতম সেলুন ট্রুফিট এন্ড হিল: যেভাবে বাকিংহাম প্যালেস থেকে গুলশানে

১৮০৫ সালে উইলিয়াম ফ্রান্সিস ট্রুফিট সূচনা করেন পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন সেলুন ট্রুফিট এন্ড হিলের। ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় জর্জ থেকে শুরু করে নয় রাজার সময়কাল পর্যন্ত রাজ পরিবারে প্রায় সব পুরুষ সদস্য, বিখ্যাত সব ব্যক্তি, যেমন, উইলিয়াম গ্লাডস্টোন, উইনস্টন চার্চিল, অস্কার ওয়াইল্ড, চার্লস ডিকেন্স, বিউ ব্রুমেল এমনকি ফ্রাংক সিনাত্রা- ছিলেন এই সেলুনের গ্রাহক। ২০১৯ সালের ৬ আগস্ট পুরুষদের জন্য এই সেলুনের একটি শাখা চালু হয় ব্যস্ত নগরী ঢাকার গুলশানে। ব্যয়বহুল হলেও, ঢাকায় বসে লন্ডনের ট্রুফিটের সেবা নিতে রুচিশীল নানা গ্রাহকই ভিড় করেন এখানে।
আসমা সুলতানা প্রভা
15 September, 2023, 02:20 pm
Last modified: 19 September, 2023, 06:34 pm
ট্রুফিট এন্ড হিল বাংলাদেশ এর অন্দর/ ছবি- আসমা সুলতানা প্রভা

২১ অক্টোবর, ১৮০৫ সাল। ট্রাফালগার নৌযুদ্ধে ইংরেজদের কাছে ফরাসি নৌ সেনাদের পরাজিত হওয়ার খবর যখন ভেসে বেড়াচ্ছে চারদিকে, সেদিনই আরেক ইংরেজ উইলিয়াম ফ্রান্সিস ট্রুফিট সূচনা করেন পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন সেলুন ট্রুফিট এন্ড হিলের। ব্রিটিশ রাজা তৃতীয় জর্জ থেকে শুরু করে নয় রাজার সময়কাল পর্যন্ত রাজ পরিবারে প্রায় সব পুরুষ সদস্য, বিখ্যাত সব ব্যক্তি, যেমন, উইলিয়াম গ্লাডস্টোন, উইনস্টন চার্চিল, অস্কার ওয়াইল্ড, চার্লস ডিকেন্স, বিউ ব্রুমেল এমনকি ফ্রাংক সিনাত্রা- ছিলেন এই সেলুনের গ্রাহক। ব্রিটিশ রাজাদের সেবা দেওয়ার ক্ষেত্রে সুনাম অর্জন করায় ডিউক অফ এডিনবার্গ, প্রিন্স ফিলিপ থেকে রাজকীয় অনুমোদনও পেয়েছিলো এ সেলুন। তিনি সেলুনে যেতেন না বলে সেলুন থেকে এসে নাপিত ওয়েন্ডি ল্যাংলি রাজপ্রাসাদে গিয়ে সেবা দিতেন তাকে।

অন্যান্য দশটি সাধারণ সেলুনের মতো নয় এটি। সেলুনের ভেতরে আছে এক রাজকীয় আবহ। ভেতরের সজ্জা থেকে শুরু করে কর্মচারীদের পোশাক-আশাক, আচার-আচরণ সবকিছুতেই আছে আভিজাত্যের ছাপ। গিনেস ওয়ার্ল্ড রেকর্ডস বুকে পৃথিবীর সবচেয়ে পুরাতন সেলুন হিসেবে স্বীকৃতি লাভের পাশাপাশি এই সেলুনের রয়েছে ২০০ বছরেরও বেশি সুদীর্ঘ ইতিহাস।

