Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Wednesday
June 04, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
WEDNESDAY, JUNE 04, 2025
১৮৫১ সাল, মসলিনের তুলা: ১৭৫ হাত সুতার ওজন এক রত্তি!

ইজেল

আমিল বতুল
19 November, 2024, 12:05 pm
Last modified: 19 November, 2024, 12:06 pm

Related News

  • ঋত্বিক ঘটকের কন্যা: এক অসমাপ্ত আলাপ
  • শোক হতে শ্লোক
  • আমার স্নিকার্স
  • রং চলিষ্ণু, রঙ্গিলা প্রেমিক...
  • কলম্বো সাহিব কা মকবারা–ফিরছে তার আদিরূপে

১৮৫১ সাল, মসলিনের তুলা: ১৭৫ হাত সুতার ওজন এক রত্তি!

এক রত্তি হতো চারটি বার্লি দানা বা একটি লাল কুঁচের বীজের সমান। ১৮৪৬-এ একজন তাঁতি এক গোলা সুতা মেপে দেখেন, প্রতি পাউন্ড তুলা থেকে আড়াই শ মাইলের বেশি সুতা পাওয়া গেছে। আর সাদামাটা তাঁতেই নিখুঁত সৌন্দর্যপূর্ণ উত্তম রুচির মসলিন তৈরি হয়। ইউরোপ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়েও এর সমতুল্য কোনো বস্ত্রই বুনতে পারেনি।
আমিল বতুল
19 November, 2024, 12:05 pm
Last modified: 19 November, 2024, 12:06 pm

আঠারো শতকের কাপড়ের দোকান। দশম শতকেই এক আরব ব্যবসায়ী দেখেন, এই কাপড় এতই মিহি ও সূক্ষ্ম যে আংটির ভেতর দিয়ে অনায়াসেই বের করে আনা যায়।

দিল্লি দরবারের জন্য যে মসলিন তৈরি হতো, তার সাধারণ মানদণ্ড ছিল প্রতি রত্তিতে ১৫০ হাত সুতা। অর্থাৎ ১৫০ হাত সুতার ওজন হতো এক রত্তি! সচরাচর প্রতি রত্তিতে ১৪০ থেকে ১৫০ হাত সুতা হতো। ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে প্রতি রত্তি থেকে অতি উঁচু মানের ১৪০ হাত সুতা হতো। এ পর্যায়ে সোনারগাঁর তাঁতিরা সে সময়ে প্রতি রত্তিতে ১৭৫ হাত সুতা তৈরির দক্ষতা অর্জন করেছিলেন।  

মসলিনের মতো মিহি বস্ত্র তৈরি হতো যে তুলায়, তার উৎপাদন হতো ঢাকা জেলায়। বর্ষজীবী তুলাগাছের উচ্চতা সচরাচর চার থেকে পাঁচ ফুট হয়ে থাকে। এই তুলা গসিপিয়াম হারবাসিয়ামের একটি ধরন। ড. রক্সবার্গ 'ফ্লোরা ইন্ডিকা' গ্রন্থে বলেছেন, সচরাচর যেসব হারবাসিয়াস তুলাগাছ বাংলায় দেখা যায়, তার থেকে এ তুলাগাছের পার্থক্য রয়েছে। এ তুলার গাছসহ পাতা এবং শিরা-উপশিরা লালাভ হয়। ডালপালা কম গজায়। ফুল যে কাণ্ডে গজায়, সেটাও তুলনামূলকভাবে লম্বা। পাপড়িতে লালাভ ভাব দেখা যায়। তুলার আঁশ বা তন্তু দীর্ঘ, মিহি এবং নরম। স্থানীয়ভাবে এ তুলাকে ফোটি বলা হতো।

