‘নিয়ম-শৃঙ্খলা’ প্রতিষ্ঠায় অর্ধশতাধিক ছাত্রের চুল কেটে দিলেন স্কুল কমিটির সভাপতি

বিদ্যালয়ের ‘নিয়ম-শৃঙ্খলা’ বজায় রাখতে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি কাঁচি হাতে শ্রেণিকক্ষে ঢুকে অর্ধ-শতাধিক ছাত্রের মাথার চুলে কেটে দিয়েছেন এমন অভিযোগে ক্লাস বর্জনের পর মানববন্ধন করেছে রাজশাহীর পুঠিয়া উপজেলার সরিষাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের একদল শিক্ষার্থী।
শিক্ষার্থীদের অভিযোগ, রোববার দুপুর সাড়ে ১২ টার দিকে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতি এবাদুল হক ৬ষ্ঠ ও সপ্তম শ্রেণির কক্ষে গিয়ে ‘প্রায় সকল ছাত্রের’ মাথার চুল কেটে দেন।
এবাদুল হকও বিষয়টি স্বীকার করে বলেছেন, তিনি চান বিদ্যালয়ে একটা ‘নিয়ম’ থাকুক।
ঘটনায় নিজের ক্ষোভ প্রকাশ করে সালাম হোসেন নামে একজন অভিভাবক বলেন, ‘‘ছেলেরা কোন অপরাধ করলে তারা আমাদের জানাতে পারত। গত সপ্তাহে আমাদের ছেলের চুল কাটানো হয়েছে। প্রধান শিক্ষক ও সভাপতি তারও চুল কেটে দিয়েছে। এখন লজ্জায় সে আর স্কুলে আসতে চাচ্ছে না।”
নাম না প্রকাশের অনুরোধ জানিয়ে বিদ্যালয়ের একজন শিক্ষক বলছেন, এত বেশি ছাত্রের মাথার চুল কেটে দেওয়া উচিৎ হয়নি। এ বিষয়ে ছাত্রদের অভিভাবকদের আগেই অবহিত করা যেত।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক আফসার আলী সরদার বলেন, ‘‘সভাপতি কেন ছাত্রদের মাথার চুল কাটলেন, সেটা আমার বোধগম্য নয়।’’
ছাত্রদের চুল কাটার ব্যাপারে তার সঙ্গে বিদ্যালয় পরিচালনা কমিটির সভাপতির কোনো আলোচনা হয়নি বলেও দাবি তার।
সরিষাবাড়ী উচ্চ বিদ্যালয়ের ব্যবস্থাপনা কমিটির সভাপতি এবাদুল হক বিদ্যালয়ে এই দায়িত্ব পালনের পাশাপাশি উপজেলা বঙ্গবন্ধু সৈনিক লীগের সাধারণ সম্পাদক হিসেবে দায়িত্ব পালন করছেন।
তিনি বলেন, ‘‘আমি গত দু’মাস আগে সভাপতির দায়িত্বে এসেছি। আমি চাই স্কুলের একটা নিয়ম থাকুক।’’
ছাত্রদের মাথার চুল কেটে দেয়ার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, ‘‘এ বিষয়ে সংবাদ করার প্রয়োজন নেই। বিষয়টি আমরা বসে সমঝোতা করবো।’’
এ বিষয়ে পুঠিয়া উপজেলা মাধ্যমিক শিক্ষা কর্মকর্তা জাহিদুল হকের সাথে যোগাযোগ করা হলে তিনি বলেন, “প্রথমে স্কুলের ম্যানেজিং কমিটির সবাই মিলে ঠিক করেন ছাত্রদের স্কুল কেটে দেয়ার বিষয়ে। এই সিদ্ধান্ত মেনে কিছু ছাত্র চুল কেটেছিলো কিছু ছাত্র চুল কাটেনি। পরে ওই ছাত্রদের কথা মতোই তিনি অন্য ছাত্রদের চুল কেটে দেন। এই ঘটনাকে কেন্দ্র কিছু ছাত্ররা ক্লাস বর্জন করে। পরে বিষয়টি মীমাংসা করা হয়।”