২০১৯ সালের ৬ আগস্ট পুরুষদের জন্য এই সেলুনের একটি শাখা চালু হয় ব্যস্ত নগরী ঢাকার গুলশানে। রয়েল অ্যাফেয়ার্স লিমিটেড-এর ম্যানেজিং ডিরেক্টর মুকাররাম হোসেন খানের হাত ধরেই বাংলাদেশে এই সেলুনের যাত্রা শুরু। আধুনিক, ফ্যাশন সচেতন ও রুচিশীল ব্যক্তিরা যাতে এই সেলুনের মাধ্যমে রাজকীয় এবং ঐতিহ্যবাহী সেবার অভিজ্ঞতা উপভোগ করতে পারেন, সেই উদ্দেশ্য থেকেই এটি ঢাকায় আনেন বলে জানান রয়্যাল অ্যাফেয়ার্স এর সিইও মাহিরা হোসেন খান। গত ৪ বছর ধরে বাংলাদেশে চালু হওয়া এই সেলুন সেবার দিক থেকে এখনো সবার শীর্ষে অবস্থান করছে বলেও জানান তিনি।

ট্রুফিট এন্ড হিল বাংলাদেশ/ ছবি- আসমা সুলতানা প্রভা

মাহিরা হোসেন খান বলেন, "ট্রুফিট এন্ড হিল সেলুন বাংলাদেশে আনার আইডিয়াটা আমার বাবারই ছিলো। উনি নিজে ছেলেদের গ্রুমিং নিয়ে খুব সচেতন। দেশ বিদেশের অনেক ব্র্যান্ডের সাথে পরিচিত ছিলেন তিনি। তিনি যখন দেখলেন বাংলাদেশে গ্রুমিং সেক্টরে অনেক সীমাবদ্ধতা আছে, তখন বাবা সেটা খুব ভালোভাবে অনুভব করতে পেরেছিলেন। এরপরেই তিনি এই সেলুন ঢাকায় আনার কাজে নিজেকে সংযুক্ত করেন।"

গ্রাহক কারা?

এমন ব্যয়বহুল এবং দামি সেলুনে কারাই বা আসেন তা জানতে চাইলে মাহিরা হোসেন খান বলেন, "ভিন্নসব পেশার, বয়সের মানুষই আসেন এখানে। ডিপ্লোমেট, জার্নালিস্ট, আইনজীবী, পলিটিশিয়ান, ব্যবসায়ী, বিদেশি প্রায় সব গ্রাহকই আসেন। বারবার আসেন এমন গ্রাহকের সংখ্যা ৯৫% আবার অনেকেই শখের বশে একবার হলেও সেবা নিতে আসেন যাদের সংখ্যা ৫-৬%। আসলে সবাই চায়, নিজেকে একটু সুন্দর করে গুছিয়ে চলতে। আর আমরা সেটা যথাযথভাবে নিশ্চিত করি।"

সেলুনের ম্যানেজার মো: আশরাফুজ্জামান বলেন, "এখানে যারা আসেন তারা প্রায় সবাই রুচিশীল ব্যক্তি। নিজেদের সাজাতে চান, নিজেদের সুন্দরভাবে উপস্থাপন করতে ভালোবাসেন, যাদের লাইফ স্টাইল নিয়ে শৌখিনতা আছে তারাই বেশি আসেন।"

নিজস্ব পণ্যে ব্যবহার করেই হয়ে থাকে হেয়ারকাট, শেভিং, ফেসিয়াল সহ নানা কাজ/ ছবি- আসমা সুলতানা প্রভা

তাছাড়া তিনি জানান এখানে ছোট থেকে বয়স্ক সবাই আসলেও মধ্যবয়সী মানুষের আসার সংখ্যা সবচেয়ে বেশি। এর কারণ হিসেবে তিনি তুলে ধরেন সেলুনের সার্ভিসের কথা। এই সেলুনে হেয়ারকাট, শেভিং থেকে শুরু করে যত প্রকার বডি ম্যাসাজ আছে তা মানুষকে অনেক বেশি প্রশান্তি দিয়ে থাকে। ফলে দেখা যায় নিজেদের জন্য কিছুটা আরাম বা প্রশান্তি নিশ্চিত করতে গ্রাহকরা ভিড় জমান এখানে।

গ্রাহকরা কেন ভিড় করেন এখানে?

