ভারতকে বাদ দিয়ে দক্ষিণ এশিয়ায় নতুন জোট করতে চায় পাকিস্তান; সফল হবে?
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রী ইসহাক দার জানিয়েছেন যে, বাংলাদেশ, চীন এবং পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগটি কেবল এই তিন দেশের মধ্যেই সীমাবদ্ধ থাকবে না; বরং এতে অন্যান্য আঞ্চলিক দেশ এবং এর বাইরের রাষ্ট্রগুলোকেও অন্তর্ভুক্ত করার সুযোগ রয়েছে।
বুধবার (৪ ডিসেম্বর) 'ইসলামাবাদ কনক্লেভ' ফোরামে তিনি বলেন, 'আমরা জিরো-সাম [এক পক্ষের লাভ মানে অন্য পক্ষের ক্ষতি] ধারণার বিরোধিতা করি এবং সংঘাতের পরিবর্তে সবসময় পারস্পরিক সহযোগিতার ওপর জোর দিয়েছি।'
প্রকৃতপক্ষে, এই প্রস্তাবটি এমন এক সময়ে দক্ষিণ এশিয়াকেন্দ্রিক একটি বিকল্প জোট গঠনের ইঙ্গিত দিচ্ছে—যেখানে চীনকে যুক্ত করার কথা বলা হয়েছে—যখন ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার তীব্র উত্তেজনার কারণে এই অঞ্চলের প্রধান জোট 'সার্ক' [সাউথ এশিয়ান অ্যাসোসিয়েশন ফর রিজিওনাল কোঅপারেশন] কার্যত অকেজো হয়ে পড়েছে।
গত জুন মাসে চীন, পাকিস্তান এবং বাংলাদেশের কূটনীতিকরা আঞ্চলিক স্থিতিশীলতা, অর্থনৈতিক উন্নয়ন এবং জনজীবনের মানোন্নয়নের লক্ষ্যে ত্রিপক্ষীয় বৈঠক করেন। সে সময় তারা উল্লেখ করেছিলেন যে, এই সহযোগিতা 'কোনো তৃতীয় পক্ষের বিরুদ্ধে পরিচালিত নয়।'
পাকিস্তানের উপ-প্রধানমন্ত্রীর এই মন্তব্য এমন এক সময়ে এল, যখন দক্ষিণ এশিয়ায় আঞ্চলিক উত্তেজনা তুঙ্গে। বিশেষ করে ভারতের সঙ্গে পাকিস্তানের কয়েক দশকের বৈরিতা এখন চরমে। গত মে মাসে পরমাণু শক্তিধর এই দুই প্রতিবেশী দেশ চার দিনের বিমান যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছিল, যা তাদের সম্পর্ককে আরও তলানিতে নিয়ে গেছে।
এদিকে, গত বছরের আগস্টে ছাত্র-জনতার অভ্যুত্থানে বাংলাদেশের সাবেক প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার পতনের পর ঢাকা ও নয়াদিল্লির সম্পর্কেরও মারাত্মক অবনতি হয়েছে। পদত্যাগ করে ভারতে আশ্রয় নেওয়া শেখ হাসিনাকে ফেরত পাঠাতে অস্বীকৃতি জানিয়েছে নয়াদিল্লি। উল্লেখ্য, গত নভেম্বরে বাংলাদেশের একটি ট্রাইব্যুনাল মানবতাবিরোধী অপরাধে তাকে দোষী সাব্যস্ত করে মৃত্যুদণ্ড দিয়েছে।
এমতাবস্থায় প্রশ্ন উঠছে, দক্ষিণ এশিয়ার সার্কের অন্যান্য সদস্য দেশগুলো— ভারত, পাকিস্তান, বাংলাদেশ, শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপ, ভুটান এবং আফগানিস্তান—কি এমন কোনো নতুন জোটে যোগ দিতে সম্মত হবে, যার মূল লক্ষ্য ভারতকে বাদ দেওয়া বা অন্তত এই অঞ্চলে ভারতের প্রভাব খর্ব করা?
এই বিষয়ে যা জানা প্রয়োজন:
পাকিস্তানের প্রস্তাবটি আসলে কী?
