পোস্ট অফিসের নগদ চালানোর সক্ষমতা নেই, বেসরকারি বিনিয়োগকারী খুঁজছি: গভর্নর

ক্যাশলেস সোসাইটি গড়তে বেশ কিছু উদ্যোগ নিয়েছে বাংলাদেশ ব্যাংক। একইসঙ্গে আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে নারীদের অংশগ্রহণ বাড়াতে এজেন্ট ব্যাংকিংয়ে ৫০ শতাংশ নারী এজেন্ট রাখার নীতিও কার্যকর করা হচ্ছে।
দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ক্যাশলেস সোসাইটির ভবিষ্যৎ নিয়ে আলোচনা করেছেন বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর ও অর্থনীতিবিদ আহসান এইচ মনসুর। সাক্ষাৎকার নিয়েছেন স্পেশাল করেসপন্ডেন্ট জেবুন নেসা আলো ও নিজস্ব প্রতিবেদক শাখাওয়াত প্রিন্স।
ডিজিটাল ব্যাংক নিয়ে পরিকল্পনা কী? নতুন ডিজিটাল ব্যাংক দেওয়ার কোনো পরিকল্পনা আছে?
প্ল্যান আছে। আমরা খুব শিগগিরই ডিজিটাল ব্যাংক নিয়ে এগোচ্ছি। হয়তো আগস্ট মাসে আমরা নতুন আবেদন চাইব। যারা আগে আবেদন করেছিলেন, তারাও করতে পারবেন—এবং আমরা তারপর দ্রুতই বাছাইয়ে চলে যাব।
কতগুলো লাইসেন্স পেতে পারে, সেই সংখ্যাটা এখনই বলা সম্ভব না। আমরা দেখব আবেদনগুলো কতটা স্ট্রং। তারপর সংখ্যা ঠিক করব। আর খুব বেশি হবে না। ধাপে ধাপে এগোতে হবে।
আপনারা কি ডিজিটাল ব্যাংক বা এমএফএস (মোবাইল ফিন্যান্সিয়াল সার্ভিসেস) নিয়ে নতুন কোনো নীতিমালা ভাবছেন?
এমএফএস কোনো ব্যাংক নয়। তারা সরাসরি আমানত নিতে পারবে না। ওয়ালেটে কিছু সীমিত পরিমাণ টাকা রাখা যেতে পারে, যেমন আমার নিজেরও ওয়ালেটে ১,০০০–২,০০০ টাকা থাকে। তবে যদি কেউ ন্যানো লোন দিতে চায়, তাহলে সেটা ব্যাংকের মাধ্যমে হবে।
এখন এমএফএসের মাধ্যমে ৫০ হাজার টাকার ঋণ দেওয়া হচ্ছে, ভবিষ্যতে সেটা ১ লাখ, দেড় লাখ বা ৫ লাখ পর্যন্ত করা যেতে পারে। কিন্তু সরাসরি এমএফএস এই ঋণ দিতে পারবে না, এর জন্য তাদের ডিজিটাল ব্যাংক সাবসিডিয়ারি করতে হবে অথবা আলাদা লাইসেন্স নিতে হবে। সেজন্য যেসব প্রতিষ্ঠান লাইসেন্স নেবে তাদের সক্ষমতা, বিনিয়োগ, ডেমোস্ট্রেশন ইত্যাদি সবকিছুর দক্ষতা থাকতে হবে।
ডিজিটাল ব্যাংক নিয়ে ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা কী?
ডিজিটাল ব্যাংক যারা করতে চাইবে, তাদেরকে বিনিয়োগ আনতে হবে। একটি প্রতিষ্ঠানকে পূর্ণাঙ্গ রূপে দাঁড়াতে ২-৩ হাজার কোটি টাকা দরকার হলে সেটা উদ্যোক্তাদেরই আনতে হবে। যারা বিনিয়োগ করবে, তাদের দীর্ঘমেয়াদি ভিশন থাকতে হবে।
বিকাশকে মুনাফা করতে ১২ বছর অপেক্ষা করতে হয়েছে। নগদকেও হয়তো ১০ বছর অপেক্ষা করতে হবে। অতএব, দীর্ঘমেয়াদি পরিকল্পনা ও শক্ত বিনিয়োগ ছাড়া এখানে সফল হওয়া সম্ভব নয়।
এমএফএস নগদ নিয়ে আপনাদের কোনো পরিকল্পনা আছে?
