ট্রাম্প বললেন কেউ পালায়নি, অথচ আলকাট্রাজ থেকে পালানো তিন বন্দির রহস্য এখনও অজানা!

সানফ্রান্সিস্কো উপসাগরের মাঝখানে দাঁড়িয়ে আছে রহস্য আর ইতিহাসে মোড়া আলকাট্রাজ দ্বীপ। ১৯০৯ সালে এখানে গড়ে তোলা হয় যুক্তরাষ্ট্রের সবচেয়ে কঠোর নিরাপত্তাবেষ্টিত সামরিক কারাগার, যার নাম রাখা হয় দ্বীপের নামেই—আলকাট্রাজ।
একসময়কার ভয়ংকর ও দুর্ভেদ্য এই কারাগারে এখন আর কোনো বন্দি রাখা হয় না। তবে মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প চান, এই জায়গায় আবারও 'জীবন' ফিরিয়ে আনতে। ট্রাম্প আবার এ কারাগারটি চালুর নির্দেশ দিয়েছেন। তার ভাষ্যে, 'আলকাট্রাজ থেকে কখনও কেউ পালাতে পারেনি।'
কিন্তু আসলেই কি তাই? ইতিহাস কী বলে?
আলকাট্রাজ সত্যিই দুর্ভেদ্য কিনা, সেই প্রশ্ন উঠলেই ফিরে যেতে হয় ১৯৬২ সালের ১১ জুন—ইতিহাসের এক দুঃসাহসিক রাতে। সেদিন রাতে ঘটে যায় যুক্তরাষ্ট্রের কারাগার ইতিহাসের সবচেয়ে আলোচিত ও রহস্যঘেরা ঘটনা। কিছুটা বুদ্ধি, অনেকখানি সাহস আর প্রায় ৫০টি রেইনকোটের সাহায্যে তিন বন্দি পাড়ি দেন অসম্ভব এক পথ। সেই তিন বন্দি ছিলেন ফ্র্যাঙ্ক মরিস এবং দুই ভাই ক্ল্যারেন্স ও জন অ্যাংলিন। তাদের বয়স তখন তিরিশের কোঠায়।

নিজেদের কারাকক্ষের পেছনের দেয়াল গোপনে খুঁড়ে, বাতাস চলাচলের সরু পাইপ বেয়ে, ছাদ ডিঙিয়ে তারা পৌঁছে যান সাগরের হিমশীতল পানিতে। রেইনকোট কেটে জোড়া লাগিয়ে বানান ভেলা, যেটা ছিল তাদের মুক্তির শেষ আশা।
এই তিনজনের আর কোনো খোঁজ কখনও পাওয়া যায়নি। তবে তাদের কিছু আত্মীয় এবং 'জেল পালানো' বিষয়ক সাহিত্যপ্রেমীদের অনেকে বিশ্বাস করেন, তারা বেঁচে ছিলেন আড়ালে—আইনের চোখ ফাঁকি দিয়ে।
চার দশক ধরে এই রহস্য সমাধানের চেষ্টা করেছেন অবসরপ্রাপ্ত ইউএস মার্শাল আর্ট রডরিক। তার ভাষ্যে, 'এই কেস কখনও ভোলা যায় না।'
পালানোই যাদের অভ্যাস
ফ্র্যাঙ্ক আর অ্যাংলিন ভাইদের কারাবরণের কারণ তাদের অন্য কোথাও বন্দি রাখা যেত না। একের পর এক কারাগার থেকে পালানোর চেষ্টা কিংবা সফলভাবে পালিয়ে যাওয়া, সবই তারা করে দেখিয়েছিলেন।
অ্যাংলিন ভাইদের ভাগনে ডেভিড উইডনার যিনি কিনা তাদের জেল পালানো ঘটনা নিয়ে বইও লিখেছেন, বলেন, 'তারা বন্দি থাকতে পছন্দ করত না।'

'তারা দরিদ্র হয়েও ভালো জিনিস চাইতো, কিন্তু জানত না কীভাবে পাবে—তাই চুরি করত', যোগ করেন তিনি।
