Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Saturday
November 08, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SATURDAY, NOVEMBER 08, 2025
বড় ধরনের শর্টে যেভাবে ১০০ বিলিয়ন ডলার হারাল ভারতের আদানি সাম্রাজ্য 

আন্তর্জাতিক

টিবিএস ডেস্ক 
09 February, 2023, 09:05 pm
Last modified: 09 February, 2023, 09:28 pm

Related News

  • আদানির বকেয়া ৪৩৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ, পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহের অনুরোধ বাংলাদেশের
  • কেন বছরে তিনবার জন্মদিন পালন করেন আদানি?
  • শিপিং ফার্ম মারস্ক হাইফা বন্দরে জাহাজ পাঠানো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিল
  • আদানি চুক্তি: কর ছাড়, সারচার্জ ও কয়লার দাম পুনরায় আলোচনা করবে সরকার
  • শীঘ্রই দেশে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে আদানি, তবে কিছু মতপার্থক্য রয়ে গেছে: রয়টার্স

বড় ধরনের শর্টে যেভাবে ১০০ বিলিয়ন ডলার হারাল ভারতের আদানি সাম্রাজ্য 

কয়লাখনি, বিদ্যুৎকেন্দ্র থেকে শুরু করে ডেটা সেন্টার- ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি স্বদেশের অর্থনীতির বহু খাতেই প্রভাবশালী...
টিবিএস ডেস্ক 
09 February, 2023, 09:05 pm
Last modified: 09 February, 2023, 09:28 pm
ফোটো ইলাস্ট্রেশন: গিলিয়াম ক্যাসাস; ব্লুমবার্গ

২ ফেব্রুয়ারি, সূর্যোদয়ের মাত্র এক ঘণ্টা পর অনলাইনে পোস্ট করা এক ভিডিও বার্তায় বিনিয়োগকারীদের আবারো আশ্বস্ত করেন ভারতীয় ধনকুবের গৌতম আদানি; বলেন, সব ঠিক হয়ে যাবে। খবর ব্লুমবার্গের 

এই বার্তার কদিন আগে থেকেই ঠিকঠাক হওয়ার ইঙ্গিত কিন্তু মিলছিল না। বরং বাজারে পতনের ঘূর্ণাবর্তে পাক খাচ্ছিল, আদানি গ্রুপের শেয়ারমূল্য। বিক্রির এই হিড়িক দেখা দেয় যুক্তরাষ্ট্র-ভিত্তিক স্বনামধন্য শর্ট সেলার হিন্ডেনবার্গ রিসার্চের প্রতিবেদন প্রকাশের পর। তারা আদানি গ্রুপের কোম্পানিগুলোর শেয়ারের দাম আরো কমবে এই বাজি ধরে, এবং তার কারণ এক বিস্তৃত প্রতিবেদনে তুলে ধরে। হিন্ডেনবার্গ আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে যেসব অভিযোগ এনেছে, তা 'কর্পোরেট ইতিহাসে সবচেয়ে বড় ঠগবাজির'। কৃত্রিমভাবে শেয়ার দর বৃদ্ধি এবং হিসাবরক্ষণে জালিয়াতিসহ গুরুতর অনেক অভিযোগের বান বইয়ে দেয় হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট।  

এর কড়া প্রতিবাদ জানিয়েছে আদানি গ্রুপ। অস্বীকার করেছে সমস্ত অভিযোগ। কিন্তু, কে ভুল কে ঠিক – তা জানার অপেক্ষায় বসে থাকেননি বিনিয়োগকারীরা। ফলে মাত্র এক সপ্তাহে আদানি-গ্রুপের কোম্পানিগুলোর মোট বাজারমূল্য ৯০ বিলিয়ন ডলারের বেশি কমে যায়। এরমধ্যে গ্রুপের জ্বালানি ও অবকাঠামো খাতের প্রতিষ্ঠানও ছিল।    

