কাল কেমন করবেন নেইমার, রোনালদোরা?

ক্রিশ্চিয়ানো রোনালদো নাকি লিওনেল মেসি, কে সেরা? গত কয়েক বছরের আলোচনা এটা। যা অমিমাংসিতই থেকে গেছে। সেরার প্রশ্নে নাম না এলেও আরও কয়েকজন ফুটবলার আছেন, যাদের নাম সবার মুখে মুখে। এদের মধ্যে নেইমার, কিলিয়ান এমবাপ্পে, রবার্ট লেভানডোভস্কি অন্যতম।
এই পাঁচ তারকার দলই কাতার বিশ্বকাপে অংশ নিয়েছে। তিনজনের দলের ম্যাচও হয়ে গেছে। রোনালদোর দল পর্তুগাল ও নেইমারের দল ব্রাজিল কাল মাঠে নামছে। বাংলাদেশ সময় কাল রাত ১০টায় স্টেডিয়াম ৯৭৪-এ ঘানার মুখোমুখি হবে পর্তুগাল। পরের ম্যাচে রাত ১টায় লুসাইল স্টেডিয়ামে সার্বিয়ার বিপক্ষে লড়বে ব্রাজিল। রোনালদো, নেইমাররা কেমন করবেন; এই ম্যাচের আগে অনেকেই সেই হিসাব মেলাচ্ছেন।
এর আগে ম্যাচ খেলা তিন তারকার পারফরম্যান্সে চোখ রাখা যাক। আর্জেন্টিনার নেতৃত্বভার মেসির কাঁধে, তাকে ঘিরেই দলের পরিকল্পনা আবর্তিত হয়। সময়ের অন্যতম সেরা এই ফুটবলারের কাছ থেকে সৌদি আরবের বিপক্ষে জাদুকরী পারফরম্যান্সের আশায় ছিলেন সবাই। তেমন না হলেও হতাশ করেননি আর্জেন্টাইন এই ফুটবল জাদুকর। গোলমুখে চারটি শট নেওয়াসহ পেনাল্টি থেকে একটি গোল করেছেন তিনি।
অবশ্য জোড়া গোলের মালিক হতে পারতেন মেসি। কিন্তু তারকা এই ফরোয়ার্ডে করা প্রথম গোলটি অফসাইডের কারণে বাতিল হয়ে যায়। এর বাইরে বাকি দুই শটের একটি ছিল দুর্বল, যা সহজেই তালুবন্দি করেন সৌদি আরবের গোলরক্ষক। বাকি শটটি দক্ষতার সঙ্গে ফেরায় সৌদির রক্ষণভাগ।
পরে রাতে মাঠে নামেন লেভানডোভস্কি। মেক্সিকোর বিপক্ষে ম্যাচে সুবিধা করতে পারেননি পোলিশ অধিনায়ক। উল্টো তার কারণে দল হারিয়েছে পয়েন্ট, ড্র নিয়েই সন্তুষ্ট থাকতে হয়েছে তাদের। মেক্সিকোর ডি-বক্সে ফাউলের শিকার হন লেভা, ভিএআর- এর সাহায্যে পেনাল্টি দেন রেফারি। কিন্তু লেভানডোভস্কির নেওয়া শট ঝাঁপিয়ে ফিরিয়ে দেন মেক্সিকোর গোলরক্ষক গুইলের্মো ওচোয়া।
রাত একটায় অস্ট্রেলিয়ার মুখোমখি হয় এমবাপ্পের দেশ ফ্রান্স। শুরুতেই পিছিয়েই পড়ে বর্তমান চ্যাম্পিয়নরা। সেখান থেকে দলকে পথ দেখিয়ে বড় জয়ের পথে নিয়ে যান এমবাপ্পে। নিজে একটি এবং সতীর্থকে দিয়ে একটি গোল করানো পিএসজির এই তারকা স্ট্রাইকার তার গতিময় ফুটবল দিয়ে ম্যাচে অনেকগুলো সম্ভাবনা তৈরি করেন।
এবার অপেক্ষা রোনালদো ও নেইমারের ঝলক দেখার। রোনালদোর বিশ্বকাপ মিশন এমন সময়ে শুরু হচ্ছে, যখন তিনি মানসিকভাবে চরম বিক্ষিপ্ত অবস্থায়। মঙ্গলবার রাতেই চুক্তি শেষ করে রোনালদো ছেড়ে দিয়েছে ম্যানচেস্টার ইউনাইটেড। দুই পক্ষের সমঝোতার ভিত্তিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে বলে ক্লাবের পক্ষ থেকে জানানো হলেও রোনালদোর জন্য এটা কঠিন সিদ্ধান্ত, তা বলাই বাহুল্য।
যদিও ইউনাইটেডের প্রতি ভালোবাসার কথা জানিয়ে নতুন চ্যালেঞ্জ গ্রহণ করার কথা জানিয়েছেন পর্তুগিজ এই তারকা। গত মৌসুমের শুরুতে জুভেন্টাস থেকে ইউনাইটেডে ফেরা রোনালদো এই মৌসুম পর্যন্ত দলের সর্বোচ্চ গোল স্কোরার ছিলেন। ফর্ম নিয়ে কথা উঠলেও দারুণ পারফরম্যান্সে তা তুড়ি মেরে উড়িয়ে দিয়েছেন তিনি। তাই তার ভালো খেলা নিয়ে সংশয় নেই। এ ছাড়া ঘানার বিপক্ষে সুখস্মৃতিও আছে রোনালদোর। ২০১৪ বিশ্বকাপের গ্রুপ পর্বে ঘানার বিপক্ষে পর্তুগালের ২-১ গোলের জয়ে একটি গোল করেন তিনি। এবারের পর্তুগাল রোনালদো নির্ভর না হলেও তার কাছ থেকে বিশেষ চাওয়াই থাকবে দলের।
পর্তুগালের মতো ব্রাজিলও নেইমার নির্ভর দল নয়। তারকায় ঠাসা দল নিয়ে এবার হেক্সা মিশনে গেছে ব্রাজিল। এই মিশনে নেইমার অবশ্যই গুরুত্বপূর্ণ অংশ, তবে প্রধান নয়। এটা পিএসজি তারকার জন্য শাপেবরই হওয়ার কথা। কারণ ফরাসী ক্লাবটিতে খারাপ সময় কাটিয়ে খুব বেশিদিন আগে ছন্দে ফেরেননি তিনি। এর মধ্যেই শিরোপা জয়ের মিশনে চাপের বোঝা মাথায় চাপলে সেটা নেতিবাচক হতে পারতো। তেমন না হওয়ায় চাপহীন থেকেই সার্বিয়ার বিপক্ষে মাঠে নামতে পারবেন তিনি।