Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

বোটানিক্যাল গার্ডেনে কার অধিকার বেশি, প্রাণ-প্রকৃতির না মানুষের?

গোলাপবাগানের প্রবেশমুখে গোলাপ হাতে ধরা একটি ভাস্কর্য দেখে বিষম খেলাম। শাপলা পুকুরের ধারে প্রজাপতি বাগানেও একটি প্রজাপতির ভাস্কর্য রয়েছে, সেটিও স্থান-কাল-পাত্র অনুযায়ী খানিকটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হলো। উদ্যান অফিসের এক কর্মকর্তার কাছে জানতে পারি, এসব ভাস্কর্য প্রশিক্ষিত কোনো ভাস্কর দিয়ে করানো হয়নি, বরং রাজমিস্ত্রিকে দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।
বোটানিক্যাল গার্ডেনে কার অধিকার বেশি, প্রাণ-প্রকৃতির না মানুষের?

ফিচার

সালেহ শফিক
29 May, 2025, 10:00 pm
Last modified: 29 May, 2025, 10:18 pm

Related News

  • আপনার প্রিয় পোষা প্রাণীর যত্নে কাজ করেন তারা
  • সিলেটে নদীতে পানি খেতে এসে ধরা পড়ল বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণী, পরে অবমুক্ত 
  • এই শহরের নালা-নর্দমায় ঘুরে বেড়ায় কুমিরের দল
  • লস এঞ্জেলেসের ভয়াবহ দাবানলে বাস্তুহারা কুকুর, গাধা, ঘোড়া
  • ছোট হওয়া গাছ, গজদন্তহীন হাতি: মানবসৃষ্ট পরিবর্তনের সাথে যেভাবে খাপ খাওয়াচ্ছে প্রাণীরা

বোটানিক্যাল গার্ডেনে কার অধিকার বেশি, প্রাণ-প্রকৃতির না মানুষের?

গোলাপবাগানের প্রবেশমুখে গোলাপ হাতে ধরা একটি ভাস্কর্য দেখে বিষম খেলাম। শাপলা পুকুরের ধারে প্রজাপতি বাগানেও একটি প্রজাপতির ভাস্কর্য রয়েছে, সেটিও স্থান-কাল-পাত্র অনুযায়ী খানিকটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হলো। উদ্যান অফিসের এক কর্মকর্তার কাছে জানতে পারি, এসব ভাস্কর্য প্রশিক্ষিত কোনো ভাস্কর দিয়ে করানো হয়নি, বরং রাজমিস্ত্রিকে দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।
সালেহ শফিক
29 May, 2025, 10:00 pm
Last modified: 29 May, 2025, 10:18 pm

ইয়ামীন আলীর বয়স ছয়ত্রিশ। মিরপুর এক নম্বরের মুক্তিযোদ্ধা মার্কেটের পেছনে তার বাসা। ছোটবেলা থেকেই বোটানিক্যাল গার্ডেনে যাওয়া-আসা করেন।

তার শৈশবে উদ্যানটিকে এখনকার তুলনায় অনেক বেশি বুনো মনে হতো, তখন নানা ধরনের টক ফল পাওয়া যেত সহজেই। আজ এসেছেন এক বন্ধুর সঙ্গে, যিনি গার্ডেনের মৌসুমী ফল—যেমন আম, কাঁঠাল ইত্যাদির টেন্ডার নিতে আগ্রহী।

তার কাছে জানতে চাইলাম, সরকার এই টেন্ডার দিয়ে কতটা লাভবান হয়? ইয়ামীন বললেন, 'খুবই সামান্য। বরং প্রাণীরা এগুলো খেয়ে ভালো থাকতে পারত।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক উদ্যানের এক গার্ডেনারের সঙ্গে কথা বলে জানা গেল, ২০১৭-১৮ সালের দিকে একটি উন্নয়ন প্রকল্প গ্রহণ করা হয়েছিল। এর আওতায় জলাশয়গুলোকে গভীর করা, ইটবিছানো পথকে পিচঢালা পথে রূপান্তর করার মতো নানা কাজ করা হয়। ফলে উদ্যানের পারিপার্শ্বিকতা ও নিরাপত্তা বাড়লেও প্রকৃতি কিছুটা ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে।