গৌতম আদানি। ছবি: ব্লুমবার্গ

এমন বাস্তবতায় সেদিন ভোরের ভিডিও বার্তাটি দেন গৌতম আদানি। শুরুটা করেছিলেন, 'প্রিয় বন্ধুরা' সম্ভাষণে; কিন্তু, তারপরই দিতে থাকেন আগের রাতের দুঃসংবাদ। জানান, শেয়ারমূল্যে খাড়া পতনের কারণে তার মূল প্রতিষ্ঠান আদানি এন্টারপ্রাইজেস লিমিটেড তাদের সাম্প্রতিক নতুন শেয়ার বিক্রির উদ্যোগ বাতিল করবে। একথার অন্তর্নিহিত ভাবে ব্যবসাতে চরম ক্ষতি হওয়ার বিষয়টি যেন তিনি স্বীকার করে নেন। তবে আদানি বলেন, তিনি নিশ্চিত যে, তার ওপর বিনিয়োগকারীদের সমর্থন অটুট থাকবে।  

সংক্ষিপ্ত ওই ভাষণে শুধু আদানি গ্রুপকে ঘিরে অনিশ্চয়তার আবহ ফুটে ওঠেনি, পাশাপাশি ভারতের জন্যও শঙ্কার কারণ ছিল – যে দেশটির দ্রুত প্রবৃদ্ধি অর্জন করে অর্থনৈতিক পরাশক্তিতে পরিণত হওয়ার লক্ষ্য রয়েছে। অথচ সে দেশেরই রাজনৈতিক অভিজাত শ্রেণির পছন্দের পাত্র এক অতিধনী তার ব্যবসার ক্ষতি সামলাতে পারছিলেন না; বিশেষত যখন সেটা করেছে নিউইয়র্ক-ভিত্তিক ছোট্ট এক ফার্ম, যার নামকরণ হয়েছে ১৯৩৭ সালের এক এয়ারশিপ দুর্ঘটনার স্মরণে। 

সচরাচর যেমনটা করেন, সেভাবেই 'জয় হিন্দ' বলে ভিডিও বার্তায় ইতি টানেন আদানি। এই শব্দযুগল ভারতের রাজনীতিবিদদের সর্বজনীন পছন্দের। 

অবশ্য গৌতমের কথায় চিড়ে ভেজেনি। তাই ২ ফেব্রুয়ারি সকালে মুম্বাই স্টক এক্সচেঞ্জ খুলতেই আদানির কোম্পানিগুলো আবারো দরপতনের পাকে পড়ে। হিন্ডেনবার্গের শর্ট পজিশন রিপোর্ট প্রকাশের পর থেকে এদিন সুর্যাস্ত নাগাদ থেকে তার ব্যক্তিগত সম্পদমূল্য কমে যায় ৫৮ বিলিয়ন ডলার। অর্থাৎ, প্রায় অর্ধেক সম্পদ হারান তিনি। ফলে তিনি এশিয়ার তো নয়ই, এমনকী বর্তমানে ভারতেরও শীর্ষ ধনী নন।  

তবে এই পরিস্থিতি কিন্তু বিশ্ব অর্থনীতির গুরুত্বপূর্ণ প্রাণকেন্দ্র লন্ডন ও নিউইয়র্কের পুঁজিবাজারের সাথে ভারতের কর্পোরেট দুনিয়ার বড় ব্যবধানকেও তুলে ধরে। গত ২৪ জানুয়ারি যখন শর্ট সেলারের প্রতিবেদনটি প্রকাশিত হয়, তখন খুব কম সংখ্যক ভারতীয়ই আঘাত এতটা স্থায়ী হওয়ার অনুমান করতে পেরেছিলেন। কারণ, হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনে প্রচলিত কিছু অসাধুতার অভিযোগের পুনরাবৃত্তি ছিল: যা নিয়ে দীর্ঘদিন ধরেই ভারতের আর্থিক বাজার সংশ্লিষ্টদের মধ্যে কানাঘুষা চলেছে। গুটিকয় ভারতীয় সাংবাদিকও শিল্পগোষ্ঠীটির সন্দেহভাজন কিছু কার্যকালাপ নিয়ে লিখেছেন, কিন্তু কোনো শক্ত প্রমাণ দিতে পারেননি। উল্টো আদানি গ্রুপের দৃঢ় প্রতিবাদের মুখে পড়তে হয় তাদের। কিন্তু, হিন্ডেনবার্গের প্রতিবেদনে প্রভাব পড়েছে, তার কারণ হয়তো এটাই এর আগে তারা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে বিদ্যুৎচালিত ট্রাক নির্মাতা নিকোলা কর্পোরেশনের বিরুদ্ধেও এ ধরনের প্রতিবেদন প্রকাশ করে সাফল্য পেয়েছিল। গত বছর জালিয়াতির অভিযোগে সাজাও পেয়েছেন নিকোলার প্রতিষ্ঠাতা। 