ঢাকায় শতাব্দীর পর শতাব্দী ধরে ফোটির চাষ  চলেছে। বাইরাইতি নাম পরিচিত আরেক ধরনের তুলা পূর্ব বাংলায় জন্মায়। মসলিন বানাতে এ তুলা ব্যবহার করা হয় বলে ধারণা করেন অনেকেই। ফোটির তুলনায় বাইরাইতি নিম্ন মানের বলে ধরা হয়ে থাকে। তুলার তন্তু ফোটির মতো মিহি নয়, বরং মোটা। দেশি হুরিয়াউলের থেকেও বাইরাইতির তন্তু খাটো এবং মোটা। ঢাকার অনেক অঞ্চলেই তুলার চাষ হতো। কিন্তু ফোটি তুলা কেবল মেঘনা এবং ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর কিছু কিছু এলাকায় হয়েছে। ফোটি দেশি জাতের তুলা এবং প্রাগৈতিহাসিক যুগ থেকেই এ তুলার চাষ ছিল ঢাকা জেলায়। 

ঢাকাই মসলিন। ছবি: বাংলাদেশ হ্যান্ডলুম বোর্ড

ফোটি চাষের সেরা এলাকার একটি বিবরণ ১৮০০ খ্রিষ্টাব্দে দিয়েছেন ঢাকার কমার্শিয়াল রেসিডেন্ট। সাগরের কাছাকাছি মেঘনার তীরবর্তী ৪০ মাইল দীর্ঘ এবং ৩ মাইল প্রস্থের এলাকাজুড়ে এ উঁচু মানের তুলা জন্মায়। এই এলাকার মধ্যে পড়ছে ঢাকার ১২ মাইল দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত ফিরিঙ্গি বাজার থেকে আদিলপুর (সাগর থেকে এর অবস্থান ২০ উত্তরে)। বছরে তিন মাস মেঘনার পানিতে তলিয়ে যায় এসব এলাকা। 

তিনি মনে করেন, সাগর এবং নদীর পানির মিশ্রণ বালু এবং নোনা কণিকা নিয়ে আসে। এতে জমির উর্বরতা বাড়ে। তুলা জন্মায় এমন সব বাদবাকি এলাকার মধ্যে পড়ছে লাখিয়া (Luckia নাকি লক্ষ্যা?) নদীর তীরবর্তী এলাকা। ঢাকার কাছাকাছি ব্রক্ষ্মপুত্র নদীর কিছু অংশে তুলা জন্মেছে। সর্বোৎকৃষ্ট মানের তুলাকে 'কাপাস' হিসেবে উল্লেখ করে বলা হয়েছে, ঢাকা জেলার মধ্যে কাদেরপুর, বিক্রমপুর, রাজনগর, কার্তিকপুর, শ্রীরামপুর এবং আদিলপুর পরগনায় 'কাপাস' তুলা জন্মাত। দি কটন ম্যানুফ্যাকচার অব ঢাকা বইয়ের লেখক জন মর্টিমার, তার গ্রন্থে বলছেন ঢাকার পার্শ্ববর্তী জেলা রাজশাহীর বোসনা থেকে কিছু 'কাপাস' আমদানি করা হতো। কাপাস বলতে কার্পাস তুলাকেই বোঝানো হতো। রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের এক দল গবেষক ২০১৯ জানান বাগেরহাটে উন্নত মানের তুলার আবাদের প্রমাণ তারা পেয়েছেন।

বছরে দুবার তুলার চাষ হতো সেকালে। প্রথম ফসল তোলা হতো এপ্রিল ও মে মাসে। দ্বিতীয়টি সেপ্টেম্বর এবং অক্টোবরে। প্রথম যে তুলা তোলা হতো, তা থেকেই সবচেয়ে ভালো ফসল পাওয়া যেত। প্রথম দফায় তুলার চাষও হতো ব্যাপকভাবে। বর্ষার শুরুতেই তুলার জমিতে ধান চাষ করা হতো। এ ধান তোলা হতো অক্টোবরে। খড় বা নাড়ায় আগুন দিয়ে পোড়ানো হতো। তারপর জমিকে করা হতো তুলা চাষের উপযোগী করে।

ফুটি কারর্পাস তুলা, ঢাকার গাজীপুর। আলোকচিত্রী: মুনির উজ জামান

বর্ষা মৌসুমে তুলার আঁশসহই তুলার বীজ সংরক্ষণ করার চল ছিল। মাটির পাত্রকে শুকনো রাখার জন্য ভেতরের দিকে তেল বা ঘি মাখানো হয়। তুলার বীজ ঢোকানোর পর মুখ বন্ধ করে দেওয়া হতো। এরপর স্যাঁতস্যাঁতে দশা ঠেকানোর জন্য চুলার কাছে ঝুলিয়ে রাখা হতো। বিক্রমপুরে প্রথমে তুলাগাছের চারা তৈরি করে, তারপর তা রোপণের আয়োজনে নামতেন চাষি। বসন্তকালীন খরা, কীট-পতঙ্গ, শিলাবৃষ্টি বা প্রচণ্ড বৃষ্টিতে তুলাগাছের ক্ষতি হতো। 

