হোয়াইট হাউস বৈঠকের আগে জেলেনস্কিকে প্রশংসায় ভাসালেন ট্রাম্প

ইউক্রেনের প্রেসিডেন্ট ভলোদিমির জেলেনস্কির প্রতি যথেষ্ট সম্মান রয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্পের। হোয়াইট হাউসে তাদের আসন্ন বৈঠকের আগে এই মন্তব্য করেন ট্রাম্প। খবর বিবিসির।
বিবিসির এক সাংবাদিক ট্রাম্পকে জিজ্ঞাসা করেন, সম্প্রতি জেলেনস্কিকে 'স্বৈরশাসক' বলে অভিহিত করার জন্য তিনি ক্ষমা চাইবেন কি না। জবাবে ট্রাম্প বলেন, 'আমি কি সত্যিই এমন বলেছিলাম? আমি বিশ্বাস করতে পারছি না।'
পাশাপাশি তিনি জেলেনস্কিকে 'খুবই সাহসী' বলেও প্রশংসা করেন।
ট্রাম্পের এই মন্তব্য এসেছে এমন এক সময়ে, যখন তিনি ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী কিয়ার স্টারমারের সঙ্গে ইউক্রেন-রাশিয়া যুদ্ধের অবসান নিয়ে আলোচনা করেছেন। তিনি আশা প্রকাশ করেন যে শুক্রবার জেলেনস্কির সঙ্গে তার বৈঠক 'খুব ফলপ্রসূ' হবে এবং শান্তি আলোচনা 'খুব দ্রুতগতিতে' এগিয়ে চলছে।
এই সপ্তাহে যুক্তরাষ্ট্র ও রাশিয়ার মধ্যে উচ্চ পর্যায়ের আলোচনা পশ্চিমা মিত্রদের কার্যত বিস্মিত করেছে। ইউক্রেনে রাশিয়ার আগ্রাসনের পর এটি ছিল দুই দেশের মধ্যে প্রথম উচ্চ পর্যায়ের সংলাপ।
ট্রাম্প আগে জেলেনস্কিকে যুদ্ধের জন্য দায়ী করে বলেছিলেন, 'তিন বছর ধরে আপনি সেখানে আছেন। আপনাকে এটা শেষ করা উচিত ছিল... আপনাকে কখনোই এটা শুরু করা উচিত হয়নি। আপনি চাইলেই একটি চুক্তি করতে পারতেন।'
জেলেনস্কি যুক্তরাষ্ট্রের কাছ থেকে নিরাপত্তার নিশ্চয়তা পেতে চান, যা যেকোনো শান্তি চুক্তির ভিত্তি হতে পারে। তবে ট্রাম্প বলেন, তিনি 'অনেক কিছু নিয়েই' ভাবতে রাজি, কিন্তু আগে রাশিয়া ও ইউক্রেনের মধ্যে চুক্তি হওয়া দরকার।
শুক্রবারের বৈঠকে ইউক্রেনের মূল্যবান খনিজ সম্পদের ওপর যুক্তরাষ্ট্রের প্রবেশাধিকারের বিষয়ে একটি চুক্তি স্বাক্ষরিত হতে পারে। ট্রাম্পের মতে, ইউক্রেনে যুক্তরাষ্ট্রের খনিজ প্রকল্পগুলো থাকলে রাশিয়া ভবিষ্যতে আক্রমণ করার আগে দ্বিতীয়বার ভাববে।
তিনি বলেন, 'এটা একটা রক্ষাকবচ, বলা যায়। যদি আমরা সেখানে থাকি এবং আমাদের অনেক কর্মী খনিজ সম্পদের কাজে নিয়োজিত থাকে, তাহলে কেউ ঝুঁকি নিতে চাইবে না।'
ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী স্টারমার বলেছেন, যুদ্ধ পরবর্তী সময়ে যদি যুক্তরাষ্ট্র নেতৃত্ব দেয়, তবে যুক্তরাজ্য ইউক্রেনে শান্তিরক্ষী সেনা পাঠাতে প্রস্তুত।
ট্রাম্পকে প্রশ্ন করা হয়, যুক্তরাজ্যের শান্তিরক্ষী বাহিনী যদি রাশিয়ার আক্রমণের শিকার হয়, তবে যুক্তরাষ্ট্র তাদের সাহায্য করবে কি না। ট্রাম্প বলেন, 'ব্রিটিশদের অসাধারণ সেনাবাহিনী আছে, তারা নিজেদের রক্ষা করতে পারে। তবে যদি তারা সহায়তা চায়, আমি সবসময় ব্রিটিশদের পাশে থাকব।'
ন্যাটো জোটের ধারা ৫ অনুযায়ী, কোনো সদস্য রাষ্ট্র আক্রান্ত হলে বাকিরা তার পাশে দাঁড়াবে।
যুক্তরাজ্যের প্রধানমন্ত্রী যখন রুশ প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বিশ্বাসযোগ্য মনে করেন না, তখন ট্রাম্প তাকে নিয়ে তুলনামূলক নমনীয় অবস্থান দেখিয়েছেন।
ট্রাম্প বলেন, 'কিছু মানুষ আছে যাদের সম্পর্কে সবাই ভাবে যে তারা কখনো প্রতারণা করবে না, অথচ তারা সবচেয়ে খারাপ ব্যক্তি। আবার এমনও অনেকে আছে, যাদের সবাই প্রতারক ভাবে, অথচ তারা ১০০ শতাংশ সৎ।'
ইউরোপীয় ইউনিয়নের পররাষ্ট্র নীতি প্রধান কাইয়া কালাস বলেছেন, 'রাশিয়া প্রকৃতপক্ষে শান্তি চায় না।' তিনি আরও বলেন, ইউক্রেন ও ইউরোপীয় দেশগুলোর সম্পৃক্ততা ছাড়া কোনো চুক্তি কার্যকর হবে না।