আদানি গ্রুপের বিরুদ্ধে প্রায় ১০০ পাতার ওই প্রতিবেদনে অনেক অভিযোগই আনে হিন্ডেনবার্গ।  এরমধ্যে মূল অভিযোগগুলো ছিল যে, গৌতমের ঘনিষ্ঠজনেরা অফসোর জাল (শেল) কোম্পানির গোপন নেটওয়ার্কের মাধ্যমে আদানি গ্রুপের শেয়ার কেনাবেচা করেছেন। আবার দরকারমতো গ্রুপের অধীন বিভিন্ন কোম্পানিতে এই প্রক্রিয়ায় নগদ অর্থ সরবরাহ করে তার ঋণ (গ্রহণ) যোগ্যতাকে বৃদ্ধি করেছেন।  

হিন্ডেনবার্গের মতে, ব্যবসাগুলোকে তাদের প্রকৃত অবস্থার চেয়ে বেশি মূল্যবান দেখিয়ে আদানি গ্রুপ আরো বেশি বেশি বিনিয়োগ আকৃষ্ট করতে অথবা শেয়ার জামানত রেখে আরো ঋণ নিতে পেরেছে। 

হিন্ডেনবার্গ জানায়, প্রতিবেদনটি প্রকাশকালে তারা যুক্তরাষ্ট্রের বাজারে আদানি গ্রুপের বন্ডের বিরুদ্ধে শর্ট পজিশন নিয়েছে এবং ডেরিয়েভেটিভ বাজারেও বাজি ধরেছে। ফলে বিনিয়োগকারীরা আদানি গ্রুপের শেয়ার বিক্রি শুরু করলে তাদের মুনাফা হবে। 

আদানি গ্রুপের প্রতিবাদলিপিতে বলা হয়েছে, 'অন্যায্যভাবে মুনাফা লুঠতে' মামুলি ও ভিত্তিহীন সব অভিযোগ এনেছে শর্ট সেলারটি। প্রায় ৪০০ পাতার ওই প্রতিবেদনের প্রতিক্রিয়ায় বিজনেস টুডে টিভিকে গ্রুপের প্রধান আর্থিক কর্মকর্তা (সিএফও) যুগশিন্দর সিং বলেন, 'আমরা সমালোচনা গ্রহণ করি। কিন্তু, মিথ্যাকে মেনে নেই না'।

৯ ফেব্রুয়ারি নাগাদ আদানি কোম্পানিগুলোর বাজারমূল্য হারানো ১০৯ বিলিয়ন ডলারে উন্নীত হয়; হিন্ডেনবার্গ প্রতিবেদন প্রকাশের আগে তাদের সম্মিলিত বাজারমূল্য ছিল ২৩৬ বিলিয়ন ডলার।

হিন্ডেনবার্গ প্রতিবেদনের প্রেক্ষাপটে, ভারতের প্রধান পুঁজিবাজার নিয়ন্ত্রক সংস্থার প্রতি আদানি গ্রুপ নিয়ে তদন্তের আহ্বান জানান আইনজীবী মহুয়া মৈত্র। তিনি বলেন, 'এখন এটা আমাদের বাজারের স্থিতিশীলতা ও সুনামহানি করছে। আর্থিক প্রতিষ্ঠান এবং সর্বোপরি আমাদের সাধারণ বিনিয়োগকারীদের ঝুঁকির মধ্যে ফেলছে। তাই আমি আশা করি, এবিষয়ে দ্রুত কার্যকর সিদ্ধান্ত নেওয়া হবে'।

