Skip to main content
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
The Business Standard বাংলা

Sunday
June 22, 2025

Sign In
Subscribe
  • মূলপাতা
  • অর্থনীতি
  • বাংলাদেশ
  • আন্তর্জাতিক
  • খেলা
  • বিনোদন
  • ফিচার
  • ইজেল
  • মতামত
  • অফবিট
  • সারাদেশ
  • কর্পোরেট
  • চাকরি
  • প্রবাস
  • English
SUNDAY, JUNE 22, 2025
আদানি চুক্তি: কর ছাড়, সারচার্জ ও কয়লার দাম পুনরায় আলোচনা করবে সরকার

বাংলাদেশ

সাজ্জাদ হোসেন
09 March, 2025, 09:15 am
Last modified: 09 March, 2025, 11:32 am

Related News

  • শিপিং ফার্ম মারস্ক হাইফা বন্দরে জাহাজ পাঠানো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিল
  • অবশেষে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি নিয়ে বিরোধ মেটাতে আলোচনায় বসতে রাজি আদানি
  • ২ বিলিয়ন ডলার বকেয়ার ১.২ বিলিয়ন পরিশোধ, বাকি বকেয়া পাওয়ার বিষয়েও আশাবাদী আদানি
  • আদানির বিদ্যুৎ: ৪০ কোটি ডলার কর ফাঁকি অনুসন্ধানে পিডিবি-এনবিআরে দুদকের চিঠি
  • যান্ত্রিক ত্রুটি: ১৭ ঘণ্টা বন্ধের পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

আদানি চুক্তি: কর ছাড়, সারচার্জ ও কয়লার দাম পুনরায় আলোচনা করবে সরকার

পর্যালোচনা কমিটি বিপিডিবিকে সিঙ্গাপুর আন্তর্জাতিক সালিশ কেন্দ্রের (এসআইএসি) মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করবে। কমিটি চুক্তিতে আদানির দুর্নীতির সম্ভাব্য উপস্থিতি খতিয়ে দেখছে।
সাজ্জাদ হোসেন
09 March, 2025, 09:15 am
Last modified: 09 March, 2025, 11:32 am

ইনফোগ্রাফিক: টিবিএস

সরকারের একটি পর্যালোচনা কমিটি আদানি পাওয়ার চুক্তির প্রধান শর্তগুলো পুনর্মূল্যায়নের সুপারিশ করতে যাচ্ছে। চুক্তিতে ভারতীয় কোম্পানির জন্য সুবিধাজনক কিছু 'একতরফা' শর্ত রয়েছে, যা পর্যালোচনার আওতায় আনা হবে।

২০১৭ সালে স্বাক্ষরিত এ চুক্তির আওতায় ভারত থেকে বিদ্যুৎ আমদানির শর্ত নির্ধারিত হয়েছিল। এতে কর অব্যাহতি, বিলম্বে পরিশোধের উচ্চ সারচার্জ এবং কয়লার মূল্য নির্ধারণের বিতর্কিত বিধানসহ বেশ কিছু বিষয় রয়েছে, যেগুলো এখন পর্যালোচনা করা হবে।

হাইকোর্টের নির্দেশে গঠিত কমিটি দেখেছে, চুক্তির কর অব্যাহতির শর্তগুলো আদানিকে বিশেষ সুবিধা দিয়েছে। বিলম্বে পরিশোধের সারচার্জও অত্যন্ত উচ্চ, যা বার্ষিক ২৭ শতাংশ পর্যন্ত হতে পারে। কয়লার মূল্য নির্ধারণের ক্ষেত্রে ইন্দোনেশিয়ার একটি সূচক ব্যবহারের বিধানও আদানির পক্ষে গেছে, যা নিয়ে অসঙ্গতি দেখা দিয়েছে।

বিশ্বব্যাংকের সাবেক অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেনসহ কমিটির অন্য সদস্যরা মনে করেন, এ চুক্তি বাংলাদেশের জাতীয় স্বার্থের পরিপন্থী। তারা বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডকে (বিপিডিবি) বিদ্যুতের শুল্ক কমানো এবং বিতর্কিত শর্তগুলো সংশোধনের জন্য আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেডের (এপিজেএল) সঙ্গে পুনরায় আলোচনার পরামর্শ দেবেন।

