‘এই দিনটির জন্যই কঠোর পরিশ্রম করে এসেছি’

নাভিন উল হকের সোজা বলটা মুস্তাফিজুর রহমানের বাম পায়ের মাঝামাঝি অংশে আঘাত করার পরপরই শুরু উৎসবের। কাবুল থেকে কান্দাহার জেনে গেছে, আফগানিস্তান টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে উঠে গেছে প্রথমবারের মতো। মুস্তাফিজ রিভিউ নিলেন বটে, কিন্তু ততক্ষণে সারা বিশ্ব জানে, এই রিভিউ কেবল নেওয়ার জন্যই নেওয়া।
ডিআরএসে তিনটি লাল চিহ্ন ভেসে উঠল, আরেকবার উৎসবে মাতলেন আফগানিস্তানের খেলোয়াড়রা। অস্ট্রেলিয়াকে বিদায় করে তারাই যে লিখেছেন ইতিহাস। বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে খেলবে আফগানিস্তান! যেখানে তাদের প্রতিপক্ষ দক্ষিণ আফ্রিকা।
আফগানিস্তানের ভাগ্য ঝুলে ছিল সুতোর ওপর। শেষ দুই ওভারে বাংলাদেশের প্রয়োজন ছিল ১২ রান। যা নেমে আসে ৯ বলে ৯ রানে। এরপর নামে বৃষ্টি, খেলা চলতে থাকে তার মধ্যেই। নাভিন উল হকের নিচু হয়ে আসা বল তাসকিন আহমেদের ব্যাটের কোনায় লেগে ভেঙে দেয় স্টাম্প। বৃষ্টির জন্য আবার কিছুক্ষণ খেলা বন্ধ থাকে। এবার উইকেটে আসেন মুস্তাফিজুর রহমান। অপর প্রান্তে আফগানিস্তানের গলার কাঁটা হয়ে থাকা লিটন দাস।
মুস্তাফিজ নাভিনের দুই বল ঠেকাতে পারলেই লিটন শেষ ওভারে ব্যাট করার সুযোগ পেতেন। কিন্তু নাভিন সেটি হতে দেবেন কেন! দারুণ এক বল ছুঁড়লেন, যা মুস্তাফিজের পায়ে লাগতেই আম্পায়ারের আঙুল উঁচু। যেন নির্দেশ করলেন আফগানিস্তানের সেমির রাস্তাটাকেই।
২৬ রান দিয়ে ৪ উইকেট শিকার করেছেন আফগান পেসার নাভিন। ম্যাচ শেষে জানালেন, এই দিনটির অপেক্ষাতেই ছিলেন তারা। 'আমরা গত কয়েক বছরে কঠোর পরিশ্রম করেছি। শুধু মাত্র এই দিনটির জন্য। এই স্বপ্ন আমরা অনেক দিন ধরেই দেখে এসেছি।'
অল্প রানের পুঁজি নিয়েও বাংলাদেশকে আটকানোর পরিকল্পনা কী ছিল সেটিও জানালেন ম্যাচ সেরা নাভিন, 'আমরা জানতাম যেহেতু ওদেরও সেমিতে যাওয়ার সুযোগ আছে তাই ওরা চালিয়ে খেলবে। ১২.১ ওভারে লক্ষ্য তাড়া করতে হতো বলে আমাদেরও সুযোগ ছিল উইকেট নেওয়ার। আর আমাদের লক্ষ্যও ছিল উইকেট তুলে নেওয়া। পিচ খুব বেশি রান হওয়ার মতো ছিল না, তাই আমাদের আত্মবিশ্বাস ছিল যে সহজে রান না দিলে আমরা ম্যাচে থাকব।'