আদানি কাণ্ডে ভারতের ওপর যে প্রভাব পড়েছে তা বাড়িয়ে বলার উপায় নেই। কারণ, ইতঃপূর্বে যেসব গাড়ি প্রস্তুতকারক, জুয়ার অ্যাপ বা অন্যান্য ব্যবসাগুলোকে হিন্ডেনবার্গ টার্গেট করেছে, তারা ব্যবসার নামে পঞ্জি স্কিমের মতো জালিয়াতি করেছে। সে তুলনায়, গৌতম আদানির সাম্রাজ্য সুবৃহৎ শিল্প সংস্থা। 

গৌতম আদানির মালিকানাধীন খনি থেকে উত্তোলিত কয়লা– তারই মালিকানাধীন রেলপথ ও বন্দরের মাধ্যমে – তার নিয়ন্ত্রিত বিদ্যুৎকেন্দ্রের চুল্লি পর্যন্ত পৌঁছায়। এখানে উৎপাদিত বিদ্যুৎ আবার আদানি কোম্পানির নির্মিত সঞ্চালন লাইনে পৌঁছায় গ্রাহকের বাড়িতে। ওই বাড়িও হয়তো তৈরি তারই কোম্পানির সিমেন্ট দিয়ে। বাড়ির রান্নার কাজেও ব্যবহার হয় আদানি গ্রুপের সরবরাহ করা গ্যাস। খাবার টেবিলে বসে পরিবারের সদস্যরা ছুটিতে বেড়ানোর পরিকল্পনা করতে পারেন, হয়তো তারা আদানি গ্রুপের পরিচালিত কোনো বিমানবন্দর ব্যবহার করে ঘুরতে যাবেন। আবার ফোন স্ক্রল করে বেড়ানোর জায়গার ছবিও দেখছেন আদানি গ্রুপের পরিচালিত ডেটা সেন্টারের কল্যাণে। এক কথায়, আধুনিক ভারতের ইতিহাসে স্বল্প সময়ের ব্যবধানে অর্থনীতির সর্বত্র এতটা প্রভাব দেখা যায়নি অন্য কোনো ব্যবসায়ীর। 

ছবি: ব্লুমবার্গ

৬০ বছরের আদানি নম্রভাষী হিসেবেই পরিচিত, ব্যবসায়ী জীবনের অধিকাংশ সময় যিনি প্রচারণা এড়িয়ে চলেছেন। পশ্চিম ভারতের শিল্পকেন্দ্র গুজরাটের আহমেদাবাদে জন্ম নেওয়া গৌতম তার বাবা-মা'র আট সন্তানের মধ্যে সপ্তম। বাবা ছিলেন একজন বস্ত্র ব্যবসায়ী ও মা গৃহিণী। মুম্বাইয়ে গিয়ে কলেজেও ভর্তি হয়েছিলেন এক সময়, কিন্তু ছয় মাস পরেই সেই পাট চুকিয়ে যোগ দেন হিরে বাছাইয়ের কাজে। কিছুকাল পর আহমেদাবাদ ফিরে তার ভাইদের প্লাস্টিকের ব্যবসায় যোগ দেন। ১৯৮৮ সালে প্রতিষ্ঠা করেন একটি পণ্যদ্রব্যের বণিক প্রতিষ্ঠান। এর কয়েক বছর পর গুজরাটের একটি বন্দর ব্যবস্থাপনার চুক্তি পান তিনি, এটাই ছিল তার অবকাঠামো খাতের ব্যবসায় প্রথম প্রবেশের ঘটনা। এরপর শুধু করেছেন শনৈ শনৈ উন্নতি, একে একে ব্যবসা প্রসার করেছেন কয়লা, ভোজ্য তেল, বিদ্যুৎকেন্দ্র-সহ অন্যান্য দিকে। 