আদানি যদি পুনরায় আলোচনায় রাজি না হয়, তাহলে কমিটি সিঙ্গাপুর আন্তর্জাতিক সালিশ কেন্দ্রের (এসআইএসি) মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করবে। পাশাপাশি, চুক্তির সঙ্গে সংশ্লিষ্ট সম্ভাব্য দুর্নীতির বিষয়টিও তদন্ত করছে কমিটি। বাংলাদেশের আইনি অবস্থান শক্তিশালী করতে সংশ্লিষ্ট কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদ এবং চুক্তি-সংক্রান্ত যোগাযোগের ফরেনসিক বিশ্লেষণের পরিকল্পনাও নেওয়া হয়েছে।

কমিটি সতর্ক করে দিয়েছে, এ চুক্তি দীর্ঘমেয়াদে বাংলাদেশের অর্থনীতির ওপর নেতিবাচক প্রভাব ফেলতে পারে। কারণ, অন্যান্য বিদ্যুৎকেন্দ্রের তুলনায় এখান থেকে কেনা বিদ্যুতের দাম উল্লেখযোগ্যভাবে বেশি। সম্ভাব্য আন্তর্জাতিক সালিশ পরিচালনার জন্য একজন আন্তর্জাতিক আইনি বিশেষজ্ঞ নিয়োগের কথাও বিবেচনা করা হচ্ছে।

আওয়ামী লীগ সরকারের সময় গৃহীত বিদ্যুৎ ও জ্বালানির দ্রুত সরবরাহ বৃদ্ধি (বিশেষ বিধান) আইন, ২০১০-এর আওতায় স্বাক্ষরিত আদানিরসহ ১১টি বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনার দায়িত্ব দেওয়া হয়েছে কমিটিকে।

কর অব্যাহতির সুবিধা

চুক্তির কর অব্যাহতির বিধান এমনভাবে গঠন করা হয়েছে, যা আদানির জন্য সুবিধাজনক। ভারত সরকার যদি বিদ্যুৎকেন্দ্রের ওপর নতুন কর আরোপ করে, তাহলে সে অতিরিক্ত ব্যয় বহন করতে হবে বিপিডিবিকে।

অন্যদিকে, কর মওকুফ হলে বাংলাদেশ সরকারকে সেই মওকুফের সুবিধা পেতে ভারতের অনুমোদন চেয়ে আনুষ্ঠানিকভাবে অনুরোধ জানাতে হবে।

পর্যালোচনা কমিটির সদস্য জাহিদ হোসেন বলেন, 'যদি কোনো প্রতিকূল পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়, তাহলে তার ব্যয় আমাদের বহন করতে হয়। কিন্তু সুবিধাজনক হলে লাভবান হয় আদানি—যদি না ভারত সরকার ভিন্ন কোনো নির্দেশনা দেয়।'

২০১৯ সালে মোদী সরকার গোড্ডা আদানি বিদ্যুৎকেন্দ্রকে বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল (এসইজেড) হিসেবে ঘোষণা করতে এসইজেড নীতিমালা সংশোধন করে। এর ফলে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি যন্ত্রপাতি ও কয়লার ওপর বড় অঙ্কের কর ছাড় এবং আমদানি শুল্ক সুবিধা পায়। এর পরিমাণ কয়েক বিলিয়ন ডলার। এটি পণ্য ও পরিষেবা করের ক্ষেত্রেও ছাড় পেয়েছে।

চুক্তির নথিপত্র অনুযায়ী, এসইজেড মর্যাদার ফলে আদানি ২৫ বছরে প্রায় ১ বিলিয়ন ডলার কার্বন কর সুবিধা পেয়েছে। প্রথম পাঁচ বছরের জন্য শতভাগ আয়কর ছাড়, পরবর্তী পাঁচ বছরের জন্য ৫০ শতাংশ ছাড় এবং আরও পাঁচ বছরের জন্য রপ্তানি আয়ের ওপর ৫০ শতাংশ ছাড় দেওয়া হয়েছে।

