বিএফআইইউ প্রধান শাহীনুলের বিরুদ্ধে অভিযোগ তদন্তে ৪ সদস্যের কমিটি

বাংলাদেশ ফাইন্যান্সিয়াল ইন্টেলিজেন্স ইউনিটের (বিএফআইইউ) প্রধান এ এফ এম শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা আপত্তিকর ভিডিও-র অভিযোগের সত্যতা যাচাইয়ে একটি তদন্ত কমিটি গঠন করেছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগ (এফআইডি)। কমিটিকে সাত কর্মদিবসের মধ্যে মতামতসহ প্রতিবেদন দাখিল করতে বলা হয়েছে।
মঙ্গলবার (১৯ আগস্ট) অর্থ মন্ত্রণালয়ের উপ-সচিব আফছানা বিলকিস স্বাক্ষরিত এক অফিস আদেশে এই তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়।
যুগ্মসচিবের নেতৃত্বে ৪ সদস্যের কমিটি
চার সদস্যের এই কমিটির আহ্বায়ক করা হয়েছে অর্থ মন্ত্রণালয়ের অতিরিক্ত সচিব সাঈদ কুতবকে। কমিটির অন্য তিন সদস্য হলেন— বাংলাদেশ ব্যাংকের নির্বাহী পরিচালক সিরাজুল ইসলাম, বাংলাদেশ ব্যাংকের আইসিটি-২ এর পরিচালক মতিউর রহমান এবং অর্থ মন্ত্রণালয়ের যুগ্ম সচিব মোহাম্মদ সাইদুল ইসলাম।
তদন্তকালীন সময়ে বিএফআইইউ প্রধান এএফএম শাহীনুল ইসলাম অফিস করতে পারবেন কি না, অথবা এই সময়ে তার বিরুদ্ধে অন্য কোনো ব্যবস্থা নেওয়া হবে কি না, সে বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে এই প্রতিবেদন লেখা পর্যন্ত [রাত ৮টা] মন্ত্রণালয়ে বৈঠক চলছিল বলে জানা গেছে।
উল্লেখ্য, বাংলাদেশ ব্যাংকের একটি চিঠির পরিপ্রেক্ষিতে এ ব্যবস্থা নিচ্ছে এফআইডি।
বিষয়টি নিশ্চিত করে আজ বুধবার (২০ আগস্ট) বিকেল সাড়ে ৪টার দিকে এফআইডি সচিব নাজমা মোবারেক টিবিএসকে বলেন, 'বাংলাদেশ ব্যাংকের চিঠির প্রেক্ষিতে আমরা আজকেই বিএফআইইউ প্রধানের বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নিচ্ছি। কী ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে, তা আপনারা কিছুক্ষণের মধ্যেই আনুষ্ঠানিকভাবে জানতে পারবেন।'
তিনি আরও বলেন, 'শাহীনুল ইসলামের বিরুদ্ধে ওঠা অভিযোগগুলো খতিয়ে দেখতে আজকের মধ্যেই তদন্ত কমিটি গঠন করা হচ্ছে। কমিটির রিপোর্ট ও সুপারিশের প্রেক্ষিতে পরবর্তী ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।'
বিএফআইইউ প্রধানের বিরুদ্ধে আপত্তিকর ভিডিও প্রদর্শনসহ বিভিন্ন অভিযোগ ওঠার পর মঙ্গলবার বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ড. আহসান এইচ মনসুর তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠান। তবে এই নির্দেশনার পরও শাহীনুল ইসলাম আজ যথারীতি অফিস করেছেন।
এ বিষয়ে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের কর্মকর্তারা জানান, বিএফআইইউ প্রধানকে সরকার নিয়োগ দেয়। তাই তার বিরুদ্ধে শাস্তিমূলক ব্যবস্থা নেওয়ার এখতিয়ারও একমাত্র সরকারের, এক্ষেত্রে আর্থিক প্রতিষ্ঠান বিভাগের।
কর্মকর্তারা আরও জানান, যে আইনে বিএফআইইউ প্রধানকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে, সেই আইনে তাকে বাধ্যতামূলক ছুটিতে পাঠানোর কোনো বিধান নেই। সরকার চাইলে তাকে বিশেষ ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওএসডি), বরখাস্ত বা চাকরিচ্যুত করতে পারে। কিন্তু বাংলাদেশ ব্যাংক বা গভর্নর সরাসরি তার বিরুদ্ধে কোনো ব্যবস্থা নিতে পারেন না। এ ক্ষেত্রে বাংলাদেশ ব্যাংক শুধু সরকারের কাছে ব্যবস্থা গ্রহণের সুপারিশ করতে পারে এবং সেই সুপারিশের ভিত্তিতে সরকার ব্যবস্থা নেবে।