ভারতীয় প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদির 'মেক ইন ইন্ডিয়া' প্রকল্পের অন্যতম স্তম্ভ আদানি। এই কর্মসূচির আওতায়, সরকার আমদানি নির্ভরতা কমিয়ে দেশেই নানাবিধ উচ্চমানের পণ্য উৎপাদন করতে চায়। উন্নয়ন আনতে চায়,  দেশের অবকাঠামো ও প্রস্তুতকারক খাতে। মোদিও গুজরাটি, ২০০০ এর দশকের শুরু থেকেই আদানির সাথে তার মিত্রতার সম্পর্ক। প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর, মোদি যখন যেখাতে অবকাঠামো গড়তে চেয়েছেন, আদানিও সেখানে বিনিয়োগ করেছেন। 

২০২০ সালে পুঁজিবাজারের বৈশ্বিক উল্লম্ফনের সময়ে, আদানি গ্রুপের শেয়ারমূল্য আকাশচুম্বী উচ্চতা লাভ করে, যা এমনকী ২০২২ সাল জুড়েও বজায় ছিল। গ্রুপের চেয়ারম্যান ও প্রধান শেয়ারহোল্ডার হিসেবে এতে করে গৌতম আদানির সম্পদও নাটকীয় হারে বেড়েছে। এক পর্যায়ে তার সম্পদ ১৫০ বিলিয়ন ডলারে পৌঁছায় ব্লুমবার্গের বিলিয়নিয়ার ইনডেক্স তালিকায়। তবে বিত্তের এই উত্থান কতোটা স্থায়ী হবে তা নিয়ে সন্দেহ ছিল কারো কারো। কারণ, আর্থিক খাতের যুক্তিকে তোয়াক্কা না করেই বেড়েছিল তার কোম্পানিগুলোর মূল্যায়ন। এছাড়া, সাধারণ বিনিয়োগকারীদের লেনদেনের জন্য শেয়ারের সংখ্যাও ছিল তুলনামূলকভাবে বেশ কম। শেয়ারের এই ঘাটতি, কোম্পানিকে বাজারমূল্য নির্ধারণের শক্তি দেয়। ফলে ভারতের অধিকাংশ মিউচ্যুয়াল ফান্ড কোম্পানিগুলোতে বিনিয়োগ করা থেকে দূরে থেকেছে।     

আদানি সাম্রাজ্যের ভিত্তি হলো পুঁজিবাজারে নিবন্ধিত ১০টি কোম্পানি। এছাড়া, তাদের আওতাধীন আরো অনেক প্রতিষ্ঠানের সুবিস্তৃত এক নেটওয়ার্ক রয়েছে। ভারতে এ ধরনের পরিবার-নিয়ন্ত্রিত বৃহৎ শিল্পগোষ্ঠী নতুন কিছু নয়। এ ধরনের শিল্প পরিবারগুলি তাদের এক প্রতিষ্ঠান থেকে অন্যটিতে সম্পদ সরিয়ে নিতে পারে বা নতুন প্রতিষ্ঠানও তৈরি করতে পারে। ফলে তারা এক প্রকার অদম্যতা লাভ করে। পারিবারিক পরিচয়ই খুলে দেয় ব্যবসায়িক সম্ভাবনার অনেক দুয়ার। কিন্তু, এসব পারিবারিক সাম্রাজ্য বেশ জটিল ও অস্বচ্ছভাবে কাজ করে; এখানে অলিখিত নীতি ও পারিবারিক সম্পর্কের বিন্যাস কোম্পানির পরিচালনা ও সুশাসনকে এমনভাবে প্রভাবিত করে, যা বাইরের বিনিয়োগকারীদের বুঝে ওঠার সাধ্য নেই।

তার কোম্পানিগুলোর ভাগ্যের সাথে ভারতের ভবিষ্যতকে জড়িত এমন ইঙ্গিত প্রকাশ্যে দিয়েছেন গৌতম। গত নভেম্বরে যখন আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারমূল্য তেজি অবস্থানে, তখন এ মূল্য যৌক্তিক করতে ২৫০ কোটি ডলারের নতুন শেয়ার ছাড়ার ঘোষণা দেওয়া হয়। এসময় কোম্পানির সিএফও যুগশিন্দর সিং সাংবাদিকদের বলেছিলেন, 'আদানির সাফল্যগাঁথা, ভারতেরই (সাফল্য) কাহিনি। ভারতের সব গ্রামীণ পরিবারও এখানে বিনিয়োগ করতে পারবে'। 