ইসহাক দার বলেছেন, বাংলাদেশ ও চীনের সঙ্গে তাদের ত্রিপক্ষীয় উদ্যোগের লক্ষ্য হলো অভিন্ন স্বার্থসংশ্লিষ্ট ক্ষেত্রগুলোতে 'পারস্পরিক সহযোগিতা বৃদ্ধি করা'। তিনি প্রস্তাব দেন যে, এই ধারণাটি 'সম্প্রসারিত' করে আরও দেশ ও অঞ্চলকে এতে অন্তর্ভুক্ত করা যেতে পারে।
ইসলামাবাদের ওই সম্মেলনে তিনি বলেন, 'আমি আগেও বলেছি, অর্থনীতি থেকে শুরু করে প্রযুক্তি এবং যোগাযোগ ব্যবস্থার মতো বিষয়গুলোতে পরিবর্তনশীল কাঠামোর ভিত্তিতে বিভিন্ন গ্রুপ বা জোট হতে পারে।'
পরোক্ষভাবে ভারতের দিকে ইঙ্গিত করে তিনি বলেন, 'আমাদের নিজস্ব জাতীয় উন্নয়ন এবং আঞ্চলিক অগ্রাধিকারগুলো কারও একঘেয়েমি বা অনড় অবস্থানের কাছে জিম্মি থাকতে পারে না এবং আপনারা জানেন আমি কাদের কথা বলছি।'
ইসলামাবাদ ও নয়াদিল্লির মধ্যকার উত্তেজনার বিষয়ে দার উল্লেখ করেন যে, ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে 'কাঠামোগত সংলাপ' প্রক্রিয়াটি গত ১১ বছরেরও বেশি সময় ধরে ঝুলে আছে। অন্য আঞ্চলিক রাষ্ট্রগুলোরও প্রতিবেশী ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে চড়াই-উতরাইয়ের অভিজ্ঞতা রয়েছে।
পাকিস্তানের পররাষ্ট্রমন্ত্রী বলেন, 'তার দেশ এমন এক দক্ষিণ এশিয়ার স্বপ্ন দেখে যেখানে "বিভেদের জায়গা নেবে সংযোগ ও সহযোগিতা, অর্থনীতিগুলো সমন্বিতভাবে বিকশিত হবে, আন্তর্জাতিক বৈধতা অনুযায়ী শান্তিপূর্ণভাবে বিরোধ নিষ্পত্তি হবে এবং যেখানে মর্যাদা ও সম্মানের সঙ্গে শান্তি বজায় থাকবে।'
লাহোর বিশ্ববিদ্যালয়ের সেন্টার ফর সিকিউরিটি, স্ট্র্যাটেজি অ্যান্ড পলিসি রিসার্চ (সিএসএসপিআর)-এর পরিচালক রাবিয়া আখতার আল জাজিরাকে বলেন, 'বর্তমান পর্যায়ে এই প্রস্তাবটি "বাস্তবায়নযোগ্য হওয়ার চেয়ে বেশি আকাঙ্ক্ষা-নির্ভর" বলে মনে হচ্ছে।'
তিনি বলেন, "তবে এটি সার্ক-এর স্থবিরতার সময়ে আঞ্চলিক সহযোগিতার প্রক্রিয়াকে নতুন করে সাজানোর এবং বৈচিত্র্য আনার বিষয়ে পাকিস্তানের সদিচ্ছার ইঙ্গিত দেয়।"
আঞ্চলিক সংস্থা 'সার্ক' কী?
