রাজশাহী বিশ্ববিদ্যলয়ে চলছে শিক্ষক-কর্মচারীদের তৃতীয় দিনের ‘কমপ্লিট শাটডাউন’, স্থবির ক্যাম্পাস

পোষ্য কোটার বিষয়কে কেন্দ্র করে শিক্ষক লাঞ্ছনার অভিযোগ তুলে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ডাকা 'কমপ্লিট শাটডাউন' বা সর্বাত্মক কর্মবিরতি তৃতীয় দিনে গড়িয়েছে। এর ফলে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্লাস, পরীক্ষা ও প্রশাসনিক কার্যক্রম পুরোপুরি বন্ধ হয়ে গেছে। টানা অচলাবস্থায় ক্যাম্পাস প্রায় শিক্ষার্থীশূন্য হয়ে পড়েছে।
২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপূজার ছুটি থাকায় এবং তার আগে এই কর্মবিরতির কারণে ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ থাকায় শিক্ষার্থীরা আগেভাগেই বাড়ি ফিরতে শুরু করেছেন। এতে পুরো ক্যাম্পাস ফাঁকা হয়ে পড়েছে বলে জানিয়েছেন শিক্ষার্থীরা।
বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী মীর কাদির বলেন, 'এমনিতে ২৯ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত দুর্গাপূজার ছুটি আছে। তার আগে এই কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে ক্লাস পরীক্ষা বন্ধ থাকায় বেশিরভাগ শিক্ষার্থী আগেভাগেই বাড়িতে চলে যাচ্ছে। এই কারণে পুরো ক্যাম্পাস ফাঁকা হয়ে পড়েছে।'
এদিকে, শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী শিক্ষার্থীদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে মঙ্গলবার সকাল থেকেই শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরের সামনে অবস্থান কর্মসূচি পালন করছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের একটি অংশ। অভিযুক্তদের বিরুদ্ধে দৃশ্যমান ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তিমূলক ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দিয়েছেন তারা।
রাবি অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, 'কমপ্লিট শাটডাউনের কারণে জরুরি পরিষেবা ব্যতিত প্রশাসনিক সব কার্যক্রম বন্ধ রয়েছে। শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী শিক্ষার্থী নামধারী সন্ত্রাসীদের বিরুদ্ধে ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চালিয়ে যাবো। কিন্তু দুঃখের বিষয় প্রশাসন থেকে এ বিষয়ে কোনো অগ্রগতি দেখছি না।'
আন্দোলনকারীরা পূর্বের ঘটনার উদাহরণ টেনে প্রশাসনের ভূমিকা নিয়ে সংশয় প্রকাশ করেছেন। এ বিষয়ে মোক্তার হোসেন আরও বলেন, 'গত ২ জানুয়ারি শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ১০ ঘণ্টা অবরুদ্ধ করে রাখার ঘটনায় প্রশাসনের পক্ষ থেকে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হলেও তা আলোর মুখ দেখেনি। গত ২০ সেপ্টেম্বরের ঘটনায় যে তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে তা-ও যে আলোর মুখ দেখবে তা নিয়ে আমরা সন্দিহান। তাই দৃশ্যমান অগ্রগতি ছাড়া আমরা কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।'
একই দাবি জানিয়ে বিশ্ববিদ্যালয়ের ফোকলোর বিভাগের চেয়ারম্যান অধ্যাপক ড. জাহাঙ্গীর হোসেন বলেন, 'শিক্ষক লাঞ্ছনাকারী সন্ত্রাসীদের ছাত্রত্ব বাতিল করে আইনগত ব্যবস্থা না নেওয়া পর্যন্ত আমরা আমাদের কর্মসূচি চালিয়ে যাবো।'
উল্লেখ্য, ক্যাম্পাসে চলমান অস্থিরতার কারণে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয় কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন পিছিয়ে দেওয়া হয়েছে। নির্বাচন কমিশন জানিয়েছে, ২৫ সেপ্টেম্বরের পরিবর্তে আগামী ১৬ অক্টোবর এই নির্বাচন অনুষ্ঠিত হবে।