সিন্ডিকেটের কারণে বরফ নিয়ে ভোগান্তি, প্রতিবাদে মাছ বেচাকেনা বন্ধ

সিন্ডিকেটের মাধ্যমে বরফের দাম বৃদ্ধি করার প্রতিবাদে কক্সবাজারের মৎস্য ব্যবসায়ীরা অনির্দিষ্টকালের জন্য মাছ বেচাকেনা বন্ধ ঘোষণা করেছেন।
বৃহস্পতিবার সকাল থেকে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণ কেন্দ্রে মৎস্য ব্যবসায়ীরা মানববন্ধন ও প্রতিবাদ সমাবেশ শুরু করে দুপুর পর্যন্ত চলা কর্মসূচিতে তারা এ সিদ্ধান্ত নেন।
সমাবেশে জানানো হয়, অতি মুনাফালোভী মিল মালিকদের কারণে বরফ নিয়ে ভোগান্তি পোহাচ্ছেন জেলার ফিশারিঘাটের মাছ ব্যবসায়ীরা। উৎপাদন খরচ প্রায় একই থাকলেও আগের ৫০-১০০ টাকার এক পিস বরফ কিছুদিন ধরে চার গুণ বেশি দামে বিক্রি করা হচ্ছে। তাদের কাছ ছাড়া অন্য কোথাও থেকে বরফ আনতে দেওয়া হচ্ছে না।
ব্যবসায়ীরা অভিযোগ করেন, ৬ নম্বর জেটি ঘাট ও ফিশারিঘাট এলাকার বেশ কিছু বরফ মালিক ক্ষমতার অপব্যবহার করে দাপট খাটাচ্ছেন।
ক্ষতিগ্রস্ত ও ক্ষুব্দ ব্যবসায়ীরা এর প্রতিবাদে বরফ কেনা বন্ধ করে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করছেন। বন্ধ রয়েছে মাছ বেচাকেনা। এতে সাগর থেকে আহরিত মাছ নিয়ে ঘাটে ফেরা ট্রলার মালিকরা চরম বেকায়দায় পড়েছেন। কোনো ব্যবসায়ী কেনাবেচা না করায় ট্রলার থেকে মাছ নামাতে পারছেন না। ফলে অনেক ট্রলারে মাছ পচে যাচ্ছে বলে দাবি ট্রলার মালিকদের।
বিক্ষোভ কর্মসূচিতে আরও অভিযোগ করা হয়, স্থানীয়ভাবে উৎপাদিত বরফ খুবই নিম্নমানের। ওজনেও কম। সময়মতো পাওয়া যায় না যোগান। এরপরও মালিকদের সিন্ডিকেটে জিম্মি হয়ে পড়েছেন ফিশিংবোট মালিক ও মৎস্য ব্যবসায়ীরা।
'সঠিক সময়ে বরফের যোগান না পেয়ে ক্ষতিগ্রস্ত ৮০ শতাংশ ব্যবসায়ী। ক্ষতি পোষাতে না পেরে অনেকে ব্যবসা বন্ধ রেখেছেন। যারা ব্যবসায় আছেন, তারাও লোকসান গুনে চলছেন। সব মিলিয়ে কক্সবাজার মৎস্য অবতরণকেন্দ্রিক ব্যবসায়ীদের মন্দার দিন চলছে। আর অধিক মুনাফায় ফুলছেন বরফকল মালিকেরা,' বলেন অভিযোগকারীরা।
জেলা ফিশিংবোট মালিক সমিতির সাধারণ সম্পাদক দেলোয়ার হোসেন জানান, ১৫০ টাকার বরফ ৫০০ টাকায় কিনতে বাধ্য করা হচ্ছে। বরফের ঘাটতি পূরণে বাইরে থেকে আনতে গেলেও বাধা দেওয়া হয়। অন্যদিকে, স্থানীয় পর্যায়ে উৎপাদিত বরফ আকারে বড় হলেও ভেতরে পুরো ফাঁকা।
তিনি বলেন, 'ওজনে ঠকানোর কারণে এ বরফ কিনে ক্ষতির মুখে পড়তে হয় ব্যবসায়ীদের। ব্যবসা টিকিয়ে রাখতে বাধ্য হয়ে চট্টগ্রাম, নোয়াখালী, চাঁদপুর, খুলনা, মহিপুর থেকে বরফ কিনে আনছেন ব্যবসায়ীরা। তাতেও বাধা অসাধু বরফকল মালিকদের। এ কারণে প্রতিবাদ, বিক্ষোভ কর্মসূচি চলছে।'