সিলেটে পুলিশ-আন্দোলনকারী ব্যাপক সংঘর্ষ; আহত প্রায় ৫০

বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা ছাত্র জনতার 'গণমিছিল'কে কেন্দ্র করে সিলেটে পুলিশ ও আন্দোলনকারীদের মধ্যে ব্যাপক সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে।
শুক্রবার (২ আগস্ট) বিকেল ৪টার দিকে নগরের আখালিয়া এলাকায় এ সংঘর্ষ শুরু হয়। ক্রমেই তা মদিনা মার্কেট, তপোবন, সুবিদবাজারসহ আশপাশের এলাকায় ছড়িয়ে পড়ে।
সন্ধ্যা সাড়ে ৫টায় এ প্রতিবেদন লেখার সময় পর্যন্ত সংঘর্ষ চলছে। পুরো দুই কিলোমিটার এলাকাজুড়ে থমথমে পরিস্থিতি বিরাজ করছে।
সংঘর্ষে পুলিশ, সাংবাদিক ও পথচারীসহ অন্তত অর্ধশতাধিক আহতের খবর পাওয়া গেছে। পুলিশ আটজনকে আটকের তথ্য জানিয়েছে। আন্দোলনকারীদের থামাতে পুলিশ ব্যাপক টিয়ারগ্যাস ও সাউন্ড গ্রেনেড ছোড়ে।
জানা যায়, ঘোষিত 'ছাত্রজনতার গণমিছিল' কর্মসূচি পালনে বেলা ৩টায় বৃষ্টির মধ্যে শাহজালাল বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি বিশ্ববিদ্যালয়ের ফটকের সামনে জড়ো হন আন্দোলনকারী শিক্ষার্থীরা। এ সময় তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থী বাদে অন্যদেরও দেখা যায়। ক্রমেই বাড়তে থাকে জমায়েত।
এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা সিলেট-সুনামগঞ্জ সড়ক অবরোধ করলে পুলিশ তাদের সড়ক থেকে সরে যেতে বলে। পুলিশের বাধা পেয়ে আন্দোলনকারীরা মিছিল নিয়ে মদিনা মার্কেটের দিকে রওয়ানা দেন। পুলিশও তাদের পিছু নেয়।

মিছিলটি মদিনা মার্কেট এলাকায় আসার পর পুলিশকে লক্ষ্য করে ঢিল ছোড়া হয়। এরপর পুলিশও টিয়ারশেল নিক্ষেপ শুরু করলে বেঁধে যায় সংঘর্ষ।
পুলিশের ধাওয়া খেয়ে এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা বিভিন্ন গলির ভেতর ঢুকে পড়েন। গলির ভেতর থেকে পুলিশকে লক্ষ্য করে ইট-পাটকেল ছোড়া শুরু করেন।
সময় বাড়ার সঙ্গে সঙ্গে আন্দোলনকারীদের সংখ্যা বাড়ছে বলে ঘটনাস্থল থেকে জানিয়েছেন দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড-এর প্রতিবেদক।
সাগরদিঘির পাড় ও তপোবন এলাকায় অবস্থান নিয়ে সড়ক অবরোধ করে আছেন হাজারের বেশি বিক্ষোভকারী। দুইপক্ষের মাঝখানে অবস্থান করছেন পুলিশ সদস্যরা।
সিলেট মহানগর পুলিশের উপ-কমিশনার (উত্তর) আজবাহার আলী শেখ বলেন, 'পুলিশের ওপর বিনা উসকানিতে তারা [আন্দোলনকারী] প্রথমে আক্রমণ করে। পরে পুলিশ প্রতিহত করছে। এখন পর্যন্ত ৮ জনকে আটক করা হয়েছে।'
কোটা সংস্কার আন্দোলনকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া সহিংসতা ও সংঘর্ষে হত্যা এবং গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলনের ডাকা বিক্ষোভে রাজধানী ঢাকাসহ দেশের বিভিন্ন স্থানে জড়ো হয়ে মিছিল ও সমাবেশ করছেন মানুষ।
গতকাল বৃহস্পতিবার (১ আগস্ট) চলমান আন্দোলনের অংশ হিসেবে আজ শুক্রবার দেশব্যাপী প্রার্থনা ও ছাত্র-জনতার গণমিছিল কর্মসূচি ঘোষণা করে বৈষম্যবিরোধী ছাত্র আন্দোলন।
বৃহস্পতিবার গণমাধ্যমকে পাঠানো বিজ্ঞপ্তিতে জানানো হয়, গণহত্যা ও গণগ্রেপ্তারের প্রতিবাদে এবং শিক্ষার্থীদের ৯ দফা দাবি আদায়ের লক্ষ্যে আগামীকাল মসজিদে জুমার নামাজ শেষে দোয়া, শহীদদের কবর জিয়ারত, মন্দির, গির্জাসহ সব উপাসনালয়ে প্রার্থনার আয়োজন ও পরে ছাত্রজনতার গণমিছিল অনুষ্ঠিত হবে।