তামিমের হার্টে রিং পরানো হয়েছে

বুকে ব্যথা নিয়ে হাসপাতালে ভর্তি হওয়া তামিম ইকবালের হার্টে রিং পরানো হয়েছে। বর্তমানে তিনি করোনারি কেয়ার ইউনিটে আছেন (সিসিইউ)। তার জ্ঞান ফেরার জন্য অপেক্ষা করা হচ্ছে। বিসিবির প্রধান চিকিৎসক দেবাশীষ চৌধুরী জানান, তামিমের দুবার হার্ট অ্যাটাক হয়েছিল। তার অবস্থা এখনও গুরুতর বলে জানিয়েছেন চিকিৎসকরা।
কেপিজে স্পেশালাইজড হাসপাতাল অ্যান্ড নার্সিং কলেজের মেডিকেল ডিরেক্টর ডাক্তার রাজীব বলেছেন, 'তামিম ইকবাল ভাই আজ সকালে সাড়ে ৯টার দিকে অসুস্থ হয়ে পড়েন। ওই অবস্থায় তাকে এখানে আনা হয় এবং চিকিৎসা শুরু হয়। পরবর্তীতে চিন্তা করি যে তাকে ঢাকায় নিয়ে যাওয়া যাবে না। বিভিন্ন কারণে ঢাকায় নেওয়া যায়নি। পরবর্তীতে তার অবস্থা ক্রিটিক্যাল হয়ে যায়। ওই অবস্থায়ই তিনি আবার আসেন। ওই ক্রিটিক্যাল কন্ডিশন থেকে যতোগুলো চিকিৎসা প্রয়োজন, সব কিছু করা হয়েছে।'
'আল্লাহর রহমতে কন্ডিশন এখন অনুকূলে আছে। তার হার্ট অ্যাটাক হয়েছে। তাই একটা এনজিওগ্রাম, এনজিওপ্লাস্টি ও একটা স্টেন্ট করা হয়েছে। আল্লাহর রহমতে উনার স্টেন্টিং খুব স্মুদলি ও এফিশিয়েন্টলি হয়েছে। ডাক্তার মারুফ এই স্টেন্টিং করেছেন। এখন ওই ব্লকটা পুরোপুরি চলে গেছে। আমরা যেমনটা বলছিলাম, একটু ক্রিটিক্যাল কন্ডিশনে ছিল, স্টেন্টিংয়ের পর এখন পর্যবেক্ষণে আছেন। ক্রিটিক্যাল অবস্থা এখনও কাটেনি। একটু সময় লাগবে। আমরা সবাই প্রাণপণ চেষ্টা করছি।' বলেন তিনি।
বিকেএসপির মাঠে ঢাকা প্রিমিয়ার লিগের ম্যাচ খেলতে নামার আগে বুকে ব্যথা অনুভব করেন তামিম। অভিজ্ঞ এই ব্যাটসম্যানকে বিকেএসপির পাশে কেপিজে স্পেশালাইজড হসপিটাল অ্যান্ড নার্সিং কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করা হয়। প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে। চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত এনজিওগ্রাম করা হয় এবং রিং পরানো হয়।
তামিমের অফিসিয়াল ফেসবুক পেজ থেকে একটি পোস্টে লেখা হয়েছে, 'সকালে টসের পর হালকা বুকে ব্যথা অনুভব করলে সংশ্লিষ্ট খেলোয়াড় বিষয়টি দ্রুত দলের ফিজিও ও ট্রেইনারকে জানান। প্রাথমিকভাবে গ্যাস্ট্রিকজনিত সমস্যা মনে হওয়ায় তিনি গ্যাস্ট্রিকের ওষুধ গ্রহণ করেন। তবে কিছুক্ষণ পরও অবস্থার উন্নতি না হওয়ায় সতর্কতার অংশ হিসেবে নিকটতম হাসপাতালে নেওয়া হয় এবং চিকিৎসা শেষে তিনি বিকেএসপিতে ফিরে আসেন।'
'এরপর শারীরিক অবস্থার আরও অবনতি ঘটলে দ্রুত বিকল্প ব্যবস্থার কথা ভাবা হয়। দলের (মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাব) ম্যানেজার শিপন ভাইয়ের সঙ্গে আলোচনা করে হেলিকপ্টারের ব্যবস্থা করা হয়, যাতে দ্রুত উন্নত চিকিৎসার জন্য স্থানান্তর করা সম্ভব হয়। তবে পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে পড়লে তাকে ফের নিকটতম কেপিজে হাসপাতাল ও নার্সিং কলেজে নেওয়া হয়। সেখানে প্রয়োজনীয় পরীক্ষা-নিরীক্ষার পর তার হার্টে ব্লক ধরা পড়ে।'
হার্টে রিং পরানোর খবর জানিয়ে তামিমের জন্য দোয়া চেয়ে পোস্টের শেষ অংশে লেখা হয়েছে, 'চিকিৎসকদের পরামর্শ অনুযায়ী দ্রুত এনজিওগ্রাম করা হয় এবং রিং পরানো হয়। বর্তমানে তিনি কার্ডিয়াক কেয়ার ইউনিটে (সিসিইউ) বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকদের নিবিড় পর্যবেক্ষণে রয়েছেন। তার সুস্থতার জন্য সবার দোয়া কামনা করা হচ্ছে, যাতে দ্রুত সুস্থ হয়ে তিনি স্বাভাবিক জীবনে ফিরে আসতে পারেন।'
ঢাকা প্রিমিয়ার ডিভিশন ক্রিকেট লিগে (ডিপিএল) আজ তামিমের দল মোহামেডান স্পোর্টিং ক্লাবের ম্যাচ ছিল শাইনপুকুর ক্রিকেট ক্লাবের বিপক্ষে। ম্যাচটি খেলতে বিকেএসপিতে যান দলটির অধিনায়ক তামিম, টসও করেন। কিন্তু এরপরই অসুস্থ হয়ে পড়েন তিনি। যে কারণে মাঠে নামা হয়নি তার। দ্বিতীয় দফায় স্থানীয় হাসপাতালে যাওয়ার পর তাকে ঢাকা আনার জন্য হেলিকপ্টারও নেওয়া হয়। কিন্তু হেলিকপ্টারে তোলার মতো অবস্থা ছিল না বলে তামিমকে সেখানেই চিকিৎসা দেওয়া হয়।