আদানির বাংলাদেশ শাখা, পর্যালোচনা কমিটি এবং বিপিডিবির সূত্র নিশ্চিত করেছে, কার্বন কর সুবিধার একটি অংশ আদানি বিপিডিবিকে দিয়েছে। তবে পণ্য, পরিষেবা এবং আয়ের ওপর অন্যান্য কর সুবিধার বিষয়টি এখনো আলোচনাধীন।

২০২৪ সালে বিপিডিবি তিনবার আদানির সঙ্গে কর সুবিধার প্রসঙ্গ উত্থাপন করে—১৭ সেপ্টেম্বর, ২২ অক্টোবর এবং ৪ ডিসেম্বর।

জবাবে ২০২৫ সালের ৫ ফেব্রুয়ারির এক চিঠিতে আদানি জানায়, ২০২৩ সালের মার্চ থেকে ২০২৪ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত তারা বিপিডিবির সঙ্গে ৯৪.৫ মিলিয়ন ডলার মূল্যের কয়লা-সম্পর্কিত কর সুবিধা ভাগ করেছে।

এছাড়া, ভারতের আয়কর বিভাগের একটি নথিও পাঠায় আদানি। এতে বলা হয়, এপিজেএল এসইজেড মর্যাদার আওতায় কোনো অতিরিক্ত আয়কর ছাড় পাওয়ার যোগ্য নয়। চিঠিতে আরও উল্লেখ করা হয়, ২০২১ সালের মধ্যে বিদ্যুৎকেন্দ্রটি চালু করতে ব্যর্থ হওয়ায় আদানি ভারত সরকারের কাছ থেকে সম্পূর্ণ কর সুবিধা পায় না।

আদানি পাওয়ার লিমিটেড ২০২৩ সালের ৭ এপ্রিল বাংলাদেশে বাণিজ্যিক কার্যক্রম শুরু করে, শুরুতে ৭৫০ মেগাওয়াট বিদ্যুৎ সরবরাহ করে।

২০২৫ সালের ১১ ফেব্রুয়ারি বিপিডিবি (বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ড) ও আদানি প্রতিনিধিদের মধ্যে এক ভার্চুয়াল বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়, যেখানে অমীমাংসিত বিভিন্ন বিষয় নিয়ে আলোচনা হয়। বৈঠকে বিপিডিবি তাদের দাবির বিষয়ে পুনরায় চাপ দিলেও আদানির পক্ষ থেকে কোনো চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত আসেনি।

কর সুবিধা সংক্রান্ত বিরোধ নিয়ে জানতে চাইলে বিপিডিবি চেয়ারম্যান মো. রেজাউল করিম টিবিএসকে বলেন, 'আমরা তাদের ভারত সরকারের কাছ থেকে কর সুবিধা না পাওয়ার প্রমাণস্বরূপ নথি জমা দিতে বলেছি।'

'অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন'

পর্যালোচনা কমিটির প্রতিবেদনে উঠে এসেছে, দীর্ঘ আলোচনার পর বিপিডিবি ও আদানি পাওয়ার ঝাড়খণ্ড লিমিটেড (এপিজেএল) একমত হয় যে—যদি ভারত সরকার গোড্ডা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের জন্য কর মওকুফ করে, তবে বাংলাদেশও সে সুবিধা পাবে।

আদানি প্রকল্প প্রস্তাব ও বিপডিবির ইস্যু করা লেটার অব ইন্টেন্টেও এসব কর সুবিধার কথা উল্লেখ করেছিল। তবে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি (পিপিএ) ও বাস্তবায়ন চুক্তি (আইএ) চূড়ান্ত করার সময় এই বিধানটি একেবারেই ভিন্নভাবে উল্লেখ করা হয়।

শেষপর্যন্ত সেই পরিবর্তিত ভাষাতেই পিপিএ ও আইএ স্বাক্ষর হয়, যার ফলে কর সুবিধা পাওয়া কার্যত অসম্ভব হয়ে পড়ে। পর্যালোচনা কমিটি কোনো ব্যাখ্যা ছাড়াই এসব পরিবর্তনকে 'গভীরভাবে উদ্বেগজনক' বলে মনে করছে।

