Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

পাখির রাজ্যে, আবার পাখিরা!

শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে অতিথিরা আসতে শুরু করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতি বছরের মতো এবারও তারা শীত থেকে বাঁচতে জাহাঙ্গীরনগরের পথ ভোলেনি। ছোট সরালি, বড় সরালি, জলপিপি, শামুক খোল, গোবক, টিলা ঘুঘু, ছোট বক, লেঞ্জা লাটোরা, লেঞ্জা হাঁস, খুন্তে হাঁস, গিরিয়া হাঁসসহ নানান প্রজাতির দেশি ও পরিযায়ী পাখিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। শাপলা-পদ্মে ঘেরা লেকগুলোতে সকালে-বিকেলে সাঁতার কাটতে, রোদ পোহাতে দেখা যাচ্ছে অতিথিদের।
পাখির রাজ্যে, আবার পাখিরা!

ফিচার

জান্নাতুল তাজরী তৃষা
21 December, 2022, 05:40 pm
Last modified: 22 December, 2022, 02:01 pm

Related News

  • ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লা হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার 
  • নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল
  • ২১ মের মধ্যেই জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হল থেকে বহিরাগত যুবক আটক, শিক্ষার্থী বহিষ্কার
  • পরীক্ষা দিতে এসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকর্মী আটক

পাখির রাজ্যে, আবার পাখিরা!

শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে অতিথিরা আসতে শুরু করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতি বছরের মতো এবারও তারা শীত থেকে বাঁচতে জাহাঙ্গীরনগরের পথ ভোলেনি। ছোট সরালি, বড় সরালি, জলপিপি, শামুক খোল, গোবক, টিলা ঘুঘু, ছোট বক, লেঞ্জা লাটোরা, লেঞ্জা হাঁস, খুন্তে হাঁস, গিরিয়া হাঁসসহ নানান প্রজাতির দেশি ও পরিযায়ী পাখিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। শাপলা-পদ্মে ঘেরা লেকগুলোতে সকালে-বিকেলে সাঁতার কাটতে, রোদ পোহাতে দেখা যাচ্ছে অতিথিদের।
জান্নাতুল তাজরী তৃষা
21 December, 2022, 05:40 pm
Last modified: 22 December, 2022, 02:01 pm

শীতের আগমনী বার্তা নিয়ে অতিথিরা আসতে শুরু করেছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে। প্রতি বছরের মতো এবারও তারা শীত থেকে বাঁচতে জাহাঙ্গীরনগরের পথ ভোলেনি। ছোট সরালি, বড় সরালি, জলপিপি, শামুক খোল, গোবক, টিলা ঘুঘু, ছোট বক, লেঞ্জা লাটোরা, লেঞ্জা হাঁস, খুন্তে হাঁস, গিরিয়া হাঁসসহ নানান প্রজাতির দেশি ও পরিযায়ী পাখিতে মুখরিত হয়ে উঠেছে ক্যাম্পাস। শাপলা-পদ্মে ঘেরা লেকগুলোতে সকালে-বিকেলে সাঁতার কাটতে, রোদ পোহাতে দেখা যাচ্ছে অতিথিদের।

ঢাকা থেকে প্রায় ৩২ কিলোমিটার দূরে লাল ইটের দেশ জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় (জাবি)। ১৯৭১ সালের জানুয়ারিতে বিশ্ববিদ্যালয়ের কার্যক্রম শুরু হলেও ক্যাম্পাসে প্রথম অতিথি পাখির দেখা মেলে ১৯৮৬ সালে। এরপর থেকে গত ৩৬ বছরের প্রায় প্রতি শীতেই দেশি ও বিদেশি অতিথি পাখিতে মুখরিত হয়েছে ক্যাম্পাস; এ বছরও নয় তার ব্যতিক্রম। 

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

শুধু শীতেই নয়, জাহাঙ্গীরনগরে গ্রীষ্মেও আসে অতিথি পাখি। রায়নেক বা মেঠো কাঠঠোকরা, ফুলঝুরি, খঞ্জনা, ওয়ারব্লার এবং টাইগা ফ্লাই ক্যাচারের মতো স্থলচর পাখিদের বিচরণ দেখা যায় গরমেও। সাধারণত শীত থেকে বাঁচতে অতিথি পাখিরা জাহাঙ্গীরনগরসহ বাংলাদেশের বিভিন্ন জায়গায় অনুকূল পরিবেশের সন্ধানে আসে, কিন্তু গরমে কেন আসে তারা?