১৯৮৫ সালে বাংলাদেশের রাজধানী ঢাকায় এক শীর্ষ সম্মেলনের মাধ্যমে সার্ক প্রতিষ্ঠিত হয়। এর সাতটি প্রতিষ্ঠাতা সদস্য দেশ ছিল বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত, মালদ্বীপ, নেপাল, পাকিস্তান এবং শ্রীলঙ্কা। ২০০৭ সালে অষ্টম সদস্য হিসেবে আফগানিস্তান এতে যোগ দেয়।
সংস্থাটির ওয়েবসাইট অনুযায়ী, সার্কের উদ্দেশ্য হলো দক্ষিণ এশিয়ার জনগণের কল্যাণ ও জীবনযাত্রার মানোন্নয়ন, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি এবং সাংস্কৃতিক বিকাশ।
উচ্চাভিলাষী লক্ষ্য থাকা সত্ত্বেও, গত ৪০ বছরে সংস্থাটি তার উদ্দেশ্য পূরণে হিমশিম খেয়েছে। এর প্রধান কারণ হলো ১৯৪৭ সালে ব্রিটিশদের কাছ থেকে স্বাধীনতা এবং দেশভাগের পর থেকে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যকার দীর্ঘস্থায়ী উত্তেজনা। এই দুই দেশ এ পর্যন্ত তিনটি পূর্ণমাত্রার যুদ্ধে লিপ্ত হয়েছে।
২০১৬ সালে ইসলামাবাদে অনুষ্ঠিত হতে যাওয়া ১৯তম সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনির্দিষ্টকালের জন্য স্থগিত করা হয়। ভারত নিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরে এক ভয়াবহ হামলার জন্য পাকিস্তানকে দায়ী করে ভারত সম্মেলন থেকে সরে দাঁড়ানোর ঘোষণা দেওয়ার পর এই অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়।
রাবিয়া আখতার বলেন, 'এই সংস্থাটি কার্যকর হওয়ার জন্য ঐকমত্য প্রয়োজন। দ্বিপাক্ষিক বিরোধকে আঞ্চলিক সহযোগিতা থেকে আলাদা করার জন্য দুই বৃহত্তম সদস্য রাষ্ট্রের রাজনৈতিক সদিচ্ছা ছাড়া সার্ক এগিয়ে যেতে পারে না।'
২০১৪ সালে নেপালের কাঠমান্ডুতে সর্বশেষ সার্ক শীর্ষ সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়েছিল। তবে বিশ্লেষকরা বলছেন, সার্ক বর্তমানে সুপ্ত অবস্থায় থাকলেও, ভারত ও পাকিস্তান সুযোগ দিলে এই সংস্থাটির এখনও অঞ্চলের জন্য কাজ করার সম্ভাবনা রয়েছে।
সার্ক কেন গুরুত্বপূর্ণ?
২০২৫ সাল নাগাদ সার্কভুক্ত দেশগুলোর জনসংখ্যা ২০০ কোটির বেশি, যা দক্ষিণ এশিয়াকে বিশ্বের সবচেয়ে ঘনবসতিপূর্ণ অঞ্চলে পরিণত করেছে।
বিশ্বব্যাংকের তথ্যমতে, বিশাল জনসংখ্যা সত্ত্বেও দক্ষিণ এশিয়ার অভ্যন্তরীণ বাণিজ্য খুবই নগণ্য, যা অঞ্চলের মোট বাণিজ্যের মাত্র ৫ শতাংশ (প্রায় ২৩ বিলিয়ন ডলার)। এর বিপরীতে, দক্ষিণ-পূর্ব এশিয়ার ১১টি দেশের জোট 'আসিয়ান'-এর (জনসংখ্যা প্রায় ৭০ কোটি) সদস্য রাষ্ট্রগুলোর মধ্যে বাণিজ্যের পরিমাণ তাদের মোট আন্তর্জাতিক বাণিজ্যের ২৫ শতাংশ।
বিশ্বব্যাংকের প্রাক্কলন অনুযায়ী, বাণিজ্য বাধাগুলো দূর করা গেলে দক্ষিণ এশিয়ার দেশগুলো নিজেদের মধ্যে ৬৭ বিলিয়ন ডলারের পণ্য লেনদেন করতে পারে—যা বর্তমানের তিনগুণ।