নগদে অনেক দুর্নীতি হয়েছে। একইসঙ্গে এই প্রতিষ্ঠানটি দীর্ঘদিন যাবত বেআইনিভাবেই পরিচালিত হচ্ছিল। বাংলাদেশ ব্যাংক একদিকে কৃতিত্বও প্রাপ্য যে তারা পুরোপুরি লাইসেন্স দেয়নি। রাজনৈতিক চাপের কারণে আংশিকভাবে সাময়িক লাইসেন্স দিয়েছে, পুরোপুরি দেয়নি।
নগদের মূল নিয়ম লঙ্ঘন হচ্ছে, পোস্ট অফিস আর্থিক প্রতিষ্ঠান নয়। পোস্ট অফিসের কোনো সক্ষমতা নেই নগদের মতো প্রযুক্তি প্ল্যাটফর্ম চালানোর।
পোস্ট অফিস পার্সেল পাঠাতেই পারছে না। পৃথিবীর সব দেশে পোস্টাল ডিপার্টমেন্ট চলে পার্সেল ব্যবসা থেকে। আমাদের এখানে সেটা নেই—জিরো।
এখন মামলা চলমান রয়েছে। এতে আর্থিক প্রতিষ্ঠানটির ক্ষতিও রয়েছে। হাইকোর্টের একটি স্টে অর্ডারে বাংলাদেশ ব্যাংক থেকে প্রশাসক নিয়োগের পদক্ষেপও বাধার মুখে পড়েছিল। সেই সময়ে ওই ১০-১৫ দিনের মধ্যে তারা আবার বেশ কিছু টাকা মিসইউজ করেছে। পরে আমরা সুপ্রিম কোর্টের মাধ্যমে সেই আদেশ বাতিল করে নিয়ন্ত্রণ ফিরে পেয়েছি।
নগদে কত টাকার অনিয়ম ধরা পড়েছে?
নগদের সাবেক বোর্ড ৬৩০ কোটি টাকা ক্রিয়েট করেছে বেআইনিভাবে। তারা সেটা দিয়ে বিলাসী জীবনযাপন করেছে। প্রাথমিক প্রাক্কলনে আমরা ১,৭০০ কোটি টাকার বেশি পেয়েছি। সমাজকল্যাণ মন্ত্রণালয়ের সামাজিক নিরাপত্তা বেষ্টনীর টাকা সুবিধাভোগীদের অ্যাকাউন্টে না দিয়ে এসব টাকা সরিয়ে ফেলেছে।
এই প্রতিষ্ঠানটিকে খুব দ্রুত বেসরকারি বিনিয়োগকারীদের কাছে হস্তান্তর করতে হবে। বাংলাদেশ ব্যাংকের কোনো ইচ্ছা নেই এটা চালানোর। প্রতিষ্ঠানটির আইটি সিস্টেমও দুর্বল, যেকোনো সময় ভেঙে যেতে পারে। বিনিয়োগ করতে হবে কয়েক হাজার কোটি টাকা, যা বাইরে থেকে আনতে হবে। কিছু বিনিয়োগকারী ইতিমধ্যে আগ্রহ প্রকাশ করেছেন। বিদেশি ও দেশি উভয়ই আছে। আমরা কাজ করছি তাদের সঙ্গে।
বাংলাদেশ ব্যাংকের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি ও ক্যাশলেস সোসাইটি নিয়ে আপনারা অনেক দিন ধরেই কাজ করছেন। এ বিষয়ে এখন আপনারা কী অগ্রগতি দেখছেন?
