বাবাকে হত্যার পর লাশ নদীতে: ছেলেসহ ৩ জনের মৃত্যুদণ্ড

সিলেটে প্রবীণ আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরী হত্যা মামলায় তার ছেলেসহ তিনজনের মৃত্যুদণ্ড দিয়েছেন আদালত। এই মামলায় আরেক আসামিকে তিন বছরের সাজা দেওয়া হয়েছে।
মঙ্গলবার (৬ মে) সকালে বিভাগীয় বিশেষ জজ আদালতের বিচারক মো. শাহাদত হোসেন প্রামাণিক এই আদেশ দেন।
মৃত্যুদণ্ডপ্রাপ্তরা হলেন- আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরীর ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না, তার সহযোগী জাহের আলী ও আনসার আহমদ।
এ তথ্য জানিয়ে বিভাগীয় বিশেষ জাজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট মো. আনছারুজ্জামান জানান, ২০১১ সালের ১৭ জুলাই শবেবরাতের রাতে নামাজরত অবস্থায় প্রবীণ আইনজীবী শামসুল ইসলাম চৌধুরীকে তার ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না পেছন থেকে প্রথমে পাথর দিয়ে মাথায় আঘাত করেন। এরপর তিনি জ্ঞান হারিয়ে ফেলেন। পরে চেতনানাশক ইনজেকশন দিয়ে আইনজীবী শামসুল ইসলামকে অচেতন অবস্থায় গাড়িতে তুলে সুনামগঞ্জের ছাতকের মল্লিকপুর এলাকার সুরমা নদীতে ফেলে দেওয়া হয়।
এর কয়েকদিন পর সুনামগঞ্জের ব্রাহ্মণগাঁও গ্রামে সুরমা নদীতে তার মরদেহ পাওয়া যায়। এই ঘটনায় মুন্নাকে গাড়িচালকসহ তিনজন সহযোগিতা করেন।
মামলার রায়ে ছেলে মাসুদ আহমদ চৌধুরী মুন্না তার সহযোগী জাহের আলী ও আনসার আহমদকে মৃত্যুদণ্ড এবং গাড়িচালক বোরহান উদ্দিনকে তিন বছরের সাজা দেন আদালত। সাজাপ্রাপ্ত আসামিরা সবাই পলাতক রয়েছেন। মামলার ৩০ জন সাক্ষীর মধ্যে ১৯ জন সাক্ষ্য দেন।
মো. আনছারুজ্জামান আরও জানান, নিহত অ্যাডভোকেট শামসুল ইসলাম চৌধুরীর চার মেয়ে দুই ছেলে। বড় ছেলে মাহমুদ আহমদ চৌধুরী এই মামলার বাদী। বাদীপক্ষের আইনজীবী ছিলেন, অ্যাডভোকেট গোলাম এহিয়া চৌধুরী সোহেল।
সিলেটে মহানগর দায়রা জজ আদালতের পিপি অ্যাডভোকেট বদরুল ইসলাম চৌধুরী জানান, বিভাগীয় বিশেষ আদালতের বিচারক মো. শাহাদত হোসেন তার রায়ের পর্যবেক্ষণে বলেন, পৃথিবীতে বাবা-ছেলের মধুর সম্পর্ক থাকে। বৃদ্ধ বয়সে এসে বাবা ছেলের সহায়তা চেয়ে থাকেন। সে অবস্থায় তাকে জমিসংক্রান্ত ঘটনার জেরে হত্যা করা হয়। এই রায়ের মাধ্যমে নির্মম হত্যাকাণ্ডে জড়িতরা সাজা পাবেন বলে তিনি জানান।