বিশেষ করে ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে বাণিজ্যের অবস্থা খুবই করুণ। ২০১৭-১৮ অর্থবছরে দুই প্রতিবেশীর মধ্যে আনুষ্ঠানিক বাণিজ্যের পরিমাণ ছিল মাত্র ২.৪১ বিলিয়ন ডলার। ২০২৪ সাল নাগাদ তা অর্ধেকে নেমে ১.২ বিলিয়ন ডলারে দাঁড়িয়েছে। তবে বিশেষজ্ঞদের মতে, তৃতীয় দেশের মাধ্যমে তাদের মধ্যে প্রায় ১০ বিলিয়ন ডলারের অনানুষ্ঠানিক বাণিজ্য হয়ে থাকে।
আঞ্চলিক সংযোগের অভাবকে এই দুর্বল বাণিজ্যের অন্যতম কারণ হিসেবে চিহ্নিত করা হয়। ২০১৪ সালে দক্ষিণ এশিয়াজুড়ে ইউরোপের মতো গাড়ি ও ট্রাক চলাচলের জন্য 'মোটর ভেহিকল এগ্রিমেন্ট' সই করার দ্বারপ্রান্তে ছিল সার্ক। কিন্তু ভারতের সঙ্গে উত্তেজনার জেরে পাকিস্তান সেই চুক্তি এবং রেলওয়ে সহযোগিতার আরেকটি চুক্তি আটকে দেয়।
এরপর থেকে সংস্থাটির এক হওয়ার নজির খুব কমই দেখা গেছে। কেবল কোভিড-১৯ মহামারির সময় সদস্য রাষ্ট্রগুলো একটি জরুরি তহবিল গঠন করে এবং জনস্বাস্থ্য সংকট মোকাবিলায় ৭.৭ বিলিয়ন ডলার বরাদ্দ করে।
আঞ্চলিক অংশীদারিত্ব গড়তে সার্ককে পাশ কাটানোর চেষ্টা পাকিস্তানই প্রথম করছে না। সার্কের আঞ্চলিক পরিবহন চুক্তি ব্যর্থ হওয়ার পর বাংলাদেশ, ভুটান, ভারত ও নেপাল মিলে নিজেদের মধ্যে 'বিবিআইএন' নামে অনুরূপ একটি চুক্তি স্বাক্ষর করে।
এশিয়া সোসাইটি পলিসি ইনস্টিটিউট (এএসপিআই)-এর সাউথ এশিয়া ইনিশিয়েটিভসের পরিচালক এবং বিশ্লেষক ফারওয়ার মতে, ভারত বিমসটেকের মতো অন্যান্য আঞ্চলিক সংস্থারও অংশ। বিমসটেকে ভারত ছাড়াও বাংলাদেশ, ভুটান, মিয়ানমার, নেপাল, শ্রীলঙ্কা এবং থাইল্যান্ড অন্তর্ভুক্ত।
তবুও, ফারওয়ার মতে, স্বল্প থেকে মধ্যমেয়াদে "আঞ্চলিক বহুপাক্ষিকতার" চেয়ে "দ্বিপাক্ষিক ও ত্রিপাক্ষিক" ব্যবস্থাগুলোই প্রাধান্য পাবে। কারণ হিসেবে তিনি বলেন, 'এক বা দুটি দেশের সঙ্গে কাজ করাটা বেশি নমনীয়তা, স্পষ্ট প্রণোদনা এবং দৃশ্যমান ফলাফল পাওয়ার অধিক সম্ভাবনা তৈরি করে।'
পাকিস্তানের প্রস্তাব কি সফল হবে?
বাংলাদেশ সেন্টার ফর ইন্দো-প্যাসিফিক অ্যাফেয়ার্সের নির্বাহী পরিচালক অধ্যাপক শাহাব এনাম খান বলেন, 'উচ্চাভিলাষী হলেও এই প্রস্তাবটি অত্যন্ত প্রয়োজনীয়। দক্ষিণ এশিয়া বারবার বাস্তবসম্মত আঞ্চলিকতাবাদ বা তথাকথিত 'মিনিলেটারালিজম' প্রতিষ্ঠায় ব্যর্থ হয়েছে, যা মূলত নিরাপত্তা-কেন্দ্রিক চিন্তাভাবনা বা সম্ভবত রাজনৈতিক অদূরদর্শিতার ফাঁদে আটকে আছে।'
ইন্টারন্যাশনাল ক্রাইসিস গ্রুপের জ্যেষ্ঠ বিশ্লেষক প্রবীণ ডনথি আল জাজিরাকে বলেন, 'তাত্ত্বিকভাবে একটি নতুন আঞ্চলিক সংস্থার জন্য সুযোগ রয়েছে।'