ট্রুফিট এন্ড হিল সেলুনের এমন রাজকীয় সেবার কারণেই প্রতিদিন এখানে এসে ভিড় করেন অনেক গ্রাহক। সেক্ষেত্রে আগে থেকেই অ্যাপয়েন্টমেন্ট নিতে হয়। অনলাইন বা ফোন কলের মাধ্যমে নেওয়া যায় অ্যাপয়েন্টমেন্ট।

বিখ্যাত অনেক ব্যক্তিই ছিলেন এই সেলুনের সম্মানিত গ্রাহক/ ছবি- আসমা সুলতানা প্রভা

ব্যরিষ্টার শেখ ইফতেখার ট্রুফিট এন্ড হিলের একজন নিয়মত গ্রাহক। এখানে নিয়মিত সেবা নেওয়ার কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, "অন্যান্য সেলুনে যেটা পাইনি সেটা এখানে পেয়েছি। এখানকার যারা বার্বার তাদের এপ্রোচ, সার্ভিস, কথা বলা, কাজ সবকিছুই অনেক প্রফেশনাল। প্রফেশনালিজম এমন একটি ব্যাপার যেটা সবাইকে শিখিয়েও পারা যায় না। এদের মধ্যে সেটা আছে। তাছাড়া এদের একটা লেগেসি থাকার কারণে তারা সর্বোচ্চ সেবাটা দেওয়ার চেষ্টা করে।"

ট্রুফিট এন্ড হিল পুরো বাংলাদেশের সবচেয়ে ব্যয়বহুল সেলুন হওয়া প্রসঙ্গে মাহিরা হোসেন খান বলেন, "আমরা যে মানের সেবা দিয়ে থাকি সেটাকে দামের দ্বিগুণ বলা যায়। ভালো সেবা যারা পেতে চায় তারা এই খরচ বহন করতে চাইবে বলে মনে করি। বাংলাদেশে এটাই একমাত্র আন্তর্জাতিক ফ্যাঞ্চাইজ যা বৈশ্বিকভাবে পরিচিত। বিশ্বব্যাপী এই সেলুন সেবার মানের জন্য অনেক সুপরিচিত।"

সেলুনের আরেক গ্রাহক ফয়সাল সাঈদ বলেন, "এমন পরিবেশ, অথেনটিক পণ্য, বেস্ট সার্ভিস পেলে যে কেউই আসতে চাইবে। আগে অনেক ভালো মানের সেলুনে সেবা নিলেও আমার কাছে এদের সার্ভিস বেস্ট মনে হয়েছে। তাছাড়া নিজস্ব পণ্য ব্যবহার করেই সেবা দেওয়া হয় বলে পণ্যের গুণগত মানও হয় আলাদা। এতে টাকা একটু বেশি খরচ হলেও অতৃপ্তি কাজ করে না।"

রাজকীয় সেবাই মুখ্য

এই সেলুনের অন্যতম বৈশিষ্ট্য হলো সময়ের সাথে গা ভাসানোর প্রবণতা নেই এখানে। সেই ১৮০৫ সাল থেকে যেভাবে সেবা দেওয়া হতো, সেই ধারা ধরে রাখা হয়েছে এখানে। নেই কাউকে অনুকরণ করারও প্রবণতা।

