জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া সম্ভব নয়, উন্নয়নের ধারা বদলাতে হবে: রিজওয়ানা
জলবায়ু পরিবর্তনের ক্ষতি কোনোভাবেই পূরণ করা সম্ভব নয় বলে মন্তব্য করেছেন পরিবেশ, বন ও জলবায়ু পরিবর্তন মন্ত্রণালয় এবং পানি সম্পদ মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সৈয়দা রিজওয়ানা হাসান।
তিনি বলেন, 'আমরা প্রায়ই বলি, ক্ষতি পুষিয়ে নিতে হবে। কিন্তু বাস্তবে জলবায়ুজনিত ক্ষতি পুষিয়ে নেওয়া যায় না। এখন আমাদের মূল অগ্রাধিকার হওয়া উচিত উন্নয়নের ধারা ও ভোগের ধরনে মূলগত পরিবর্তন আনা।'
মঙ্গলবার (২৮ অক্টোবর) আগারগাঁওয়ের পরিবেশ অধিদপ্তরে 'জনগণের নেতৃত্বে নীতি প্রণয়ন: কপ ৩০-এ বাংলাদেশের অবস্থান' প্রকাশ অনুষ্ঠান শেষে তিনি এসব কথা বলেন।
রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'শুধুমাত্র অভিযোজন দিয়ে টেকসই ভবিষ্যৎ নিশ্চিত করা সম্ভব নয়; নির্গমন হ্রাসে বাস্তব পদক্ষেপ নিতে হবে। আমরা কপ সম্মেলনে নতুন নতুন পরিভাষা শিখি—"লস অ্যান্ড ড্যামেজ", "অ্যাডাপ্টেশন ফান্ড"; কিন্তু দেশে ফিরে সেগুলোর বাস্তব প্রয়োগে ঘাটতি থেকে যায়।'
তিনি বলেন, 'বাংলাদেশ শুধু আলোচনার দেশ নয়, বাস্তবায়নের দেশ হতে চায়।'
রিজওয়ানা হাসান আরও বলেন, 'নদীভাঙা বাংলাদেশের সবচেয়ে নীরব অথচ ভয়াবহ বিপর্যয়। ঘূর্ণিঝড় বা বন্যার মতো দৃশ্যমান নয়, কিন্তু যারা নদীভাঙনে সব হারায়, তারা বোঝে এর গভীরতা।'
তিনি জানান, দেশের বাজেটের বড় অংশ শহরকেন্দ্রিক উন্নয়নে ব্যয় হয়, অথচ নদীভাঙায় গৃহহীন মানুষ রাষ্ট্রের প্রাধান্য পায় না। এই বৈষম্য দূর করার আহ্বান জানান তিনি।
নেতৃত্ব প্রসঙ্গে রিজওয়ানা হাসান বলেন, 'নেতৃত্ব মানে কেবল আন্তর্জাতিক মঞ্চে বক্তৃতা নয়, দেশের ভেতরে বাস্তব পরিবর্তন আনা।'
তিনি আহ্বান জানান, দেশের প্রতিটি উপজেলা ও জেলায় স্বেচ্ছাসেবী নেটওয়ার্ক গড়ে তুলে পরিবেশ সংরক্ষণে সবাইকে যুক্ত হতে হবে।
সবশেষে তিনি বলেন, 'অর্থের চেয়ে বেশি গুরুত্বপূর্ণ হলো মানসিকতা ও দৃষ্টিভঙ্গির পরিবর্তন। আমরা যদি ভোগবাদী উন্নয়নের পথ থেকে সরে এসে টেকসই উন্নয়নের দিকে ইউ-টার্ন নিতে পারি, তবেই ভবিষ্যৎ প্রজন্মের জন্য নিরাপদ পৃথিবী গড়া সম্ভব।'
