Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Tuesday
June 17, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
TUESDAY, JUNE 17, 2025
গাছেরও ভাষা আছে! তারাও কি যোগাযোগ করে?

ইজেল

মারুফ হোসেন
11 June, 2021, 11:45 pm
Last modified: 12 June, 2021, 12:04 am

Related News

  • বোটানিক্যাল গার্ডেনে কার অধিকার বেশি, প্রাণ-প্রকৃতির না মানুষের?
  • ইউক্যালিপটাস-আকাশমণি গাছ নিষিদ্ধ ঘোষণা
  • নাগরি লিপির উইকিপিডিয়া: হারিয়ে যাওয়া লিপির পুনর্জাগরণ?
  • ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের আংশিক চালু ১ মে
  • যেভাবে হুমকির মুখে থাকা কাশ্মীরের ঐতিহ্যবাহী চিনার গাছ সংরক্ষণের লড়াই চলছে

গাছেরও ভাষা আছে! তারাও কি যোগাযোগ করে?

উদ্ভিদ কি শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে যোগাযোগ করে? মানুষ যোগাযোগের জন্য শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে। এই সূত্র ধরেই কি গাছেদেরকে আরও ভালোভাবে জানা যাবে, চেনা যাবে? দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের প্রযুক্তি এখনও এত উন্নত হয়নি, এবং এক্ষেত্রে গবেষণা সবে শুরু হয়েছে। তবে এই লেখা পড়ার পর আপনি যদি বনে হাঁটতে যান, এবং বৃক্ষশাখার মড়মড় কিংবা পাতার মর্মরধ্বনি শুনতে পান, তাহলে সেই আওয়াজের কারণ হয়তো স্রেফ বাতাস হবে না...
মারুফ হোসেন
11 June, 2021, 11:45 pm
Last modified: 12 June, 2021, 12:04 am
অ্যাকেইশা গাছগুলো জিরাফের খপ্পর থেকে বাঁচতে পাতার মধ্যে বিষাক্ত পদার্থ ছাড়তে থাকে।

অভিধানের সংজ্ঞানুসারে, আমরা একে অপরের সঙ্গে কথা বলার সময় যা ব্যবহার করি তা-ই হলো ভাষা। এই দৃষ্টিকোণ থেকে দেখলে, পৃথিবীতে আমরাই একমাত্র প্রাণী যারা ভাষা ব্যবহার করতে পারে। কারণ ভাষার ধারণাটি কেবল আমাদের প্রজাতির মধ্যেই সীমাবদ্ধ। 

তবে গাছেরা একে অপরের সঙ্গে কথা কথা বলতে পারে কিনা, এই তথ্যটিও যথেষ্ট কৌতূহলোদ্দীপক, তাই না? গাছেরা শব্দ করতে পারে না। তাই তাদের কথাও আমাদের শোনার প্রশ্নই ওঠে না। বৃক্ষশাখা মড়মড় আর পাতা মর্মরধ্বনি তোলে বটে, কিন্তু এই শব্দগুলো হয় বাতাসের কারণে এবং গাছের ওপর তাদের কোনো নিয়ন্ত্রণ থাকে না। গবেষণায় জানা গেছে, গাছদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের আলাদা উপায় আছে। যোগাযোগের জন্য তারা ঘ্রাণ ব্যবহার করে।

যোগাযোগের মাধ্যম হিসাবে ঘ্রাণ—ধারণাটি আমাদের কাছে একেবারে অপরিচিত নয়। আমরা ডিওডোরেন্টস ও পারফিউম কেন ব্যবহার করি? তাছাড়া আমরা যখন এসব পণ্য ব্যবহার করি না, তখনও শরীরের গন্ধ—সচেতন ও অবচেতন দুভাবেই—অন্যদেরকে কোনো-না-কোনো বার্তা দেয়। কিছু মানুষ আছে যাদের শরীরে কোনো গন্ধ নেই বলেই মনে হয়। মানুষের গায়ের সুগন্ধ দ্বারা আমরা প্রবলভাবে আকৃষ্ট হই। বিজ্ঞানীরা বিশ্বাস করেন, আমাদের জীবনসঙ্গী বাছাইয়ের ক্ষেত্রে ঘাম একটি অন্যতম নিয়ামক। কাজেই এ কথা বললে মোটেই অত্যুক্তি হবে না যে, অবচেতনভাবেই আমরা ঘ্রাণের গোপন ভাষা জানি, এবং গাছেরাও ভাষাটি জানে।

