মানসিক হাসপাতাল কোনো ‘চিড়িয়াখানা’ নয়, নয় কোনো ‘বিনোদন’ এর জায়গা
মানুষ চিড়িয়াখানায় যায় চিড়িয়া দেখার জন্য। কিন্তু আমরা কি জানি, 'পাগল' দেখে মজা পাওয়ার জন্য পাবনা মানসিক হাসপাতালে দর্শনার্থীরা ভিড় করেন?
অদ্ভুত একটি দেশে বসবাস আমাদের, যেখানে 'মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ' কে 'চিড়িয়া' বলে মনে করেন তথাকথিত কিছু 'সুস্থ' মানুষ। এই 'চিড়িয়া' বলে যাদের দেখছেন, এই অসহায় মানুষগুলো আমাদের কারো সন্তান, মা-বাবা, ভাই বা বোন। শুধু মানসিক অবস্থার হেরফেরের কারণে 'চিড়িয়া' হয়ে গেছেন তারা!
পত্র-পত্রিকার প্রতিবেদন বলছে, পাবনা মানসিক হাসপাতালে রয়েছে নানা ধরনের সমস্যা। একসময় রোগীরা বিভিন্ন ধরনের চিকিৎসা পেতেন এখানে। তবে যন্ত্রপাতি নষ্ট হওয়ায় এখন তা পাচ্ছেন না।
রোগীপ্রতি চার বেলা খাবারের জন্য ১৭৫ টাকা বরাদ্দ। এরমধ্যে আবার ভ্যাট ও ইনকাম ট্যাক্স বাবদ কেটে নেওয়া হয় ১৮ শতাংশ টাকা। স্পষ্টতই বোঝা যাচ্ছে কতটা পুষ্টি পান রোগীরা।
তাদের থাকার জায়গা বিবর্ণ; বিনোদন, প্রশিক্ষণ বা কাজের কোনো সুবিধা নেই। সারাক্ষণ ভয় ছাদ থেকে কখন পলেস্তারা খসে পড়ে মাথায়। বৃষ্টি হলে নাকি হাসপাতালের ভেতরে একতলায় পানি ঢুকে যায়। চারপাশের ঝোপঝাড়ে সাপ দেখা যায় মাঝেমধ্যেই।
এরকম একটা পরিবেশে কয়েদির মতো গরাদের ওপারে থাকতে হয়। রোগীদের কেউ কেউ ওষুধ বা খাবার না খেলে কর্মচারীরা বেত দিয়ে মারেন বলে অভিযোগ আছে। দায়িত্বপ্রাপ্ত ব্যক্তিরা মিডিয়াকে বলেছেন, একটু কঠোর না হলে তাদের মানানো যায় না। এইভাবেই শুয়ে, বসে, চরম ভালবাসাহীন পরিবেশে মানুষগুলোর স্বপ্নহীন দিন কাটে।
এর বাইরেও সবচেয়ে দুর্ভাগ্যজনক ও অপমানজনক বিষয় হচ্ছে, পাবনা মানসিক হাসপাতালে টাকা দিলেই অবাধে প্রবেশ করা যায় এবং 'পাগলদের' নিয়ে কনটেন্ট ক্রিয়েটরেরা ইচ্ছা করলেই বানাতে পারেন ভিডিও। মিডিয়াতে খবর দেখলাম, সাধারণের প্রবেশাধিকার সংরক্ষিত হাসপাতালটিতে বিনোদন-কেন্দ্রের মতো অবাধে ঢুকছেন দর্শনার্থীরা, স্পর্শকাতর রোগীদের উত্যক্ত করে অপমানজনক ভিডিও ছাড়ছেন সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে।
ভিডিওগুলোতে দেখা যাচ্ছে, রোগীদের সঙ্গে কনটেন্ট ক্রিয়েটরদের অদ্ভুত অঙ্গভঙ্গি, সিগারেট আদান-প্রদান আর রোগীদের উত্যক্ত করার দৃশ্য। (ঢাকা স্ট্রিম)
অথচ হাসপাতালের প্রবেশদ্বারে লেখা আছে 'মানসিক রোগীদের সংবেদনশীল চিকিৎসা ও গোপনীয়তার স্বার্থে হাসপাতালে সাধারণের প্রবেশ নিষিদ্ধ।' তাহলে কীভাবে বহিরাগতরা রোগীদের সংস্পর্শে আসছেন? এরজন্য কি কর্তৃপক্ষের অবহেলা ও নিরাপত্তাকর্মীদের 'দর্শনার্থী বাণিজ্য' দায়ী নয়?
