ইয়েমেন যুদ্ধে মার্কিন সহযোগিতা বন্ধের ঘোষণা বাইডেনের

আমেরিকা ইয়েমেনের ওপর তার মিত্রদের আক্রমণাত্মক অভিযানকে আর সমর্থন করবে না বলে ঘোষণা দিয়েছে। ছয় বছরের বেশি সময় ধরে চলা এই যুদ্ধে এক লাখের ওপরে মানুষের মৃত্যু হয়েছে।
"ইয়েমেন যুদ্ধের সমাপ্তি হতে হবে", নিজের প্রথম বড় পররাষ্ট্রনীতি বিষয়ক ভাষণে এ কথা বলেন মার্কিন প্রেসিডেন্ট জো বাইডেন।
বাইডেনের পূর্বের দু'জন উত্তরসূরীর আমলে, মার্কিন নেতৃত্বাধীন সৌদি সামরিক জোট ইয়েমেনে হুতি বিদ্রোহীদের বিরুদ্ধে সামরিক অভিযান পরিচালনা করে।
এই একটি সংঘাত লক্ষ লক্ষ ইয়েমেনিকে দুর্ভিক্ষের দ্বারপ্রান্তে নিয়ে এসেছে।
২০১৪ সালে দুর্বল ইয়েমেনী সরকার এবং ইরান সমর্থিত হুতি বিদ্রোহীদের মাঝে সংঘাতের সূচনা হয়। ক্রমশ হুতিরা ইয়েমেনের দখল নিতে শুরু করে। সে সময় সৌদিসহ একাধিক মুসলিম দেশ হুতিদের বিরুদ্ধে কার্যত যুদ্ধ ঘোষণা করে। তাদের সাহায্য করে আমেরিকা, যুক্তরাজ্য এবং ফ্রান্সের মতো পশ্চিমা বিশ্বের দেশগুলো।
এছাড়াও বাইডেন ভাষণে মার্কিন পররাষ্ট্র নীতির আরও বিভিন্ন দিকের পরিবর্তন যেমন- আমেরিকা কর্তৃক গৃহীত শরণার্থীদের সংখ্যার উল্লেখযোগ্য বৃদ্ধি , জার্মানি থেকে আমেরিকান সেনা প্রত্যাহারের সিদ্ধান্ত রদ প্রভৃতি উল্লেখ করেন।
বাইডেনের বক্তব্য এবং গৃহীত নীতিসমূহ গত মাসের বিদায়ী প্রেসিডেন্টে ট্রাম্পের নীতির সম্পূর্ণ বিপরীতধর্মী।
ইয়েমেন ঘোষণায় যা বলল যুক্তরাষ্ট্র
হুতিদের বিরুদ্ধে যুদ্ধে যুক্তরাষ্ট্র ইয়েমেন সরকার এবং তার সৌদি নেতৃত্বাধীন মিত্রদের সমর্থন জানিয়ে আসছিল।
কিন্তু বৃহস্পতিবারে যুক্তরাষ্ট্র ঘোষণা দিল, ইয়েমেনে সৌদি আরবের যুদ্ধকে তারা আর সমর্থন করবে না। ইয়েমেনে সামরিক অভিযানে যুক্তরাষ্ট্রের সব ধরনের সহযোগিতা বন্ধ করা হবে, যার মধ্যে সৌদি আরব এবং সংযুক্ত আরব আমিরাতের অস্ত্র বিক্রি বন্ধের বিষয়টিও অন্তর্ভুক্ত থাকবে।
এ সিদ্ধান্ত অবশ্য আরবীয় উপদ্বীপে আল-কায়েদার বিরুদ্ধে অভিযানকে প্রভাবিত করবে না।
ইয়েমেনে যুদ্ধ বন্ধে যুক্তরাষ্ট্রের কূটনেতিক চেষ্টা জোরদারে বাইডেন তার বিশেষ দূত হিসেবে মার্কিন অভিজ্ঞ কূটনীতিক এবং মধ্যপ্রাচ্য বিশেষজ্ঞ টিমোথি লেনডারকিংয়ের নাম ঘোষণা করেছেন।
এ সিদ্ধান্ত ট্রাম্প প্রশাসনের বিপরীতে বাইডেনের কৌশল পরিবর্তনের চিত্র ফুটিয়ে তুলছে; ডোনাল্ড ট্রাম্পের প্রশাসন সৌদি নেতৃত্বাধীন জোটের পক্ষে সমর্থন বাড়িয়েছিল। গত মাসেই ট্রাম্পের সেক্রেটারি অফ স্টেট অফ মাইক পম্পেও ঘোষণা করেছিলেন যে, হুতিদেরকে আসলে 'সন্ত্রাসী সংগঠন' হিসেবে পরিচিত করে তোলা হচ্ছে।
মানবাধিকার সংস্থাগুলো বিভিন্ন সময়ে চলমান এ দ্বন্দ্বের সমালোচনা করেছে। জাতিসংঘ জানিয়েছে, বর্তমানে ইয়েমেনে বিশ্বের সবচেয়ে বড় মানবিক সঙ্কট রয়েছে। দেশটির ৮০ শতাংশ মানুষই খাদ্য ও আর্থিক সাহায্য এবং নিরাপত্তাহীনতায় ভুগে।
- সূত্রঃ বিবিসি