এই রেজরে সুরক্ষার জন্য দেওয়া হয় আলাদা স্তর/ ছবি- আসমা সুলতানা প্রভা

নাপিতরা যে রেজর ব্যবহার করেন সেটা নিয়েও আছে ভিন্ন গল্প। এই রেজরে থাকে বিশেষ সুরক্ষা ব্যবস্থা। কোনোভাবেই যাতে গ্রাহকদের ক্ষতি না হয়, বা কেটে না যায় সেজন্য এই রেজরে দেওয়া হয় আলাদা একটি বিশেষ স্তর। এই স্তরের কারণে শেভিং করতে গিয়ে কখনোই গাল কেটে যাওয়ার ভয়ে থাকতে হয় না গ্রাহকদের। এই বিশেষ রেজরগুলোর দাম হয়ে থাকে পঞ্চাশ হাজারেরও বেশি।

সেলুনে গ্রাহকদের আপ্যায়নের জন্যও আছে সুব্যবস্থা। চা, কফি, জুস, হালকা নাস্তা- যে যেভাবে পছন্দ করেন সেভাবেই করা হয় খাবার পরিবেশন। শুধু চুল কাটা এবং ম্যাসাজের জন্য আছে ৩টি রুম। এরমধ্যে একটি রুমে রয়েছে ৩-৪ জন একসাথে সেবা নেওয়ার সুব্যবস্থা। আবার কেউ এককভাবে একটি রুমে সেবা নিতে চাইলে তারজন্যও আছে আলাদা রুমের বন্দোবস্ত। স্বাস্থ্যবিধি মেনেই সেলুনের ভেতরের সকল কাজ করা হয়ে থাকে। সেলুনের সকল সরঞ্জাম জীবাণুমুক্ত রাখতে মেনে চলা হয় কড়া সতর্কতাও।

লন্ডন থেকে ঢাকা- সেবার মান কি একই?

ট্রুফিট এন্ড হিলের বিবর্তন/ ছবি- আসমা সুলতানা প্রভা

ট্রুফিটের মূল শাখার সাথে বাংলাদেশের শাখায় নেই কোনো রকম ভিন্নতা। কর্মচারীদের ড্রেসকোড থেকে শুরু করে সেলুনের সাজ-সজ্জা, পরিবেশ, সেবা, পণ্য সবকিছুই অভিন্ন।

ঐতিহ্য অনুসারে ঢাকার ট্রুফিটেও প্রাচীন পদ্ধতি মেনেই করা হয় শেভ করার কাজ। দুটি খোলা মুখের একটি সিরামিকের মগে উপরের অংশে রাখা হয় সাবান। নিচের খোলা মুখ দিয়ে ঢালা হয় গরম পানি। গরম পানির ভাপে সাবান গলে মগের নিচে জমতে থাকে এবং সেই গলিত সাবান ব্রাশে লাগিয়েই করা হয় শেভিং এর কাজ।

মাহিরা হোসেন খান বলেন, "আপনি ট্রুফিটে ঢুকতেই যে স্মেলটা পাবেন, সেটাও এই সেলুনের সকল শাখাতে একরকম। লন্ডনের ট্রুফিটে যে সেবা দেওয়া হয়, সেই একই সেবা, একই পণ্য, একই পরিবেশ বাংলাদেশের গ্রাহকরা পাবেন। গ্রাহকদের জন্য রয়্যাল সেবা নিশ্চিত করাই এই সেলুনের অন্যতম উদ্দেশ্য।"

ভিন্ন ভিন্ন পণ্যের আছে ভিন্ন ভিন্ন গল্প

বিভিন্ন সময়ে বিভিন্ন ঘটনাকে স্মৃতিময় করে রাখার উপলক্ষ্যে তৈরি পণ্য/ ছবি- ট্রুফিট এন্ড হিল বাংলাদেশের সৌজন্যে প্রাপ্ত

ট্রুফিট এন্ড হিলের আরও একটি উল্লেখযোগ্য বৈশিষ্ট্য হলো নিজস্ব পণ্য ব্যবহার। ১৮০৫ সালে এই সেলুনের যাত্রার পাশাপাশি শুরু হয় এর নিজস্ব পণ্যের যাত্রাও।পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে ট্রুফিট এন্ড হিলের যত শাখা আছে প্রতিটি শাখায় নিজেদের পণ্য ব্যবহার করেই সেবা দেওয়া হয়। প্রতিটি পণ্যের সাথে জড়িয়ে আছে নানা ঘটনা।