এমন কৌতূহলের উত্তরে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের অধ্যাপক ও পাখি গবেষক ড. সাজেদা বেগম জানান, 'গ্রীষ্মে পরিযায়ী বা সামার ভিজিটরস পাখিরা প্রজননের জন্য অনুকূল পরিবেশ খুঁজতে জাহাঙ্গীরনগরে আসে। যেখানে তারা থাকে, সেখানে কোনো প্রতিকূল পরিবেশের কারণে দীর্ঘ পথ পাড়ি দিয়ে এখানকার অনুকূল পরিবেশ খুঁজে নিয়ে প্রজননের জন্য বাংলাদেশে  আসে তারা।'

'অন্যদিকে, শীতকালে সাধারণত হাঁস জাতীয় পরিযায়ী পাখি জাহাঙ্গীরনগরের জলাশয়গুলোতে বিচরণ করে এবং আশেপাশের এলাকায় ধানক্ষেতগুলোতে খাবার খেয়ে কিছু সময় কাটিয়ে আবার ফিরে যায়।'

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

কিন্তু জাহাঙ্গীরনগরের আশপাশের গ্রামাঞ্চলে আরও অনেক জলাশয় থাকতেও কেন শিক্ষার্থী, শিক্ষক, কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ভিড়ে এই ক্যাম্পাসেই পাখিরা আসে—এমন প্রশ্নের উত্তরে অধ্যাপক সাজেদা জানান, কারণ হলো এখানকার অনুকূল প্রাকৃতিক পরিবেশ।

'আশপাশের গ্রামাঞ্চলের জলাশয়গুলোতে সেই পরমাণ জলজ উদ্ভিদ নেই, যেটা আমাদের এখানে আছে। মূলত এ কারণে পাখিরা জাবিতে আসতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে। আশপাশেও অতিথি পাখি দেখা যায়, যদিও সেটা জাবির তুলনায় সংখ্যায় কম। এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ পাখিদের জন্য অনুকূল হওয়ায় এখানে অতিথি পাখি বেশি,' যোগ করেন অধ্যাপক সাজেদা। 

এছাড়া, জাহাঙ্গীনগরের শিক্ষক, শিক্ষার্থী, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা সবাই এখানকার প্রাকৃতিক পরিবেশ এবং অতিথি পাখির স্বাধীন বিচরণ নিয়ে যথেষ্ট সচেতন। পাখিদের নিরাপত্তা রয়েছে এখানে। 

অধ্যাপক ড. সাজেদা বেগমের সঙ্গে সহমত পোষণ করেন জাবির প্রাণিবিদ্যা বিভাগের আরেক অধ্যাপক ও বন্যপ্রাণী পরিবেশবিদ্যা ব্যবস্থাপনা এবং সংরক্ষণবিষয়ক গবেষক ড. মো. কামরুল হাসান। 

তিনি বলেন, 'আশেপাশের জলাশয়গুলোতে নিরাপত্তার অভাব রয়েছে। তাই পাখিরা সেখানে যেতে স্বাচ্ছন্দ্যবোধ করে না।'

মূলত বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষ ও শিক্ষার্থীদের সচেতনতার কারণেই জাহাঙ্গীরনগর হয়ে উঠেছে অতিথি পাখিদের শীত ও গ্রীষ্মকালীন নিরাপদ আশ্রয়।

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

প্রশাসনসূত্রে জানা যায়, ছোট-বড় মিলিয়ে বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে লেক রয়েছে অন্তত ২৬টি। তবে এরমধ্যে মাত্র ৪টি লেকে পাখি আসে। কারণ লেক ৪টি লিজমুক্ত। ফলে মাছচাষের জন্য কীটনাশক বা সারের ব্যবহার না হওয়ায় এগুলোতে প্রাকৃতিকভাবেই পাখিদের খাবার জন্মে। 

অধ্যাপক হাসান জানান, জাহাঙ্গীরনগরে আসা পাখিগুলোর ৯৭ থেকে ৯৮ শতাংশই লোকাল মাইগ্রেটরি বা দেশীয় অতিথি পাখি; এরমধ্যে ছোট সরালি বা পাতি সরালি অন্যতম। দেশের হাওড় অঞ্চল থেকে শীতের শুরুতেই এই পাখি জাহাঙ্গীরনগরে আসে। 