আমরা এমএফএসে অনেক অগ্রগতি করেছি। প্রতিদিন ৫-৬ হাজার কোটি টাকার লেনদেন হচ্ছে। কিন্তু এর ৭৫ শতাংশ হচ্ছে ক্যাশ-ইন ক্যাশ-আউট। অর্থাৎ কেউ ঢাকায় থেকে টাকা পাঠাচ্ছে গ্রামের বাড়িতে, তারপর সেটা নগদে তোলা হচ্ছে। ফলে অর্থনীতিতেতে ক্যাশের প্রবাহ কমছে না।
উদাহরণস্বরূপ, গত ঈদুল আযহায় ৩৫ হাজার কোটি টাকা অতিরিক্ত ক্যাশ সার্কুলেশন প্রয়োজন হয়েছে। গরুর হাটে এই বাড়তি টাকা গেছে, সবটাই নগদ। প্রতি বছর নগদ অর্থের চাহিদা ৯-১০ শতাংশ হারে বাড়ছেই। তাই ডিজিটাল লেনদেন সুবিধা দিয়েছে ঠিকই, কিন্তু অর্থনীতিকে ক্যাশলেস করতে পারিনি।
আমরা যদি দোকানদার, রিকশাওয়ালা, মুদি দোকান পর্যন্ত ক্যাশলেস লেনদেন নিশ্চিত করতে না পারি, ততদিন ক্যাশলেস হওয়ার সম্ভাবনা নেই। এই সেগমেন্টে আমাদের ব্যাপকভাবে কাজ করতে হবে এবং সেটিই আমাদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি কৌশলের অংশ।
আপনারা ক্যাশলেস সোসাইটি গড়তে কী উদ্যোগ নিচ্ছেন?
আমরা অনেকগুলো চ্যানেলে কাজ করছি। যেমন, ক্রেডিট কার্ড। আগে কার্ড পেতে হলে আয়কর আইডি থাকতে হতো, প্রমাণ করতে হতো কর দিচ্ছেন। এগুলো বিষয়টিকে অযৌক্তিকভাবে জটিল করে তুলেছিল। ফলে বাংলাদেশে দক্ষিণ এশিয়ার মধ্যে সবচেয়ে কম ক্রেডিট কার্ড ব্যবহার হতো।
এখন নতুন বাজেটে এই রেস্ট্রিকশনগুলো তুলে দেওয়া হয়েছে। আমরা আশা করছি এতে পরিবর্তন আসবে। ব্যাংকারদের বলছি, ডেবিট কার্ড সবাইকে দিন, ক্রেডিট কার্ডও লিবারালি দিন। লিমিট ঠিক আছে, কিন্তু সবার জন্য সহজলভ্য করুন।
দ্বিতীয়ত, কিউআর কোড। পৃথিবীর প্রায় সব দেশেই কিউআর কোড প্রচলিত, বিশেষ করে আফ্রিকা, ভারত, নেপাল, ভুটানে। কিন্তু বাংলাদেশে এখনও সেটা জনপ্রিয় করতে পারিনি। আমাদের এখানে কিউআর কোড আছে, কিন্তু ব্যবহৃত হচ্ছে না। একে জনপ্রিয় করতে হবে।
আপনি কি মনে করেন, কিউআর কোড ব্যবহার বৃদ্ধি করা যেতে পারে?
অবশ্যই। কিউআরকোড পৃথিবীর বিভিন্ন দেশে, এমনকি আফ্রিকা ও নেপালের মতো দেশেও ব্যাপকভাবে ব্যবহৃত হচ্ছে। আমরা একটি প্রস্তাব করছি, যাতে ট্রেড লাইসেন্স নিতে হলে দোকানগুলোতে কিউআর কোড থাকা বাধ্যতামূলক করা হয়। এতে গ্রাহকরা ডিজিটাল পেমেন্টে উৎসাহিত হবেন।
ক্যাশ ম্যানেজমেন্টে বাংলাদেশ ব্যাংকের খরচ কত?