উদাহরণস্বরূপ, চার দশক আগে, বিজ্ঞানীরা আফ্রিকান সাভানায় একটা ব্যাপার লক্ষ করেছিলেন। সেখানকার কিছু জিরাফ আমব্রেলা থর্ন অ্যাকেইশার পাতা খাচ্ছিল। কাজটা গাছগুলোর পছন্দ হয়নি। ফলে কয়েক মিনিটের মধ্যে অ্যাকেইশা গাছগুলো জিরাফের খপ্পর থেকে বাঁচতে পাতার মধ্যে বিষাক্ত পদার্থ ছাড়তে থাকে। বৈরিতার বার্তা পেয়ে জিরাফগুলো অন্য গাছে চলে গেল। ওরা কিন্তু একেবারে পাশের গাছে যায়নি—গেছে প্রায় ১০০ গজ দূরের গাছে। 

এই আচরণের কারণটি অবাক করার মতো। যে অ্যাকেইশা গাছগুলোর পাতা খাওয়া হচ্ছিল ওগুলো একটা সংকেত প্রদানকারী গ্যাস (ইথিলিন) নিঃসরণ করে, যা আশপাশের একই প্রজাতির অন্যান্য গাছগুলোকেও সতর্ক করে দেয় যে বিপদ আসন্ন। সংকেত পাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে অন্যান্য গাছগুলো নিজেদের পাতার মধ্যেও বিষাক্ত পদার্থ ছাড়ে। জিরাফগুলো সেটা বুঝতে পেরেছিল বলেই দূরের গাছে চলে যায়। কোনো প্রাণি যখন বিভিন্ন গাছে ঠোকর বা আঁচড় কাটতে থাকে, তখন এই গাছগুলোও একই পদ্ধতিতে ব্যথার কথা আশপাশের গাছগুলোকে জানিয়ে দেয়।

২০১০ সালের এক হিসেবে দেখা যায় সিয়েরা নেভাডায় ৬৬ মিলিয়ন গাছ বিনাশ করা হয়েছে

কোনো শুঁয়োপোকা যখন একটা পাতায় কামড় দেয়, তখন সে জায়গাটির চারপাশের টিস্যু বদলে যায়। এছাড়াও, মানবটিস্যু ব্যথা পেলে যেভাবে সংকেত দেয়, ব্যথা পেলে পাতার টিস্যুও ঠিক সেভাবে বৈদ্যুতিক সংকেত দেয়। তবে সংকেতই মানুষের মতো মিলিসেকেন্ডের মধ্যে ছড়িয়ে পড়ে না। উদ্ভিদের সংকেত ছড়ায় বেশ ধীরগতিতে—প্রতি মিনিটে এক ইঞ্চির তিন ভাগের একভাগ জায়গায়।

পোকামাকড়ের খাবার নষ্ট করতে প্রতিরক্ষামূলক যৌগগুলো পাতায় পাতায় পৌঁছাতে এক ঘণ্টা বা তার বেশি সময় লাগে। গাছের জীবন যাপনের গতি, এমনকি বিপদের সময়ও, বড্ড ধীর। তবে এর মানে এই নয় যে তার দেহের বিভিন্ন অংশে যা ঘটছে, তা সম্পর্কে গাছটি ওয়াকিবহাল নয়। শেকড় যদি বিপদে পড়ে, তাহলে সে তথ্য পুরো গাছে চাউর হয়ে যায়। ফলে পাতাগুলো ঘ্রাণযুক্ত যৌগ নিঃসৃত করে। এ কাজের জন্য যৌগগুলো বিশেষভাবে তৈরি হয়। 

বিভিন্ন যৌগিক উৎপাদনের এই ক্ষমতা গাছকে কিছু সময়ের জন্য আক্রমণ থেকে রক্ষা করে। কিছু প্রজাতির পোকামাকড় আক্রমণ করতে এলে ওগুলোর ঠিকুজি-কোষ্ঠী গাছেদের জানা হয়ে যায়। প্রত্যেক প্রজাতির পোকার লালা আলাদা। লালার ধরনের সাথে মিলিয়ে হানাদার পোকাকে চিনে নেয় গাছেরা। প্রত্যেক প্রজাতির জন্য আলাদা পদার্থ ছাড়ে। এই কাজে গাছেরা এত দক্ষ যে রাসায়নিক যৌগ নিঃসৃত করে তারা উপকারী প্রাণীকেও ডেকে আনতে পারে। 

