‘এ’ দলের হয়ে খেলে স্বস্তিতে ফিরলেন মুশফিক

সবার আগে গিয়ে সবার পরে অনুশীলন শেষ করেন মুশফিকুর রহিম। মিরপুরে দলের অনুশীলন থাক আর না থাক, মাঠে গেলে যাকে পাওয়ার সম্ভাবনা সবচেয়ে বেশি; তিনি মুশফিক। নেটে সবচেয়ে বেশি সময় কাটান ডানহাতি এই ব্যাটসম্যান। তার নিবেদন, তাড়না উদাহরণযোগ্য। এসব ব্যাপারই তাকে দলের সেরা ব্যাটসম্যান বানিয়ে তুলেছে। সব সময়ই তার ব্যাটে রানের ছোঁয়া থাকে।
অথচ সেই মুশফিকই নিজের ছায়া হয়ে আছেন। জিম্বাবুয়ে সফরে একমাত্র টেস্ট খেলে পারিবারিক কারণে দেশে ফিরে আসেন অভিজ্ঞ এই ক্রিকেটার। ওই ম্যাচের প্রথম ইনিংসে ১১ রান করেন তিনি। এরপর দেশে ফিরলেও ছিলেন না অস্ট্রেলিয়া সিরিজে। নিউজিল্যান্ডের বিপক্ষে দলে ফেরা মুশফিকের ভালো সময় যায়নি।
কিউইদের বিপক্ষে পাঁচ টি-টোয়েন্টিতে মুশফিকের রান মাত্র ৩৯, দুই ইনিংসে রানের খাতাই খুলতে পারেননি তিনি। ব্যাট হাতে এমন অচেনা চেহারায় যেন নিজেকে মেনে নিতে পারছিলেন না উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান। দ্রুতই শুরু করেন অনুশীলন। দ্বারস্থ হন শৈশবের কোচ নাজমুল আবেদীন ফাহিমের, করেন কয়েক সেশন অনুশীলন।
সঙ্গে ম্যাচ অনুশীলনে নিজেকে সম্পৃক্ত রাখতে এবং রানের ধারায় ফিরতে বাংলাদেশ 'এ' দলের হয়ে হাই পারফরম্যান্স ইউনিটের (এইচপি) বিপক্ষে দুটি ওয়ানডে ম্যাচ খেলার সিদ্ধান্ত নেন মুশফিক। টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের আগে ম্যাচ পরিস্থিতিতে নিজেকে ঝালিয়ে নিতে তার এই সিদ্ধান্ত ছিল।
এই পরিকল্পনায় আপাতত সফল উইকেটরক্ষক এই ব্যাটসম্যান। মঙ্গলবার চট্টগ্রামের জহুর আহমেদ চৌধুরী স্টেডিয়ামে এইচপির বিপক্ষে ম্যাচ ছিল 'এ' দলের। ৫০ ওভারে এই ম্যাচ দিয়ে রানে ফিরেছেন মুশফিক, খেলেছেন ৭০ রানের হার না মানা এক ইনিংস। ইমরুল কায়েস করেছেন ৬০ রান। এই দুই অভিজ্ঞ ক্রিকেটারের ব্যাটে তরুণ ক্রিকেটারদের নিয়ে গড়া এইচপিকে ৬ উইকেটে হারিয়েছে 'এ' দল।
কেবল মুশফিকই নন, বাংলাদেশের বিশ্বকাপ স্কোয়াডে থাকা কয়েকজন ক্রিকেটার এই ম্যাচে খেলেছেন। শামীম হোসেন পাটোয়ারী এবং রিজার্ভ হিসেবে থাকা আমিনুল ইসলাম বিপ্লব ও রুবেল হোসেন খেলেছেন ম্যাচটি। শামীম হোসেন ও বিপ্লব ৮ রান করে করেন। বল হাতে শামীম ও আমিনুল একটি করে উইকেট নেন। ৩২ রান খরচায় ২টি উইকেট নেন অভিজ্ঞ পেসার রুবেল।
আগে ব্যাটিং করতে নেমে যুব বিশ্বকাপজয়ী দলের ওপেনার তানজিদ হাসানের তামিমের ৮১ ও শাহাদাত হোসেনের ৫১ রানের সুবাদে ৪৮.৫ ওভারে সব কটি উইকেট হারিয়ে ২৪৭ রান তোলে এইচপি। তানজিদ ৯৩ বলে ৬টি চার ও ২টি ছক্কায় তার ইনিংসটি সাজান। শাহদাত ৬৪ বলে একটি করে চার ও ছক্কায় ৫১ রান করেন। এ ছাড়া মাহমুদুল হাসানের ব্যাট থেকে আসে ৩৮ রান। 'এ' দলের মোসাদ্দেক হোসেন চারটি উইকেট নেন। রুবেল ও শহিদুল দুটি করে উইকেট পান।
জবাবে 'এ' দলের প্রায় সব ব্যাটসম্যানই রানের দেখা পেয়েছেন। তবে বড় ইনিংস খেলেন ইমরুল ও মুশফিক। ৮১ বলে ৫টি চারে ৬০ রান করেন ইমরুল। মুশফিক ৯১ বলে ৬টি চার ও একটি ছক্কায় ৭০ রানে অপরাজিত থাকেন। এ ছাড়া মুমিনুল হক ২৯, নাজমুল হোসেন শান্ত ২৭ ও মোসাদ্দেক হোসেন সৈকত ২৪ রান করেন। মোহাম্মদ মিঠুন ২৮ রানে অপরাজিত থাকেন। এইচপির সুমন খান দুটি উইকেট নেন। একটি করে উইকেট পান বিপ্লব ও শামীম।