বাংলাদেশে ক্যাশ হ্যান্ডলিংয়ের জন্য বছরে প্রায় ২০ হাজার কোটি টাকা খরচ হয়। বাংলাদেশ ব্যাংক ও অন্যান্য ব্যাংক মিলে এই বিশাল খরচ। হাজার হাজার মানুষ ক্যাশ ম্যানেজমেন্টে কাজ করছেন। কোটি কোটি টাকা দিয়ে হেভি ডিউটি ক্যাশ কাউন্টিং মেশিন কিনতে হয়।
এবছর বাজেটে ছাপানো টাকার জন্য ৬০০ কোটি টাকা রাখা আছে। কিন্তু এগুলো থেকে আসলে আমরা কী পাচ্ছি? কিছুই না। বরং বেশি ক্যাশের কারণে কর ফাঁকি, দুর্নীতি ও কালো টাকার প্রবাহ বাড়ে। ক্যাশলেস সোসাইটির দিকে যাওয়া আমাদের অর্থনীতির জন্য জরুরি।
আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য নতুন উদ্যোগ কী?
আমরা স্কুল ব্যাংকিং আরও ফলপ্রসু করতে চাই। প্রতিটি ব্যাংককে নির্দেশ দেওয়া হয়েছে নিকটবর্তী স্কুলগুলোর সব শিক্ষার্থীকে ব্যাংকিং সেবার আওতায় নিয়ে আসতে। এর মাধ্যমে প্রত্যেক ছাত্রছাত্রীর অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে হবে। মাত্র ২০০ টাকা দিয়েই তাদের অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে হবে। এভাবেই ছোট বয়স থেকেই অর্থনৈতিক অন্তর্ভুক্তি শুরু হবে।
আমরা আর্থিক অন্তর্ভুক্তিকে এগিয়ে নিতে একাধিক উদ্যোগ নিয়েছি। প্রথমত, যদি কারও মোবাইল ফোন থাকে, তিনি অ্যাপের মাধ্যমে ব্যাংকিং করবেন। আর যদি না থাকে, আমরা তাকে ডেবিট কার্ড দেব। একইসঙ্গে আমরা আর্থিক স্বাক্ষরতার ওপর জোর দিচ্ছি—কীভাবে অফার করা যায়, কীভাবে ব্যবহার করা যায়—সবকিছু শেখাতে হবে।
এটি ব্যাংকেরও স্বার্থে। কারণ একবার একজন গ্রাহক ব্যাংকিং সিস্টেমে ঢুকে গেলে তিনি আজীবন গ্রাহক হয়ে থাকেন। তাই ব্যাংকেরও প্রণোদনা আছে।
আর্থিক অন্তর্ভুক্তিতে মহিলাদের পিছিয়ে পড়া নিয়ে আপনারা কী ভাবছেন?
মহিলারা আর্থিক অন্তর্ভুক্তির সবচেয়ে বড় পিছিয়ে থাকা অংশ। এজন্য আমরা এজেন্ট ব্যাংকিংকে শক্তিশালী চ্যানেল হিসেবে ব্যবহার করছি। বর্তমানে ২০ হাজার এজেন্ট আছেন, যা ১০ বছরের মধ্যে হয়েছে। আশা করছি, শিগগিরই এ সংখ্যা ২৫ হাজার ছাড়িয়ে যাবে।
আমাদের লক্ষ্য প্রত্যেক গ্রামে অন্তত একজন এজেন্ট রাখা। এজন্য নতুন এজেন্ট লাইসেন্সের অনুমোদন সহজ করেছি—যত খুশি নতুন এজেন্ট নেওয়া যেতে পারে। আরেকটি গুরুত্বপূর্ণ উদ্যোগ হলো, নতুন এজেন্টদের মধ্যে ৫০ শতাংশ যেন নারী হয়, তা বাধ্যতামূলক করেছি।
নারী এজেন্ট রাখার কারণ স্পষ্ট। একজন মহিলা এজেন্ট ঘরে গিয়ে অন্য মহিলার অ্যাকাউন্ট খুলে দিতে পারেন, টাকাও ডিপোজিট করতে পারেন—যা অনেক ক্ষেত্রেই একজন পুরুষ এজেন্টের পক্ষে সম্ভব হয় না। এতে স্বামী, শ্বশুরের জানারও দরকার নেই। এভাবে গ্রামীণ ও গৃহবন্দি নারীদের আর্থিক অন্তর্ভুক্তি সম্ভব।
আর্থিক অন্তর্ভুক্তির জন্য মোবাইল ফোনের দাম কমানোর কোনো উদ্যোগ আছে কি?