উপকারী প্রাণীরা ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ খেয়ে গাছেদের সাহায্য করে। গাছ গন্ধের সাহায্যে এক প্রজাতির পরজীবী বোলতা ডেকে আনে যারা পাতাখেকো শুঁয়োপোকার ওপর ডিম পাড়ে। বোলতার লার্ভা বড় হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে তারা একটু একটু করে শুঁয়োপোকাগুলোকে খেয়ে ফেলে। এভাবে গাছেরা ক্ষতিকর কীটপতঙ্গ থেকে নিজেদের বাঁচিয়ে নির্বিঘ্নে বেড়ে ওঠে। গাছগুলোর লালা চেনার ক্ষমতা থেকে তাদের আরেকটি দক্ষতার প্রমাণ পাওয়া যায়। দক্ষতাটি হলো, স্বাদগ্রহণের ক্ষমতা। কেননা আলাদা করে লালা চেনার ক্ষমতা থাকবার জন্য স্বাদ গ্রহণের ক্ষমতা থাকা আবশ্যক।

সুগন্ধি যৌগের একটি দুর্বলতা হলো এরা বাতাসে দ্রুত ছড়িয়ে পড়ে। 

সুন্দরবন

এই গন্ধের ব্যাপ্তি বেশিরভাগ সময়ই ১০০ গজের মতো হয়। গন্ধ দ্রুত ছড়ানোর কিছু সুবিধাও আছে। গাছের অভ্যন্তরে সংকেত যেহেতু অত্যন্ত ধীর গতিতে ছড়ায়, তাই বাতাসে গন্ধ ছড়ানোর মাধ্যমে গাছ তার অন্যান্য অঙ্গকে বিপদের ব্যাপারে খুব দ্রুত সতর্ক করে দিতে পারে। প্রাণীরা গাছের মৌলিক রাসায়নিক সংকেত বুঝতে পারে। তাই গন্ধ পেলেই তারা বুঝে যায়, গাছেদের ওপর আক্রমণ আসছে, এবং উপকারী প্রাণীদের সক্রিয় হওয়ার সময় হয়েছে। হানাদার পতঙ্গভুক ক্ষুধার্ত প্রাণীরা তখন আর দূরে থাকতে পারে না।

গাছেরা তাদের নিজস্ব প্রতিরক্ষাব্যবস্থাও গড়ে তুলতে পারে। যেমন, কিছু গাছ তার বাকলও পাতায় তিক্ত, বিষাক্ত কষ মজুদ রাখে। এগুলোহয় পাতা খেতে আসা পোকাকে তৎক্ষণাৎ মেরে ফেলে নইলে পাতার স্বাদ বদলে তেতো করে দেয়। কিছু গাছ আবার প্রতিরক্ষামূলক যৌগ স্যালিসাইক্লিক অ্যাসিড তৈরি করে—এটিও বিষাক্ত কষের মতোই কাজ করে। তবে এই প্রতিরক্ষাব্যবস্থা মানুষের জন্য ক্ষতিকর নয়। স্যালিসাইক্লিক অ্যাসিড হলো অ্যাসপিরিনের পূর্বসূরি। এ ধরনের প্রতিরক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে গাছের অবশ্য সময় লাগে। সেজন্য বৃক্ষদের বিপদসংকেতের জন্য একটি সমন্বিত পদ্ধতি গড়ে তোলা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। 

বিপদসংকেত দেয়ার জন্য গাছেরা কেবল বাতাসে ঘ্রাণ ছড়ানোর ওপরই নির্ভরশীল নয়। কেননা এই ব্যবস্থায় কিছু প্রতিবেশী বিপদের কথা জানতে পারে না। ভ্যাঙ্কুবারের ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সুজান সিমার্ড আবিষ্কার করেছেন, শেকড়ের ডগার ছত্রাক-নেটওয়ার্কের মাধ্যমে রাসায়নিক সংকেত পাঠিয়েও বৃক্ষরা বিপদসংকেত পাঠায়। এ পদ্ধতিতে যেকোনো আবহাওয়াতেই সংকেত পৌঁছে যায় সর্বত্র।

ভ্যাঙ্কুবারের ব্রিটিশ কলাম্বিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক ড. সুজান সিমার্ড আবিষ্কার করেছেন, শেকড়ের ডগার ছত্রাক-নেটওয়ার্কের মাধ্যমে রাসায়নিক সংকেত পাঠিয়েও বৃক্ষরা বিপদসংকেত পাঠায়।