অ্যাংলিন ভাইদের সর্বশেষ চুরির ঘটনা ছিল আলাবামার কলম্বিয়ার একটি ছোট ব্যাংক থেকে। ওহাইওতে পালানোর সময় ধরা পড়েন তারা, সাথে ছিলেন বড় ভাই আলফ্রেডও। এরপর পান দীর্ঘ ১৫ বছরের সাজা।
আলকাট্রাজে আসার পূর্বে তাদের নেয়া হয়েছিলো লেভেনওর্থের আরেক জেলে। সেখানে ক্ল্যারেন্স আর জন দুটো বিশাল পাউরুটির বাক্সে লুকিয়ে পালানোর চেষ্টা করলেও ধরা পড়ে যায়। এই কারণেই পরে আরও কড়া নজরদারিতে রাখার জন্য আলকাট্রাজে পাঠানো হয় দুই ভাইকে। রাখা হয় আরেক জেল পালানোর ওস্তাদ ফ্র্যাঙ্ক মরিসের পাশে। তিনজনের একত্রে থাকা মানেই ছিল, আরেকটি পালানোর গল্প শুধুই সময়ের অপেক্ষা।
দুর্বল কারাগার, দুর্দান্ত পরিকল্পনা
১৯৬২ সালে তিন বন্দি ছয় মাস ধরে পালানোর ছক কষছিল। অন্য বন্দিদের রাবারের রেইনকোট চুরি করে একসাথে জোড়াতালি দিয়ে একটি ভেলা বানায় তারা। জোড়া দেওয়ার কাজটি করা হয় গরম বাষ্পের পাইপের (স্টিম পাইপ) বাতাস দিয়ে। ভেলাটি আকারে ৬ বাই ১৪ ফুট।
কারাগারের দেওয়া ভ্যাকুয়াম ক্লিনারের মোটর দিয়ে বানানো হয়েছিল একটি বৈদ্যুতিক ড্রিল। চামচ দিয়ে তৈরি করা হয়েছিল স্ক্রু ড্রাইভার। একটি বাদ্যযন্ত্র কনসার্টিনাকে তারা বাতাস ঢোকানোর বেলো হিসেবে ব্যবহার করে। ফ্র্যাঙ্ক মরিস এটা কিনেছিলেন নিজের কারাগারের তহবিল থেকে।
এই কাজটি ছিল সময়সাপেক্ষ, কারণ হাতে তৈরি যন্ত্র দিয়ে একসঙ্গে বেশি অংশ ভাঙা সম্ভব হতো না। পাশাপাশি ড্রিল চালানোর শব্দ যাতে বাইরে শোনা না যায়, সেটাও ছিল বড় চিন্তার বিষয়। শব্দ ঢাকতে মরিস মাঝে মাঝে জোরে গান গাইতেন বা বাদ্যযন্ত্র বাজাতেন। দিনের বেলায় ভেন্টিলেটরের মুখ ঢেকে রাখতেন স্যুটকেস, কার্ডবোর্ড কিংবা গিটার দিয়ে, যেন কেউ কিছু বুঝতে না পারে।
সবচেয়ে বুদ্ধির কাজ ছিল নকল মাথা বানানো। তারা সিমেন্ট, তুলা, চুল, আঠা আর রঙ দিয়ে এটি তৈরি করেন। কম্বল দিয়ে গলা অবধি ঢাকা মাথাগুলো দূর থেকে দেখতে আসল ঘুমন্ত মানুষের মতো লাগত। রাতে পাহারাদাররা মনে করেছিল তারা বিছানায় শুয়ে আছেন। আর এভাবেই শুরু হয় ইতিহাসের সবচেয়ে রহস্যময় পালানোর গল্প।
উইডনার বলেন, 'আমার মা আর ভাইবোনেরা সবসময় বলত, ওরা ছিল আধুনিক যুগের ম্যাকগাইভার।' টিভি সিরিজের সেই চরিত্রের মতোই, যারা হাতের জিনিস দিয়েই সমস্যার সমাধান করত।
পালানোর তিন দিন পর, এফবিআই রিপোর্টে স্পেশাল এজেন্ট ফ্রাঙ্ক এল. প্রাইস লিখেন, 'যেভাবে ওরা পালানোর প্রস্তুতি নিয়েছে, সেটা অসাধারণ।'