এপ্রিল এবং মে মাসে তুলা তোলা হতো। সে সময় শুকনা গাছকে তুলে ফেলাও হতো। একই জমিতে পরপর তিন দফা তুলার চাষ দেওয়া যেত। চতুর্থ বছরে জমি অনাবাদি থাকত। সাধারণভাবে পর্যায়ক্রমে তিল এবং ধান চাষ করা হতো এ জমিতে। তৃতীয় বছরে তিল এবং চতুর্থ বছরে ধান চাষ হতো। সেরা তুলা উৎপাদন করতেন বাড়ৈ জাতের মানুষ। এ জাতের মানুষ পান চাষও করতেন। ১৮০ বর্গফুট জমির জন্য সাড়ে চার পাউন্ড বীজের দরকার। এ থেকে পাওয়া যেতে পারে ১৬০ পাউন্ড (বীজসহ) কার্পাস তুলা। মোটামুটি দুই পাউন্ড বা আশি সিক্কা কার্পাসে ৬৫ সিক্কা বীজ থাকে। ১৫ সিক্কা নানা মানের তুলা পাওয়া যেত। এই তুলার এক-তৃতীয়াংশ বিশেষ করে বীজের সাথে লেগে থাকা তুলা থেকে উৎকৃষ্ট মানের সুতা কাটা যেত। বাকি তুলা থেকে আসত কম মিহি বা মোটা সুতা।

এ ছাড়া সারোনজি (Seronge) এবং ভোগা (Bhoga) নামে আরও দুই পদের তুলাও উৎপন্ন হতো। প্রথম পদের তুলা উত্তর-পশ্চিম ভারত থেকে আমদানি করা হয়েছিল। এই তুলা মাঝারি মানের কাপড়চোপড় তৈরিতে কাজে লাগত। ভোগা পদের তুলা গারো পাহাড়, ত্রিপুরা এবং পার্বত্য চট্টগামে জন্মাত। খুবই নিম্ন মানের এ তুলা থেকে মোটা বস্ত্র এবং দড়ি-কাছি বানানো হয়। 

তুলার বিশেষ অংশই অতি মিহি সুতা বয়নের কাজে লাগে। 'অন দ্য কটন অ্যান্ড কমার্স' গ্রন্থে এ বক্তব্যের প্রতি সায় দিয়েছেন মি. চ্যাপম্যান। জন মোর্টিমার তার বইতে চ্যাপম্যানের কথা তুলে ধরেছেন। ঢাকার উৎপাদিত তুলার নয়, বরং তুলার বিশেষ বিশেষ অংশ থেকে তৈরি সুতা দিয়ে তৈরি বলেই মসলিন অতি মিহি হতে পেরেছে। তিনি আরও বলেন, সে যা-ই হোক না কেন, বাংলার অন্যান্য অঞ্চলের তুলার তুলনায় ঢাকার তুলাকে উত্তম বিবেচনা করা হয়। এ কারণেই বস্ত্রের মিহি হওয়ার বিষয়ে অবদান রেখেছে এ তুলা। ১৭৯০ এবং ১৭৯১ খ্রিষ্টাব্দে একই ধরনের তুলা বাংলার অন্যান্য এলাকায়ও চাষের চেষ্টা করা হয়। সে চেষ্টা পুরোপুরি ভেস্তে যায়।