আশ্চর্যের ব্যাপার হলো, এই খবরগুলো যে স্রেফ রাসায়নিক যৌগের মাধ্যমেই পাঠানো হয় তা নয়। পাঠানো হয় বৈদ্যুতিক তাড়নার মাধ্যমেও। এ পদ্ধতিতে সংকেতগুলো প্রতি সেকেন্ডে এক ইঞ্চির তিন ভাগের এক ভাগ দূরত্ব অতিক্রম করে। এই গতি অবশ্য আমাদের দেহের তুলনায় অনেক বেশি ধীর। তবে প্রাণিজগতে এমন অনেক প্রজাতি আছে—জেলিফিশ ও কিছু কীট—যাদের নার্ভাস সিস্টেম অমন ধীরগতিতে কাজ করে। সর্বশেষ বিপদসংকেত প্রচারিত হওয়ার সঙ্গে সঙ্গে আশপাশের সমস্ত ওক গাছ বিষাক্ত কষ নিঃসৃত করতে আরম্ভ করে। 

গাছের শেকড় ভূ-অভ্যন্তরে অনেক দূর পর্যন্ত বিস্তৃত থাকে। আশপাশের গাছের শেকড়েরও এক গাছের শেকড়ের সঙ্গে মোলাকাত হয়ে যায় সে কারণে। যদিও কিছু ব্যতিক্রম থাকেই। বনাঞ্চলেও কিছু নিঃসঙ্গ গাছ থাকে যারা অন্যান্য বৃক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ রাখতে পছন্দ করে না।এরকম অসামাজিক গাছেরা কি যোগাযোগ বিচ্ছিন্ন করেই বিপদসংকেত গ্রহণ বন্ধ করতে পারে? 

সৌভাগ্যক্রমে, পারে না। কারণ এমন কিছু ছত্রাক আছে যারা বিপদসংকেত প্রচার করার জন্য মধ্যস্থতাকারী হিসেবে কাজ করে। এসব ছত্রাক ফাইবার-অপটিক ইন্টারনেট কেবল্-এর মতো কাজ করে। এদের পাতলা তন্তু মাটিতে প্রবেশ করে প্রায় অবিশ্বাস্য ঘনত্ব নিয়ে ছড়িয়ে পড়ে। এক চা চামচ বনের মাটিতে যে পরিমাণ তন্তু থাকে, তার দৈর্ঘ্য কয়েক মাইল হবে। 

কয়েক শতাব্দী ধরে একটিমাত্র ছত্রাক বহু বর্গমাইল জায়গা জুড়ে ছড়িয়ে পড়ে গোটা একটা বনে নেটওয়ার্ক বিস্তৃত করে ফেলতে পারে। এই ছত্রাক নেটওয়ার্কই এক গাছ থেকে আরেক গাছে সিগন্যাল দেয়। এভাবেই গাছেরা পরস্পরের সঙ্গে কীটপতঙ্গ, খরা এবং অন্যান্য বিপদের খবরাখবর আদানপ্রদান করে। এর নাম দেয়া হয়েছে 'উড ওয়াইড ওয়েব'। নামটির প্রবক্তা ড. সিমার্ড। 

গাছেরা কী এবং কেমন তথ্য দেয়া-নেয়া করে তা নিয়ে সবে গবেষণা শুরু হয়েছে। সিমার্ড আবিষ্কার করেছেন যে একে অপরকে প্রতিদ্বন্দ্বী হিসেবে দেখলেও বিভিন্ন প্রজাতির গাছ পরস্পরের সঙ্গে যোগাযোগ রক্ষা করে। আর ছত্রাকেরাও যথাযথভাবে তথ্য ও সাহায্য সরবরাহ করে নিজেদের দায়িত্ব পালন করছে। 