পর্যালোচনা কমিটির সদস্য আলী আশফাক, যিনি একজন অডিট ও ট্যাক্স বিশেষজ্ঞ এবং ইংল্যান্ড অ্যান্ড ওয়েলসের ইনস্টিটিউট অব চার্টার্ড অ্যাকাউন্ট্যান্টসের সদস্য, এ পরিবর্তনকে 'অপ্রত্যাশিত পরিবর্তন' বলে মন্তব্য করেছেন।

আদানি বিদ্যুৎ সরবরাহ শুরুর আগে বাংলাদেশ কয়লার উচ্চ মূল্যজনিত বিদ্যুতের চড়া দামের বিষয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করে।

৫ মার্চ টিবিএস আদানি গ্রুপের ভাইস প্রেসিডেন্ট ও কর্পোরেট কমিউনিকেশন প্রধান রবীন ঘোষের সঙ্গে ইমেলের মাধ্যমে যোগাযোগ করলেও গতকাল পর্যন্ত কোনো উত্তর পাওয়া যায়নি।

সুদের হার সর্বোচ্চ

তারল্য সংকটের কারণে বিদ্যুৎ আমদানির বকেয়া বিল পরিশোধ নিয়ে বাংলাদেশের পরিস্থিতি আরও জটিল হয়ে উঠেছে।

পর্যালোচনা কমিটির এক সদস্য জানান, বিলম্বিত পরিশোধের কারণে আদানি মোট বকেয়া বিলের ওপর মাসিক ২ শতাংশ হারে সারচার্জ আরোপ করেছে, যা বার্ষিক প্রায় ২৭ শতাংশে পৌঁছায়।

তুলনাস্বরূপ, আন্তর্জাতিক ঋণের বার্ষিক সুদের হার সাধারণত ৪-৫ শতাংশের মধ্যে থাকে, যা অনেক সময়ই উচ্চ বলে বিবেচিত হয়। চীন কিছু ক্ষেত্রে একই হারে ঋণ দিয়ে থাকে, যা অনেক অর্থনীতিবিদের মতে 'ঋণের ফাঁদ'।

আলী আশফাক বলেন, 'বকেয়া পরিশোধে মাসিক ২ শতাংশ সারচার্জ অস্বাভাবিকভাবে বেশি। আমরা এ শর্তটি পুনর্বিবেচনার চেষ্টা করব।'

অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন চুক্তিটিকে 'অপ্রতিসম' বলে অভিহিত করে মন্তব্য করেন, 'এ চুক্তি কখনোই স্বাক্ষরিত হওয়া উচিত ছিল না।'

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এপিজেএল-এর এক কর্মকর্তা জানান, ২০২৩ সালের ৭ এপ্রিল থেকে ২০২৪ সালের ৩১ ডিসেম্বর পর্যন্ত আদানি বিপিডিবির ওপর ৫০ মিলিয়ন ডলারের সারচার্জ আরোপ করেছে।

তবে সূত্র জানায়, যদি বিপিডিবি ২০২৫ সালের জুনের মধ্যে সমস্ত বকেয়া পরিশোধ করে, তাহলে নতুন করে সারচার্জ আরোপ করা হবে না বলে আদানি প্রস্তাব দিয়েছে।

কয়লার মূল্য নির্ধারণে সুবিধা পেল আদানি?

পর্যালোচনা কমিটির মতে, কয়লার মূল্য নির্ধারণের পদ্ধতি আদানির পক্ষেই সুবিধাজনক হয়েছে।

চুক্তিতে বলা হয়েছে, কয়লার দাম দুটি আন্তর্জাতিক সূচকের ভিত্তিতে নির্ধারিত হবে—অস্ট্রেলিয়ার নিউ ক্যাসেল সূচক ও ইন্দোনেশিয়ার কয়লা সূচক (আইসিআই), যা তাদের গড় দামের ওপর নির্ভর করবে।

ইন্দোনেশীয় কয়লার সাপ্তাহিক মূল্য নির্ধারণে আইসিআই-এর পাঁচটি ক্যাটাগরি রয়েছে—আইসিআই১ থেকে আইসিআই৫। চুক্তিতে আইসিআই১-কে মানদণ্ড হিসেবে ধরা হলেও, আদানি কখনো কখনো আইসিআই২ ও আইসিআই৩ ব্যবহার করেছে, যা বিপিডিবির দাবি অনুযায়ী চুক্তির শর্ত লঙ্ঘন।