এছাড়া এর সঙ্গে কিছু বড় সরালিও আসে; এরা মূলত বিদেশি অতিথি। ভারত, চীন, মঙ্গোলিয়া ও নেপালের হিমালয় বেসিন থেকে আসে এরা। শীতকালীন তুষারপাতের সঙ্গে মানিয়ে নিতে না পেরে আশ্রয় খোঁজে জাহাঙ্গীরনগরে। এদের সঙ্গে আসে আরও কিছু দুর্লভ পাখি; সংখ্যায় এরা খুবই কম। এই পাখিগুলো আসে সাইবেরিয়া থেকে। তবে এত দূরের পথ পাড়ি দিয়ে আসা পাখিগুলো বেশিদিন থাকে না ক্যাম্পাসে।  

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

অধ্যাপক হাসান বলেন, 'এগুলো ক্যাম্পাসে এসে খুব বেশিদিন স্থায়ী হয় না। এরা আসে, ক্যাম্পাসে কিছুদিন বিশ্রাম করে, সাঁতার কাটে, খাওয়া-দাওয়া করে আবার চলে যায়।' 

'আমাদের হাওড় অঞ্চল, বিশেষ করে নদীর মোহনা অঞ্চলে, পদ্মা-যমুনার চর এবং একইসঙ্গে আমাদের ভোলার দিকে যে নিঝুম দ্বীপ এবং চর কুঁকড়িমুকড়ি রয়েছে, ওইদিকটায় এই পাখিগুলো বেশি দেখা যায়,' যোগ করেন তিনি। 

অধ্যাপক সাজেদা জানান, জাহাঙ্গীরনগরে শীতের অতিথি পাখিরা খাওয়া-দাওয়া করে আশেপাশের ধানখেতগুলোতে। তারা দিনের বেলায় ক্যাম্পাসে থাকলেও খাদ্যগ্রহণের সময় ধানক্ষেতে চলে যায়। কিন্তু বিশ্রামের জন্য আবার ঠিকই ফিরে আসে জাহাঙ্গীরনগরের লেকগুলোতে। 

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের পাখিশুমারি থেকে জানা যায়, আশির দশকে যখন জাবি ক্যাম্পাসে প্রথম অতিথি পাখি আসতে শুরু করে, তখন সন্ধান মিলেছিল প্রায় ৯০ প্রজাতির পাখির। এই সংখ্যা ধীরে ধীরে বেড়ে এখন দুশোর ওপরে গিয়ে ঠেকেছে। এরমধ্যে ১২৬ প্রজাতির দেশি ও ৬৯ প্রজাতির অতিথি পাখি রয়েছে। এদের মধ্যে আবার কয়েক প্রজাতির পাখি সবসময়ই দেখা যায় ক্যাম্পাসে। এদের মধ্যে ছোট সরালি অন্যতম। আশির দশক থেকে এই প্রজাতির পাখিই সবচেয়ে বেশি দেখা গেছে ক্যাম্পাসে। বিশ্ববিদ্যালয়ের পুরাতন কলা ভবন সংলগ্ন লেক, রেজিস্ট্রার ভবন সংলগ্ন লেক এবং বোটিনিক্যাল গার্ডেনের পেছনে ওয়াইল্ডলাইফ রেস্কিউ সেন্টারের ভেতরের লেকে এই পাখি দেখা যায়। 

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

কমে যাচ্ছে অতিথি পাখির সংখ্যা 

বিশ্ববিদ্যালয়ের বেশ কয়েকজন বর্তমান ও সাবেক শিক্ষার্থীর সঙ্গে কথা বলে জানা যায়, ক্যাম্পাসের লেকগুলোতে দিন দিন কমে যাচ্ছে অতিথি পাখির সংখ্যা। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের উন্নয়ন পরিকল্পনার (মাস্টারপ্ল্যান) কারণে ক্যাম্পাসের ভেতরে ভারী যানবাহনের চলাচল বেড়েছে। এছাড়া দ্রুতগামী মোটরসাইকেল, ব্যাটারিচালিত রিকশা এবং ব্যক্তিগত গাড়ির চাপে বেড়েছে শব্দ ও পরিবেশ দূষণ। শিক্ষার্থীরা মনে করেন, এসব কারণেই পাখিরা ক্যাম্পাসে আসা কমিয়ে দিয়েছে। 