তদন্তকারীরা মনে করেন, কারাগারের দুরবস্থাও ওদের জন্য সহায়ক ছিল। ওয়ার্ডেন ওলিন ব্ল্যাকওয়েল জানিয়েছিলেন, আলকাট্রাজ মেরামত করতে ৫০ লাখ ডলার লাগতো—আজকের হিসেবে প্রায় ৫৩ মিলিয়ন। তাই কোনো রকম সংস্কারের পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছিলনা। পর্যাপ্ত কর্মীও ছিল না।
এই সুযোগেই বন্দিরা কৌশলে সপ্তাহ ধরে কারাগারের দেওয়ালে ছিদ্র কর। গর্ত যেন চোখে না পড়ে, সেজন্য রং করা কার্ডবোর্ড দিয়ে তা ঢেকে রাখতেন। এক পর্যায়ে তারা একটি ইউটিলিটি শাফটের পাইপ বেয়ে উঠে ভেন্টিলেশনের কভার খুলে ফেলেন। এরপর একটি চিমনির মতো পাইপ দিয়ে তারা ছাদের দিকে নামতে সক্ষম হন এবং পরে একে একে কয়েকটি বেড়া টপকে পালিয়ে যান।
তারা ম্যাগাজিনের ছবি দেখে ভেলার ডিজাইন করেছিলেন। সেই ভেলা নিয়েই তারা অন্ধকারে হিমশীতল জলে পাড়ি জমিয়ে চিরতরে অদৃশ্য হয়ে যান।
তল্লাশি: নৌকা, হেলিকপ্টার আর একটা পোস্টকার্ড
জেল পালানোর ঘণ্টা খানেকের মধ্যেই তদন্ত শুরু হয়। উপকূলরক্ষীবাহিনী সামরিক নৌকা ও হেলিকপ্টার নিয়ে তল্লাশিতে নামে, ঘিরে ফেলা হয় আলকাট্রাজ।
ওয়ারডেন ব্ল্যাকওয়েল ভাবলেন, হয়ত বন্দিরা পালাতে পারেনি। তাই পুরো আলকাট্রাজ খুঁজে দেখার নির্দেশ দেন।
আলকাট্রাজের ঠিক উত্তর দিকে অবস্থিত অ্যাঞ্জেল আইল্যান্ডে অভিযান চালান ১০০ সেনা ও ৩৫ সামরিক পুলিশ। তাদের ধারণা ছিল, ভেলার সাহায্যে ওই তিনজন বন্দি ওই দ্বীপে পৌঁছাতে পারেন। তবে তল্লাশি চালিয়েও সেখানে তাদের কোনো চিহ্ন মেলেনি।
'অবশ্যই, এটা তখনকার সময়ের সবচেয়ে আলোচিত সংবাদ হয়ে উঠেছিল,' এ ঘটনার কয়েক বছর পর বলেছিলেন অবসরপ্রাপ্ত এফবিআই এজেন্ট জন অ্যারেন্ড। 'তখন কেবল নিউজ ছিল না, কিন্তু সব সংবাদমাধ্যম এই ঘটনাটি নিয়ে দারুণ উৎসাহী হয়ে উঠেছিল।'
এরপর প্রথম সম্ভাব্য প্রমাণ মেলে। তবে তা উপকূলে ভেসে আসেনি বরং পৌঁছেছিল ডাকযোগে। একটি পোস্টকার্ডে লেখা ছিল: 'হা হা, আমরা পালাতে পেরেছি।' সেটা পাঠানো হয়েছিল 'ওয়ার্ডেন, আলকাট্রাজ প্রিজন'-এর নামে। স্বাক্ষর: ফ্রাঙ্ক, জিম, ক্ল্যারেন্স—তিনটি আলাদা হাতের লেখা।

এফবিআই বিশেষজ্ঞ দিয়ে চিঠিটি যাচাই করে। তারা জানায়, 'ক্ল্যারেন্স'-এর সইটি সম্ভবত নকল। আর বাকিদের হাতে লেখা তুলনা করার মতো নমুনা ছিল না। ফলে, এফবিআই সিদ্ধান্ত নেয়—এই চিঠি আসলে মিডিয়ার শোরগোলে বানানো ভুয়া চিঠি।