জানুয়ারিতে কয়লার মূল্য সমন্বয় নিয়ে বিপিডিবি উদ্বেগ প্রকাশ করলে আদানি মৌখিকভাবে জানায়, ইন্দোনেশিয়া যখন আইসিআই১ সূচক প্রকাশ বন্ধ করে, তখন তারা অন্যান্য আইসিআই সূচকের ভিত্তিতে দাম নির্ধারণ করতে বাধ্য হয়।

পর্যালোচনা কমিটি মনে করছে, চুক্তিতে ইন্দোনেশিয়ার সূচক অন্তর্ভুক্ত করার মূল উদ্দেশ্য ছিল আদানির সুবিধার্থে কয়লার মূল্য নির্ধারণ করা।

আইসিআই-এর অস্থিরতার কারণে বাংলাদেশ কখনো রামপাল ও পায়রা বিদ্যুৎ কেন্দ্রের মতো বড় প্রকল্পগুলোর চুক্তিতে এ সূচক ব্যবহারে সম্মত হয়নি।

বাংলাদেশ প্রকৌশল বিশ্ববিদ্যালয়ের (বুয়েট) প্রো-ভিসি এবং পর্যালোচনা কমিটির সদস্য আব্দুল হাসিব চৌধুরী বলেছেন, ইন্দোনেশীয় কয়লা সূচক অত্যন্ত অস্থিতিশীল। এটি সাধারণত ইন্দোনেশিয়ায় কয়লা উত্তোলনের প্রবণতা নির্ধারণে ব্যবহৃত হয়, আদানির মতো বড় চুক্তির ক্ষেত্রে নয়।

তিনি আরও বলেন, উভয় সূচকেই ছাড়ের সুবিধা থাকলেও আদানি কয়লা বিল জমা দেওয়ার সময় সে সুবিধাটি নেয় না। তার মতে, কয়লা সূচক এমনভাবে নির্ধারিত হয়েছে, যাতে মনে হয় আদানি বিদ্যুতের আড়ালে কয়লা বিক্রি করছে।

পর্যালোচনা কমিটি গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের দূরত্বজনিত উচ্চ পরিবহন ব্যয় নিয়েও সন্দিহান। বিশেষ করে, অস্ট্রেলিয়ার কারমাইকেল কয়লা খনি থেকে কয়লা আমদানির যৌক্তিকতা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। এত দূর থেকে কয়লা আনলে পরিবহন ব্যয় উল্লেখযোগ্যভাবে বেড়ে যায়।

ইনস্টিটিউট ফর এনার্জি ইকোনমিক্স অ্যান্ড ফাইন্যান্সিয়াল অ্যানালাইসিস (আইইইএফএ) মনে করছে, চীন থেকে কয়লা আমদানি করা তুলনামূলকভাবে সাশ্রয়ী হতো। সংস্থাটি বলছে, গোড্ডা প্রকল্প বাংলাদেশের জন্য 'ব্যয়বহুল ও ঝুঁকিপূর্ণ'।

এটির এক প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, 'অস্ট্রেলিয়া থেকে কয়লা আমদানি করে ভারতের বৃহত্তম কয়লা ভাণ্ডার থেকে ৭০০ কিলোমিটার দূরে পরিবহনের ফলে গোড্ডায় উৎপাদিত বিদ্যুৎ অত্যন্ত ব্যয়বহুল হয়ে যায়। এ ব্যবস্থাপনা সম্ভব হয়েছে শুধু বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তির মাধ্যমে, যেখানে আদানি পাওয়ারকে কয়লা আমদানির সম্পূর্ণ ব্যয় বাংলাদেশের ওপর স্থানান্তরের অনুমতি দেওয়া হয়েছে।'

বাংলাদেশ যখন আদানি বিদ্যুৎ আমদানির চূড়ান্ত প্রস্তুতি নিচ্ছিল, তখন উচ্চ কয়লার দামের কারণে বিদ্যুতের মূল্যবৃদ্ধি নিয়ে উদ্বেগ দেখা দেয়। প্রতিক্রিয়ায় ২০২৩ সালে আদানি পাওয়ার বাংলাদেশ বিদ্যুৎ উন্নয়ন বোর্ডের (বিপিডিবি) সঙ্গে বৈঠক করে এবং আশ্বাস দেয় যে, তাদের বিদ্যুতের দাম পায়রা ও রামপাল বিদ্যুৎকেন্দ্রের তুলনায় কম হবে।