২০১৩ সালের জানুয়ারিতে জাবির অন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগে ভর্তি হন জেবুন্নেসা খান। আবাসিক শিক্ষার্থী হিসেবে থেকেছেন বিশ্ববিদ্যালয়ের জাহানারা ইমাম হলে। সাবেক এই শিক্ষার্থী জানান, যে শীতে তিনি প্রথম ক্যাম্পাসে এসেছিলেন, সে সময়ের তুলনায় এখন বলতে গেলে অর্ধেক পাখিও নেই ক্যাম্পাসে। 

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

'ক্যাম্পাসে শুরুর দিকে ভোরবেলায় পাখির কিচিরমিচিরে ঘুম ভেঙে যেত। হলের মাঠগুলো থেকে ওপরে তাকালেই সকালে-বিকালে ঝাঁক ঝাঁক পাখি দেখা যেত; কিন্তু এখন সেই দৃশ্য নাকি খুবই বিরল। শুনেছি আগের তুলনায় এখন অর্ধেক পাখিও নেই ক্যাম্পাসে,' বলেন জেবুন্নেসা। 

একই তথ্য দিলেন বিশ্ববিদ্যালয়ের বর্তমান শিক্ষার্থী শিরিন শারমিন। প্রীতিলতা হলের আবাসিক এই শিক্ষার্থী জানান, অন্যান্য শীতে সেপ্টেম্বরের শেষ কিংবা অক্টোবরের শুরু থেকেই পাখি আসতে দেখা যেত। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে নভেম্বরের শেষের দিকেও খুব বেশি পাখি আসতে দেখা যায়নি। 

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগের সদ্য সাবেক শিক্ষার্থী প্রজ্ঞা প্রতীতি রায় মনে করেন ভৌগোলিক ও আবহাওয়াগত তারতম্যের কারণে পাখির সংখ্যা কমে থাকতে পারে। তবে একইসঙ্গে তিনি বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের কিছু অব্যবস্থাপনা কথাও উল্লেখ করেন।

'ক্যাম্পাসে আগের চেয়ে যানবাহন চলাচল অনেক বেড়ে গেছে। বিশেষ করে ব্যাটারির রিকশা, বাইক, প্রাইভেট কার এগুলো থেকে প্রচুর শব্দ দূষণ হয়। পাখি কমে যাওয়ার এটিও একটি কারণ,' বলেন প্রজ্ঞা। 

এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের পাশাপাশি দর্শনার্থী, যারা পাখি দেখতে আসেন এবং যারা ক্যাম্পাসে মোটরচালিত যানবাহন ব্যবহার করেন তাদের সচেতন হওয়ার আহ্বান জানান সাবেক এই শিক্ষার্থী।

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

পাখি কমে যাওয়ার ব্যাপারে অধ্যাপক সাজেদা জানান, পরিবেশগত তারতম্যের কারণেই হয়তো এবার পাখির সংখ্যা কম। এছাড়া পরিযায়ন পথে জাবির চাইতে বেশি অনুকূল পরিবেশ পেয়ে গেলে পাখিরা অবশ্যই সেখানে থাকতে পছন্দ করবে। তবে, এখানে দর্শনার্থীদের অসচেতনতা ও বিশ্ববিদ্যালয়ের উন্নয়ন কার্যক্রমের কিছুটা প্রভাব রয়েছে বলেও মনে করেন এই অধ্যাপক। 

বিশ্ববিদ্যালয়ের লেকগুলোর আশপাশে একাধিক সচেতনতামূলক ব্যানার, ফেস্টুন, সাইনবোর্ড লাগানো থাকলেও গাড়ি নিয়ে অহরহই লেকের পাড়ে চলে আসছেন পাখিপ্রেমী দর্শনার্থীরা। কাগজ, পলিথিন, খাবারের ওয়ান-টাইম প্লাস্টিক প্লেট, গ্লাস, বক্স ফেলে যাচ্ছেন লেকের পাড়েই। এতে দূষিত হচ্ছে ক্যাম্পাসের প্রাকৃতক পরিবেশ। বিশ্ববিদ্যালয়ের পাখি গবেষকরা বলছেন, দর্শনার্থীদের এমন অসচেতনতা ও প্রশাসনের নির্দেশনা না মানার কারণে কমে যাচ্ছে পাখির সংখ্যা; বিরক্ত হয়ে তারা জাহাঙ্গীরনগরে আসা কমিয়ে দিয়েছে। 