১৮০৫ সালে ট্রুফিট এর প্রতিষ্ঠাকালকে স্মরণীয় করে রাখতে ঐ বছর '১৮০৫' নামের একটি পারফিউম ট্রুফিটের সর্বপ্রথম পণ্য হিসেবে যাত্রা শুরু করে। এরপর ট্রাফালগার যুদ্ধের সময় যে সুগন্ধী পণ্য বাজারে নিয়ে আসা হয় সেটার নাম দেওয়া হয় 'ট্রাফালগার' নামে। ট্রুফিটের স্বত্ত্বাধীন জেন্টেলম্যানস ক্লাবের জনপ্রিয়তাকে স্মৃতিময় করে রাখতে 'ক্লাবম্যান' নামে আরেক পারফিউম বাজারে আনা হয়। ১৮১৪ সালে আনা হয় 'স্প্যানিশ লেদার' নামে একটি পারফিউম। পেনিনসুলার যুদ্ধে ট্রুফিট এন্ড হিলের অন্যতম পৃষ্ঠপোশক ডিউক অফ ওয়েলিংটন কৃতিত্বের সাথে সফল হওয়ায় এমন নাম দেওয়া হয়। 'ওয়েস্ট ইন্ডিয়ান লাইম' নামের যে শেভিং ক্রিমটি তৈরি করা হয় সেটি ছিল ট্রুফিটের সবচেয়ে জনপ্রিয় পণ্য এবং ব্রিটিশ রয়ালদের অন্যতম প্রিয়।

ট্রুফিট এন্ড হিলের প্রতিষ্ঠাকালকে স্মরণীয় করে রাখতে চালু হওয়া প্রথম পণ্য ছিল এই পারফিউমটি/ ছবি- আসমা সুলতানা প্রভা

ট্রুফিটের পণ্যের জনপ্রিয়তা কেমন ছিলো সেটার অনুমান করা যায় আরও একটি ঘটনায়। ১৯১২ সালে ডুবে যাওয়া টাইটানিক থেকেও উদ্ধার করা হয়েছিল ট্রুফিটের পণ্য। অর্থাৎ তখনকার উচ্চশ্রেণীর মানুষের পছন্দের অন্যতম পণ্য হিসেবে স্থান করে নিয়েছিল এসব পণ্য।

রিলেশনশিপ এক্সিকিউটিভ পাভেল বড়ুয়া বলেন, "ম্যানস গ্রুমিং এর জন্য যত ধরনের প্রোডাক্ট আছে তার সবগুলোই আমাদের আছে। প্রায়ই সেলুনে এসে পণ্য কিনে নিয়ে যান গ্রাহকরা। পণ্যগুলোর দাম সর্বোচ্চ দাম ১০ হাজারের বেশি এবং সর্বনিম্ন ৬০০ টাকার মধ্যে হয়ে থাকে।"

কোন সেবার কত দাম?

শুরু থেকেই যেভাবে এই মগ ব্যবহার করে শেভিং করা হতো এখনও সেই প্রথা প্রচলিত/ ছবি- আসমা সুলতানা প্রভা

এই সেলুনের সিগনেচার সেবা হলো রয়্যাল ফেসিয়াল, রয়্যাল হেয়ারকাট, রয়্যাল শেভিং, রয়্যাল ম্যানিকিউর-পেডিকিউর। এর মধ্যে রয়্যাল ফেসিয়াল এর মূল্য-৬৫০০ টাকা, রয়্যাল হেয়ারকাট-৩৫০০ টাকা, রয়্যাল শেভ-৩০০০ টাকা, রয়্যাল ম্যানিকিউর-২৯০০ টাকা, এবং রয়্যাল পেডিকিউর-৩৪০০ টাকা।

