শিক্ষক 'লাঞ্ছনার' প্রতিবাদে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের পূর্ণদিবস কর্মবিরতি চলছে

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে (রাবি) উপ-উপাচার্যসহ কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছনার ঘটনায় জড়িতদের দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবিতে পূর্ণদিবস কর্মবিরতি পালন করছেন শিক্ষক, কর্মকর্তা ও কর্মচারীরা।
রোববার সকাল সাড়ে ৯টা থেকে তারা শহীদ বুদ্ধিজীবী চত্বরে অবস্থান কর্মসূচি শুরু করেন। প্রশাসন ও একাডেমিক ভবনে স্বল্পসংখ্যক কর্মকর্তা-কর্মচারী থাকলেও অধিকাংশ বিভাগের ক্লাস ও পরীক্ষা বন্ধ রয়েছে।
রাবি অফিসার্স সমিতির সভাপতি মোক্তার হোসেন বলেন, "গতকাল ছাত্র নামধারী কিছু দুষ্কৃতকারী আমাদের প্রো-ভিসি ও কয়েকজন শিক্ষককে লাঞ্ছিত করেছে। আজকের মধ্যে তাদের বিরুদ্ধে প্রশাসন আইনগত ব্যবস্থা না নিলে আমরা আরও কঠোর কর্মসূচি দেব।"
পোষ্য কোটার প্রসঙ্গে তিনি বলেন, "আমরা এটাকে প্রাতিষ্ঠানিক সুবিধা বলি। দেশের সব বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি চাকরিতে এ সুবিধা বহাল রয়েছে। সেখানে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীরা কেন বঞ্চিত হবেন?"
এদিকে শিক্ষার্থীদের আন্দোলনের মুখে গত রাতে বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন পোষ্য কোটায় ভর্তি স্থগিত করেছে। সার্বিক পরিস্থিতি নিয়ে বিকেল ৩টায় জরুরি সিন্ডিকেট সভা আহ্বান করা হয়েছে বলে জানিয়েছেন উপাচার্য। শিক্ষার্থীদের দাবি—যে কোনো মূল্যে পোষ্য কোটা বাতিল করতে হবে, নইলে আবারও আন্দোলনে নামবেন তারা।
আন্দোলনকারী শিক্ষার্থী হাসান হাওলাদার বলেন, "জুলাই অভ্যুত্থানের মূল চেতনা সব ধরনের কোটা প্রথার বিলোপ। সেখানে বিশ্ববিদ্যালয়ে কোটা থাকলে তা জুলাই চেতনার পরিপন্থী। আমরা চাই সব বিশ্ববিদ্যালয় ও সরকারি প্রতিষ্ঠান থেকে কোটা বিলুপ্ত হোক।"
তিনি আরও বলেন, "সংবিধানে শুধু প্রতিবন্ধী ও অনগ্রসর জনগোষ্ঠীর জন্য কোটা রাখা হয়েছে। তাহলে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের জন্য কোটা কেন থাকবে?"
আরেক শিক্ষার্থী বলেন, "বিশ্ববিদ্যালয়ে চান্স পেতে শিক্ষার্থীদের কঠিন ভর্তি পরীক্ষাযুদ্ধে অংশ নিতে হয়। কিন্তু কোটায় কেবল পাশ মার্ক পেলেই ভর্তি হওয়া যায়। এটি চরম বৈষম্যমূলক।"
এর আগে শনিবার বিকেলে পোষ্য কোটা পুনর্বহালের প্রতিবাদে শিক্ষার্থীদের সঙ্গে শিক্ষক-কর্মকর্তা ও কর্মচারীদের ধস্তাধস্তির ঘটনা ঘটে। পরে মধ্যরাত পর্যন্ত শিক্ষার্থীরা কোটা বাতিলের দাবিতে আন্দোলন চালান।