অর্থাৎ, আদানি গ্রুপকে এসময় গণমানুষের প্রতিষ্ঠান হিসেবে তুলে ধরার প্রচেষ্টা করা হয়। নতুন শেয়ার ছাড়ার সময় আদানি এন্টারপ্রাইজেস ভারতের ক্ষুদ্র বিনিয়োগকারীদের থেকে পুঁজি সংগ্রহের আশাও করেছিল। কিন্তু, শেয়ার অফার শুরু হতেই আচমকা বোমা হয়ে ফাটে হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট। এরমধ্যেও সপ্তাহব্যাপী শেয়ার অফারিং পরিকল্পনামাফিক চালিয়ে যাওয়ার প্রতিশ্রুতিও দেয় আদানি গ্রুপ। এমনকী কিছু বন্ডহোল্ডারকে তারা জানায়, হিন্ডেনবার্গের অভিযোগগুলোর পয়েন্ট বাই পয়েন্ট খণ্ডনের প্রচেষ্টা আরো দেরিতে করা হবে। সেকথা রাখা যায়নি। শেয়ারমূল্যে নাটকীয় পতন শুরু হতেই, পাল্টা জবাব দেওয়ার জোর তাগিদ দেখা দেয় আদানি এন্টারপ্রাইজে। দিনকয়েকের মধ্যেই কোম্পানি তাদের প্রতিক্রিয়া প্রকাশ করে।

এতে কোনো লাভ হয়েছে কী? শত শত পাতায় দেওয়া আদানি গ্রুপের ওই প্রতিবাদপত্রে আদানি গ্রুপের ব্যবসার চোখ কপালে তোলার মতো ব্যবসায়িক ফিরিস্তি ছিল। যেকোনো আর্থিক খাতের পেশাজীবীর জন্য এত তথ্যের ভার ছিল অপরিমেয়। আর সাধারণ বিনিয়োগকারীদের পক্ষে এখান থেকে মাত্র কয়েকদিনের মধ্যে যাচাই করাতো আরো কঠিন। ফলে পুঁজিবাজারের ধস থামেনি, এবং ৩১ জানুয়ারি নাগাদ মূল্যসীমার চেয়েও ৪.৪ শতাংশ নিচে নেমে আসে আদানি এন্টারপ্রাইজের বাজারমূল্য। 

তথ্যচিত্র: ব্লুমবার্গ

নতুন শেয়ারগুলো ধসের আগের বাজারমূল্যেই বিক্রির অফার করা হয়েছিল। আদানি গ্রুপ জানায়, বাজারের বর্তমান অবস্থার মধ্যেও এসব কিনে নিতে চাইছেন বিনিয়োগকারীরা। তবে সাধারণ বিনিয়োগকারীদের থেকে কাঙ্ক্ষিত সাড়া না পেয়ে, তারা শেষমুহূর্তে বড় বিনিয়োগকারীদের রাজি করিয়ে শেয়ার বুকিং সম্পন্ন করে। পরের দিন আদানি এন্টারপ্রাইজের শেয়ারদরে ৩০ শতাংশের বেশি পতন হয়। ফলে নতুন শেয়ার ক্রয়কারীরা তাৎক্ষণিকভাবেই বিপুল লোকসানের শিকার হওয়ার ঝুঁকিতে পড়েন। তারা উদ্বিগ্ন হয়ে আদানির কর্মকর্তাদের ফোন করেন। ফলে সেদিন বিকেলেই ওই অফারিং বাতিল করা হয়। আদানি তার ভিডিও বার্তায় বলেন, 'আমাদের পরিচালনা পর্ষদ সিদ্ধান্ত নিয়েছে, নীতিগতভাবে এই প্রক্রিয়া সম্পন্ন করা উচিত হবে না'।

