সুইফটের বিকল্প বের করতে যৌথভাবে কাজ করছে রাশিয়া ও চীনের কেন্দ্রীয় ব্যাংক!

রাশিয়ার একজন সিনিয়র পার্লামেন্ট সদস্য দাবি করেছেন, দেশটির কেন্দ্রীয় ব্যাংক পিপলস ব্যাংক অভ চায়নার সঙ্গে যৌথভাবে কাজ করছে। এতে সুইফট ব্যাংকিং নেটওয়ার্ককে পাশ কাটানোর উপায় বের করা সম্ভব হতে পারে।
সম্প্রতি এক সংবাদ সম্মেলনে অর্থনৈতিক বাজারের স্টেট ডুমা কমিটির চেয়ারম্যান আনাতোলি আকসাকভ বলেন, দুই দেশের কেন্দ্রীয় ব্যাংক 'ইন্টারঅপারেবিলিটি'র সমাধান নিয়ে কাজ করছে। এর ফলে মস্কোর তৈরি সুইফটের বিকল্প এসপিএফএসকে চীনের সিআইপিএসের সঙ্গে যুক্ত করা যাবে।
আকসাকভ দাবি করেন, ২০২২ সালের প্রথম দুই মাসে রাশিয়া ও চীনের মধ্যে বাণিজ্য '৪০ শতাংশের বেশি' বৃদ্ধি পেয়েছে। তিনি পূর্বাভাস দেন, এ হার আরও বাড়বে। বিশেষ করে সুইফটের বিকল্প বের করতে পারলে বাণিজ্যের হার আরও বাড়তে থাকবে।
আন্তর্জাতিক আর্থিক লেনদেন ব্যবস্থা সুইফট থেকে নিষিদ্ধ হওয়ার তীব্র ধাক্কা পড়েছে রাশিয়ার ওপর। তবে বিভিন্ন গণমাধ্যমে প্রকাশিত প্রতিবেদন অনুসারে, মস্কো ও বেইজিং আরও আগেই সুইফটের বিকল্প ব্যবস্থার প্রয়োজনীয়তা উপলব্ধি করতে পেরেছিল। সে কারণে কয়েক বছর ধরেই সুইফটের বিকল্প তৈরি নিয়ে কাজ করছিল দেশ দুটি।
এর মধ্যে রাশিয়া ইউক্রেনে হামলা চালানোর পর সুইফটের বিকল্প তৈরির প্রয়োজনীয়তা বেড়ে গেছে।
আকসাকভ বলেন, সুইফটের বিকল্প ব্যবস্থা তৈরির কাজ চলমান রয়েছে। তিনি আরও বলেন, ব্লকচেইন প্রযুক্তিতেও চীনের সঙ্গে লেনদেন করে পশ্চিমা নিষেধাজ্ঞা এড়ানো যেতে পারে।
এর মধ্যে বিদেশি ঋণদাতাদের সঙ্গে আর্থিক সম্পর্ক নিয়ন্ত্রণে অস্থায়ী ভিত্তিতে বিশেষ অর্থনৈতিক পদক্ষেপ নিয়েছে রাশিয়া। নিষেধাজ্ঞার মধ্যে দেশের আর্থিক স্থিতিশীলতা নিশ্চিত করার জন্য নতুন একটি নিয়ম করেছে দেশটি।
নতুন চালু করা এই নিয়মের ফলে বিদেশি আর্থিক প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে লেনদেনে নিয়ন্ত্রণ আনতে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক আগের চেয়েও বেশি ক্ষমতা প্রয়োগ করতে পারবে।
নতুন এই নিয়মের ফলে এখন থেকে রাশিয়ার কেন্দ্রীয় ব্যাংক যেকোনো বিদেশি কোম্পানি ও ব্যক্তির অর্থ লেনদেনের সর্বোচ্চ পরিমাণ বেঁধে দিতে পারবে। এছাড়াও এ বছর শেষ হওয়ার আগে রাশিয়ার ব্যাংকগুলোকে কেন্দ্রীয় ব্যাংকের অনুমতি ব্যতীত বিদেশিদের সঙ্গে কোনো ধরনের লেনদেন না করতে বলা হয়েছে নতুন নিয়মে।
নতুন এই আদেশের ফলে বিদেশি বিনিয়োগকারীদের লভ্যাংশ প্রদানের বিষয়টিও চলে এসেছে নিষেধাজ্ঞার আওতায়। অর্থাৎ এখন থেকে অনুমতি ছাড়া রাশিয়ার কোনো কোম্পানি লাভের টাকা বিদেশি বিনিয়োগকারীদের দিতে পারবে না।
এছাড়া নতুন আদেশে রাশিয়ার ব্যাংকগুলোকে অনুমতিক্রমে ১ সেপ্টেম্বর পর্যন্ত বৈদেশিক ঋণ পরিশোধের অনুমতি দেওয়া হয়েছে। কিন্তু তার মধ্যেও শর্ত রয়েছে। বৈদেশিক ঋণ পরিশোধ করতে হবে রুবলের মাধ্যমে এবং রুশ সরকারের বেঁধে দেওয়া বিনিময় হারে।
- সূত্র: ক্রিপ্টোনিউজ