গোলাপবাগানের প্রবেশমুখে গোলাপ হাতে ধরা একটি ভাস্কর্য দেখে বিষম খেলাম। শাপলা পুকুরের ধারে প্রজাপতি বাগানেও একটি প্রজাপতির ভাস্কর্য রয়েছে, সেটিও স্থান-কাল-পাত্র অনুযায়ী খানিকটা অসামঞ্জস্যপূর্ণ বলে মনে হলো। উদ্যান অফিসের এক কর্মকর্তার কাছে জানতে পারি, এসব ভাস্কর্য প্রশিক্ষিত কোনো ভাস্কর দিয়ে করানো হয়নি, বরং রাজমিস্ত্রিকে দিয়ে নির্মাণ করা হয়েছে।

তিনি আরো বললেন, 'বছরে আমরা সরকারকে ৫ কোটি টাকার রাজস্ব দিয়ে থাকি। এই টাকা আসে গেট টিকিট, টয়লেট টিকিট, ফল বিক্রি ও শুটিং বাবদ। তাই দর্শনার্থী ও শুটিং পার্টিকে আকৃষ্ট করতে কিছু বাহারি স্থাপনা তৈরি করা হয়েছে।'

প্রাণীরক্ষা কর্মী ও লেখক বাপ্পী খানের কাছে বোটানিক্যাল গার্ডেন বিষয়ে কিছু প্রশ্ন রেখেছিলাম। তার একটি ছিল—নগরে গার্ডেন রাখা কতটা প্রয়োজনীয়?

তিনি বলেন, 'যান্ত্রিক জীবনের ক্লান্তি মোচনে, দূষণমুক্ত সময় কাটাতে, বিশুদ্ধ বাতাসের জন্য এবং প্রাণীরক্ষার প্রয়োজনেও নগরে উদ্যান জরুরি। উদ্যানটি দেশি-বিদেশি বিভিন্ন জাতের উদ্ভিদের সংরক্ষণশালাও। একটি সুপরিকল্পিত পরিচালনা নীতি ও কিছু কৌশলগত পদক্ষেপ গ্রহণের মাধ্যমে একে আরো প্রকৃতিবান্ধব করে তোলা সম্ভব।'

কিন্তু, উদ্যানের ভেতরে শিশুপার্ক, স্টিল ফেন্সিং, কংক্রিটের ছাতা, লেকের ওপর ঘর—এসব কি প্রকৃতিবান্ধব? তিনি উত্তর দেন, 'আমি মনে করি, ওইসব স্থাপনায় বাঁশ, কাঠ বা পাটের রশি যত ব্যবহার করা যায়, তত ভালো।'

আপনার আগে দেখা গার্ডেনের সঙ্গে এখনকার গার্ডেনের পার্থক্য কতটা? জানতে চাইলে বাপ্পী খান বলেন, 'বর্তমানে অনেকটাই সুশৃঙ্খল ও সুনির্দিষ্ট পদ্ধতিতে গার্ডেন পরিচালিত হচ্ছে বলে মনে হয়। মাঝে প্রাণী কিছুটা কমে গিয়ে থাকলেও বর্তমানে আবার স্বাভাবিক অবস্থা দেখা যাচ্ছে। বিশেষ করে পাখির দেখা মিলছে অনেক জাতের।'

সবুজ আচ্ছাদন এখন নগর আয়তনের মোটে ১১ শতাংশ। এর মধ্যে বোটানিক্যাল গার্ডেন তরুলতার সংখ্যা ও বৈচিত্র্যে এগিয়ে। পুরোপুরি সংরক্ষিত এলাকা না হলেও এটি সংরক্ষণের মর্যাদার কাছাকাছি।

তাই এ উদ্যানটি বন্যপ্রাণী তথা পাখি, স্তন্যপায়ী, সরীসৃপ ও উভচর প্রাণীদের আশ্রয়স্থল হয়ে উঠার কথা। কিন্তু গৃহীত কিছু উন্নয়ন প্রকল্প উদ্যানটির প্রাকৃতিকভাবে বেড়ে ওঠাকে কিছুটা বাধাগ্রস্ত করেছে বলেই অভিযোগ করেছেন অনেকে।

