প্রত্যাশিত কর রিটার্ন না আসায় সময় বাড়াতে পারে এনবিআর

করদাতাদের কাছ থেকে প্রত্যাশার চেয়ে অনেক কম রিটার্ন জমা পড়ায় জাতীয় রাজস্ব বোর্ড (এনবিআর) ট্যাক্স রিটার্ন জমা দেওয়ার সময়সীমা আরও এক মাস বাড়াতে পারে বলে জানা গেছে।
নাম প্রকাশ না করার শর্তে এনবিআরের একজন সিনিয়র কর্মকর্তা দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে সময় বাড়ানোর বিষয়ে ইঙ্গিত দিয়ে বলেন, "আগামী কাল (বুধবার) এ বিষয়ে আপনারা জানতে পারবেন। এ বিষয়ে মন্ত্রী মহোদয়ও ইতিবাচক।"
বর্তমানে দেশে ট্যাক্স আইডেন্টিফিকেশন নম্বরধারী (ই-টিআইএন) ৮০ লাখের ওপরে। সর্বশেষ গত ২০২১-২২ করবর্ষে ২৩ লাখের মত ট্যাক্স রিটার্ন জমা হয়েছিল।
এনবিআরের কর বিভাগের কর্মকর্তাদের আশা, নতুন বিধান- প্রায় ৪০ ধরনের সেবা নেওয়ার ক্ষেত্রে ট্যাক্স রিটার্ন জমার প্রমাণ দেখানো বাধ্যতামূলক করায় চলতি বছর আয়কর রিটার্ন ৪০ লাখ ছাড়িয়ে যাবে।
কিন্তু সময় শেষ হওয়ার মাত্র একদিন আগেও, অর্থাৎ ২৯ নভেম্বর পর্যন্ত মাত্র ১৬ লাখের মত রিটার্ন জমা হয়েছে বলে জানায় এনবিআর সূত্র।
রাজস্ব বোর্ডের একজন কর্মকর্তা জানান, এ অবস্থায় এনবিআর একমাস সময় বাড়ানোর কথা ভাবছে।
এদিকে, দেশের ব্যবসায়ীদের শীর্ষ সংগঠন ফেডারেশন অব বাংলাদেশ চেম্বারস অব কমার্স অ্যান্ড ইন্ডাস্ট্রি (এফবিসিসিআই) মঙ্গলবার (২৯ নভেম্বর) রাজস্ব বোর্ডকে ট্যাক্স রিটার্ন দাখিলের সময়সীমা একমাস বাড়ানোর অনুরোধ করেছে।
বাংলাদেশ কর আইনজীবী সমিতিও রাজস্ব কর্তৃপক্ষের কাছে একই ধরনের অনুরোধ জানিয়েছে।
বর্তমানে তিন লাখ টাকা পর্যন্ত বার্ষিক আয় করমুক্ত। এর বেশি আয় করলে যে কাউকে প্রতিবছর আয়কর বিবরণী বা ট্যাক্স রিটার্ন সাবমিট করতে হয়।
সর্বশেষ বাজেটে এনবিআর এ বিষয়ে কঠোর অবস্থান জানান দিয়েছে। করের আওতাধীন সেবা প্রদানকারী প্রতিষ্ঠানগুলো ট্যাক্স রিটার্নের প্রমাণ না নিলে তাদের ওপর ১০ লাখ টাকা পর্যন্ত জরিমানার বিধান করা হয়েছে।
অন্যদিকে, ব্যবসায়ীদের ট্যাক্স রিটার্ন জমার প্রমাণ ব্যবসা প্রতিষ্ঠানে ঝুলিয়ে রাখার আইনও করা হয়েছে।
বিদ্যমান ইনকাম ট্যাক্স আর্ডিনেন্স অনুযায়ী, যে কোনো ব্যক্তি ট্যাক্স রিটার্ন জমা না দিলে কিংবা ডেপুটি কমিশনার অব ট্যাক্সেস (ডিসিটি) এর কাছ থেকে সময়ের আবেদন না করলে সর্বশেষ প্রদেয় ট্যাক্স এর ১০ শতাংশ বা ৫ হাজার টাকা– এরমধ্যে যেটি বেশি, তা জরিমানা হিসেবে গুণতে হবে।
এছাড়া, দেরি হওয়ার জন্য করদাতাদের প্রতিদিন ৫০ টাকা করে জরিমানা দিতে হবে। ডিসিটি সময় বাড়ালেও প্রযোজ্য আয়করের ওপর প্রতিমাসে ২ শতাংশ হিসেবে সুদ দিতে হবে।
অবশ্য এনবিআরের একজন কর্মকর্তা জানান, এনবিআর যদি কর দিবস ৩০ নভেম্বরের পরিবর্তে ৩১ ডিসেম্বর করে, সেক্ষেত্রে সুদ প্রযোজ্য হবে না।