ছবি: জান্নাতুল তাজরী তৃষা

অধ্যাপক হাসান বলেন, 'ক্যাম্পাসটি ঢাকার পাশে হওয়াতে স্বাভাবিকভাবেই এখানে দর্শনার্থীরা বেশি আসেন। অনেক সময় বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন চাইলেও তাদেরকে ঠেকানো সম্ভব হয় না। অনেকেই লেকের পাড়ে গাড়ি নিয়ে চলে আসেন। এটি একটি বড় সমস্যা হয়ে দাঁড়িয়েছে।'

আবর্জনায় ছেয়ে আছে পুরাতন কলা ভবনের পাশের লেক পাড়। ছবি: জান্নাতুল তাজরী তৃষা

এ ব্যাপারে দায়িত্বরত কয়েকজন নিরাপত্তাকর্মীর সঙ্গে কথা বললে, তারাও দর্শনার্থীদের বেপরোয়া আচরণে বিরক্তি প্রকাশ করেন। মানুষের ভিড় ও যানবাহনের কারণেই পাখির সংখ্যা কমে যাচ্ছে বলে জানান তারা।

অধ্যাপক হাসান দর্শনার্থীদের সচেতন হওয়ার অনুরোধ জানিয়ে বলেন, "যদি দর্শনার্থীরা একটু সচেতন হন; তারা যদি নির্দেশনা মেনে চলেন, তাহলেই এই সমস্যার সমাধান সম্ভব। অন্যথায়, এ ব্যাপারে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষে একা কাজ করা কঠিন হয়ে উঠবে।"

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

পাখি রক্ষায় প্রশাসনের উদ্যোগ

জানা যায়, ক্যাম্পাসের বন্যপ্রাণী ও প্রাকৃতিক পরিবেশ সংরক্ষণে নানান উদ্যোগ রয়েছে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের। অধ্যাপক সাজেদা জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক সম্পদ সুরক্ষার জন্য একটি কমিটি রয়েছে প্রশাসনের। ক্যাম্পাস ঘিরে যেকোনো ধরনের উন্নয়ন প্রকল্প হাতে নেওয়ার সময়, তা বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাকৃতিক পরিবেশে বিরূপ প্রভাব ফেলতে পারে কিনা, সে বিষয়ে গবেষকদের সঙ্গে আলোচনা করে এই কমিটি। 

এছাড়া, অতিথি পাখি আসার সময় হলে কখন লেকগুলো পরিষ্কার করতে হবে এবং পাখিদের সমাদরে কী ধরনের উদ্যোগ নিতে হবে, সে বিষয়েও এই কমিটি বিশ্ববিদ্যালয়ের বন্যপ্রাণী গবেষকদের পরামর্শ নিয়ে থাকে।

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

পাখি সংরক্ষণ ও সচেতনতা বাড়াতে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আরেকটি ভিন্নধর্মী উদ্যোগ হলো পাখিমেলা। ২০০২ সাল থেকে বিশ্ববিদ্যালয়ের জহির রায়হান অডিটরিয়াম প্রাঙ্গণে এই মেলার আয়োজন করা হয়। শুরুতে বাংলাদেশ বার্ডস ক্লাবের উদ্যোগে মেলার আয়োজন করা হলেও পরবর্তীতে এর সঙ্গে যুক্ত হয় বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা বিভাগ। ২০০৫ সাল থেকে এই মেলার আয়োজন করে আসছে বিভাগটি, আর সেই আয়োজনে সহযোগী হিসেবে থাকছে বাংলাদেশ বার্ড ক্লাবসহ আরও বেশ কয়েকটি স্বেচ্ছাসেবী সংগঠন। 

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

বিভিন্ন বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাণিবিদ্যা ও সংশ্লিষ্ট বিভাগের শিক্ষার্থীরা অংশ নেন এই মেলায়। পাখি সংরক্ষণের প্রয়োজনীয়তা ও উপকারিতার ওপর আলোকপাত করে তৈরি করা হয় নানান ইভেন্ট; বিজয়ীদের মাঝে সনদ ও ক্রেস্টসহ বিতরণ করা হয় পুরস্কার। 

ভিন্নধর্মী এ উদ্যোগ নিয়ে অধ্যাপক হাসান বলেন, 'পাখিমেলার ইভেন্টগুলোয় যারা অংশ নেন, তারা মূলত একটি মেসেজ দিয়ে থাকেন যে, পাখি আমাদের প্রকৃতির একটি অংশ; তাদেরকে সংরক্ষণ করা দরকার। এই সচেতনতা যত বাড়বে, পাখিরা ততই নিরাপদে থাকবে।'