'শুরু থেকেই কীভাবে যেন ভুল ধারণাটি ছড়িয়ে পড়েছে—চিড়িয়াখানা কেবল প্রাণীদের জন্য আর বোটানিক্যাল গার্ডেন শুধু বৃক্ষের জন্য। কিন্তু এটি কি কখনো সম্ভব যে গাছ আছে আর সেখানে পাখি থাকবে না? সাধারণ মানুষ যেমন, কর্তৃপক্ষও কিন্তু এ ভুলের শিকার। উপরন্তু মনে করা হয়, স্থান দুটি মানুষের বিনোদন বা মনোরঞ্জনের জন্য। তাই প্রাণী বা বৃক্ষকে অগ্রাধিকার দেওয়া হয় না। মানুষের চলাচল বা উপভোগের উপযোগী কাঠামো গড়ে তোলাই অগ্রাধিকার পায়।'

বলছিলেন আশিকুর রহমান সমী। তিনি প্রাণ-প্রকৃতি গবেষক এবং পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টার সহকারী একান্ত সচিব।

২০২২ সাল থেকে বোটানিক্যাল গার্ডেনে সমীর উদ্যোগে 'ওয়াইল্ড ওয়াক' শুরু হয়, যার উদ্দেশ্য শিশুদের উদ্ভিদ ও জীববৈচিত্র্য সম্পর্কে জানানো। গাজীপুর, মানিকগঞ্জ, মুন্সিগঞ্জ, ময়মনসিংহ থেকেও শিশু ও অভিভাবকেরা এতে অংশ নিয়েছে।

তিনি আরো বলছিলেন, 'গার্ডেনে স্টিলের বেড়া বিদেশে দেখা যায় না। কিন্তু আমাদের গার্ডেনে ঢোকার মুখেই এমন বেড়া দেখা যায়। এটা কর্তৃপক্ষকে একরকম বাধ্য হয়েই করতে হয়েছে। নইলে দর্শনার্থীরা গোলাপ ফুল ছিঁড়ে ফেলে, চারাও তুলে নিয়ে যায়। পরিতাপের বিষয়, প্রকৃতি রক্ষার জন্য প্রকৃতিকে বেঁধে রাখতে হচ্ছে।'

তিনি যোগ করলেন, 'তবে পিচঢালা পথ, কংক্রিটের ছাতা, ছাতায় লাল রঙের ব্যবহার উদ্যানে কাম্য নয়। এগুলো প্রকৃতির অধিকার বিবেচনায় রেখে করা হয়নি। আবার যদি প্রকৃতিকে দেখার ও প্রকৃতির সঙ্গে মেশার উপায় দর্শনার্থীদের জানা থাকত তবেও কিন্তু ক্ষতি কম হতো। এজন্য পাঠ্যপুস্তকে প্রাণ ও প্রকৃতি অন্তর্ভুক্ত থাকা দরকার।'

তিনি আরো বললেন, 'বর্তমান সরকারের কাছে দায়িত্ব ন্যস্ত হওয়ার পর সংরক্ষিত বনাঞ্চল বা উদ্যানে পিকনিক না করার ব্যাপারে কড়াকড়ি আরোপ করা হয়েছে। বোটানিক্যাল গার্ডেনেও কোনো পিকনিক এখন আর করতে দেওয়া হচ্ছে না। আরো আশার ব্যাপার হচ্ছে, গত ৬ মাসে গার্ডেনের শব্দ ও প্লাস্টিক দূষণ অনেকটাই কমে গেছে।'

এখন বলা যাক গার্ডেনের আকার, আয়তন, বৃক্ষ, প্রাণী, প্রতিষ্ঠাকাল ইত্যাদি বিষয়ে। ২০২১ সালে বন অধিদপ্তর প্রকাশিত বুকলেট থেকে জানা যায়, ১৯৬১ সালে ২১৫ একর জায়গার ওপর গার্ডেনটি প্রতিষ্ঠা করা হয়। এর সীমানা প্রাচীর ৫ কিলোমিটার।

অভ্যন্তরীণ রাস্তা ও ফুটপাত সাড়ে সাত কিলোমিটার। এখানে ওয়াচ টাওয়ার ১টি, গণশৌচাগার ৭টি, ভিজিটর ইন্টারপ্রিটেশন সেন্টার ১টি, অফিস ভবন ১টি, ছোট একটি গ্রন্থাগারও আছে। তিনটি করে গোলাপ ও প্রজাপতি বাগান রয়েছে।

মোট উদ্ভিদ সংখ্যা ৮০ হাজার। ১৯০ প্রজাতির পাখি, ১৫ প্রজাতির স্তন্যপায়ী প্রাণী এবং ১৫ প্রজাতির সরীসৃপ ও উভচর রয়েছে এখানে।