গবেষণায় জানা গেছে, গাছদের নিজেদের মধ্যে যোগাযোগের আলাদা উপায় আছে।

গাছেরা দুর্বল হয়ে গেলে তারা আত্মরক্ষার ক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগের দক্ষতাও হারিয়ে ফেলে। তা-ই যদি না হবে তাহলে পোকামাকড়ের দল কেন আগে-থেকেই-দুর্বল-হয়ে-পড়া গাছের সন্ধান করে? ধারণা করা হয়, কীটপতঙ্গের দল গাছেদের জরুরি রাসায়নিক সংকেত মনোযোগ দিয়ে শোনে। তারপর যে গাছটা সংকেত দেয়া-নেয়া করে না সেটার পাতা বা বাকল একটু খেয়ে দেখে। গুরুতর অসুস্থতা কিংবা নিজস্ব ছত্রাক-নেটওয়ার্ক হারিয়ে ফেলার কারণে কোনো গাছ বিপদসংকেত দেয়া-নেয়া বন্ধ করে দিতে পারে। সেই গাছটি আর আসন্ন দুর্যোগের বার্তা জানতে পারে না, এবং ফলে শুঁয়োপোকা ও অন্য কীটদের খাবার হওয়ার জন্য উন্মুক্ত হয়ে যায়। যে নিঃসঙ্গ, অসামাজিক গাছগুলোর কথা ওপরে বলা হয়েছে ওগুলোও এমন সংবেদনশীল। এদেরকে হয়তো বাইরে থেকে সুস্থ-সবল দেখায়, কিন্তু আশপাশে কী হচ্ছে-না-হচ্ছে সে ব্যাপারে এদের কোনো ধারণাই থাকে না। 

গাছেরা দুর্বল হয়ে গেলে তারা আত্মরক্ষার ক্ষমতার সঙ্গে সঙ্গে যোগাযোগের দক্ষতাও হারিয়ে ফেলে।

অরণ্যের মিথোজীবী সমাজে কেবল গাছই নয়, গুল্ম ও ঘাসও—এবং সম্ভবত সমস্ত উদ্ভিদ প্রজাতিই—এভাবে তথ্য আদান-প্রদান করে।

গাছ ও পোকামাকড়ের মধ্যে যোগাযোগ যে কেবল সুরক্ষা এবং অসুস্থতার কারণেই হতে হবে, ব্যাপারটা এমন নয়। আপনি নিশ্চয় নানা প্রজাতির ফুলের সুগন্ধ নিয়েছেন জীবনে। ফুল কিন্তু আমাদের খুশি করবার জন্য কিংবা স্রেফ খেয়ালের বশে ঘ্রাণ ছড়ায় না। বিভিন্ন ফলের গাছ বাতাসে সুগন্ধি ছড়ায় মৌমাছিদের আকৃষ্ট করবার জন্যে। যাতে মৌমাছিরা তাদের মধু খেতে পারে। এই অমৃত গ্রহণের বিনিময়ে তারা ফুলের রেণু সংগ্রহ করে পরাগায়ন ঘটায়। ফুলের আকার এবং রংও কিন্তু সংকেত। ফুলের রং ও আকার বিলবোর্ড হিসেবে কাজ করে। যা মৌমাছিদের খাবারের দিকে পথনির্দেশ করে।

সুতরাং, গাছেরা যে ঘ্রাণ, দর্শন ও বৈদ্যুতিক সংকেতের মাধ্যমে যোগাযোগ করে তা তো এখন প্রমাণিত।

(বৈদ্যুতিক সংকেত শিকড়ের ডগায় থাকা এক ধরনের স্নায়ুকোষের মাধ্যমে পরিবাহিত হয়।)

গাছ কাটার ফলে পরিবেশ বিপর্যয় ভীতিকর পর্যায়ে পৌঁছাচ্ছে

এবার আসা যাক বাক ও শ্রবণশক্তির কথায়। এ লেখার শুরুতে উল্লেখ আছে যে গাছেরা শব্দ করতে পারে না। কিন্তু সাম্প্রতিক বৈজ্ঞানিক গবেষণা এ ব্যাপারেও সন্দেহ পোষণ করে। ওয়েস্টার্ন অস্ট্রেলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-গবেষক ড. মনিকা গ্যাগলিয়ানো আক্ষরিক অর্থেই মাটিতে কান পেতেছিলেন। ল্যাবরেটরিতে গাছেদের পর্যবেক্ষণ করা সম্ভব নয়। সেজন্য গবেষকরা শস্যের চারা নিয়ে গবেষণা শুরু করেন। কারণ সেটা তুলনামূলক সহজ। যাহোক, তারা যন্ত্রপাতি নিয়ে কাজে নেমে পড়লেন। অচিরেই তাদের শ্রবণযন্ত্রে ধরা পড়ল যে চারাগুলোর শেকড় ২২০ হার্টজ ফ্রিকোয়েন্সিতে চড়চড় আওয়াজ করছে। 