তবে বাস্তবতা ভিন্ন ছিল। ২০২৩-২৪ অর্থবছরে আদানি বিদ্যুতের প্রতি ইউনিট উৎপাদন ব্যয় দাঁড়ায় প্রায় ১৪ টাকা ৮৭ পয়সা, যেখানে পায়রার জন্য তা ছিল ১১ টাকা ৮৩ পয়সা।

দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ড (টিবিএস) আদানি গ্রুপ বাংলাদেশের সভাপতি ইউসুফ শাহরিয়ার এবং গোড্ডা বিদ্যুৎকেন্দ্রের মিডিয়া টিমের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তারা কোনো সাড়া দেয়নি।

আইনি পদক্ষেপের পরিকল্পনা

পর্যালোচনা কমিটি বিপিডিবিকে সিঙ্গাপুর আন্তর্জাতিক সালিশ কেন্দ্রের (এসআইএসি) মাধ্যমে আইনি পদক্ষেপ নেওয়ার সুপারিশ করবে। কমিটি চুক্তিতে আদানির দুর্নীতির সম্ভাব্য উপস্থিতি খতিয়ে দেখছে।

আদানির বিরুদ্ধে এর আগে যুক্তরাষ্ট্র, কেনিয়া ও শ্রীলঙ্কায় সরকারি কর্মকর্তাদের ঘুষ দিয়ে প্রকল্প অনুমোদন করানোর অভিযোগ উঠেছিল। কমিটি সন্দেহ করছে, বাংলাদেশেও অনুরূপ অনিয়ম ঘটতে পারে।

পর্যালোচনা কমিটির সদস্য আলী আশফাক বলেন, 'সালিশ একটি বিকল্প ব্যবস্থা, তবে আমাদের প্রথম পছন্দ নয়। কিন্তু আমাদের অবশ্যই সব সম্ভাব্য পরিস্থিতির জন্য প্রস্তুত থাকতে হবে। আমরা আদানি চুক্তির দুর্বল দিকগুলো এবং বাংলাদেশে সম্ভাব্য অনিয়ম খুঁজে দেখছি।'

অর্থনীতিবিদ জাহিদ হোসেন বলেন, 'চুক্তির সময় যদি দুর্নীতি বা অনিয়মের কোনো প্রমাণ পাওয়া যায়, তবে এটি আমাদের পুনরায় আলোচনার সুযোগ এনে দেবে।'

আইনি লড়াইয়ের জন্য কমিটি বিদ্যুৎ খাতের বিশেষজ্ঞ একটি আন্তর্জাতিক আইন সংস্থা নিয়োগের বিষয়েও আলোচনা করছে।

আলী আশফাক বলেন, 'সিঙ্গাপুরে আদানি গ্রুপের শক্তিশালী আইনি দল রয়েছে, কিন্তু বাংলাদেশে এখনো এমন কোনো আইনজীবী পাইনি, যিনি তাদের মোকাবিলা করতে সক্ষম। আমরা ভাবছি, কোনো আন্তর্জাতিক আইনি সংস্থা নিয়োগ করব, না-কি বিদ্যুৎ খাতে অভিজ্ঞ একজন সালিশ বিশেষজ্ঞের সাহায্য নেব।'

আদানির বিরুদ্ধে ওঠা দুর্নীতির অভিযোগ বিবেচনায় রেখে পর্যালোচনা কমিটি আত্মবিশ্বাসী যে, এটি বাংলাদেশেও অনুরূপ ঘটনার প্রমাণ পাবে।

কমিটি প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়, বিদ্যুৎ মন্ত্রণালয় এবং বিপিডিবির কর্মকর্তাদের জিজ্ঞাসাবাদের পরিকল্পনা করছে। এর মধ্যে রয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার সাবেক জ্বালানি উপদেষ্টা তৌফিক-ই-এলাহী চৌধুরী এবং সাবেক প্রধান সচিব আবুল কালাম আজাদ।