দুদিন পরে আবারো গেলাম গার্ডেনে। দেখা করলাম বর্তমান পরিচালক শওকত ইমরান আরাফাতের সঙ্গে (কার্যকাল শুরু, মে ২০২৪)। আরবান ফরেস্ট্রি বিষয়ে তিনি উচ্চতর পড়াশোনা করেছেন দক্ষিণ কোরিয়ার সিউলে। তার থিসিসের বিষয় ছিল নগর বনায়নে বাংলাদেশ সরকারের ভূমিকা।

তার তত্ত্বাবধায়ক প্রফেসর জিজ্ঞেস করেছিলেন, তোমাদের বনাঞ্চলগুলো কোথায় অবস্থিত? আরাফাত বলেছিলেন, দেশের বিভিন্ন প্রান্তে। প্রফেসর আরো জানতে চেয়েছিলেন, ঢাকার ভূমিরূপ কেমন এবং সেখানে বনায়ন পরিস্থিতি কী?

আরাফাত উত্তর দিয়েছিলেন, 'নগরের গঠন সমতল আর সেখানে সবুজ এলাকা হাতে গোনা, জাতীয় উদ্যান (বোটানিক্যাল গার্ডেন) ঢাকার মোট আয়তনের ০.০৫ ভাগ মাত্র।'

প্রফেসর বলেছিলেন, 'নগর বনায়ন খুবই গুরুত্বপূর্ণ। কারণ সিটি শেইপস দ্য স্টেট (নগর রাষ্ট্রের আকৃতি দেয়)। যেহেতু নগরেই প্রভাবশালী ও নীতিনির্ধারকরা বসবাস করেন, তারা যদি সবুজে না থাকেন তবে সবুজের গুরুত্ব বুঝতে পারবেন না। তাই নগর বনায়নের বিকল্প নেই।'

আরাফাতকে তার প্রফেসর দেখিয়েছেন, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধ ও তার পরে দুই কোরিয়া যুদ্ধের ফলাফলে সিউল শহরটি বৃক্ষহীন হয়ে পড়েছিল। সত্তরের দশকে সিউলে সবুজ দেখাই যেত না। নাগরিকরা পরে পাহাড়ের ওপর চারা ও পানি বয়ে নিয়ে গেছেন দিনের পর দিন এবং শহরকে অনেকটাই সবুজ করে তুলেছেন।

আরো পরে, ২০০০ সালের দিকে সরকারি কর্মকর্তা-কর্মচারি ও নাগরিকদের সম্মিলিত প্রয়াসে সিউলে পঞ্চাশটি বনাঞ্চল গড়ে তোলা সম্ভব হয়েছে। সিউলে এখন বনভূমি ২৭ ভাগের বেশি।

শহর মানে হলো অ্যামিউজমেন্ট পার্ক, শপিং মল, উঁচু উঁচু ভবন। কিন্তু যদি মানুষের নিশ্বাস নিতে কষ্ট হয়, তবে শহর যত আধুনিক হোক না কেন তা অর্থহীন হয়ে যায়। তাই এসবের মধ্যেই বনায়ন চালিয়ে যেতে হবে।

১৯৯৩ সালে বাংলাদেশ সরকার নগর বনায়ন নামে একটি প্রকল্প চালু করেছিল। ক্যান্টনমেন্টসহ আরো কিছু এলাকায় যেসব বৃহদাকার বৃক্ষ দেখা যায়, তা সে উদ্যোগের ফসল। তবে পরবর্তীতে আরো অধিক নগরায়নে বেশ কিছু গাছ কাটা পড়েছে।

এখন তাই প্রায়ই ঢাকা বিশ্বের দূষিত নগরীর তালিকায় নাম ওঠাচ্ছে। এর মধ্যে বোটানিক্যাল গার্ডেনটি কিছুটা স্বস্তিদায়ক। তবে এখানে কিছু স্থাপনা তৈরি হয়েছে যেগুলো না হলে প্রকৃতির বিকাশ আরো গতিশীল হতো বলে জনাব আরাফাতও মনে করেন।

তিনি ইতিমধ্যে গার্ডেনের যাত্রাবাড়ি এলাকায় ৩৯০ ফুট দীর্ঘ একটি বেয়ারফুট ট্রেইল গড়ার প্রকল্প হাতে নিয়েছেন এবং শীঘ্রই তা চালু হবে।