শেকড় শব্দ করছে? এতে অবশ্য চূড়ান্ত সিদ্ধান্তে আসা যায় না। কেননা মরা গাছের কাঠ পোড়ালেও চড়চড় আওয়াজ হয়। কিন্তু ল্যাবরেটরিতে আবিষ্কৃত আওয়াজগুলো গবেষকদের নড়েচড়ে বসতে বাধ্য করে। কারণ পরীক্ষাটির সঙ্গে সরাসরি জড়িত নয় যেসব চারা, সেগুলোর শেকড় প্রতিক্রিয়া দেখিয়েছে।২২০ হার্টজের চড়চড় আওয়াজ হওয়ার সঙ্গে সঙ্গেই এই চারাগুলোর শেকড়ের ডগা ঘুরে গেছে শব্দের উৎসের দিকে।

তার মানে, ঘাসগুলো এই ফ্রিকোয়েন্সিকে ধরেছে। কাজেই তারা 'শুনতে পায়'—এ কথা বলা ভুল হবে না।

উদ্ভিদ কি শব্দতরঙ্গের মাধ্যমে যোগাযোগ করে? মানুষ যোগাযোগের জন্য শব্দতরঙ্গ ব্যবহার করে। এই সূত্র ধরেই কি গাছেদেরকে আরও ভালোভাবে জানা যাবে, চেনা যাবে? দুর্ভাগ্যক্রমে আমাদের প্রযুক্তি এখনও এত উন্নত হয়নি, এবং এই ক্ষেত্রে গবেষণা সবে শুরু হয়েছে। তবে এই লেখা পড়ার পর আপনি যদি বনে হাঁটতে যান, এবং বৃক্ষশাখার মড়মড় কিংবা পাতার মর্মরধ্বনি শুনতে পান, তাহলে সেই আওয়াজের কারণ হয়তো স্রেফ বাতাস হবে না...

  • সূত্র: দ্য ল্যাঙ্গুয়েজ অব ট্রিজ 

Related Topics

গাছ / উদ্ভিদ / ভাষা / যোগাযোগ / গাছের ভাষা

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ইরানের নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত ৮, তেহরানে কুদস ফোর্সের সদর দপ্তরে হামলার দাবি ইসরায়েলের
  • পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে ইরান, আইন প্রণয়ন করছে
  • ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আরও ৩৬ দেশ যুক্ত করার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন
  • ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ যেভাবে শেষ হতে পারে...
  • ইরান কেন রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে
  • বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও কূটনৈতিক সংযোগ বাড়াতে ৫ দেশে নতুন মিশন খুলবে বাংলাদেশ

Related News

  • বোটানিক্যাল গার্ডেনে কার অধিকার বেশি, প্রাণ-প্রকৃতির না মানুষের?
  • ইউক্যালিপটাস-আকাশমণি গাছ নিষিদ্ধ ঘোষণা
  • নাগরি লিপির উইকিপিডিয়া: হারিয়ে যাওয়া লিপির পুনর্জাগরণ?
  • ঢাকা বাইপাস এক্সপ্রেসওয়ের আংশিক চালু ১ মে
  • যেভাবে হুমকির মুখে থাকা কাশ্মীরের ঐতিহ্যবাহী চিনার গাছ সংরক্ষণের লড়াই চলছে

Most Read

1
আন্তর্জাতিক

ইরানের নতুন হামলায় ইসরায়েলে নিহত ৮, তেহরানে কুদস ফোর্সের সদর দপ্তরে হামলার দাবি ইসরায়েলের

2
আন্তর্জাতিক

পারমাণবিক অস্ত্র বিস্তার রোধ চুক্তি থেকে বেরিয়ে যাবে ইরান, আইন প্রণয়ন করছে

3
আন্তর্জাতিক

ভ্রমণ নিষেধাজ্ঞার তালিকায় আরও ৩৬ দেশ যুক্ত করার কথা ভাবছে ট্রাম্প প্রশাসন

4
আন্তর্জাতিক

ইসরায়েল-ইরান যুদ্ধ যেভাবে শেষ হতে পারে...

5
আন্তর্জাতিক

ইরান কেন রাতে ইসরায়েলে ক্ষেপণাস্ত্র হামলা চালাচ্ছে

6
বাংলাদেশ

বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও কূটনৈতিক সংযোগ বাড়াতে ৫ দেশে নতুন মিশন খুলবে বাংলাদেশ

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net