হ্যাঁ, আমরা একটি কমিটি করেছি যেখানে মোবাইল কোম্পানি, ব্যাংকার ও উৎপাদনকারীরা আছেন। লক্ষ্য হলো ৫-৬ হাজার টাকায় লোডেড নয় এমন স্মার্টফোন বাজারে আনা। এতে শুধু প্রয়োজনীয় ফিচার থাকবে—ফোন কল, ইন্টারনেট, ব্যাংকিং ও এমএফএস অ্যাপ ব্যবহার করার সুবিধা।
এতে মানুষ সহজেই কিস্তিতে ফোন কিনতে পারবেন—হয়তো সাপ্তাহিক ১০০ টাকা কিস্তিতে। আমরা ওয়ালটনসহ কয়েকটি উৎপাদনকারীর সঙ্গে কথাবার্তা চালাচ্ছি।
বাংলাদেশ ব্যাংকের গভর্নর হিসেবে আপনার সবচেয়ে কঠিন ও সবচেয়ে আনন্দের অভিজ্ঞতা কী?
সবচেয়ে কঠিন হলো, আমার কিছু অনিচ্ছাকৃত (আনইনটেন্ডেড) শত্রু তৈরি হয়েছে। ব্যক্তিগতভাবে বা পারিবারিকভাবে আক্রমণ করা হচ্ছে, চরিত্র হনন পর্যন্ত করার চেষ্টা চলছে। এটি খুবই দুঃখজনক।
আর সবচেয়ে আনন্দের অংশ হলো, এত বড় একটা দায়িত্ব পালন করতে গিয়ে আমার পরিবার অনেক ত্যাগ স্বীকার করেছে। তবু দেশের জন্য কিছু করতে পারা এবং মানুষের আস্থা অর্জনই সবচেয়ে বড় প্রাপ্তি।
আপনার এই যাত্রা থেকে সবচেয়ে বড় শিক্ষা কী?
বাংলায় একটা প্রবাদ আছে: 'হাঁস যখন পানিতে হাঁটে, তার গায়ে পানি লাগে না।' আমাদেরও ঠিক সেইভাবে চলতে হবে—চারপাশের কাদা যেন গায়ে না লাগে। এটাই সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ ও শিক্ষা।
সবচেয়ে বড় শিক্ষা হলো—মানুষের আস্থা অর্জন সহজ নয়, কিন্তু সম্ভব। এবং কঠিন পরিস্থিতিতেও সৎ থেকে কাজ করা যায়। কাদা থাকবেই, আমাদের ওপর না লাগলেই হলো।
আর ভালো দিক হলো, এ দায়িত্ব আমাকে লাইফটাইমের একটি সুযোগ দিয়েছে। বিভিন্ন দেশে কাজের অভিজ্ঞতা থেকে আমি যে সমালোচনা করতাম, এখন সেই সমালোচনার বাস্তবায়ন করার সুযোগ পাচ্ছি। সরকারকেও ধন্যবাদ জানাতে চাই, কারণ তারা নন-ইন্টারফেয়ারিং (হস্তক্ষেপ করছে না)। ফলে স্বাধীনভাবে কাজ করার সুযোগ পাচ্ছি।
এখনও আমি অফিসে বসে আছি। বাসায় ওরা একা। এই টুয়েন্টি-ফোর-সেভেন জীবন স্বাস্থ্যসাপেক্ষে ভালো না—এটা আমি বুঝি। তবু যতদিন শরীর-স্বাস্থ্য থাকে, সরকারে থাকি বা বাইরে থাকি, দেশের জন্য কাজ করে যেতে চাই।