কয়েক দিনের মাথায়, তল্লাশির সময় সমুদ্রে মেলে ভাঙা এক টুকরো বৈঠা, আর লাইফ জ্যাকেটের একটি অংশ। আরও মেলে একটি সিল করা প্যাকেট, যেটি ছিল ভেলার মতো একই রাবার উপাদানে তৈরি। ভেতরে ছিল অ্যাংলিনদের পারিবারিক ছবি, ঠিকানা এবং এক আইনজীবীর যোগাযোগ ঠিকানা যিনি আগে আলকাট্রাজের কয়েক বন্দির পক্ষে লড়েছিলেন।
এফবিআই সেই আইনজীবীর সঙ্গে কথা বলে। তবে তিনি কখনও ফ্রাঙ্ক, জন বা ক্লারেন্সের কাছ থেকে কিছু শুনেননি। সরকারি নথিগুলোতে এমন অনেক মানুষের যোগাযোগ পাওয়া গেছে, যাঁরা দাবি করেছেন যে তাঁরা বন্দীদের দেখতে পেয়েছেন। কিন্তু কোনটিই প্রমাণ করা যায়নি।
এমনকি তৎকালীন পরিচালক জে. এডগার হুভার নিজেই বলেন, সব তথ্য গণমাধ্যমকে না জানাতে। ১৩ জুন এক বিবৃতিতে তিনি লেখেন, 'আমাদের কাজ বন্দিদের খোঁজা, সাংবাদিকদের খুশি করা নয়।'
বন্দিদের পরিবার এখনও বিশ্বাস করে, এফবিআই সব কিছু জানায়নি। 'ওরা জানে, কিন্তু বলছে না—কারণ ওদের খুঁজে পায়নি,' বলেন উইডনার।
'তাদেরকে মৃত বলে ধরে নেয়া হয়েছে'
১৯৭৭ সালে চারজন এফবিআই কর্মকর্তা হঠাৎ করেই হাজির হয়েছিল ক্ল্যারেন্স ও জন অ্যাংলিনের ভাগনে উইডনারের বাড়িতে। তারা জানতে চেয়েছিল, উইডনারের মা মেরি তার নিখোঁজ দুই ভাই কোথায় আছে, সে সম্পর্কে কিছু জানেন কি না। মেরি সোজাসাপ্টা উত্তর দিয়েছিলেন, 'না, আমি কিছু জানি না। আর জানলেও তোমাদের বলতাম না।'
এর ঠিক দুই বছর পর, ১৯৭৯ সালে, এফবিআই এই মামলার তদন্ত বন্ধ করে দেয়। তারা বলেছিল, এই তিনজন পালাতে পেরেছে এমন কোনো প্রমাণ মেলেনি। দাপ্তরিক নথিতে বলা হয়েছিল, 'তাদের মৃত বলে ধরে নেওয়া হয়েছে।'
তবে মার্কিন মার্শাল সার্ভিস আজও এই খোঁজ বন্ধ করেনি। এখনও তাদের ওয়েবসাইটে তিনজনের 'ওয়ান্টেড' পোস্টার ঝুলছে। এমনকি, তারা কম্পিউটারে এঁকেও দেখিয়েছে, বয়স বাড়লে তিনজন কেমন দেখতে হতো। অবসরে যাওয়া মার্শাল অফিসার আর্ট রডরিক বলেছিলেন, 'এখনো মাঝেমধ্যে কিছু তথ্য আসে, যেগুলো তদন্তযোগ্য।'
২০০৩ সালে রিয়েলিটি টিভির একটি শো এই মামলাকে আবার আলোচনায় আনে। ডিসকভারি চ্যানেলের 'মিথবাস্টার্স' অনুষ্ঠান পরীক্ষা করে দেখায়, সেই একই উপকরণ ব্যবহার করে এবং একই পথ ধরে তারা সত্যিই আলকাট্রাজ থেকে পালাতে পারে কি না। তারা একটি রেইনকোট দিয়ে বানানো ভেলা চালিয়ে নিরাপদে ডাঙায় পৌঁছায়। তাদের মতে, এই তিনজন বেঁচে থাকার সম্ভাবনা 'পুরোপুরি সম্ভব'।
ডাচ বিজ্ঞানীরাও পরীক্ষা চালিয়ে দেখিয়েছেন, যদি তারা রাত ১১টার মধ্যে রওনা দেন, তবে গোল্ডেন গেট ব্রিজের কাছাকাছি পৌঁছানো সম্ভব। আর ভেলার কোনো অংশ যদি পানিতে পড়ে থাকত, তা হলে স্রোত সেটিকে ফের এনে ফেলত অ্যাঞ্জেল দ্বীপের দিকে।