'শুধু আমাদের ক্যাম্পাসের জন্য নয়, সারা বিশ্বের পাখিদের ব্যাপারে সচেতন করতেই এ আয়োজন করা হয়,' যোগ করেন তিনি।

ছবি: রফিকুল ইসলাম রুবেল

পাখিদের ভৌগোলিক কোনো নির্দিষ্ট স্থান নেই। পুরো পৃথিবীটাই পাখির। এক জায়গা থেকে স্বাধীনভাবে আরেক জায়গায় বিচরণ করবে, এটিই তাদের প্রকৃতি। পাখিদের স্বাধীন এই জীবনধারা যেখানে বাধাগ্রস্ত হবে, সেখানে তাদের বিচরণ কমে যাওয়া খুবই স্বাভাবিক ঘটনা। তাই গবেষকরা বলছেন, জনসচেতনতা বৃদ্ধি ছাড়া কোনোভাবেই অতিথি পাখি সংরক্ষণ ও তাদের বিচরণ বাড়ানো সম্ভব নয়। হাজার হাজার মাইল উড়ে এসে যদি পাখিরা নিরাপদে ও স্বাচ্ছন্দ্যে থাকতে না পারে, তাহলে দিন দিন পাখির সংখ্যা কমতেই থাকবে। সুতরাং, জনসচেতনতা বৃদ্ধি এবং সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের যথাযথ পদক্ষেপ এক্ষেত্রে খুবই জরুরি।
 

Related Topics

টপ নিউজ

জাবি / জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় / অতিথি পাখি / পরিযায়ী পাখি

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের সম্পত্তি জব্দ করেছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি
  • ‘পুলিশ যেতে ভয় পেয়েছে’: মুজিবের বাড়ি ভাঙার সময় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্নে ইউনূস
  • দিল্লিতে দাবা টুর্নামেন্ট: রানী হামিদের সঙ্গীকে ঢুকতে দেয়নি ভারত, ঘটনায় ‘বিপর্যস্ত’ ৮০ বছর বয়সি এ দাবাড়ু
  • নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে স্টারমার সম্পর্কে প্রেস সচিবের বক্তব্য
  • পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের অংশ হওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই: ড. ইউনূস
  • মায়ের মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্তি পেলেন সাংবাদিক দম্পতি ফারজানা রুপা-শাকিল আহমেদ

Related News

  • ছাত্রলীগ নেতা শামীম মোল্লা হত্যাকাণ্ড: অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদের ৬ মাসের জন্য বহিষ্কার 
  • নারীর প্রতি সহিংসতার প্রতিবাদে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষক-শিক্ষার্থীদের মৌন মিছিল
  • ২১ মের মধ্যেই জাকসু নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে: জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য
  • জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রী হল থেকে বহিরাগত যুবক আটক, শিক্ষার্থী বহিষ্কার
  • পরীক্ষা দিতে এসে জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে ছাত্রলীগকর্মী আটক

Most Read

1
বাংলাদেশ

সাবেক ভূমিমন্ত্রী সাইফুজ্জামানের সম্পত্তি জব্দ করেছে যুক্তরাজ্যের ন্যাশনাল ক্রাইম এজেন্সি

2
বাংলাদেশ

‘পুলিশ যেতে ভয় পেয়েছে’: মুজিবের বাড়ি ভাঙার সময় প্রশাসনের নিষ্ক্রিয়তার প্রশ্নে ইউনূস

3
খেলা

দিল্লিতে দাবা টুর্নামেন্ট: রানী হামিদের সঙ্গীকে ঢুকতে দেয়নি ভারত, ঘটনায় ‘বিপর্যস্ত’ ৮০ বছর বয়সি এ দাবাড়ু

4
বাংলাদেশ

নেটিজেনদের সমালোচনার মুখে স্টারমার সম্পর্কে প্রেস সচিবের বক্তব্য

5
বাংলাদেশ

পরবর্তী নির্বাচিত সরকারের অংশ হওয়ার কোনো ইচ্ছে নেই: ড. ইউনূস

6
বাংলাদেশ

মায়ের মৃত্যুতে প্যারোলে মুক্তি পেলেন সাংবাদিক দম্পতি ফারজানা রুপা-শাকিল আহমেদ

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab