লাতিন আমেরিকার কারাগারগুলোতেই কেন বিশ্বের দুর্ধর্ষ সব অপরাধী চক্রের জন্ম
যুক্তরাষ্ট্রে মাদক চোরাচালান ঠেকাতে লাতিন আমেরিকার গ্যাংগুলোর বিরুদ্ধে কঠোর অবস্থান নিয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। সমুদ্রে চালানো হচ্ছে প্রাণঘাতী সামরিক হামলা, সীমান্তেও বাড়ানো হয়েছে কড়াকড়ি। তবে বিশেষজ্ঞরা সতর্ক করছেন, যুক্তরাষ্ট্র যখন শক্তি প্রয়োগে ব্যস্ত, তখন আসল যুদ্ধক্ষেত্রটিই হয়তো তাদের নজর এড়িয়ে যাচ্ছে। আর সেই যুদ্ধক্ষেত্র হলো লাতিন আমেরিকার কারাগারগুলো।
বিশেষজ্ঞদের মতে, লাতিন আমেরিকার সবচেয়ে শক্তিশালী অপরাধী চক্রগুলোর জন্ম সীমান্ত, রাজপথ বা গহিন জঙ্গলে হয়নি; হয়েছে কারাগারের চার দেয়ালের ভেতর। ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দী, অব্যবস্থাপনা এবং কার্যত বন্দীদের নিজেদের শাসনে চলা এসব কারাগার এখন অপরাধী তৈরির 'আঁতুড়ঘর'। সশস্ত্র গোষ্ঠীগুলো এখান থেকেই নতুন সদস্য সংগ্রহ করে, নিজেদের সংগঠিত করে এবং প্রভাব বিস্তার করে। এই অঞ্চলে অন্তত ১০টি বড় অপরাধী সংগঠন কারাগারের ভেতরেই জন্ম নিয়েছে অথবা শক্তিশালী হয়েছে।
এর বড় উদাহরণ 'ত্রেন দে আরাগুয়া'। সম্প্রতি মাদক পাচারকারী সন্দেহে কিছু নৌকায় হামলা চালায় ট্রাম্প প্রশাসন। তাদের দাবি, এর সঙ্গে ত্রেন দে আরাগুয়ার যোগসাজশ রয়েছে। যদিও এ নিয়ে ভেনেজুয়েলার প্রেসিডেন্ট নিকোলা মাদুরোর সঙ্গে উত্তেজনা বেড়েছে এবং নৌকার সঙ্গে ওই গ্যাংয়ের সম্পর্কের কোনো জোরালো প্রমাণ মেলেনি।
'ট্রান্সপারেন্সি ভেনেজুয়েলা'র তথ্যমতে, ২০১০-এর দশকের শুরুর দিকে ভেনেজুয়েলার আরাগুয়া রাজ্যের তোকোরোন কারাগারে এই গ্যাংয়ের জন্ম। শুরুতে জেলের ভেতর নিজেদের সুযোগ-সুবিধা নিশ্চিত করতে ও শৃঙ্খলা বজায় রাখতে এটি গড়ে উঠেছিল।
ভেনেজুয়েলার কারাগারগুলোতে একসময় 'প্রানেস' নামের একদল বন্দীর একচ্ছত্র আধিপত্য গড়ে ওঠে। স্প্যানিশ ভাষায় এই 'প্রানেস' শব্দের অর্থ অনেকটা 'জন্মগত খুনি' কিংবা 'নিকৃষ্ট অপরাধী'। এমনকি ন্যাশনাল গার্ড বা কারাগারের পরিচালকরাও এদের হুকুম মেনে চলত।
বন্দীদের কাছ থেকে কর আদায়, অবৈধ পণ্যের ব্যবসা নিয়ন্ত্রণ—সবই করত তারা। জেলের ভেতর থেকেই তারা বাইরের চাঁদাবাজি ও অপহরণের মতো অপরাধের কলকাঠি নাড়ত। ২০২৩ সালে ভেনেজুয়েলা সরকার তোকোরোন কারাগারে অভিযান চালিয়ে দাবি করে যে ওই গ্যাং ভেঙে দেওয়া হয়েছে। কিন্তু গ্যাংটির শীর্ষ নেতা হেক্টর রাস্টেনফোর্ড গুয়েরেরো ফ্লোরেস (নিনো গুয়েরেরো) ও জোহান পেত্রিক এখনো পলাতক।
শুধু ভেনেজুয়েলা নয়, লাতিন আমেরিকার অন্য দেশগুলোতেও একই চিত্র। ব্রাজিলে 'প্রাইমিরো কমান্ডো দা ক্যাপিটাল' (পিসিসি) এবং 'কমান্ডো ভারমেলহো' (সিভি)-এর মতো ভয়ংকর অপরাধী চক্রের জন্ম কারাগারের ভেতরেই। সত্তরের দশকের শেষ এবং নব্বইয়ের দশকে জেলের ধারণক্ষমতার চেয়ে বেশি বন্দী, নির্যাতন ও অমানবিক পরিবেশের ক্ষোভ থেকেই এসব গ্যাং গড়ে উঠেছিল।
গ্রেগরিও ফার্নান্দেস ডি আন্দ্রাদের অভিজ্ঞতাই এর প্রমাণ। হত্যার দায়ে ১৬ বছর জেলে ছিলেন তিনি, পরে আইনজীবী হন। কারাগারের সেই ভয়াবহ দিনগুলোর কথা মনে করে তিনি বলেন, 'মাত্র ৪ বাই ৪ মিটারের একটি সেলে আমরা ৪০ জন থাকতাম। শোয়ার জায়গাটুকু ছিল না, পালা করে ঘুমাতে হতো। জায়গার অভাবে অনেকে সিলিংয়ে হ্যামক ঝুলিয়ে থাকত।'
ব্রাজিলের সরকারি তথ্যমতে, দেশটির কারাগারগুলোতে ধারণক্ষমতার চেয়ে ১৪০ শতাংশ বেশি বন্দী রাখা হয়। ৫ লাখের জায়গায় সেখানে গাদাগাদি করে আছে ৭ লাখের বেশি বন্দী। লাতিন আমেরিকার দেশগুলোতে এটি এখন খুব সাধারণ ঘটনা।
কারাগার যখন নিরাপদ 'অফিস', গ্যাংয়ে নাম লেখানোই বাঁচার উপায়
কারাগারের ভেতরে নিত্যপ্রয়োজনীয় জিনিসের তীব্র সংকটকে কাজে লাগিয়ে রমরমা ব্যবসা ফেঁদে বসেছে সংঘবদ্ধ অপরাধী চক্রগুলো। সাবান-টুথপেস্ট থেকে শুরু করে খাবার, নিরাপত্তা, এমনকি আইনি সহায়তা—টাকার বিনিময়ে বন্দীদের সবই সরবরাহ করে এসব গ্যাং।
সাবেক বন্দী ও আইনজীবী আন্দ্রাদে একসময় 'কমান্ডো ভারমেলহো' (সিভি) এবং 'পিসিসি'র নেতাদের সঙ্গে জেল খেটেছেন। তিনি বলেন, 'গ্যাংয়ে যোগ দেওয়ার জন্য কেউ আপনার মাথায় বন্দুক ঠেকাবে না। মানুষ অভাবের তাড়নায় এবং টিকে থাকার প্রয়োজনে নিজেরাই সেখানে নাম লেখায়। রাষ্ট্র যেখানে বন্দীদের খোঁজ রাখে না, সেখানে এই অপরাধী চক্রগুলোই তাদের আপন করে নেয়।'
ব্রাজিলের সাও পাওলোর কারাগারগুলোতে ২০০০-এর দশকের মাঝামাঝি একচ্ছত্র আধিপত্য বিস্তার করে পিসিসি। সমাজবিজ্ঞানী ও ফেডারেল ইউনিভার্সিটি অব এবিসি-র অধ্যাপক ক্যামিলা কালদেইরা নুনেস ডায়াস বলেন, 'রাজ্যের ৯০ শতাংশ কারাগারে পিসিসির উপস্থিতি রয়েছে। গত ২০ বছরে সেখানে খুনোখুনির ঘটনা প্রায় শূন্যের কোঠায়। বলা যায়, পিসিসি কারাগারগুলোকে 'শান্ত' রেখেছে।'
অপরাধবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ইনসাইট ক্রাইম-এর তথ্যমতে, দক্ষিণ আমেরিকার অন্যতম বড় কোকেন পাচার নেটওয়ার্ক নিয়ন্ত্রণ করে পিসিসি। ব্রাজিলের বন্দর দিয়ে তারা ইউরোপে মাদক পাঠায়। অন্যদিকে পেরু থেকে আমাজন হয়ে মাদকের রুট নিয়ন্ত্রণ করে সিভি। বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কারাগারের ভেতরের এই সংঘবদ্ধ অবস্থাই বাইরের জগতে তাদের ভিত্তি মজবুত করেছে।
মাদক কেনাবেচা, এলাকা দখল বা হত্যার মতো বড় বড় অপরাধের নির্দেশ আসে কারাগারের ভেতর থেকেই। ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক এলিজাবেথ ডিকিনসন বলেন, 'কারাগারগুলোকে আমরা বলি ব্যবসার ব্যাক রুম। অনেক নেতা বাইরে থাকার চেয়ে জেলের ভেতরে থাকাকেই বেশি নিরাপদ মনে করেন।'
তবে কারাগারের সেলের চাবি কার হাতে থাকবে, তা নিয়ে গ্যাংগুলোর বিরোধ প্রায়ই রক্তক্ষয়ী রূপ নেয়। বিশেষ করে যেসব কারাগারে একাধিক গ্যাং সক্রিয়, সেখানে পরিস্থিতি ভয়াবহ হয়ে ওঠে।
লাতিন আমেরিকা জুড়ে কারাগারের নিয়ন্ত্রণ নিয়ে দাঙ্গা এক নিয়মিত ঘটনা। ২০১৩ সালে ভেনেজুয়েলার উরিবানা কারাগারে গ্যাং বিরোধে অন্তত ৬১ জন নিহত হন। এর আগে ১৯৯২ সালে ব্রাজিলের কারানদিরু কারাগারে ভয়াবহ দাঙ্গায় প্রাণ হারান ১১১ জন বন্দী। ওই হত্যাযজ্ঞই পরে পিসিসি-র উত্থানে বড় ভূমিকা রেখেছিল।
ইকুয়েডর: কারাগার যখন কোকেন বাণিজ্যের 'সদর দপ্তর'
লাতিন আমেরিকার দেশ ইকুয়েডরের পরিস্থিতি আরও ভয়াবহ। বৈশ্বিক কোকেন বাণিজ্যে দেশটি গুরুত্বপূর্ণ রুট হওয়ায়, গুয়ায়াকিলের মতো এলাকাগুলোতে মেক্সিকান কার্টেল ও কলম্বিয়ান মাফিয়ারা স্থানীয় গ্যাংয়ের সঙ্গে মিলেমিশে একাকার হয়ে গেছে। যখন এসব গ্যাংয়ের নেতাদের জেলে ভরা হয়, তখন বাইরের সংঘাত সরাসরি কারাগারের ভেতরে ছড়িয়ে পড়ে।
ইকুয়েডরের ইনস্টিটিউট অব ন্যাশনাল হায়ার স্টাডিজের (আইএইএন) ডিন ড্যানিয়েল পন্টন বলেন, সেখানকার কারাগারগুলো একেকটি ব্লকে বিভক্ত। একেকটি ব্লকের নিয়ন্ত্রণ একেকটি গ্যাংয়ের হাতে। তিনি বলেন, 'প্রতিটি ব্লকের নিজস্ব অর্থনীতি ও নেতৃত্ব আছে। সবই গ্যাংদের নিয়ন্ত্রণে, যেন ব্যক্তিমালিকানাধীন প্রতিষ্ঠান। কোনো নেতার সঙ্গে বিরোধ হলে তাকে খুন করে পুরো ব্লকের অপরাধ সাম্রাজ্যের দখল নেওয়া হয়।'
২০২০ সালে 'লস চোনেরোস' গ্যাংয়ের দীর্ঘদিনের নেতা হোর্হে লুইস জামব্রানো ওরফে 'রাস্কিনা' খুন হওয়ার পর এই সংঘাত চরম আকার ধারণ করে। তার মৃত্যুতে গ্যাংগুলোর মধ্যকার ভারসাম্য ভেঙে পড়ে। এরপর 'লস লোবোস' ও 'লস টিগুয়েরোনস'-এর মতো দলগুলো আধিপত্য বিস্তারে মরিয়া হয়ে ওঠে। অপরাধবিষয়ক গবেষণা সংস্থা ইনসাইট ক্রাইমের তথ্যমতে, গত তিন বছরের কম সময়ে ইকুয়েডরের বিভিন্ন কারাগারে এই সংঘাতে ৪০০-এর বেশি বন্দী নিহত হয়েছেন।
গ্যাং নেতাদের কাছে এই রক্তক্ষয় শুধুই ব্যবসার অংশ। ইকুয়েডরের কারাগারকেন্দ্রিক অবৈধ বাণিজ্যের আকার এখন বছরে ২০ কোটি ডলারেরও বেশি। অথচ ২০২১ সালে দেশটির কারাগার ব্যবস্থা তদারককারী সংস্থা এসএনএআই-এর বাজেট ছিল মাত্র ৯ কোটি ৯০ লাখ ডলার। অর্থাৎ কারাগার সামলাতে সরকার যে খরচ করে, তার দ্বিগুণ টাকা আয় করে অপরাধী চক্রগুলো।
বিশেষজ্ঞরা বলছেন, কারাগারগুলো এখন বৈশ্বিক কোকেন পাচারের মূল ঘাঁটিতে পরিণত হয়েছে। মূলত কারাগারের ভেতর থেকেই এখন গুয়ায়াকিল বন্দর দিয়ে পাচার হওয়া মাদকের মজুদ, সুরক্ষা ও লজিস্টিকস নিয়ন্ত্রণ করা হচ্ছে।
লাতিন আমেরিকা জুড়ে এখন অপরাধ দমনে 'মানো দুরা' নীতির জয়জয়কার। রাজনীতিকরা এখন নির্বাচনের মাঠে কঠোর সাজা, গণগ্রেপ্তার এবং আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় সেনাবাহিনীকে নামানোর প্রতিশ্রুতি দিয়ে ভোট চাইছেন।
২০২৪ সালে ইকুয়েডরে গুপ্তহত্যা ও কারাগারে গণহত্যার মতো ঘটনার পর দেশটির ভোটাররা পুলিশিংয়ে সেনাবাহিনীর অংশগ্রহণ এবং দীর্ঘমেয়াদি সাজার পক্ষে রায় দেন।
এদিকে গত ১৮ নভেম্বর ব্রাজিলের আইনপ্রণেতারা পিসিসি ও সিভির মতো গ্যাংগুলোকে 'সন্ত্রাসী সংগঠন' হিসেবে ঘোষণা করার পক্ষে ভোট দিয়েছেন। উদ্দেশ্য, এদের কঠোর সাজার আওতায় আনা। তবে ব্রাজিলের সরকার বা নির্বাহী বিভাগ এতে দ্বিমত পোষণ করেছে। ২০২৪ সালের মার্চে যুক্তরাষ্ট্রের সঙ্গে এক নিরাপত্তা সংলাপে ব্রাজিলের প্রতিনিধিরা স্পষ্ট জানিয়ে দেন, পিসিসি ও সিভি মূলত মুনাফালোভী অপরাধী চক্র, কোনো আদর্শিক গোষ্ঠী নয়। তাই ব্রাজিলের আইনি সংজ্ঞায় এদের 'সন্ত্রাসী' বলা যায় না।
সবার মডেল এখন 'বুকেলে'