তিনি বলছিলেন, 'নগরের মানুষ মাটির স্পর্শ পায় না। এই ট্রেইলে খালি পায়ে হাঁটার সুযোগ হবে। আমরা ট্রেইল থেকে কাচের টুকরা, প্লাস্টিক অপসারণ শুরু করেছি। শিশুপার্কটিকেও পরিবেশবান্ধব করে তোলার জন্য অভিজ্ঞদের সঙ্গে আলাপ শুরু করেছি। সেখানে ট্রি হাউজ, উডেন ট্রেইল ইত্যাদি তৈরি করা যেতে পারে।'

বাংলা কলেজের ৫০ জন ছাত্রকে নিয়ে একটি স্বেচ্ছাসেবী দল গড়ে তোলার চেষ্টা করছেন শওকত ইমরান আরাফাত। এর নাম রাখা হচ্ছে 'জিরো ওয়েস্ট ব্রিগেড'। দলটি গার্ডেনের পরিবেশ সম্পর্কে দর্শনার্থীদের সচেতন করবে, গার্ডেনের পরিবেশ সংরক্ষণে উৎসাহী করবে।

তিনি বলছিলেন, 'আমার সহকর্মীদের কাছে গার্ডেন সম্পর্কে আমার দর্শন ইতিমধ্যে পরিষ্কার করেছি। তাদের জানিয়েছি, নগরের প্রায় সবটুকুই মানুষের জন্য। মানুষ সেখানে সার্বভৌম, স্বাধীন। বন্যপ্রাণী আর বৃক্ষের জন্যও এমন একটি স্বাধীন, সার্বভৌম জায়গা থাকা দরকার, যেখানে তারা নির্বিঘ্নে বিচরণ করবে ও বেড়ে উঠবে। আর সে স্থানটি হচ্ছে জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান বা ন্যাশনাল বোটানিক্যাল গার্ডেন।

'তাই আমি নতুন কোনো স্থাপনা গড়তে উৎসাহী নই, উর্ধ্বতনদের কাছ থেকে কোনো স্থাপনা অনুমোদন করিয়ে নিতেও অনাগ্রহী। তবে এখনো গার্ডেনের সীমানা প্রাচীর সম্পূর্ণ হয়নি, এটি সম্পূর্ণ করা জরুরি,' বলেন তিনি।

গার্ডেনের ফলের ইজারা দেওয়ার প্রসঙ্গ তুললে তিনি বললেন, 'এবার মাত্র ৬৪ হাজার টাকার ফল বিক্রি হয়েছে। এ টাকা রাষ্ট্রের জন্য অতি নগণ্য। উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের নিকট ইতোমধ্যে ইজারা বন্ধ করার ব্যাপারে অনুমতি চেয়েছি। গার্ডেনটি পুরোপুরি সংরক্ষিত বনাঞ্চলের মর্যাদা লাভ করেনি, অল্প একটুর জন্য আটকে আছে। এ ব্যাপারেও কাজ চালিয়ে যাচ্ছি।'

গার্ডেনের রেস্ট হাউজ নিয়ে তার মনোযোগ আকর্ষণ করলে তিনি বললেন, 'এটি কেবল বিশ্রাম কেন্দ্র। বড় কোনো অ্যাক্টিভিটি এখানে হয় না। গবেষক বা উর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষ অতিথি হয়ে এলে কিছু সময় এখানে বিশ্রাম নেন।'

প্রখ্যাত বন্যপ্রাণী সংরক্ষক এবং বন্যপ্রাণী ও চিড়িয়াখানা ব্যবস্থাপনা বিশেষজ্ঞ ড. মোহাম্মদ আলী রেজা খান গার্ডেনের মৌলিক কিছু সংস্কারের প্রস্তাব রাখলেন:

১. বোটানিক্যাল গার্ডেন ও চিড়িয়াখানা প্রধানের পদবী হওয়া উচিত 'কিউরেটর', যিনি হবেন প্রকৃতি অন্তপ্রাণ। উপরন্তু এ দুটি প্রতিষ্ঠানে বোটানিস্ট ও জুওলজিস্টদেরই আধিক্য থাকবে। প্রতি তিন বছরে নতুন নতুন পরিচালক এলে প্রকল্প বাস্তবায়ন ও প্রশাসনিক কাজেই তার অধিকাংশ সময় অতিবাহিত হয়ে যায়।

