‘জিতেছে আশা’: মামদানিকে নির্বাচনে জয়ের অভিনন্দন জানালেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান
নিউইয়র্কের মেয়র নির্বাচনে জেতায়— জোহরান মামদানিকে উষ্ণ অভিনন্দন জানিয়েছেন লন্ডনের মেয়র সাদিক খান। মামদানির নির্বাচনি প্রচারকেও তিনি 'ঐতিহাসিক' বলে অভিহিত করেছেন।
সামাজিক মাধ্যমে এক বিবৃতিতে সাদিক খান লিখেছেন, "আশা আর ভয়ের মধ্যে— নিউইয়র্কবাসীর সামনে ছিল এক স্পষ্ট উপায় বেঁছে নেওয়ার সুযোগ। আর যেমনটা আমরা লন্ডনে দেখেছি — এবারও আশাই জিতেছে।"
বাংলাদেশ সময় বুধবার (যুক্তরাষ্ট্রে মঙ্গলবার) নিউইয়র্ক সিটি মেয়র নির্বাচনের ফলাফল প্রকাশ পায়। মামদানির জয়ের ফলে এখন বিশ্বের দুই বৃহত্তম শহর — যুক্তরাজ্যের লন্ডন ও যুক্তরাষ্ট্রের নিউইয়র্কের নেতৃত্ব চলে আসল দুজন উদারপন্থী হিসেবে পরিচিত রাজনীতিবিদের হাতে, যারা দুজনেই মুসলিম অভিবাসী পরিবারের সন্তান। দুই নেতাই নিজেদের দেশে ডানপন্থীদের উত্থানের মধ্যে রাজনীতিতে বিপরীত অবস্থান নিয়ে ক্ষমতায় এসেছেন।
দুই নেতার উপদেষ্টারা জানিয়েছেন, সাদিক খান এ বছরের শুরুতে মামদানিকে ফোন করে ডেমোক্রেটিক প্রাইমারিতে তাঁর বিজয়ের জন্য শুভেচ্ছা জানিয়েছিলেন।
তবে তাদের রাজনৈতিক অবস্থানে পার্থক্যও রয়েছে। সাদিক খান, যিনি ২০১৬ সালে লন্ডনের মেয়র নির্বাচিত হওয়ার আগে ব্রিটেনের শাসক লেবার পার্টির সাংসদ ছিলেন, তিনি তুলনামূলকভাবে মধ্যপন্থী রাজনীতির অনুসারী। অপরদিকে, মামদানি প্রকাশ্যেই নিজেকে প্রগতিশীল বামপন্থী এজেন্ডার সমর্থক হিসেবে তুলে ধরেছেন।
উভয় নেতা-ই তাদের ধর্ম, অভিবাসী পরিচয় ও রাজনৈতিক মতাদর্শ নিয়ে তীব্র সমালোচনা ও বিদ্বেষের মুখে পড়েছেন। যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প উভয়কেই লক্ষ্য করে তীব্র মন্তব্য করেছেন — মামদানিকে বলেছেন "খাঁটি কমিউনিস্ট," আর সাদিক খানকে আখ্যা দিয়েছেন "স্টোন-কল্ড লুজার" হিসেবে।
তাদের দুজনেরই নির্বাচনি প্রচার শেষ দিকে গিয়ে ইসলামবিদ্বেষী প্রচারণার ঢেউয়ের মুখে পড়ে। গত সপ্তাহে নিউইয়র্কে সামাজিক মাধ্যমে একাধিক পোস্টে ৯/১১ হামলার ছবি ব্যবহার করে ভোটারদের মামদানির বিরুদ্ধে ভোট দিতে আহ্বান জানানো হয়। একইভাবে, ২০১৬ সালে লন্ডন মেয়র নির্বাচনের ঠিক আগে সাদিক খানের রক্ষণশীল প্রতিদ্বন্দ্বী একটি নিবন্ধে লন্ডনের ভয়াবহ সন্ত্রাসী হামলায় ক্ষতিগ্রস্ত একটি বাসের ছবি ব্যবহার করেন, এবং ইঙ্গিত দেন যে সাদিক খান "সন্ত্রাসীদের বন্ধু।"
সেই সময় এসব অভিযোগ দৃঢ়ভাবে প্রত্যাখ্যান করে ১৩ শতাংশ ভোটের ব্যবধানে জয়লাভ করেন সাদিক খান, হয়ে ওঠেন লন্ডনের প্রথম মুসলিম মেয়র। এরপর তিনি পরপর তিন মেয়াদে নির্বাচিত হয়েছেন।
অন্যদিকে, মঙ্গলবার রাতের বিজয় ভাষণে মামদানি বলেন, তিনি শহর থেকে বর্ণবিদ্বেষ ও ধর্মীয় ঘৃণার বিরুদ্ধে লড়াই করবেন।
তিনি ঘোষণা দেন, "আমি ইহুদিবিদ্বেষ-সহ সব ধরনের বিদ্বেষের বিরুদ্ধে লড়ব। নিউইয়র্ক এমন এক শহর হবে, যেখানে মুসলমানরা জানবে—এ শহরেও তাদের ঠিকানা আছে। আর কখনো কেউ ইসলামবিদ্বেষ ছড়িয়ে নির্বাচন জিততে পারবে না।"