অপরাধ দমনে এল সালভাদরের 'বুকেলে মডেল' এখন লাতিন আমেরিকার ডানপন্থী নেতাদের কাছে আদর্শ হয়ে দাঁড়িয়েছে। দেশটির প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলে ৪০ হাজার বন্দীর ধারণক্ষমতাসম্পন্ন বিশাল কারাগার 'সিকট' (CECOT) তৈরি করে বিশ্বজুড়ে আলোচনায় আসেন। গণগ্রেপ্তার ও এই মেগা কারাগার নির্মাণই তার মডেলের মূল ভিত্তি।
ইকুয়েডরের ড্যানিয়েল নোবোয়া, প্যারাগুয়ের সান্তিয়াগো পেনা কিংবা আর্জেন্টিনার হাভিয়ের মিলেই—সবাই এখন বুকেলের এই মডেল অনুসরণের ঘোষণা দিয়েছেন।
আবার এদিকে, নেতাদের ঘোষণার সঙ্গে পাল্লা দিয়ে অঞ্চলটিজুড়ে নতুন নতুন কারাগার তৈরির ধুম পড়েছে। ইকুয়েডর ৫ কোটি ২০ লাখ ডলার ব্যয়ে 'এল এনকুয়েন্ত্রো' নামের একটি সর্বোচ্চ নিরাপত্তাসম্পন্ন কারাগার চালু করেছে। ৮০০ দুর্ধর্ষ বন্দীকে রাখার জন্য তৈরি এই কারাগারে বায়োমেট্রিক পদ্ধতি, সিগন্যাল জ্যামারসহ অত্যাধুনিক নজরদারি ব্যবস্থা রয়েছে। যদিও সেখানে সহিংসতা পুরোপুরি থামানো যায়নি।
অন্যদিকে, ২০২৪ সালে হন্ডুরাসের প্রেসিডেন্ট জিওমারা কাস্ত্রো ২০ হাজার বন্দীর ধারণক্ষমতাসম্পন্ন একটি মেগা কারাগার তৈরির ঘোষণা দেন। গ্যাং দমনের অংশ হিসেবে সেখানেও চলছে গণগ্রেপ্তার, গ্যাংগুলোকে সন্ত্রাসী তকমা দেওয়া এবং অভিযানে সেনাবাহিনী ও পুলিশের ক্ষমতা বাড়ানোর প্রক্রিয়া।
মানবাধিকার সংগঠন ও নিরাপত্তা বিশ্লেষকরা সতর্ক করেছেন, এল সালভাদরের প্রেসিডেন্ট নায়িব বুকেলের গণগ্রেপ্তার মডেল সব দেশের জন্য জুতসই নয়। বিশেষ করে যেসব দেশে অপরাধজগৎ বহু ভাগে বিভক্ত এবং রাষ্ট্রীয় প্রতিষ্ঠানগুলো দুর্বল, সেখানে এই নীতি হিতে বিপরীত হতে পারে।
বইয়ের চেয়ে বন্দুক পাওয়া যেখানে সহজ
মাত্র ২২ বছর বয়সে গ্রেপ্তার হয়েছিলেন আন্দ্রাদে। জেল খেটে পরে স্নাতকোত্তর ডিগ্রি নিয়েছেন, হয়েছেন ফৌজদারি আইনজীবী। তার মতে, অপরাধ দমনের সমাধান লুকিয়ে আছে এই চক্র ভাঙার মধ্যে।
আন্দ্রাদে বলেন, 'সৎপথে থাকার চেয়ে অপরাধে জড়ানোর সুযোগই আমার সামনে বেশি ছিল। এখানে একজন তরুণের পক্ষে বই-কলমের চেয়ে এক ব্যাগ মাদক আর একটা বন্দুক জোগাড় করা অনেক সহজ। 'কারাগারের ভেতরে অনেক ভালো ও বুদ্ধিমান মানুষ আছে। তারা সমাজে দ্বিতীয়বার ফেরার সুযোগের কথা চিন্তাও করতে পারে না, কারণ প্রথম সুযোগটাই তারা কখনো পায়নি।'
'আমরা যদি জেলের ভেতর মানুষের সঙ্গে পশুর মতো আচরণ করতেই থাকি, তবে দিন শেষে তারা বাইরে বেরিয়ে অপরাধ জগতের সিপাহিই হবে,' বলেন তিনি।