কমিটির এক সদস্য জানান, সংশ্লিষ্ট ব্যক্তিদের সঙ্গে যোগাযোগ ও ইমেইল আদান-প্রদানের ফরেনসিক বিশ্লেষণের পরিকল্পনাও রয়েছে।

 

Related Topics

টপ নিউজ

বিদ্যুৎ চুক্তি পর্যালোচনা / বিদ্যুৎ চুক্তি / আদানির সঙ্গে বিদ্যুৎ চুক্তি / আদানির বিদ্যুৎ / আদানি পাওয়ার / আদানি গ্রুপ

Comments

While most comments will be posted if they are on-topic and not abusive, moderation decisions are subjective. Published comments are readers’ own views and The Business Standard does not endorse any of the readers’ comments.

MOST VIEWED

  • নতুন ‘সাইকস-পিকো বন্দোবস্তের’ বিরুদ্ধে এরদোয়ানের হুঁশিয়ারি
  • ঢাকা মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ
  • ইরানের মোসাদ-আতঙ্ক বাড়ছে, সন্দেহ এখন ‘মাস্ক, টুপি ও সানগ্লাসে’
  • সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনজনের নাম জানিয়েছেন খামেনি: নিউইয়র্ক টাইমস
  • ভারত জানিয়ে দিল, পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানিচুক্তিতে আর কখনোই ফিরবে না
  • ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করে ‘চিরকাল’ ক্ষমতায় থাকতে চান নেতানিয়াহু: বিল ক্লিনটন

Related News

  • শিপিং ফার্ম মারস্ক হাইফা বন্দরে জাহাজ পাঠানো সাময়িকভাবে বন্ধ করে দিল
  • অবশেষে বিদ্যুৎ ক্রয় চুক্তি নিয়ে বিরোধ মেটাতে আলোচনায় বসতে রাজি আদানি
  • ২ বিলিয়ন ডলার বকেয়ার ১.২ বিলিয়ন পরিশোধ, বাকি বকেয়া পাওয়ার বিষয়েও আশাবাদী আদানি
  • আদানির বিদ্যুৎ: ৪০ কোটি ডলার কর ফাঁকি অনুসন্ধানে পিডিবি-এনবিআরে দুদকের চিঠি
  • যান্ত্রিক ত্রুটি: ১৭ ঘণ্টা বন্ধের পর আদানির বিদ্যুৎকেন্দ্রের একটি ইউনিট চালু

Most Read

1
বাংলাদেশ

নতুন ‘সাইকস-পিকো বন্দোবস্তের’ বিরুদ্ধে এরদোয়ানের হুঁশিয়ারি

2
বাংলাদেশ

ঢাকা মেডিকেল কলেজের অ্যাকাডেমিক কার্যক্রম অনির্দিষ্টকালের জন্য বন্ধ ঘোষণা, হল ছাড়ার নির্দেশ

3
আন্তর্জাতিক

ইরানের মোসাদ-আতঙ্ক বাড়ছে, সন্দেহ এখন ‘মাস্ক, টুপি ও সানগ্লাসে’

4
আন্তর্জাতিক

সম্ভাব্য উত্তরসূরি হিসেবে তিনজনের নাম জানিয়েছেন খামেনি: নিউইয়র্ক টাইমস

5
আন্তর্জাতিক

ভারত জানিয়ে দিল, পাকিস্তানের সঙ্গে সিন্ধু পানিচুক্তিতে আর কখনোই ফিরবে না

6
আন্তর্জাতিক

ইরানের সঙ্গে যুদ্ধ করে ‘চিরকাল’ ক্ষমতায় থাকতে চান নেতানিয়াহু: বিল ক্লিনটন

EMAIL US
contact@tbsnews.net
FOLLOW US
WHATSAPP
+880 1847416158
The Business Standard
  • About Us
  • Contact us
  • Sitemap
  • Privacy Policy
  • Comment Policy
Copyright © 2025
The Business Standard All rights reserved
Technical Partner: RSI Lab

Contact Us

The Business Standard

Main Office -4/A, Eskaton Garden, Dhaka- 1000

Phone: +8801847 416158 - 59

Send Opinion articles to - oped.tbs@gmail.com

For advertisement- sales@tbsnews.net