অ্যাংলিন পরিবার একবার দাবি করেছিল, ১৯৭৫ সালে ব্রাজিলে তোলা একটি ছবিতে ক্লারেন্স ও জনকে দেখা গেছে। এরপর ২০১৩ সালে এফবিআই একটি চিঠি পায়, যেখানে দাবি করা হয় এটি জন অ্যাংলিনের লেখা। চিঠিতে লেখা, সে এখনও বেঁচে আছে এবং যদি সরকার ক্যান্সারের চিকিৎসা ও এক বছরের জেল সাজা নিশ্চিত করে, তবে সে আত্মসমর্পণ করতে রাজি। তবে এসব দাবির কোনটিই মার্কিন কর্তৃপক্ষ যাচাই করতে পারেনি।
তবে এখন যারা বিশ্বাস করেন বন্দিরা পালাতে পেরেছিল, তারাও মানেন যে, তিনজনের বয়স এখন ৯০-এর ওপরে হতো, কাজেই তাদের বেঁচে থাকার বা খুঁজে পাওয়ার সম্ভাবনা খুবই কম। 'ওরা হয়ত সেদিন সান ফ্রান্সিসকোর উপসাগরে ডুবে গেছে, আর না হয় এখন আর বেঁচে নেই,' বলেন মার্শাল কর্মকর্তা রডরিক।

১৯৬২ সালের সেই দুঃসাহসিক পালানোর ঘটনার পর আলকাট্রাজের ভবিষ্যৎ নিয়ে বড় প্রশ্ন ওঠে। এই ঘটনাই পরে হয়ে ওঠে ১৯৭৯ সালে নির্মিত ক্লিন্ট ইস্টউডের বিখ্যাত সিনেমা 'এস্কেপ ফ্রম আলকাট্রাজ'-এর মূল অনুপ্রেরণা। এই ঘটনার পর তৎকালীন অ্যাটর্নি জেনারেল রবার্ট এফ. কেনেডি বুঝতে পারেন, এই জেলখানা আর কাজে আসবে না। তিনি সাংবাদিকদের বলেন, এটি বন্ধ করে দেওয়া হবে।
একটি এফবিআই প্রতিবেদনে লেখা আছে, কেনেডি বিশ্বাস করতেন না যে আলকাট্রাজকে ভয় দেখানোর জন্য চালু রাখা দরকার। কারণ, একে এটি ছিল অনেক ব্যয়সাপেক্ষ আর অন্যান্য কারাগার কম খরচে একই কাজ করতে পারে।
শেষ পর্যন্ত, ১৯৬৩ সালে আলকাট্রাজের দরজা চিরতরে বন্ধ হয়ে যায়। এরপর বেশ কিছু বছর পর, ১৯৭২ সালে, এটি জাদুঘরে পরিণত হয়। এখন এটি আমেরিকার সবচেয়ে জনপ্রিয় পর্যটনকেন্দ্রগুলোর একটি। প্রতিবছর এক মিলিয়নের বেশি মানুষ এটি দেখতে আসে।
কিন্তু প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প আলকাট্রাজকে আরেকভাবে দেখেন। তিনি মনে করেন, এটি শক্তি আর আইনশৃঙ্খলার প্রতীক। তার মতে, আমেরিকার এখন এমন কিছুই দরকার। তাই তিনি এটিকে নতুনভাবে ফিরিয়ে আনার ইচ্ছা প্রকাশ করেন।
অন্যদিকে, অ্যাংলিন ভাইদের ভাগনে উইডনার অনেকবার সেখানে গিয়েছেন। তিনি রাজনৈতিক বিষয়ে মন্তব্য করেননি, তবে মনে করেন এই জাদুঘরটি বন্ধ করা উচিত নয়। তিনি বলেন, 'আমি মনে করিনা এটা ভালো প্রস্তাব। কেননা এতে অনেক ইতিহাস হারিয়ে যাবে।'
অনুবাদ: নাফিসা ইসলাম মেঘা