বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও কূটনৈতিক সংযোগ বাড়াতে ৫ দেশে নতুন মিশন খুলবে বাংলাদেশ

ক্রমপরিবর্তনশীল ভূরাজনৈতিক পরিবেশ, আন্তর্জাতিক অর্থনৈতিক বাস্তবতা ও এবং এলডিসি থেকে উত্তরণের প্রেক্ষাপটে ইউরোপ ও দক্ষিণ আমেরিকার সঙ্গে রাজনৈতিক সংযোগ জোরদার, বাণিজ্য সম্প্রসারণ ও প্রবাসী বাংলাদেশিদের উন্নয়ন প্রক্রিয়ায় সম্পৃক্ত করতে পাঁচ দেশে নতুন মিশন স্থাপনের উদ্যোগ নিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
আয়ারল্যান্ডের ডাবলিন, নরওয়ের অসলো, আর্জেন্টিনার বুয়েনস এইরেস, জার্মানির ফ্রাঙ্কফুর্ট ও ব্রাজিলের সাওপাওলো শহরে এসব মিশন স্থাপন করা হবে।
এসব শহরে মিশন স্থাপনে বিভিন্ন শ্রেণীর পদসৃজনসহ বিভিন্ন বিষয়ে অনুমোদন চেয়ে গত ২ জুন অর্থ মন্ত্রণালয়ে চিঠি দিয়েছে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়ের সহকারী সচিব আবু ছুমাইয়া স্বাক্ষরিত চিঠিতে বলা হয়েছে, এসব গুরুত্বপূর্ণ স্থানে কূটনৈতিক উপস্থিতি বাংলাদেশের জন্য শুধু নতুন অর্থনৈতিক সুযোগই সৃষ্টি করবে না, বরং একটি গতিশীল, বহুমাত্রিক ও ভবিষ্যতমুখী পররাষ্ট্রনীতির ভিত্তিও সুদূঢ় করবে।
উদাহরণ হিসেবে মন্ত্রণালয় বলেছে, ইউরোপের অন্যতম প্রগতিশীল, প্রযুক্তিনির্ভর ও শিক্ষাবান্ধব দেশ আয়ারল্যান্ডে দূতাবাস স্থাপন করা হলে আইটি, স্বাস্থ্যসেবা ও উচ্চশিক্ষা খাতে প্রবেশাধিকার সহায়ক হবে।
চিঠিতে আরও বলা হয়, নরওয়ে আন্তর্জাতিক শান্তি, জলবায়ু অর্থায়ন ও মানবাধিকারে অগ্রণী ভূমিকা পালনকারী একটি কল্যাণরাষ্ট্র। দেশটির সঙ্গে কৌশলগত অংশীদারত্ব বাংলাদেশকে বৈশ্বিক উন্নয়ন নীতিতে অধিকতর সম্পৃক্ত করতে পারে।
ফ্রাঙ্কফুর্টে মিশন স্থাপন সম্পর্কে চিঠিতে বলা হয়েছে, ইউরোপের 'অর্থনৈতিক হৃৎপিণ্ড' ফ্রাঙ্কফুর্টে কনস্যুলেট জেনারেল স্থাপন মানে শুধু জার্মানিতে বিপুল প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবাদান করা নয়, বরং সেখানকার বৈদেশিক বাণিজ্য, বিনিয়োগ ও রপ্তানি বাজারে সরাসরি সম্পৃক্ত হওয়া।
ল্যাটিন আমেরিকার গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক শক্তি আর্জেন্টিনায় মিশন স্থাপন বাংলাদেশের রপ্তানি পণ্য প্রবেশ, কৃষিভিত্তিক অংশীদারত্ব ও গ্লোবাল সাউথে কূটনৈতিক প্রসারে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখবে বলে উল্লেখ করা হয় চিঠিতে।
ব্রাজিলের প্রশাসনিক রাজধানী ব্রাসিলিয়ায় দূতাবাস থাকলেও প্রকৃত ব্যবসায়িক কেন্দ্র সাও পাওলোতে মিশন না থাকায় সেখানে থাকা প্রবাসী বাংলাদেশিদের সেবা ও বাণিজ্য সম্প্রসারণ কার্যত বাধাগ্রস্ত হচ্ছে বলে মনে করে পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয়।
মন্ত্রণালয় বলেছে, স্থায়ী কূটনৈতিক মিশন কোনো অঞ্চলে বাংলাদেশের ভূরাজনৈতিক প্রভাব বৃদ্ধির পাশাপাশি রাষ্ট্রীয় সক্ষমতার প্রতীক হিসেবে প্রবাসী বাংলাদেশিদের আত্মবিশ্বাস জোরদার করে। এছাড়াও এটি স্বাগতিক দেশে স্থানীয় সরকারের নীতি প্রণয়নে বাংলাদেশের স্বার্থ কার্যকরভাবে প্রতিফলিত করার সুযোগ তৈরি করে।
পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় আরও বলেছে, এতে দ্বিপাক্ষিক সম্পর্ক আরও জোরদার হয়। পাশাপাশি আন্তর্জাতিক মঞ্চে বাংলাদেশের মর্যাদা বৃদ্ধি পায় এবং রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও সাংস্কৃতিক সংযোগ দৃঢ় হয়।
বর্তমানে বিশ্বের ৬০টি দেশে বাংলাদেশের ৮৪টি কূটনৈতিক মিশন রয়েছে।