এতকিছু যখন হচ্ছিল, ক্ষতির মাত্রাও তখন ছড়িয়ে পড়ছিল। ভারতের পুঁজিবাজারের একটি বৃহত্তর সূচকেরও পতন ঘটে, এশিয়ার অন্যান্য মুদ্রার বিরুদ্ধে বিনিময় দর হারায় রুপি। 

অবশ্য অনেক পর্যবেক্ষক বলেছেন, ঋণ বা বন্ডের বিপরীতে শেয়ার জামানত রাখা, বা পরিচালনা পর্ষদে পরিবারের সদস্যদের রাখা – যেসব চর্চাকে যুক্তরাষ্ট্রের একজন বিনিয়োগকারী সন্দেহের চোখে দেখেন– ভারতীয় শিল্পগোষ্ঠীগুলোতে তা অহরহ ঘটছে। হয়তো হিন্ডেনবার্গ বুঝতে পারেনি, ভারতে কীভাবে ব্যবসা পরিচালনা করা হয়। অন্যরা হিন্ডেনবার্গের শর্ট প্রতিবেদনকে ভারতের ওপর আক্রমণ বলে নিন্দা করেছেন।

অবশ্য এমন ভাষ্যের সাথে সবাই একমত নন। নয়াদিল্লির একজন সম্পদ ব্যবস্থাপক পিএন বিজয় বলেন, 'গৌতম বিশ্বকে বলছেন, আদানি (গ্রুপই) হলো ভারত, ভারতই হলো আদানি। এটা বাজে প্রলাপ। এটা পুঁজিবাজার, আর এখানে শর্ট সেল নিত্যদিনের ঘটনা'। 

ভারতীয় অর্থনীতিতে অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ অবস্থানে থাকায়, শেষপর্যন্ত হয়তো আদানি গ্রুপ শর্ট সেলের ধাক্কা কাটিয়ে উঠতে পারবে। সাম্প্রতিক কয়েকদিনে তাদের কিছু শেয়ারের মূল্য আংশিকভাবে বেড়েছে। শেয়ারের বিপরীতে নেওয়া কিছু ঋণও পরিশোধ করেছেন গৌতম ও তার পরিবারের সদস্যরা। কিন্তু, বৈশ্বিক পুঁজিবাজারের দৃষ্টি এখন আদানি গ্রুপ এবং এর প্রতিষ্ঠাতার দিকে নিবদ্ধ। ফলে যে জটিল কাঠামোয় ভর করে আদানি গ্রুপের উত্থান ঘটেছে– সেদিকে বিশ্লেষকদের তীক্ষ্ম নজর থাকবে। ভারতের ভেতরে ও বাইরের সমালোচকরাও এখন বলার মতো অনেক খোড়াকই পাবেন।  

Related Topics

টপ নিউজ

গৌতম আদানি / আদানি গ্রুপ / হিন্ডেনবার্গ রিপোর্ট

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • ‘অ্যাডপ্ট এ রোড’ কর্মসূচি হলো একটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বমূলক উদ্যোগ, যেখানে কোনো এলাকার বাসিন্দা বা প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য একটি রাস্তার দায়িত্ব নেয়। তারা রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, তদারকি করা এবং এমনকি কমিউনিটি পুলিশের খরচও বহন করে। ছবি: মেহেদী হাসান
    ‘অ্যাডপ্ট এ রোড’: যেভাবে নাগরিক মালিকানায় গুলশানের রাস্তা এখন পরিচ্ছন্ন-পথচারীবান্ধব
  • মিস মেক্সিকো ফাতিমা বশ। ছবি: ইপিএ
    মিস মেক্সিকোকে ‘গর্দভ’ বলে কটাক্ষ; প্রতিবাদে অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগীরা
  • ড্রোন থেকে মশাবাহী একটি বায়োডিগ্রেডেবল ক্যাপসুল ফেলা হচ্ছে। ছবি: আমেরিকান বার্ড কনজারভেন্সি
    বিলুপ্তপ্রায় পাখিদের রক্ষায় অভিনব উদ্যোগ: হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে ড্রোনে ছাড়া হচ্ছে লাখ লাখ মশা
  • ইলন মাস্ক। ছবি : রয়টার্স
    এক ট্রিলিয়ন ডলার দিয়ে ইলন মাস্ক কী কী কিনতে পারতেন?
  • ন্যান্সি পেলোসি (ডানে) ট্রাম্পের অন্যতম কট্টর সমালোচক হয়ে উঠেছিলেন। ছবি: এএফপি
    ট্রাম্পের ভাষণ ছিঁড়ে ফেলেছিলেন, সেই পেলোসির অবসরের ঘোষণার পর ট্রাম্প বললেন ‘শয়তান মহিলা’
  • ছবি: এপি
    যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিতে সাগরে নামল চীনের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী ‘ফুজিয়ান’