দারাশিকো এবং সুলাইমান শিকো নিমবাত, ১৬৬৫

মোর্টিমার জানান, গত কয়েক বছর ধরে অপরিশোধিত কার্পাস তুলার দাম ঢাকায় প্রতি মণ (৮০ পাউন্ড) ৩ টাকা। ১৭৮৯ খ্রিষ্টাব্দে যে দামে বিক্রি হতো, এ দাম তার অর্ধেক। চাষের সব কাজই গোটা পরিবার মিলে করতে হতো বলে তুলা থেকে চাষির লাভ খুবই কম হতো। স্থানীয় পর্যায়ে সুতা বা কাপড় উৎপাদন কমে যাওয়ার সাথে পাল্লা দিয়ে তুলা চাষও কমেছে পরে। পাশাপাশি বলা যায়, তুলার মানও খানিকটা কমে গেছিল তখন। আগে আরাকান থেকে উল্লেখযোগ্য পরিমাণে তুলা ঢাকায় আমদানি করা হতো। ১৮২৪-এর বার্মা যুদ্ধের পর এ ব্যবসা একেবারে বন্ধ হয়ে যায়।  

ভারতবর্ষ, মরিশাস বা উচ্চ মানের তুলা উৎপাদনের জন্য বিখ্যাত বুরবনের তুলার সাথে 'কাপাস' তুলার তুলনা করলে দেখা যাবে 'কাপাস' তুলাই বিশ্বসেরা।

তুলা থেকে সুতা কাটার কাজ হিন্দু নারীরা করতেন। প্রথমে কার্পাস তুলা থেকে বীজ আলাদা করে নেওয়া হতো; তারপর কাটা হতো সুতা। তার আগে তুলাতে যা কিছু লেগে থাকে, তা আঙুল দিয়ে বেছে বেছে সাফ করতে হতো। বীজের সাথে যে তুলা লেগে থাকে, তা বোয়াল মাছের চোয়ালের হাড় দিয়ে ছাড়িয়ে নেওয়া হতো। বোয়ালের (বৈজ্ঞানিক নাম সিলুরাস বোয়ালিস) দাঁত এখানে নিখুঁত চিরুনির কাজ করে। কাজটা বেশ পরিশ্রমের। তুলায় লতাপাতার সামান্য অংশ বা মাটি লেগে থাকলে মিহি সুতা তৈরির কাজে সমস্যা হয়ে দেখা দিতো। বীজ মুক্ত করতে পরবর্তী সময় তক্তায় রেখে তুলার ওপর দিয়ে লোহার দণ্ড দিয়ে বেলা হতো। যাতে বীজ থাকলে তা যেন ভেঙে না যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হতো। এরপর তুলাকে বাঁশের ধনুকের মতো জিনিস দিয়ে ধুনার শুরু। এরপরও আরও কয়েকটা পর্যায় পার হওয়ার পর তুলা থেকে সুতা বানানোর আসল কাজ শুরু হতো। 

সুতা বানানোর সময় বাতাসের নির্দিষ্ট পরিমাণে আর্দ্রতা থাকতে হতো। পাশাপাশি তাপমাত্রা ৮২ ডিগ্রি ফারেনহাইটের (২৭.৮ ডিগ্রি সেলসিয়াস) কাছাকাছি থাকা চাই। ঢাকায় সুতা কাটার কাজ সাধারণভাবে শেষ রাতের দিকে শুরু হতো। সকাল নয়টা বা দশটা পর্যন্ত চলত। আবার বেলা তিনটা বা চারটা থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত আরেক দফা। উদীয়মান সূর্য ঘাসে জমে থাকা শিশির বিন্দুকে বাষ্পীভূত করার আগেই উৎকৃষ্ট মানের মিহি সুতা বুনতে হতো। আবহাওয়া অতি মাত্রা শুষ্ক থাকলে পানির পাত্রের ওপর সুতা কাটা হতো। তাতে বাষ্পীভূত পানি বাতাসে প্রয়োজনীয় আর্দ্রতার জোগান দিতো। 

কোনো যন্ত্রপাতি ছাড়াই কেবল চোখে দেখেই গোলার সুতা কতটা মিহি এবং ওজন পরিমাপ করতেন দক্ষ তাঁতি। সুতার দৈর্ঘ্য মাপা হতো হাতে এবং এক হাত ১৯.৭৫ ইঞ্চি হিসাব করা হতো। অন্যদিকে সুতার ওজন করা হতো রত্তিতে। এক রত্তি প্রায় দুই দানার সমান ধরা হতো।