রিপোর্টটিতে বলা হয়েছে 'চিড়িয়াখানার বন্দি প্রাণী' দেখার মতো রোগীদের কক্ষের সামনের বারান্দাজুড়ে হেঁটে বেড়াচ্ছেন বিভিন্ন বয়সের দর্শনার্থী। কেউ রোগীদের উচ্চস্বরে ডাকছেন, টিটকারি করছেন, কেউবা ঘরে বন্দি রোগীদের সঙ্গে গল্প-আড্ডায় মেতেছেন। উৎসুক দর্শনার্থীদের হাঁকডাকে বিভ্রান্ত হচ্ছেন কিছু রোগী। দর্শনার্থীদের পাশাপাশি এসেছেন ইউটিউবার, টিকটকার, কনটেন্ট ক্রিয়েটররাও। রোগীদের গায়ে হাত দিয়ে, আপত্তিকর প্রশ্ন করে তৈরি করছেন ভিডিও। ভয়াবহ এক দৃশ্যপট এবং অপরাধও বটে।
বাংলাদেশে ৩ কোটিরও বেশি মানুষ কোনো না কোনো মানসিক সমস্যায় ভুগছেন। আর এদের মধ্যে ৯২ শতাংশ মানুষই চিকিৎসা সেবার বাইরে রয়েছেন। বিশ্ব স্বাস্থ্য সংস্থার তথ্য মতে, দেশের মোট জনসংখ্যার প্রায় ১৮.৪ ভাগ প্রাপ্তবয়স্ক ও ১৩ ভাগ শিশু-কিশোর মানসিক রোগে আক্রান্ত, যা মোট সংখ্যার হিসেবে প্রায় ৩ কোটি। তবে পাবনা মানসিক হাসপাতালে শিশু-কিশোরদের জন্য চিকিৎসা ব্যবস্থা নাই।
এই ব্যাপক সংখ্যক মানুষের জন্য যেখানে উন্নত ও সহজলভ্য মানসিক স্বাস্থ্যসেবা নিশ্চিত করা জরুরি, সেখানে এই সেক্টরে চিকিৎসক ও স্বাস্থ্যসেবা খুবই অপ্রতুল। এর পাশাপাশি মানসিক রোগে আক্রান্ত ব্যক্তির পরিবার ও স্বজন অজ্ঞতা, ভুল ধারণা, ভীতি, লোক লজ্জা ও বিভিন্ন কুসংস্কারের কারণে মানসিক রোগের বৈজ্ঞানিক চিকিৎসা নিতে চান না। এর বদলে সস্তায় তাবিজ-কবজ, অবৈজ্ঞানিক ও হাতুড়ে চিকিৎসা গ্রহণ করছেন। ফলে মানসিক রোগ নিরাময়ের পরিবর্তে আরও জটিল আকার ধারণ করছে।
অথচ আধুনিক চিকিৎসার মাধ্যমে কোনো কোনো মানসিক রোগ সম্পূর্ণ নিরাময় সম্ভব। সঠিক সময়ে চিকিৎসা নিলে ২৫ থেকে ৩০ শতাংশ মানসিক রোগী সম্পূর্ণভাবে সুস্থ হয়ে যান বলে জানিয়েছেন বিশেষজ্ঞরা। যদিও অনেকে মানসিক সমস্যাকে রোগ মনে করেন না, বিশেষ গুরুত্বও দেন না এবং সঠিক চিকিৎসা করাতেও উদ্যোগী হন না। ফলে মানসিক সমস্যা ভেতরে ভেতরে আরও বাড়তে থাকে।
আধুনিক নগরায়ন, আর্থ সামাজিক অবস্থা, মানসিক চাপ, বংশগতি, অন্যান্য শরীরবৃত্তীয় ও মনোসামাজিক কারণে দেশে দিন দিন মানসিক রোগের প্রকোপ বাড়ছে। এমনও হতে পারে, আমরা যারা এখন সুস্থ আছি, তারাও যেকোনো পরিস্থিতিতে মানসিক ভারসাম্য হারাতে পারি।