তিনি বলেন, 'ভারত ও পাকিস্তানের শীতল সম্পর্কের কারণে সার্কের নিঃশব্দ মৃত্যু দক্ষিণ এশিয়ায় অন্য একটি ফোরামের জন্য শূন্যস্থান তৈরি করেছে। ভারতের সঙ্গে বাংলাদেশের সম্পর্কের অবনতি এবং পাকিস্তানের সঙ্গে সম্পর্কের উন্নতি চীনের সঙ্গে ত্রিপাক্ষিক সহযোগিতার পথ প্রশস্ত করেছে।'
তবে রাবিয়া আখতারের মতে, প্রস্তাবটি বাস্তবে কাজ করবে কি না, তা দুটি বিষয়ের ওপর নির্ভর করবে।
'প্রথমত, প্রথাগত কাঠামো যখন স্থবির, তখন সম্ভাব্য রাষ্ট্রগুলো ছোট এবং নির্দিষ্ট ইস্যু-ভিত্তিক জোটের মধ্যে কার্যকর কোনো মূল্য দেখছে কি না; এবং দ্বিতীয়ত, এতে অংশগ্রহণ ভারতের সঙ্গে সম্পর্কের ক্ষেত্রে কোনো রাজনৈতিক মূল্য দিতে বাধ্য করবে কি না।'
আখতার বলেন, 'দক্ষিণ এশিয়ার কয়েকটি দেশ পাকিস্তানের এই আঞ্চলিক উদ্যোগে কিছুটা আগ্রহ দেখাতে পারে, তবে আনুষ্ঠানিক অংশগ্রহণের বিষয়টি সীমিত থাকার সম্ভাবনাই বেশি। আমার মনে হয় শ্রীলঙ্কা, নেপাল, মালদ্বীপ এবং সম্ভবত ভুটান কানেক্টিভিটি, জলবায়ু অভিযোজন এবং অর্থনৈতিক স্থিতিস্থাপকতার মতো বিষয়গুলোতে অনুসন্ধানমূলক আলোচনায় রাজি হতে পারে।'
অধ্যাপক শাহাব এনাম খান মনে করেন, এটি কার্যকর করতে হলে দেশগুলোকে একত্রিত হতে হবে এবং ছোট রাষ্ট্রগুলোর চাহিদাকে বিবেচনায় নিতে হবে। তিনি বলেন, 'দেশগুলোকে প্রথাগত ভূ-রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বিতার ঊর্ধ্বে উঠতে হবে। নেপাল, ভুটান, শ্রীলঙ্কা এবং মালদ্বীপ ক্রমশ বুঝতে পারছে যে, কেবল বড় শক্তির স্বার্থ নয়, বরং তাদের নিজেদের অর্থনৈতিক স্বার্থ রক্ষার জন্য গভীর আঞ্চলিক সহযোগিতা প্রয়োজন। এই অঞ্চল এবং এর বাইরের দেশগুলোর জন্য এ ধরনের বিকল্প উদ্যোগে যোগ দেওয়ার যথেষ্ট ভিত্তি আমি দেখতে পাচ্ছি।'
ডনথি বলেন, 'যদি পাকিস্তানের প্রস্তাবটি এগিয়ে যায়, তবে এটি ভারত ও বাংলাদেশের মধ্যে দূরত্ব আরও বাড়িয়ে দিতে পারে এবং চীনের সঙ্গে ভারতের আঞ্চলিক প্রতিযোগিতাকে আরও উসকে দিতে পারে।'
তবুও, এএসপিআই-এর ফারওয়া আমরের বিশ্বাস, পাকিস্তানের প্রস্তাবটি কৌশলগতভাবে সংগতিপূর্ণ। তিনি বলেন, 'দেশটি বর্তমানে কূটনৈতিক তৎপরতার একটি বিশেষ মুহূর্ত পার করছে। তারা চীনের সঙ্গে শক্তিশালী সম্পর্ক বজায় রাখার পাশাপাশি যুক্তরাষ্ট্র এবং উপসাগরীয় দেশগুলোর সঙ্গে নতুন করে উন্নত সম্পর্ক গড়ে তুলছে।'
তিনি আরও বলেন, 'এই দ্বিমুখী সম্পৃক্ততা ইসলামবাদকে এক ধরনের আত্মবিশ্বাস জুগিয়েছে এবং নিজেকে একটি গুরুত্বপূর্ণ আঞ্চলিক শক্তি হিসেবে পুনঃপ্রতিষ্ঠিত করার উচ্চাকাঙ্ক্ষা তৈরি করেছে। মূলত, আঞ্চলিক কূটনীতির কেন্দ্রে নিজের আসন পুনরুদ্ধার করাই তাদের লক্ষ্য।'