রয়্যাল এবং ক্লাসিক-এই দুইটি হেয়ারকাট করা হয় এখানে। তবে গ্রাহকদের পছন্দের তালিকায় শীর্ষে আছে রয়্যাল হেয়ারকাট।

ব্যয়বহুল এই সেলুনের সর্বোচ্চ ও সর্বনিম্ন সেবার দাম জানতে চাইলে ম্যানেজার আশরাফুজ্জামান বলেন, "এই সেলুনে সবচেয়ে বেশি দামী সার্ভিস হলো রয়াল ফেসিয়াল, যেটার দাম ৬০০০ টাকারও বেশি। সবচেয়ে কম দামী সার্ভিস হলো হলো নাকের ওয়াক্সিং যা করা যাবে ৮০০ টাকাতেই। সময়ের সাথেও আছে দামের পার্থক্য। যে সেবাটি বেশি সময় ধরে দেওয়া হয় সেটার দাম তত বেশি। যেমন রয়াল ফেসিয়াল করতে সময় লাগে এক ঘণ্টারও বেশি।"

আছেন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ নাপিত

সেলুনে আছেন ৯ জন প্রশিক্ষণপ্রাপ্ত দক্ষ নাপিত।/ ছবি- ট্রুফিট এন্ড হিল বাংলাদেশ এর সৌজন্যে প্রাপ্ত

এখানে কর্মরত নাপিতদের কাজে, আচরণেও দেখা মেলে দক্ষতার ছাপ। কোনোরকম লে আউট ছাড়াই কাঁটা হয় চুল। নাপিতরাই গ্রাহকদের মুখের কাঠামো দেখে তাৎক্ষণিকভাবে নির্ধারণ করেন মুখের কোন কাঠামোয় ঠিক কোন হেয়ারকাট মানানসই হবে। তবে গ্রাহকদের নিজস্ব কোনো পহন্দ থাকলে সেভাবেও করে দেন তারা। বেশিরভাগ সময়েই নাপিতদের করে দেওয়া স্টাইলে সন্তুষ্ট থাকেন গ্রাহকরা।

মাহিরা হোসেন খান বলেন, "আমাদের যারা নাপিত আছেন তারা তাদের কাজ এতই নিপুণভাবে করে থাকেন, যার ফলে সেলুনের সেবার মান মানুষের কাছে অনেক জনপ্রিয় হয়ে উঠেছে। আমরা দক্ষ কর্মী নিয়োগের মাধ্যমে সেবার এমন একটা মানদণ্ড দাঁড় করিয়েছি যা দেখে অন্যান্য সেলুনও ভালো সেবা দেওয়ার চেষ্টা করছে। যেটা আমার কাছে খুবই ইতিবাচক বলে মনে হয়।"

দীপক চন্দ্র শীল। নাপিতের কাজ করছেন ২০ বছরেরও বেশি সময় ধরে। বংশ পরম্পরায় এই কাজকে বেছে নিয়েছেন পেশা হিসেবে। ট্রুফিটে ৪ বছর ধরে এত দক্ষতার সাথে কাজ করার পেছনের কারণ জানতে চাইলে তিনি বলেন, "এখানে কাজ করার জন্য আমাদের আলাদা করে ট্রেনিং নিতে হয়েছে মুম্বাইতে। লন্ডনে যে সেবা দেওয়া হয় ঠিক সেভাবে আমাদের শেখানো হয়েছে। তাছাড়া সময়ের সাথে আমরা সেবার মানের ক্ষেত্রে আপডেটেড থাকতে চেষ্টা করি; চেষ্টা করি কীভাবে গ্রাহকদের আরও ভালো সেবা দেওয়া যায়। আমাদের সবসময় এটাই লক্ষ্য থাকে যেন নিজেদের সেরাটা দিতে পারি।"

২৩ বছরেরও বেশি অভিজ্ঞতা সম্পন্ন নাপিত সুমন শীল বলেন, "আমাদের এমনভাবে প্রশিক্ষণ দেওয়া হয়েছে যে গ্রাহকের স্কিনের ধরন দেখেই বুঝতে পারি কার স্কিন কেমন। মানুষের স্কিন বুঝে কোন পণ্য ব্যবহার করবো সেটাও আমরাই নির্ধারণ করে থাকি।"

আছেন থেরাপিস্ট!