এই তিন কোটি মানসিক রোগীর একজন হচ্ছেন ৬৫ বছর বয়সী মো. সাইদ হোসেন। সাইদ ৪ নম্বর ওয়ার্ডে খালি গায়ে শুধু ডায়াপার পরে মেঝেতে ময়লা-জীর্ণ তোশকে শুয়ে আছেন। তোশক ও বালিশে কভার নেই। বাঁ হাতটি বাঁকা করে বুকের কাছে ধরে রেখেছেন। মাথার কাছে একটি প্লেটে কিছু ভাত লেগে শুকিয়ে আছে। কিছু ভাত মাথার কাছে তোশকে পড়ে আছে। উনত্রিশ বছর আগে হাসপাতালে ভর্তি করিয়ে দেওয়ার পর আর কেউ আসেনি তাকে বাড়িতে ফিরিয়ে নেওয়ার জন্য। অথচ সাইদ সুস্থ আছেন বহুদিন ধরে। এরপরও হাসপাতালে থাকার জন্য তিনি একজন রোগী হিসেবেই বিবেচিত হচ্ছেন। (প্রথম আলো)
এখানে যারা ভর্তি আছেন, তারা অনেকেই সুস্থ হওয়ার পরও পরিবারে ফিরে যেতে পারেননি বা পরিবার তাদের ফিরিয়ে নেয়নি। অনেকের ভর্তির সময় দেওয়া ঠিকানাও ভুয়া। এমন কী সুস্থ হয়ে বাসায় ফিরে যাওয়ার পরও কাউকে কাউকে ফিরিয়ে দেওয়া হয়েছে বিভিন্ন কারণে। অবশ্য অনেক রোগী সুস্থ হয়ে পরিবারে ফিরেও গেছেন।
পাবনার মানসিক হাসপাতালে থাকা এই মানুষগুলো প্রায় সবাই বাড়ি ফিরে যেতে চান। অনেকেই বুঝতে পারেন পরিবার তাদের ভুলে গেছে বা ইচ্ছে করে এড়িয়ে যাচ্ছে। তবে অনেকেই চিকিৎসা শেষে সুস্থ হয়ে বাড়ি যাবেন, সে আশায় দিন গুনছেন।
টাকা দিয়ে যেমন দর্শনার্থীরা হাসপাতালে 'পাগল' দেখতে ঢুকছেন, তেমনি প্রকাশ্যেই চলছে হাসপাতাল থেকে রোগী ভাগিয়ে নেওয়ার জন্য দালালদের তৎপরতা। হাসপাতাল চত্বরের বিভিন্ন গাছে মনোরোগ চিকিৎসক এবং জিন-পরি ধরলে কোথায় চিকিৎসা করাতে হবে, সেসবের বিজ্ঞাপন ঝুলছে।
এতো মানুষের চিকিৎসাসেবা দেওয়ার মতো সক্ষমতা পাবনা মানসিক হাসপাতালের নেই। পাবনার হাসপাতালের ওপর চাপ কমানো আর চিকিৎসা ও নীতি গবেষণার জন্য ১৯৮১ সালে জাতীয় মানসিক স্বাস্থ্য ইনস্টিটিউট ও হাসপাতাল (এনআইএমএইচ) প্রতিষ্ঠিত হয়। এছাড়া, আরও কিছু সরকারি ও বেসরকারি হাসপাতালে মানসিক চিকিৎসা সেবা আছে।
তবে এনআইএমএইচকে ঘিরে এমনকিছু বেসরকারি হাসপাতাল বা চিকিৎসা সেন্টার গড়ে উঠেছে, যাদের বিরুদ্ধে নানা ধরনের অভিযোগ রয়েছে। তারাই রোগী ভাগিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করে দালাল নিয়োগ করে।
