পারমাণবিক স্থাপনায় ‘গুরুতর’ ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করলেন ইরানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী

যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সাম্প্রতিক বোমা হামলায় ইরানের পারমাণবিক স্থাপনাগুলোতে 'অত্যধিক ও গুরুতর' ক্ষয়ক্ষতির কথা স্বীকার করেছেন দেশটির পররাষ্ট্রমন্ত্রী আব্বাস আরাগচি। খবর বিবিসির।
গতকাল বৃহস্পতিবার আব্বাস আরাগচি একটি রাষ্ট্রীয় সম্প্রচারককে বলেন, ইরানের আণবিক শক্তি সংস্থা ক্ষয়ক্ষতি মূল্যায়ন করছে।
তবে তার এই বক্তব্যের কয়েক ঘণ্টা আগে দেশটির সর্বোচ্চ নেতা আয়াতুল্লাহ আলী খামেনি বলেন, এসব হামলা তাদের পারমাণবিক কর্মসূচিকে ব্যাহত করতে পারেনি।
যুক্তরাষ্ট্রের হামলায় ইরানের তিনটি পারমাণবিক স্থাপনা 'নিশ্চিহ্ন' হয়ে গেছে- মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের এমন দাবির পরিপ্রেক্ষিতে খামেনি এ কথা বলেছিলেন।
তিনি বলেছিলেন, হামলা চালিয়ে যুক্তরাষ্ট্র 'উল্লেখজনক কোনো কিছুই অর্জন করতে পারেনি'। খামেনি জোর দিয়ে বলেন, ট্রাম্প হামলার ক্ষয়ক্ষতিকে 'অতিরঞ্জিত' করে উপস্থাপন করেছেন। তবে আরাগচির বক্তব্য ভিন্ন কথা বলছে।
পারমাণবিক আলোচনার প্রসঙ্গ উল্লেখ করে পররাষ্ট্রমন্ত্রী আরও বলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে পারমাণবিক আলোচনা পুনরায় শুরু করার কোনো পরিকল্পনা নেই। ইসরায়েল যখন আক্রমণ শুরু করে তখন ইরান ষষ্ঠ দফার আলোচনা বাতিল করে।
তিনি বলেন, 'আমি স্পষ্টভাবে বলতে চাই, নতুন আলোচনা শুরু করার জন্য কোনো চুক্তি, ব্যবস্থা বা কথা হয়নি।'
পররাষ্ট্রমন্ত্রী কূটনীতির প্রতি তাদের সরকারের দৃষ্টিভঙ্গি 'নতুন রূপ' নেবে উল্লেখ করে বলেন, সরকার এখানে 'ইরানের জনগণের স্বার্থ' খতিয়ে দেখছে।
তবে এ বিষয়ে স্পষ্ট করে আর কিছুই বলেননি তিনি।
গত বুধবার ইরানের পার্লামেন্ট আন্তর্জাতিক আণবিক শক্তি সংস্থা আইএইএকে সহযোগিতা স্থগিত করে একটি বিলের অনুমোদন দেয়। যদি এটা বাস্তবায়িত হয়, তাহলে এর অর্থ হবে ইরান আর তাদের স্থাপনায় পারমাণবিক পর্যবেক্ষকদের প্রবেশাধিকার দিতে প্রতিশ্রুতিবদ্ধ থাকবে না।
অন্যদিকে ইসরায়েল বলছে, ইরানের পারমাণবিক অস্ত্র অর্জনের পরিকল্পনা ব্যর্থ করার জন্য আক্রমণ প্রয়োজন।
যদিও ইরান সবসময় জোর দিয়ে বলে আসছে, তাদের পারমাণবিক কর্মসূচি কেবল বেসামরিক উদ্দেশে পরিচালিত।
গত শনিবার (২১ জুন) স্থানীয় সময় রাতে যুক্তরাষ্ট্র ইরানের তিনটি প্রধান পারমাণবিক স্থাপনা- নাতাঞ্জ, ইস্পাহান ও ফোরদোতে হামলা চালায়।
মার্কিন প্রতিরক্ষামন্ত্রী পিট হেগসেথ পরে এক সংবাদ সম্মেলনে দাবি করেন, যুক্তরাষ্ট্র ও ইসরায়েলের সংগৃহীত গোয়েন্দা তথ্যে ইঙ্গিত পাওয়া গেছে, হামলায় ইরানের 'পারমাণবিক কর্মসূচি উল্লেখযোগ্যভাবে ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে'।