২. গার্ডেন ও ন্যাশনাল হার্বেরিয়ামকে বনবিভাগ থেকে বিযুক্ত করতে হবে। দুটি মিলিয়ে আলাদা একটি ইনস্টিটিউট গড়ে তোলা ভালো।

৩. গার্ডেনে ৮০-৯০ শতাংশ বোটানিক্যাল এলিমেন্ট থাকবে। গার্ডেনকে বাণিজ্যিক প্রতিষ্ঠান হিসেবে বিবেচনা করা কোনোভাবেই যুক্তিসংগত নয়।

৪. গার্ডেনে উন্নয়ন প্রকল্পের বস্তুত প্রয়োজন নেই। একাত্তরের পর থেকে যে কয়টি প্রকল্প হাতে নেওয়া হয়েছে, সেগুলো গার্ডেনের কোনো উপকারে আসেনি। যেমন, জলাভূমি খনন করে পুকুর নির্মাণ করা হয়েছে, সম্ভবত মাছ চাষই এর উদ্দেশ্য।

জনাব রেজা খান মনে করেন, বর্তমান সরকারের পক্ষে ওইসব প্রস্তাব বাস্তবায়ন সহজ। প্রাণ-প্রকৃতির প্রতি যাদের আন্তরিকতা ও জানাশোনা অধিক, তাদেরই অধিকারে থাকা দরকার গার্ডেন, চিড়িয়াখানা ইত্যাদি।


ছবি: সৈয়দ জাকির হোসেন/টিবিএস

Related Topics

বোটানিক্যাল গার্ডেন / জাতীয় উদ্ভিদ উদ্যান / প্রাণ ও প্রকৃতি / প্রাণী / উদ্ভিদ / উদ্যান / জাতীয় উদ্যান

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • কাল থেকে পাওয়া যাবে নতুন টাকা, সংগ্রহ করবেন যেভাবে
  • দেশের প্রথম মনোরেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে: মেয়র শাহাদাত
  • আগামী বছর থেকে অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে
  • বাস-ট্রাক, ট্যাক্সির অগ্রিম কর বাড়ছে ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত, পরিবহন ব্যয় বাড়ার শঙ্কা
  • মেজর সিনহা হত্যা মামলা: প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল
  • বাজেটে প্রাথমিকে বরাদ্দ কমছে, বাড়ছে মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষায়

Related News

  • আপনার প্রিয় পোষা প্রাণীর যত্নে কাজ করেন তারা
  • সিলেটে নদীতে পানি খেতে এসে ধরা পড়ল বিলুপ্ত প্রজাতির প্রাণী, পরে অবমুক্ত 
  • এই শহরের নালা-নর্দমায় ঘুরে বেড়ায় কুমিরের দল
  • লস এঞ্জেলেসের ভয়াবহ দাবানলে বাস্তুহারা কুকুর, গাধা, ঘোড়া
  • ছোট হওয়া গাছ, গজদন্তহীন হাতি: মানবসৃষ্ট পরিবর্তনের সাথে যেভাবে খাপ খাওয়াচ্ছে প্রাণীরা

Most Read

1
অর্থনীতি

কাল থেকে পাওয়া যাবে নতুন টাকা, সংগ্রহ করবেন যেভাবে

2
বাংলাদেশ

দেশের প্রথম মনোরেলের মাধ্যমে চট্টগ্রাম হবে দক্ষিণ এশিয়ার গেটওয়ে: মেয়র শাহাদাত

3
অর্থনীতি

আগামী বছর থেকে অনলাইনে ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়া বাধ্যতামূলক হচ্ছে

4
অর্থনীতি

বাস-ট্রাক, ট্যাক্সির অগ্রিম কর বাড়ছে ৮৮ শতাংশ পর্যন্ত, পরিবহন ব্যয় বাড়ার শঙ্কা

5
বাংলাদেশ

মেজর সিনহা হত্যা মামলা: প্রদীপ ও লিয়াকতের মৃত্যুদণ্ড বহাল

6
অর্থনীতি

বাজেটে প্রাথমিকে বরাদ্দ কমছে, বাড়ছে মাধ্যমিক ও মাদ্রাসা শিক্ষায়

The Business Standard
Top

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net

Copyright © 2022 THE BUSINESS STANDARD All rights reserved. Technical Partner: RSI Lab