দুটি বসতি দখলের দাবি রাশিয়ার, ইউক্রেন বলছে ফ্রন্টলাইনে লড়াই চলছে

ইউক্রেনে পূর্বাঞ্চলের আরও দুটি বসতি দখলে নিয়েছে রুশ সেনাবাহিনী। গতকাল বৃহস্পতিবার রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এ তথ্য জানায়। তবে এ বিষয়ে কিয়েভ কোনো মন্তব্য করেনি।
ইউক্রেনের শীর্ষ সেনা কমান্ডার জানান, প্রায় ১,১০০ কিলোমিটার দীর্ঘ ফ্রন্টলাইনে তীব্র লড়াই চলছে।
এই সম্মুখ সংঘর্ষ চলতে থাকলেও তুরস্কে রুশ ও ইউক্রেনীয় আলোচকদের মধ্যে সরাসরি শান্তি আলোচনা শুরু হওয়ার সম্ভাবনা দেখা যাচ্ছে।
২০২২ সালের মার্চের পর এই আলোচনা হবে রাশিয়া ও ইউক্রেনের প্রথম সরাসরি মুখোমুখি বৈঠক। তবে বড় কোনো অগ্রগতির আশা সীমিত। কারণ ক্রেমলিন নেতা ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির সাক্ষাতের আহ্বানে সাড়া দেননি।
যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বৃহস্পতিবার বলেছেন, জেলেনস্কি এবং পুতিনের মধ্যে বৈঠক না হলে শান্তির দিকে কোনো অগ্রগতি সম্ভব নয়।
এদিকে রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে জানিয়েছে, মস্কোর বাহিনী নোভোওলেক্সান্দ্রিভকা নামে একটি গ্রাম দখল করেছে। গ্রামটি পোকরভস্কের কাছে অবস্থিত—এটি একটি গুরুত্বপূর্ণ লজিস্টিক কেন্দ্র, যেটিকে মাসের পর মাস ধরে লক্ষ্যবস্তু করেও পুরোপুরি দখল করতে পারেনি মস্কো।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় জানিয়েছে, তাদের বাহিনী উত্তর-পূর্বে আরও একটি এলাকা, তোর্সকে দখল করেছে। এই এলাকা দুটি গুরুত্বপূর্ণ শহর—স্লোভিয়ানস্ক ও ক্রামাতোরস্কের কাছাকাছি, যেগুলো দীর্ঘমেয়াদে দখলে নিতে চায় মস্কো।
অন্যদিকে ইউক্রেনের সেনাবাহিনীর জেনারেল স্টাফ প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে জানিয়েছে, নোভোওলেক্সান্দ্রিভকা সেই এক ডজনেরও বেশি বসতির মধ্যে রয়েছে, যেগুলো রুশ বাহিনীর হামলার শিকার হয়েছে।
ইউক্রেনের জেনারেল স্টাফ তোর্সকের বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেনি। তবে জনপ্রিয় ব্লগ ডিপস্টেট জানিয়েছে, রুশ বাহিনী তোর্সকে দখলের চেষ্টা করেছিল, তবে তাদের প্রতিহত করা হয়েছে।
রয়টার্স উভয় পক্ষের যুদ্ধক্ষেত্র-সংক্রান্ত কোনো দাবিই স্বতন্ত্রভাবে নিশ্চিত করতে পারেনি।
রাশিয়া ২০২২ সালের ফেব্রুয়ারিতে ইউক্রেনে পূর্ণমাত্রার আগ্রাসন শুরু করে এবং বর্তমানে দেশটির প্রায় এক-পঞ্চমাংশ ভূখণ্ড দখলে রেখেছে।
ইউক্রেনের শীর্ষ সামরিক কমান্ডার ওলেক্সান্ডার সিরস্কি জানান, কিয়েভ 'ন্যায়সংগত শান্তি' চায়, তবে এখনও প্রায় ১,১০০ কিলোমিটারজুড়ে সক্রিয় লড়াই অব্যাহত রয়েছে।
টেলিগ্রামে ইউক্রেন-নাটো কাউন্সিলের এক বৈঠকে নিজের উপস্থাপনা বর্ণনা করতে গিয়ে ইউক্রেনের সামরিক প্রধান ওলেক্সান্ডার সিরস্কি বলেন, রাশিয়া ইউক্রেনের বিরুদ্ধে তাদের আগ্রাসনকে 'অবসাদমূলক যুদ্ধে' পরিণত করেছে এবং তারা প্রায় ৬ লাখ ৪০ হাজার সৈন্যের যৌথ বাহিনী ব্যবহার করছে।
আক্রমণের প্রথম কয়েক সপ্তাহে ইউক্রেনের রাজধানী কিয়েভ দখলের চেষ্টা ব্যর্থ হওয়ার পর রুশ বাহিনী তাদের মনোযোগ পূর্বাঞ্চলীয় দনবাস অঞ্চলে সরিয়ে নেয়। এই অঞ্চলটি দোনেৎস্ক ও লুহানস্ক নিয়ে গঠিত।