বিক্রি করার জন্য সাজিয়ে রাখা হয়েছে ট্রুফিট এন্ড হিলের পণ্য/ ছবি- আসমা সুলতানা প্রভা

রাজকীয় এই সেলুনের প্রতিটি কাজের মধ্যেই আছে দক্ষতার ছাপ। সাধারণ সেলুনের মতো নাপিতরা ম্যাসাজের কাজটি করেন না। এই কাজ করার জন্য সেলুনে কর্মরত আছেন ৭ জন থেরাপিস্ট। ম্যাসাজের কাজে তাদের দেওয়া হয়েছে পর্যাপ্ত প্রশিক্ষণ। মধ্যবয়সী লোকেরা এখানে আসার অন্যতম কারণ হলো থেরাপিস্টদের থেকে ম্যাসাজের সুবিধা।

৪ বছর ধরে ট্রুফিটে কর্মরত থেরাপিস্ট টিপু ডিবড়া বলেন, "এই কাজ আমি করছি ১২ বছর ধরে। ট্রুফিটে কাজ করছি শুরু থেকেই। ম্যাসাজের জন্য আমাদের মুম্বাই থেকে প্রশিক্ষণ নিতে হয়েছে আলাদা করে। এখানে যারা আসেন তাদের আরামের বিষয়টি নিশ্চিত করা আমাদের অন্যতম দায়িত্ব। আমরা চেষ্টা করি আমাদের দিক থেকে যেন কোনোরকম কমতি না থাকে। বেশিরভাগ গ্রাহকই আমাদের সামনে সেবার মানের অনেক প্রশংসা করে থাকেন।"

মেম্বারশিপ মানেই 'আনলিমিটেড সার্ভিস'

এই সেলুনের গ্রাহক আছেন দুই ধরনের। স্থায়ী গ্রাহক এবং অস্থায়ী গ্রাহক । যারা স্থায়ী গ্রাহক তাদের মেম্বার বলে আখ্যায়িত করা হয়। বছরে একটি নির্দিষ্ট অংকের টাকা দিয়ে এই মেম্বারশিপ নিয়ে থাকেন অনেকেই। এতে করে যে বছরের জন্য এই মেম্বারশিপ নেওয়া হয়, সে বছর গ্রাহক চাইলেই অসংখ্যবার সেবা নিতে পারবেন। তাই অনেক গ্রাহকই মেম্বারশিপ নেওয়াকে বেশি লাভজনক মনে করেন।

সেলুনে এমন পার্সোনাল রুমেও সেবা নিয়ে থাকেন গ্রাহকরা/ ছবি- আসমা সুলতানা প্রভা

সেলুনের গেস্ট রিলেশনশিপ এক্সিকিউটিভ পাভেল বড়ুয়া বলেন, "আমাদের ফিক্সড কাস্টমার সবচেয়ে বেশি। একবার এসে ভালো লাগলেই অনেকে মেম্বারশিপ কার্ড করে ফেলেন। কারণ এতে করে ইচ্ছেমতো সেবা নিতে পারেন তারা এবং এতে টাকাও তুলনামূলক অনেক কম খরচ হয়।"

ট্রুফিটে প্রথম দিন এসেই মেম্বারশিপ নিয়ে নেওয়া গ্রাহক ফয়সাল সাঈদ বলেন, "সাধারণত ভালো কোথাও চুল কাটতে গেলেই বেশ খরচ হয়। তারচেয়ে অল্প টাকা বাড়িয়ে যদি বেস্ট সার্ভিস নেওয়া যায় তাহলে সবাই তা নিতে চাইবে। তাছাড়া এদের সার্ভিস এতই ভালো যে মেম্বারশিপ নিয়ে ফেলাটা অনেক বেশি কস্ট ইফেক্টিভ বলে মনে করি।"

