প্রয়াত অভিনেতা জিন হ্যাকম্যানের ৮০ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি নিয়ে অনিশ্চয়তা

সম্প্রতি প্রখ্যাত অভিনেতা জিন হ্যাকম্যানের উইল প্রকাশিত হয়েছে। তবে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে তার ৮০ মিলিয়ন ডলারের সম্পত্তি নিয়ে। খবর বিবিসি'র।
দুইবারের অস্কারজয়ী এই অভিনেতা তার মোট সম্পদ স্ত্রী বেটসি আরাকাওয়াকে দিয়ে গেছেন। গত মাসে নিউ মেক্সিকোর বাড়িতে এই দম্পতিকে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়।
তবে আইন বিশেষজ্ঞরা জানিয়েছেন, কর্তৃপক্ষের মতে আরাকাওয়া তার স্বামীর সাত দিন আগে মারা যাওয়াতে উইলে নাম না থাকলেও হ্যাকম্যানের সন্তানরা এখন সম্পত্তির উত্তরাধিকারী হতে পারেন।
তাঁর প্রয়াত সাবেক স্ত্রী ফে মালতেসের সঙ্গে থাকা তিন সন্তান—ক্রিস্টোফার (৬৫), এলিজাবেথ (৬২) ও লেসলি (৫৮) এ বিষয়ে কোনো মন্তব্য করেননি।
আইনি নথি অনুযায়ী, হ্যাকম্যান ১৯৯৫ সালে আরাকাওয়াকে একমাত্র উত্তরাধিকারী হিসেবে মনোনীত করেন এবং উইলটির সর্বশেষ সংশোধন হয় ২০০৫ সালে।
আইনজীবী ট্রে লোভেল জানিয়েছেন, অন্য কোনো উত্তরাধিকারীর নাম উল্লেখ না থাকলে উত্তরাধিকার আইন অনুযায়ী সম্পত্তি সন্তানদের কাছে চলে যেতে পারে। তবে, সন্তানদের অবশ্যই প্রমাণ করতে হবে যে উইলটি অকার্যকর। কারণ আরাকাওয়া হ্যাকম্যানের আগেই মারা গেছেন।
হান্টাভাইরাসে আক্রান্ত হয়ে গত ১১ ফেব্রুয়ারি আরাকাওয়া মারা যান। তবে এর কয়েক দিন পর স্বাভাবিকভাবেই হ্যাকম্যানও মারা যান।
২৬ ফেব্রুয়ারি প্রতিবেশীর নিরাপত্তাকর্মীরা খোঁজ নিতে গিয়ে সান্তা ফে'র বাড়িতে মৃত অবস্থায় পান।
আরাকাওয়াকে বাথরুমে পাওয়া যায়, যেখানে ওষুধের বড়ি ছড়িয়ে ছিল। আর হ্যাকম্যানকে ট্রাউজার ও স্লিপার পরা অবস্থায় পাওয়া যায় বাড়ির পেছনের অংশে, পাশে ছিল তার লাঠি ও সানগ্লাস। ময়নাতদন্তে জানা যায় তিনি হৃদরোগে মারা যান এবং তার মৃত্যুতে আলঝেইমারের প্রভাব ছিল।
প্রাথমিকভাবে ঘটনাটিকে 'সন্দেহজনক' মনে হলেও পরে কর্তৃপক্ষ জানায়, এতে কোনো ষড়যন্ত্রের প্রমাণ পাওয়া যায়নি।
আরাকাওয়ার উইল অনুসারে, তার সম্পত্তি হ্যাকম্যানের পাওয়ার কথা ছিল। তবে ৯০ দিনের মধ্যে তারা দুজনই মারা গেলে সেই সম্পত্তি একটি ট্রাস্টের অধীনে থেকে চিকিৎসা খরচ মেটানোর পর দান করা হবে।
হ্যাকম্যান একসময় তার সন্তানদের সঙ্গে সম্পর্ক নিয়ে কথা বলেছিলেন।
১৯৮৯ সালে নিউ ইয়র্ক টাইমসকে তিনি বলেছিলেন, 'অভিনেতা হিসেবে আপনি খুব স্বার্থপর হয়ে পড়বেন। আমি পরিবার নিয়ে থাকলেও কাজের জন্য মাসের পর মাস তাদের থেকে দূরে থাকতে হতো। খ্যাতি, অর্থের লোভ সামলানো আমার পক্ষে কঠিন ছিল।'
তার সন্তানরা সাধারণত গণমাধ্যমের আড়ালে থাকলেও মাঝে মাঝে তার সঙ্গে অনুষ্ঠানে অংশ নিতেন।
২০০০ সালে তিনি দ্য আইরিশ ইন্ডিপেনডেন্টকে বলেন, 'একজন তারকার সন্তান হওয়া কঠিন। আমি সবসময় তাদের পাশে থাকতে পারিনি। আর ক্যালিফোর্নিয়ায় থাকার কারণে আমার খ্যাতি তাদের ওপর একটা চাপ হয়ে ছিল।'
তার মৃত্যুর পর তার কন্যারা ও নাতনি আবেগঘন বার্তা দিয়ে বলেন, 'বিশ্বজুড়ে অসংখ্য মানুষ তাকে তার অভিনয়ের জন্য ভালোবাসত। তবে আমাদের কাছে তিনি শুধুই বাবা ও দাদু ছিলেন। আমরা তাকে ভীষণভাবে মিস করব এবং এই শূন্যতা কোনো কিছুতেই পূরণ হবে না।'