নববর্ষ উপলক্ষ্যে নাসিরনগরে দুদিন ব্যাপী শুঁটকি মেলা জমে উঠেছে

বাংলা নববর্ষ উপলক্ষ্যে ব্রাহ্মণবাড়িয়ার নাসিরনগরে বসেছে দুইদিন ব্যাপী ঐতিহ্যবাহী শুঁটকি মেলা। দুই দিনের মেলায় অন্তত অর্ধ কোটি টাকার শুঁটকি বেচাকেনার আশা করছেন সংশ্লিষ্টরা। তবে ধীরে ধীরে বিলীন হচ্ছে মেলার ঐতিহ্যের ধারক 'বিনিময় প্রথা'। মূলত দিন দিন শুটকির দাম বাড়ায় আগের মতো পণ্যের বিনিময়ে শুঁটকি বিক্রি করছেন না ব্যবসায়ীরা।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, নাসিরনগর উপজেলার সদর ইউনিয়নের কুলিকুণ্ডা উত্তর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় মাঠে দুইশ বছরেরও বেশি সময় ধরে বসছে শুঁটকি মেলা।
বাংলা নববর্ষের দ্বিতীয় দিনে আজ মঙ্গলবার বসেছে শুঁটকি মেলা। এ মেলায় পাওয়া যাচ্ছে লইট্টা, ট্যাংরা, বাইম, শোল, গজার, ঘইন্না, বোয়াল, পুঁটিসহ দেশীয় নানা প্রজাতির মাছের শুঁটকি। রয়েছে সামুদ্রিক শুঁটকিও। আকার ও প্রকারভেদে প্রতি কেজি শুঁটকি কেনা-বেচা হচ্ছে ৫০০ থেকে ২ হাজার টাকা পর্যন্ত।

ব্রাহ্মণবাড়িয়া ছাড়াও চট্টগ্রাম ও কক্সবাজারসহ বিভিন্ন স্থান থেকে শুঁটকি নিয়ে মেলায় এসেছেন ব্যবসায়ীরা।
বেলা বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে মেলায় ভিড় বাড়তে থাকে ক্রেতা-দর্শনার্থীদের। শুঁটকি মেলাকে ঘিরে মেলা চত্বরের পাশে বসেছে বিভিন্ন লোকজ পণ্যের মেলা।
কুলিকুণ্ডা গ্রামের বাসিন্দা খাদিজা আক্তার জানান, ছোটবেলা থেকে তিনি শুঁটকি মেলায় আসছেন। এখানে হরেক রকম শুঁটকি বাজারের চেয়ে কিছুটা কম দামে পাওয়া যায়। মেলা উপলক্ষ্যে দুইদিন উৎসমুখর পরিবেশ তৈরি হয় এখানে। অনেকেই আত্মীয়-স্বজনদের দাওয়াত দেন মেলার। সব মিলিয়ে দারুণ সময় কাটে দুইদিন।

সজল দাস নামে এক ব্যবসায়ী জানান, হবিগঞ্জ থেকে শুঁটকি নিয়ে এসেছেন। গেলো কয়েক বছর ধরে তিনি এ মেলায় দোকান সাজিয়ে বসেন। এখানে বেচাকেনাও ভালো হয়। ছোট মাছের শুটকির দাম কম, তবে বড় মাছের শুটকির দাম বেশি। মূলত কিছু শুঁটকি বিদেশ থেকে আমদানি করা। সেজন্য শুটকির দাম বেশি বলে জানান তিনি।
এদিকে, দেশের পরিবর্তিত পরিস্থিতিতে মেলা ঘিরে যে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটা এড়াতে পর্যাপ্ত নিরাপত্তা ব্যবস্থা নিয়েছে পুলিশ।
নাসিরনগর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) মো. খাইরুল আলম বলেন, মেলা চত্বর ও আশপাশে পর্যাপ্ত সংখ্যক পুলিশ সদস্য মোতায়েন রয়েছেন। কোনো ধরনের অনৈতিক কর্মকাণ্ড এবং বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি যেন তৈরি না হয়, সেজন্য পুলিশ সদস্যরা তৎপর রয়েছেন।