‘বাঘের মতো’ খেলে সেরার মুকুট জিততে চান বাবর

দুঃস্বপ্নের শুরুর পর ছিটকে যাওয়ার শঙ্কা, সেমি-ফাইনাল তখন অনেক দূরের পথ পাকিস্তানের জন্য। সেখান থেকে ঘুরে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান যে ছুটেছে, তাদের সামনে বাধার দেয়াল তুলতে পারেনি কেউ। সুপার টুয়েলভে তিন ম্যাচ ও সেমি-ফাইনাল; মোট চার ম্যাচ জিতে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের ফাইনালে উঠেছে পাকিস্তান। ঘুরে দাঁড়িয়ে পাকিস্তান যেভাবে খেলেছে, সেটা বাবর আজমের চোখে বাঘের মতো। ফাইনালেও এভাবে খেলে টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপের শিরোপা জিততে চান পাকিস্তান অধিনায়ক।
২৮ দিনের লড়াই শেষে পর্দা নামার অপেক্ষায় টি-টোয়েন্টি বিশ্বকাপ। এর আগে আসরের সবচেয়ে কাঙ্খিত ম্যাচ ফাইনাল দেখার অপেক্ষায় ক্রিকেট দুনিয়া। শিরোপার লড়াইয়ে ১৩ নভেম্বর ঐতিহাসিক মেলবোর্ন ক্রিকেট গ্রাউন্ডে (এমসিজি) মুখোমুখি হবে পাকিস্তান ও ইংল্যান্ড। আগের দিন এমসিজিতে দীর্ঘ সংবাদ সম্মেলনে অনেক প্রশ্নেরই উত্তর দিয়েছেন বাবর। অনেক বিষয় নিয়ে কথা বলার ফাঁকে তিনি জানান, ঘুরে দাঁড়িয়ে দলের সবাই যেভাবে বাঘের মতো খেলেছে, ফাইনালেও অভিন্ন লক্ষ্য থাকবে তাদের।
ঘুরে দাঁড়নোর গল্প লেখার পাশাপাশি দারুণ সব জয়, ছন্দময় পথের দেখা পেয়ে গেছে পাকিস্তান। বাবরের বিশ্বাস শিরোপার লড়াইয়েও একই ছন্দে থাকবে তার দল, 'আমাদের শুরুটা ভালো ছিল না। এরপর যেভাবে দল ঘুরে দাঁড়িয়েছে, বাঘের মতোই খেলেছে সবাই। আশা করি এটা ধরে রাখব আমরা এবং যে মোমেন্টাম আমাদের আছে, তা ফাইনালেও কাজে লাগাবো।'
'গত চার ম্যাচে দল হিসেবে যেমন, ব্যক্তিগত পারফরম্যান্সও ছিল দারুণ কিছু। আগেও আমরা বিশ্বকাপের সেমি-ফাইনালে খেলেছি, এশিয়া কাপে ফাইনাল খেলেছি। এই ধারাবাহিকতা তাই বেশ কিছু সময় ধরেই চলছে। তবে আমাদের স্বপ্ন ট্রফি জয়ের। আমাদের নিজেদের ওপর বিশ্বাস আছে, পরস্পরের প্রতি আস্থা আছে যে আমরা পারব। ফাইনালে উঠেছি, চেষ্টা থাকবে ভালো করার।' যোগ করেন পাকিস্তান অধিনায়ক।
বিশ্বকাপের মতো আসরের ফাইনাল খেলার আগে রোমাঞ্চিত থাকেন ক্রিকেটাররা, ভয়ও কাজ করতে পারে। বাবরের যা জানালেন, তারও একই অভিজ্ঞতা হচ্ছে। প্রথমবারের মতো ফাইনাল খেলতে যাওয়া পাকিস্তানের এই অধিনায়ক বলেন, ' রোমাঞ্চ আছে। নার্ভাস খুব একটা নই। গত ৩-৪ ম্যাচে দল হিসেবে আমরা ভালো করেছি। সেই বিশ্বাস আমাদের সঙ্গী।'
ভালো করার বিশ্বাস থাকলেও চাপকে এড়িয়ে যাওয়া হচ্ছে না। ফাইনাল বলে চাপ যে থাকবে, সেটা অবলীলায় স্বীকার করে নিলেন বাবর, 'ভালো করার বিশ্বাস আছে এবং ফাইনালেও তা করতে চাই। চাপ তো আছেই। চাপ থাকবেই, তবে চাপ যতোটা কাটিয়ে উঠতে পারব, পারফর্ম করার সম্ভাবনা ততোই বাড়বে। দল হিসেবে এবং অধিনায়ক হিসেবে চাওয়া থাকবে শান্ত থাকা এবং বিশ্বাস রাখা। তাতে ফলাফল ভালো হবে আশা করি।'
সুপার টুয়েলভে সময়টা ভালো যায়নি ইংল্যান্ডের। আয়ারল্যান্ডের সঙ্গে হারসহ সেমি-ফাইনাল নিশ্চিত করার পথটা কঠিন হয়ে পড়েছিল ইংলিশদের জন্য। তারাই ফাইনালের ওঠার লড়াইয়ে ভারতকে রীতিমতো উড়িয়ে দেয়। অধিনায়ক জস বাটলার ও অ্যালেক্স হেলসের ব্যাটিং ঝড়ে ১৬৯ রানের লক্ষ্য বিনা উইকেটে পাড়ি দেয় ইংল্যান্ড। ফাইনালে প্রতিপক্ষ হিসেবে তারা কতোটা কঠিন হতে পারে, তা জানা আছে বাবরের।
পাকিস্তান অধিনায়ক বলেন, 'বিশ্বের সেরা দলগুলোর একটি ইংল্যান্ড। সম্প্রতি ওদের সঙ্গে আমাদের সিরিজও হয়েছে। বেশ প্রতিদ্বন্দ্বিতাপূর্ণ খেলা হয়েছিল। অ্যালেক্স হেলস, জস বাটলার ভালো করেছে সেমিতে। অসাধারণ ইনিংস খেলেছে। তবে আমাদের চেষ্টা থাকবে সেরাটা দেওয়ার। আমাদের পেস আক্রমণ বিশ্বের সেরাগুলোর একটি। চেষ্টা থাকবে আমাদের শক্তির জায়গা ধরে রাখার এবং আমাদের পরিকল্পনাগুলো বাস্তবায়ন করার।'