আমাদের দেশে বড় সমস্যা হচ্ছে, এখানে অধিকাংশ মানুষ অটিজম ও মানসিক সমস্যার মধ্যে পার্থক্য বোঝেন না। সবাইকে 'পাগল' আখ্যা দেন এবং উল্টাপাল্টা চিকিৎসা করান। সমাজে মানসিক রোগ নিয়ে বেশি রকমের স্টিগমা বা কুসংস্কার কাজ করে। পরিবারের লোকজন মানসিক রোগের কথা যত দিন সম্ভব গোপন রাখেন এবং যেখানে-সেখানে গিয়ে গোপনে চিকিৎসা করেন। অনেক পরিবারে অটিস্টিক শিশুকে পাগল মনে করে ভুল চিকিৎসা করানো হয়। এছাড়া ঝাড়ফুঁক, তন্ত্র-মন্ত্র চিকিৎসারও কমতি নেই দেশে।
অটিজম হলো একটি নিউরো-ডেভেলপমেন্টাল অবস্থা বা মস্তিস্কের বিকাশগত সমস্যা, যা জন্মগত বা শৈশবের প্রথম দিক থেকেই দেখা যায়। অটিস্টিক মানুষের সামাজিক যোগাযোগে অসুবিধা হয়, চোখে চোখ রেখে কথা বলতে সমস্যা হয়, বারবার একই আচরণ করে বা কথা বলে, নির্দিষ্ট কিছু বিষয়ে অতিরিক্ত আগ্রহ দেখায় এবং অতি মাত্রায় সংবেদনশীল হতে পারে (যেমন—শব্দ, আলো, স্পর্শে অতিরিক্ত প্রতিক্রিয়া দেখাতে পারে)।
তবে অটিজম মানে 'মানসিক রোগ' নয়। অটিস্টিক ব্যক্তি পাগল বা মানসিক ভারসাম্যহীন নয়। তারা সাধারণ মানুষের মতোই বুদ্ধিমান হতে পারে, অনেক সময় গড়ের চেয়ে বেশি গুণাগুণ থাকে তাদের। অটিজম সারা জীবনের বৈশিষ্ট্য, তবে থেরাপি ও সাপোর্টে অনেক উন্নতি হয়।
'মানসিক রোগ বা ভারসাম্যহীন' আলাদা বিষয়। চিন্তা করা এবং নিজেকে প্রকাশ করার ক্ষেত্রে সমস্যা হয়। অনুভূতি প্রকাশ করার ক্ষেত্রেও সমস্যা হয়। নিজের কাজ ও চিন্তার ওপর নিয়ন্ত্রণ হারানো বা বাস্তবতা বুঝতে সমস্যা হওয়াও মানসিক রোগ। এই অবস্থায় মানুষ মানসিকভাবে ভারসাম্য হারায়। যেমন—সিজোফ্রেনিয়া, সাইকোসিস, ভয়াবহ বিষন্নতা, হ্যালুসিনেশন (যা নেই তা দেখা/শোনা), বিভ্রম তৈরি হওয়া।
সাধারণত অতিমাত্রায় মানসিক চাপ, ট্রমা, শোক-দু:খ ও প্রতারিত হলে মানুষ মানসিকভাবে অসুস্থ হয়ে উঠতে পারে। মানসিকভাবে অসুস্থ ব্যক্তির আচরণে অস্বাভাবিকতা লক্ষ করা যায়, নিজের বা অন্যের ক্ষতি করার ঝুঁকি থাকে, বাস্তবতা বুঝতে অসুবিধা এবং দৈনন্দিন কাজ চালাতেও সমস্যা হয়।
মানসিক রোগ চিকিৎসাযোগ্য। যথাযথ ওষুধ, থেরাপি, হাসপাতালের চিকিৎসা দরকার। জীবনের যেকোনো সময় মানুষ মানসিকভাবে অসুস্থ হতে পারেন। কাজেই একে এড়িয়ে না গিয়ে গোপন না করে চিকিৎসা করানো দরকার। অনেকেই সামাজিক নানা কারণে মানসিক অসুখ গোপন করতে চান। এই স্টিগমা দূর করতে হবে। গবেষণায় বলা হচ্ছে, ২০৩০ সালে বিষন্নতা মানুষের উৎপাদনমুখিতার ক্ষেত্রে সবচেয়ে বড় বাধা হয়ে দাঁড়াবে।