বাংলাদেশ ছাড়া আরও ১২টি দেশে ৫২ টি শাখা রয়েছে ট্রুফিট এন্ড হিলের। সেলুনের প্রতিষ্ঠাতা উইলিয়াম ফ্রান্সিস ট্রুফিট বেঁচে না থাকলেও পুরো পৃথিবীর বুকে প্রাচীন এবং অভিজাত এই সেলুন স্বমহিমায় মাথা উঁচু করেই বেঁচে আছে এখনো।

ট্রুফিট এন্ড হিলের গ্রাহক শেখ ইফতেখারের ভাষ্যমতে, "সংস্কৃতি এমন একটি বিষয় যা কোনো একটি জিনিসকে স্বতন্ত্রভাবে উপস্থাপন করে। এই সেলুনের বিগত ২০০ বছরেরও বেশি সময় ধরে যে সংস্কৃতি তৈরি হয়েছে সেটা তাদের কাজেই প্রকাশ পায়। যার কারণে অন্যান্য সব সেলুনের চেয়ে তারা আলাদা।"

 

Related Topics

টপ নিউজ

সেলুন / প্রাচীন / গিনেস বুক / বিশ্বের সবচেয়ে পুরোনো / ব্রিটিশ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, ফোরদো ‘ধ্বংস’
  • ইরানে মার্কিন হামলায় যেভাবে বি-২ বোমারু বিমান অংশ নিল
  • মার্কিন হামলায় ‘একরকম নিশ্চিত’ হয়ে গেল এক দশকের মধ্যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হবে: বিশ্লেষক
  • যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাংকার-বাস্টার’-এ 'ধ্বংস' ইরানের ফোরদো, কতটা ভয়ানক এই বোমা?
  • ফোরদো আগেই খালি করে ফেলা হয়েছে, আশপাশের বাসিন্দাদের কোনো ‘বিপদ নেই’: ইরান
  • সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনজনের নাম জানিয়েছেন খামেনি: নিউইয়র্ক টাইমস

Related News

  • বাটি ছাঁট থেকে রোনাল্ডো কাট: সেলুনগুলো যেভাবে বদলে যাচ্ছে জেন্টস পারলারে
  • ভারতবর্ষের পায়জামা যেভাবে পশ্চিমা পায়জামা হয়ে উঠল
  • ১৭০ বছর পর রাজ পরিবারের খাবার সরবরাহকারীর তালিকা থেকে বাদ পড়লো ক্যাডবেরি চকলেট
  • মারা গেল বিশ্বের সর্ববৃহৎ বন্দি শতবর্ষী কুমির
  • মারা গেছেন ওয়ান ডিরেকশন ব্যান্ডের শিল্পী লিয়াম পেইন

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ইরানের ৩ পারমাণবিক স্থাপনায় যুক্তরাষ্ট্রের হামলা, ফোরদো ‘ধ্বংস’

2
আন্তর্জাতিক

ইরানে মার্কিন হামলায় যেভাবে বি-২ বোমারু বিমান অংশ নিল

3
আন্তর্জাতিক

মার্কিন হামলায় ‘একরকম নিশ্চিত’ হয়ে গেল এক দশকের মধ্যে ইরান পারমাণবিক অস্ত্রধারী দেশ হবে: বিশ্লেষক

4
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের ‘বাংকার-বাস্টার’-এ 'ধ্বংস' ইরানের ফোরদো, কতটা ভয়ানক এই বোমা?

5
আন্তর্জাতিক

ফোরদো আগেই খালি করে ফেলা হয়েছে, আশপাশের বাসিন্দাদের কোনো ‘বিপদ নেই’: ইরান

6
আন্তর্জাতিক

সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনজনের নাম জানিয়েছেন খামেনি: নিউইয়র্ক টাইমস

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net