দিল্লি দরবারের জন্য যে মসলিন তৈরি হতো, তার সাধারণ মানদণ্ড ছিল প্রতি রত্তিতে ১৫০ হাত সুতা। অর্থাৎ ১৫০ হাত সুধার ওজন হতো এক রত্তি! সচরাচর প্রতি রত্তিতে ১৪০ থেকে ১৫০ হাত সুতা হতো। সোনারগাঁর তাঁতিরা সুতা তৈরির বিশেষ দক্ষতা অর্জন করেছিলেন। 

মোর্টিমারের কালেও মিহি সুতা কাটার চল ছিল ঢাকায়। ১৮৪৬-এ একজন তাঁতি এক গোলা সুতা মেপে দেখেন যে প্রতি পাউন্ড তুলা থেকে আড়াই শ মাইলের বেশি সুতা পাওয়া গেছে। লন্ডনের এক প্রদর্শনিতে ঢাকাই তাঁতের কিছু সুতার নমুনা ছিল; যা ওজনে আড়াই দানা হবে মাত্র। কিন্তু সে সুতার দৈর্ঘ্য ঠিক কতটা ছিল জানা যায়নি।  

১৮১১ খ্রিষ্টাব্দে সি আইল্যান্ডের কিছু তুলা পরীক্ষামূলকভাবে ঢাকার বস্ত্র নির্মাণের সাথে জড়িত কয়েকটি কারখানায় পাঠান তৎকালীন কমার্শিয়াল রেসিডেন্ট। কেউ সে তুলা দিয়ে সুতা কাটতে পারেননি। তারপর পরিষ্কার ভাষায় বলে দেওয়া হয় যে ঢাকার তাঁতে ওসব তুলা দিয়ে কোনো কাজ করা যাবে না। যন্ত্রে বানানো সুতার থেকে ঢাকায় তৈরি সুতা অনেক মিহি। এ দিয়ে তৈরি বস্ত্র যন্ত্রে বোনা মসলিনের থেকেও অনেক টেকসই বলে মনে করা হয়। সুতা কাটার সময় আঙুল থেকে আর্দ্রতা পায় ঢাকার সুতা, যা টেকসই হওয়ার এটা অন্যতম কারণ। এদিকে প্রতিবার ধোলাই করা হলে ইংলিশ সুতা ফুলে ওঠে, তাঁতিরা বলেন। অন্যদিকে ঢাকার সুতা প্রতি ধোলাইয়ের সাথে সাথে খাপে যায়, মানে সংকুচিত ও মজবুত হতো। 

একজন তাঁতি সারা সকাল ঘাম ঝরিয়ে কাজ করে মাসে সর্বোচ্চ প্রায় অর্ধেক সিক্কা বা তোলা ওজনের মিহি সুতা কাটতে পারতেন। তাঁতের কাজ, মোর্টিমারের বই লেখার সময়, খণ্ডকালীন পেশায় পরিণত হয়ে উঠেছে। তাই গড় মাসিক উৎপাদন এর অর্ধেকে নেমে এসেছে। 

মসলিন

মিহি সুতা মাপার জন্য স্বর্ণকার বা জড়োয়া ব্যবসায়ীদের ব্যবহৃত নিক্তি বা দাঁড়িপাল্লা ব্যবহার করা হতো। এক রত্তি হতো চারটি বার্লি দানা বা একটি লাল কুঁচের বীজের সমান। লাল কুঁচের বৈজ্ঞানিক নাম আব্রাস প্রিক্যাটোরিয়াস। ঢাকাই তাঁতে ব্যবহৃত সবচেয়ে উন্নত মানের সুতার দাম প্রতি তোলা প্রায় আট টাকা; যা প্রায় ৩১ পাউন্ড ২ সিলিং। এক মেলায় ম্যানচেস্টারের উচ্চ মানের সুতা নং ৭০০-এর চেয়েও প্রায় ৩ পাউন্ড বেশি এ দাম। 

