জাপানের শহরে স্মার্টফোন ব্যবহার দৈনিক দুই ঘণ্টায় সীমিত করার প্রস্তাব

জাপানের কেন্দ্রীয় টোয়োআকে শহর কাজের বা পড়াশোনার সময়ের বাইরে ৬৯ হাজার নাগরিকের জন্য দিনে শুধু দুই ঘণ্টা স্মার্টফোন ব্যবহার করার প্রস্তাব দিয়েছে। এটি দেশজুড়ে ডিভাইস আসক্তি নিয়ে তীব্র বিতর্ক সৃষ্টি করেছে। খবর বিবিসি'র।
এই ধরনের প্রস্তাব জাপানে প্রথমবারের মতো করা হয়েছে বলে ধারণা করা হচ্ছে। টোয়োআকে পৌরসভা কর্তৃপক্ষ এই সপ্তাহের শুরুতে আইনপ্রণেতাদের কাছে এই প্রস্তাবনা পেশ করেছে এবং বর্তমানে তা নিয়ে আলোচন চলছে।
শহরের মেয়র মাসাফুমি কোকি বলেছেন, প্রস্তাবটি কড়াকড়িভাবে কার্যকর করা হবে না। বরং এটি নাগরিকদের তাদের স্ক্রিন সময় নিয়ন্ত্রণ করতে 'উৎসাহিত' করার জন্য প্রণীত হবে।
মেয়র আরও বলেন, 'দুই ঘণ্টার সীমা... শুধুমাত্র একটি নির্দেশিকা... নাগরিকদের উৎসাহিত করার জন্য।'
তিনি আরও বলেন, 'এর মানে এই নয় যে শহর তার নাগরিকদের অধিকার সীমিত করবে বা কোনো কর্তব্য আরোপ করবে।'
যদি আইনপ্রণেতারা অনুমোদন দেন, এই নিয়ম অক্টোবর থেকে কার্যকর হবে। নিয়ম ভঙ্গের জন্য কোনো শাস্তি থাকবে না।
জাপানের স্থানীয় কর্মকর্তারা জানিয়েছেন, রান্নার সময় ভিডিও দেখা, ব্যায়ামের সময় অনলাইন ব্যবহার, অনলাইন ক্লাস বা ই-স্পোর্টস অনুশীলনের মতো কাজে স্মার্টফোন ব্যবহার দুই ঘণ্টার সীমার মধ্যে অন্তর্ভুক্ত হবে না।
মেয়র কোকি বলেন, 'স্মার্টফোন আমাদের দৈনন্দিন জীবনের জন্য খুবই দরকারি।' তবে তিনি যোগ করেছেন, 'কিছু শিক্ষার্থী ফোন ছাড়া বাড়ি ছাড়তে চায় না, এজন্য তারা স্কুলেও যাচ্ছে না।'
তিনি আরও বলেছেন, 'প্রাপ্তবয়স্করাও ঘুম বা পরিবারের সঙ্গে সময় কাটানো কমিয়ে দিচ্ছেন, শুধু ফোন বা ট্যাবলেট স্ক্রল করার জন্য।'
জাপানের সংবাদমাধ্যম মেইনিচি জানিয়েছে, স্থানীয় কর্তৃপক্ষের সঙ্গে পরামর্শের সময় ১২০-এর বেশি বাসিন্দা ফোন বা ই-মেইল করেছেন। এর মধ্যে ৮০ শতাংশ বাসিন্দা নতুন নিয়ম পছন্দ করেননি। তবে কিছু মানুষ নতুন আইনের প্রতি সমর্থন জানিয়েছেন।
প্রস্তাব অনুযায়ী, প্রাথমিক বিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা রাত ৯টার পর স্মার্টফোন ব্যবহার বন্ধ করবে। বয়সে বড় শিক্ষার্থী ও প্রাপ্তবয়স্কদের জন্য সময়সীমা রাত ১০টা।
সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে অনেকেই এই প্রস্তাব নিয়ে অসন্তোষ প্রকাশ করেছেন। জাপান টাইমস-এর প্রতিবেদন অনুযায়ী একজন ব্যবহারকারী জানিয়েছেন, 'দুই ঘণ্টার মধ্যে বই পড়াও সম্ভব নয়, সিনেমাও দেখা যাবে না।'