কয়েক মিনিটের মধ্যে বনানী ১১ থেকে আন্দোলনকারী রিকশাচালকদের সরিয়ে দিলো সেনাবাহিনী

রাজধানীর বনানী-১১ ব্রিজে ব্যাটারিচালিত রিকশাচালকদের অবরোধকে কেন্দ্র করে ওই এলাকায় সেনাবাহিনী মোতায়েন করা হয়েছে।
আজ সোমবার (২১ এপ্রিল) দুপুরে সড়ক অবরোধ করলে স্থানীয়দের সঙ্গে তাদের সংঘর্ষের ঘটনা ঘটে।
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওতে দেখা গেছে, সেনাবাহিনী,র্যাপিড অ্যাকশন ব্যাটালিয়ন (র্যাব) এবং পুলিশসহ আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর সদস্যরা সড়কে অবস্থান নিয়ে জনতাকে ছত্রভঙ্গ করছেন।
এর আগে, সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে ছড়িয়ে পড়া ভিডিওগুলোতে রিকশাচালকদের সঙ্গে স্থানীয়দের ধাওয়া-পাল্টা ধাওয়া ঘটতে দেখা যায়।
কয়েকটি ভিডিওতে দেখা গেছে, গুলশানের বিভিন্ন সড়কে কিছু লোক অবস্থান নিয়ে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে বাধা দিচ্ছেন এবং রিকশাগুলোর ওপর হামলা চালাচ্ছেন।
এক পর্যায়ে বনানী ব্রিজ থেকে দুটি রিকশা লেকে ফেলে দেওয়া হয়।
বনানী থানার পরিদর্শক মেহেদী হাসান দ্য বিজনেস স্ট্যান্ডার্ডকে (টিবিএস) বলেন, 'গুলশান সোসাইটির লোকজন আজ বনানীতে এসে রিকশা চালকদের বাধা দেন। এই নিয়ে চালকদের মধ্যে খুব উত্তেজনা সৃষ্টি হয়। তারা বলেন বনানী থেকে তাদের ওপর কোনো নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়নি, তাহলে গুলশান সোসাইটির লোকজন কেন এখানে এসে বাধা দিবে। এ নিয়ে যে গ্রুপের মধ্যে বাকবিতণ্ডা হয়। পরবর্তীতে সেনাবাহিনী র্যাব ও পুলিশ ঘটনাস্থলে যায়।'

এ বিষয়ে টিবিএসকে গুলশান ট্রাফিক বিভাগের উপ-পুলিশ কমিশনার মোফিজুল ইসলাম বলেন, "গুলশানের সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচল নিষিদ্ধ করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি) ও গুলশান সোসাইটি। এর প্রতিবাদেই রিকশাচালকরা আন্দোলনে নেমেছেন।"
বনানী থানার পরিদর্শক একেএম মঈন উদ্দিন বলেন, "আমরা তাদের সঙ্গে কথা বলছি, রাস্তায় থেকে সরিয়ে নেওয়ার চেষ্টা করছি। আলোচনা চলছে।"
এর আগে, ১৯ এপ্রিল থেকে গুলশানে ব্যাটারিচালিত রিকশা চলাচলে নিষেধাজ্ঞা দেওয়া হয়।
তখন টিবিএসকে ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশনের অঞ্চল-৩ এর জোনাল নির্বাহী কর্মকর্তা নাহিদ উল মোস্তাক বলেছিলেন, "ঢাকা উত্তরের প্রধান সড়কে মোটরচালিত ও প্যাডেল রিকশা—উভয়ই নিষিদ্ধ। গুলশান ও বনানী সোসাইটির দেওয়া পরিচয়পত্রের ভিত্তিতে রিকশা চলাচলের যে ব্যবস্থা ছিল, সেটি এখন বাতিল করা হয়েছে। আমরা রিকশার জন্য লাইসেন্স প্রবর্তনের উদ্যোগ নিয়েছি, বিষয়টি মন্ত্রণালয়ের বিবেচনাধীন। আমরা কয়েক দিন ধরে অবৈধ রিকশার বিরুদ্ধে অভিযান চালাচ্ছি।"
ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ আজাজ এর আগে জানিয়েছিলেন, কার্যকর 'ট্র্যাপার' স্থাপনের পাশাপাশি প্রধান সড়ক থেকে ব্যাটারিচালিত রিকশা সরাতে অভিযান চালানো হবে।
গত নভেম্বর মাসে হাইকোর্টের এক আদেশে ঢাকার সড়কে ব্যাটারিচালিত রিকশা নিষিদ্ধ করার নির্দেশ দেওয়া হয়। তবে সুপ্রিম কোর্টের আপিল বিভাগের চেম্বার আদালত সেই আদেশের ওপর স্থিতাবস্থা জারি করেন।
ব্যাটারিচালিত রিকশার বিরুদ্ধে ট্রাফিক আইন লঙ্ঘন এবং দুর্ঘটনা বৃদ্ধির অভিযোগে এই নিষেধাজ্ঞা জারি করা হয়।
তবে নিষেধাজ্ঞার বিরুদ্ধে রিকশাচালক ও মালিকরা প্রতিবাদ জানিয়েছিলেন, যা পরে সুপ্রিম কোর্টের আদেশে স্থগিত হয়।
বর্তমানে রাজধানীতে প্রায় ১২ লাখ রিকশা চলাচল করছে, যার বড় একটি অংশ ব্যাটারিচালিত। এমনকি, অনেক পুরোনো প্যাডেল রিকশাও এখন মোটর ও ব্যাটারি বসিয়ে অটোরিকশায় রূপান্তর হচ্ছে।