কুয়েট উপাচার্যকে বাসভবন থেকে বের করার চেষ্টা শিক্ষার্থীদের, রেজাল্ট নিয়ে হুমকি দেওয়ার অভিযোগ

খুলনা প্রকৌশল ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের (কুয়েট) উপাচার্য (ভিসি) অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদকে বাসভবন থেকে বের করার চেষ্টা করেন বিশ্ববিদ্যালয়টির শিক্ষার্থীরা। এসময় কয়েকজন শিক্ষক তাদের রেজাল্ট নিয়ে হুমকি দিয়েছেন বলে অভিযোগ করেছেন তারা। এমনকি তাদের কাছে নাম ও রোল নম্বর জানতে চাওয়া হয়েছে বলেও জানিয়েছেন তারা।
আজ মঙ্গলবার (২৫ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে কুয়েটে ক্যাম্পাসে ভিসির বাসভবনের সামনে এসব ঘটনা ঘটে।
শিক্ষার্থীরা জানান, দুপুরের দিকে ভিসিকে বাসভবন থেকে বের করে পুনরায় সেখানে তালা দিতে গিয়েছিলেন তারা। এসময় বাসভবনের সামনে কয়েকজন শিক্ষক অবস্থান নিয়ে তাদের প্রতিহত করার চেষ্টা করেন।
তারা আরও বলেন, ''এই সময়ে শিক্ষকরা আমাদের হুমকি দিয়ে বলেন, 'তোমাদের কি রেজাল্ট নেওয়া লাগবে না? পাশ করা লাগবে না'?''
শিক্ষার্থীরা বলেন, ''আমাদের পরীক্ষায় শিক্ষকরা ইচ্ছা করলে পাশ বা ফেল করাতে পারেন। মূলত সেই বিষয়টা আমাদের মনে করিয়ে প্রতিহত করাতে চাচ্ছেন। আমরা ভিসির বিরুদ্ধে আন্দোলনে থাকলে আমাদের সিজিপিএ কমানো হবে, হুমকিটি সেই পর্যায়ের।''
এর আগে গত ২৪ ফেব্রুয়ারি দিবাগত রাত ১১টার দিকে ভিসি বাসভবনে প্রবেশ করেন। চিকিৎসার জন্য তিনি ঢাকায় গেলে গত ২১ ফেব্রুয়ারি কুয়েটের শিক্ষার্থীরা ভিসির বাসভবনে তালা ঝুলিয়ে দিয়েছিলেন। তবে ভিসি আসার আগেই কে বা কারা তালা ভেঙে ফেলেছিল। ভিসি বাসভবনে প্রবেশ করায় ক্ষোভ প্রকাশ করে শিক্ষার্থীরা বাসভবন ছাড়ার জন্য তাকে মঙ্গলবার সকাল ১০টা পর্যন্ত সময় বেধে দিয়েছিলেন।
শিক্ষার্থীরা এক বিবৃতিতে জানিয়েছেন, 'আমরা স্পষ্টভাবে জানিয়ে দিতে চাই, মাসুদ স্যার আমাদের ভিসি না, আমরা মাসুদ স্যারকে ভিসি হিসেবে বর্জন করেছি। তাই মাসুদ স্যার ভিসির বাসভবনে ঢুকতে পারবেন না। ভিসির বাসভবনে যারা অবস্থান করছেন, ভিসিসহ তাদের বেরিয়ে যাওয়ার অনুরোধ রইল।'
তারা বলেন, 'কয়েকজন শিক্ষকের কারণে আমারা ভিসিকে বাসভবন থেকে বের করে পুনরায় তালা দিতে পারিনি। এই বিষয়ে আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনা করে ফের কর্মসূচি দেবো।'
তবে কুয়েট উপাচার্য অধ্যাপক ড. মুহাম্মদ মাছুদ জানান, ''তিনি চিকিৎসা নিয়ে রাতে বাসভবনে এসেছেন। তিনি কোনো তালা দেখেননি। তাকে অফিস করতে হবে। অসুস্থতার কারণে তিনি বাসভবনেই বেশি সময় কাটান। অফিসের কাজও করছেন।''
উল্লেখ্য, কুয়েটে ছাত্ররাজনীতি নিষিদ্ধের দাবি ঘিরে গত ১৮ ফেব্রুয়ারি শিক্ষার্থীদের মধ্যে দফায় দফায় সংঘর্ষ ও ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়ার ঘটনা ঘটে। এ সংঘর্ষে আহত হয়েছেন অর্ধশত শিক্ষার্থী। তাদের অধিকাংশের শরীরে ধারালো অস্ত্রের আঘাত রয়েছে। আহতদের খুলনা মেডিকেল কলেজ (খুমেক) হাসপাতাল, কুয়েট মেডিকেল সেন্টারসহ আশপাশের বেসরকারি ক্লিনিকে ভর্তি করা হয়েছে। এ ঘটনায় পাঁচজনকে আটক করা হয়েছে।
এদিকে, গত রোববার ছাত্ররাজনীতি বন্ধের দাবিকে কেন্দ্র করে কুয়েটে সাম্প্রতিক সংঘর্ষের ঘটনায় শিক্ষার্থীরা প্রধান উপদেষ্টার কাছে স্মারকলিপি দিয়েছেন। এতে হামলায় জড়িত ব্যক্তিদের বিচার, উপাচার্যের পদত্যাগসহ ছয় দফা দাবি জানানো হয়েছে।