তবে মানসিক ভারসাম্যহীনদের 'পাগল' হিসেবে চিহ্নিত করে সহজে সম্পত্তি থেকে বঞ্চিত করা যায়। তাই অনেক ক্ষেত্রে ভাইবোনেরা চিকিৎসার ক্ষেত্রে তেমন গা করে না। একবার মানসিক চিকিৎসা কেন্দ্রে রেখে আসতে পারলে, আর খোঁজ-খবর রাখেন না, ফিরিয়েও আনেন না। মানসিক ভারসাম্যহীন মানুষ যে ভালবাসাহীন, অভিভাবকহীন—এটা জানে বলেই চিকিৎসাকেন্দ্রগুলো অনেকক্ষেত্রেই তাদের সাথে খারাপ আচরণ করার সাহস পায়।
প্রথম কাজ হলো, মানসিক রোগ সম্পর্কে আমাদের স্টিগমা ও কুসংস্কার দূর করতে হবে। বুঝতে হবে এতে লজ্জার বা গোপন করার কিছু নেই। পাশাপাশি চিকিৎসা সেবার মান উন্নয়নে আরও পদক্ষেপ নেওয়া নিতে হবে। বাজেট বরাদ্দ ও জনবল নিয়োগ বাড়াতে হবে।
মানসিক স্বাস্থ্যবিষয়ক স্নাতকোত্তর পাঠ্যক্রম, টেলিমেডিসিন সেবা সম্প্রসারণ, গবেষণা ও প্রশিক্ষণ কার্যক্রম চালু করা দরকার; সবচেয়ে বেশি দরকার মানসিক রোগীর প্রতি সহানুভূতি। দক্ষ জনবলের পাশাপাশি ঘাটতি রয়েছে ভালবাসা, স্নেহ ও যত্নের। মানসিক সংকটের শুরুতেই প্রাথমিক সহযোগিতা ও চিকিৎসা দিতে পারলে বেশির ভাগ ক্ষেত্রেই হাসপাতাল বা ক্লিনিকে ভর্তি হতে হয় না।
আমরা চাই না মানসিক রোগীকে 'পাগল' আখ্যা দিয়ে তাদের নিয়ে ভিডিও ও টিকটক বানানো হোক। তাদের দেখতে যেন চিড়িয়াখানার মতো দর্শনার্থীরা ভিড় না করেন। এই অসুস্থ মানুষগুলো খুব অসহায় ও অবহেলিত, তারা বিনোদনের 'সামগ্রী' নন।
এখানে যারা আসেন, অনেককেই বিভিন্ন কারণে পরিবার ফিরিয়ে নেয় না। এমনও হয়েছে জীবনের দীর্ঘ সময় হাসপাতালের চার দেওয়ালের ভেতরে কাটিয়ে দিতে বাধ্য হয়েছেন সাইদ হোসেনের মতো কেউ কেউ। মারা গেলে আঞ্জুমান মুফিদুল ইসলামের মাধ্যমে স্থানীয় কবরস্থানে 'বেওয়ারিশ' হিসেবে তাদের দাফন করা হয়। কতটা মর্মান্তিক ঘটনা। হয়তো সেই 'বেওয়ারিশ' মানুষটা কারো সন্তান, বাবা, মা, ভাই বা বোন। সময়মতো ভালো চিকিৎসা পেলে সেই মানুষটি গৃহবাসী হতে পারতেন। তাই সবার উচিত পরিবারে বা সমাজের এই মানুষগুলোর প্রতি সহযোগিতার হাত বাড়িয়ে দেওয়া।
লেখক: যোগাযোগ বিশেষজ্ঞ ও কলাম লেখক