গর্ত তাঁত নামে পরিচিত একধরনের হাত-তাঁত এ যুগেও দেখতে পাওয়া যায়। এ তাঁত পাততে বিশেষ আয়োজনের দরকার পড়ে না। বসে পা মেলে দেওয়ার মতো জায়গা পাওয়া গেলেই তাঁত পাতার বাকি কাজ সেরে নেওয়া যায়। মসলিনের তাঁত এ গোত্রেরই ছিল। খোলা আকাশের নিচে বড়সড় গাছের ছায়ায় এমন তাঁত পাতা হতো—১৮৫১ খ্রিষ্টাব্দে প্রকাশিত জন মোর্টিমারের বই 'ডেসক্রিপটিভ অ্যান্ড হিস্টোরিক্যাল অ্যাকাউন্ট অব দ্য কটন ম্যানুফ্যাকচার অব ঢাকা ইন বেঙ্গল'-এ এমন কথা  বলা হয়েছে। মোরটিমার তার বইয়ে ওয়েলশের পণ্ডিত এবং খ্রিষ্টান ধর্মযাজক আব্রাহাম রিসের ১৮২০-এ প্রকাশিত 'দ্য সাইক্লোপেডিয়া অর ইউনিভার্সাল ডিকশনারি অব আর্টস, সায়েন্স অ্যান্ড লিটারেচারের' (বিশ্বকোষটি ১৮০২ থেকে ১৮২০-এর মধ্যে প্রকাশিত হয়েছিল। সেকালে প্রকাশিত বিশ্বকোষগুলোর মধ্যে বৃহত্তম এবং ব্যাপক। ১৯ শতকে ৩৯ খণ্ডের লেখন এবং ছয় খণ্ডের চিত্র নিয়ে বিশ্বকোষটিতে কলা, বিজ্ঞান, প্রকৌশল, সাহিত্যসহ বিস্তৃত বিষয় একাধারে গুণীজ্ঞানী ও সাধারণ জন উভয় পক্ষের কাছেই মূল্যবান হয়ে উঠেছিল।) এ বইয়ের বরাত দিয়ে মসলিন সম্পর্কে বলেছেন, সাদামাটা এই তাঁতে নিখুঁত সৌন্দর্যপূর্ণ উত্তম রুচির মসলিন তৈরি করা হয়। ইউরোপ আধুনিক যন্ত্রপাতি দিয়েও এর সমতুল্য কোনো বস্ত্রই বুনতে পারেনি। সেরা মসলিন খোলা আকাশের নিচে বোনা হয়েছে। মুক্ত পরিবেশে নিজ দেশের জলবায়ুর তীব্র দাবদাহের মধ্যে বসে বয়নশিল্পীরা এই মসলিন বুনেছেন।

Related Topics

টপ নিউজ

মসলিন / কাপাস তুলা / মসলিনের তুলা / ঢাকাই মসলিন / ইজেল

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ প্রণোদনা, পাবেন জুলাই থেকে
  • সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা অর্থ উপদেষ্টার
  • এখন থেকে বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনা যাবে না
  • নোবেল পুরস্কারসহ ৯ ধরনের পুরস্কারের আয়ে দিতে হবে না কর
  • যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তি প্রস্তাবে ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি!
  • যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে, যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে

Related News

  • ঋত্বিক ঘটকের কন্যা: এক অসমাপ্ত আলাপ
  • শোক হতে শ্লোক
  • আমার স্নিকার্স
  • রং চলিষ্ণু, রঙ্গিলা প্রেমিক...
  • কলম্বো সাহিব কা মকবারা–ফিরছে তার আদিরূপে

Most Read

1
অর্থনীতি

সরকারি চাকরিজীবীদের জন্য ১৫ শতাংশ পর্যন্ত বিশেষ প্রণোদনা, পাবেন জুলাই থেকে

2
অর্থনীতি

সরকারি কর্মচারীদের জন্য বিশেষ সুবিধা বাড়ানোর ঘোষণা অর্থ উপদেষ্টার

3
অর্থনীতি

এখন থেকে বছরে একবারের বেশি ব্যাগেজ রুলসের সুবিধায় স্বর্ণ আনা যাবে না

4
বাংলাদেশ

নোবেল পুরস্কারসহ ৯ ধরনের পুরস্কারের আয়ে দিতে হবে না কর

5
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রের পারমাণবিক চুক্তি প্রস্তাবে ইরানকে ইউরেনিয়াম সমৃদ্ধ করার অনুমতি!

6
অর্থনীতি

যেসব পণ্যের দাম কমতে পারে, যেসব পণ্যের দাম বাড়তে পারে

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net