Related News

  • আদানির বকেয়া ৪৩৭ মিলিয়ন ডলার পরিশোধ, পূর্ণ সক্ষমতায় বিদ্যুৎ সরবরাহের অনুরোধ বাংলাদেশের
  • কেন বছরে তিনবার জন্মদিন পালন করেন আদানি?
  • শিপিং ফার্ম মারস্ক হাইফা বন্দরে জাহাজ পাঠানো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিল
  • আদানি চুক্তি: কর ছাড়, সারচার্জ ও কয়লার দাম পুনরায় আলোচনা করবে সরকার
  • শীঘ্রই দেশে পূর্ণমাত্রায় বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরু করবে আদানি, তবে কিছু মতপার্থক্য রয়ে গেছে: রয়টার্স

Most Read

1
‘অ্যাডপ্ট এ রোড’ কর্মসূচি হলো একটি সরকারি-বেসরকারি অংশীদারত্বমূলক উদ্যোগ, যেখানে কোনো এলাকার বাসিন্দা বা প্রতিষ্ঠান নির্দিষ্ট মেয়াদের জন্য একটি রাস্তার দায়িত্ব নেয়। তারা রাস্তা পরিষ্কার-পরিচ্ছন্ন রাখা, তদারকি করা এবং এমনকি কমিউনিটি পুলিশের খরচও বহন করে। ছবি: মেহেদী হাসান
ফিচার

‘অ্যাডপ্ট এ রোড’: যেভাবে নাগরিক মালিকানায় গুলশানের রাস্তা এখন পরিচ্ছন্ন-পথচারীবান্ধব

2
মিস মেক্সিকো ফাতিমা বশ। ছবি: ইপিএ
আন্তর্জাতিক

মিস মেক্সিকোকে ‘গর্দভ’ বলে কটাক্ষ; প্রতিবাদে অনুষ্ঠান ছেড়ে বেরিয়ে গেলেন মিস ইউনিভার্স প্রতিযোগীরা

3
ড্রোন থেকে মশাবাহী একটি বায়োডিগ্রেডেবল ক্যাপসুল ফেলা হচ্ছে। ছবি: আমেরিকান বার্ড কনজারভেন্সি
আন্তর্জাতিক

বিলুপ্তপ্রায় পাখিদের রক্ষায় অভিনব উদ্যোগ: হাওয়াই দ্বীপপুঞ্জে ড্রোনে ছাড়া হচ্ছে লাখ লাখ মশা

4
ইলন মাস্ক। ছবি : রয়টার্স
আন্তর্জাতিক

এক ট্রিলিয়ন ডলার দিয়ে ইলন মাস্ক কী কী কিনতে পারতেন?

5
ন্যান্সি পেলোসি (ডানে) ট্রাম্পের অন্যতম কট্টর সমালোচক হয়ে উঠেছিলেন। ছবি: এএফপি
আন্তর্জাতিক

ট্রাম্পের ভাষণ ছিঁড়ে ফেলেছিলেন, সেই পেলোসির অবসরের ঘোষণার পর ট্রাম্প বললেন ‘শয়তান মহিলা’

6
ছবি: এপি
আন্তর্জাতিক

যুক্তরাষ্ট্রকে টেক্কা দিতে সাগরে নামল চীনের সবচেয়ে বড় বিমানবাহী রণতরী ‘ফুজিয়ান’

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net