পাল্টা পদক্ষেপে যুক্তরাষ্ট্রের ওপর ১০ হাজার ডলার ভিসা বন্ড বাধ্যতামূলক করল মালি

মালি ঘোষণা করেছে, পশ্চিম আফ্রিকার এই দেশটি ভ্রমণ করতে ইচ্ছুক যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের ব্যবসা ও পর্যটন ভিসার জন্য সর্বোচ্চ ১০ হাজার ডলার (৭,৫০০ পাউন্ড) পর্যন্ত বন্ড বা জামানত দিতে হবে। যুক্তরাষ্ট্রের নাগরিকদের জন্য এই শর্ত আরোপ করা হচ্ছে ট্রাম্প প্রশাসনের অনুরূপ এক সিদ্ধান্তের জবাবে। খবর বিবিসির।
মালিতে অবস্থিত যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাস শুক্রবার জানিয়েছে, এই ফি আরোপ করা হয়েছে যুক্তরাষ্ট্রের সীমান্ত সুরক্ষা ও জাতীয় নিরাপত্তা রক্ষায় ওয়াশিংটনের অঙ্গীকারকে আরও জোরদার করার অংশ হিসেবে।
মালির পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় রোববার জানিয়েছে, যুক্তরাষ্ট্রের ওপর একতরফাভাবে এই জামানত আরোপ করা হয়েছে এবং মার্কিন নাগরিকদের জন্যও একই ধরনের ভিসা কর্মসূচি চালু করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
দুই দেশের মধ্যে কূটনৈতিক সম্পর্ক উন্নত করার উদ্যোগ চললেও, এই নতুন ভিসা নীতির পরিবর্তন সেই প্রেক্ষিতেই এসেছে।
গত জুলাইয়ে যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তারা মালি সফর করেছিলেন সন্ত্রাসবিরোধী সহযোগিতা ও অর্থনৈতিক অংশীদারিত্ব নিয়ে আলোচনা করতে। আলোচনায় মালির স্বর্ণ ও লিথিয়াম খনিতে প্রবেশাধিকার পাওয়ার সম্ভাবনাও অন্তর্ভুক্ত ছিল।
তবে ২০২১ সালের এক সামরিক অভ্যুত্থানের পর জেনারেল আসিমি গোইতা ক্ষমতায় এলে দুই দেশের সম্পর্কের অবনতি ঘটে। এরপর থেকে তিনি দেশটির ক্রমবর্ধমান জঙ্গি বিদ্রোহ দমনের প্রচেষ্টায় পশ্চিম আফ্রিকার রাষ্ট্র মালিকে রাশিয়ার ঘনিষ্ঠ মিত্রে পরিণত করেন।
ক্ষমতায় আসার পর জেনারেল গোইতা মালি থেকে ফরাসি সেনাদের বহিষ্কার করেন এবং রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীন ওয়াগনার গ্রুপ থেকে ভাড়াটে বাহিনীকে দেশে নিয়ে আসেন। পরে ওই ওয়াগনার যোদ্ধাদের জায়গায় রাশিয়ার আরেক সামরিক ইউনিট 'আফ্রিকা কর্পস' মোতায়েন করা হয়।
এদিকে গত সপ্তাহে, প্রতিবেশী বুরকিনা ফাসোর সামরিক সরকার যুক্তরাষ্ট্র থেকে ফেরত পাঠানো নাগরিকদের গ্রহণে অস্বীকৃতি জানায়, কারণ ওয়াশিংটন দেশটির নাগরিকদের জন্য ভিসা প্রদান সাময়িকভাবে স্থগিত করেছে।
তৃতীয় দেশ থেকে অভিবাসীদের গ্রহণের মার্কিন প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে মালি। এ প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করায় মালির পররাষ্ট্রমন্ত্রী কারামোকো জ্যঁ-মারি ত্রাওরে প্রশ্ন তুলেছেন, যুক্তরাষ্ট্রের দূতাবাসের এই সিদ্ধান্ত কি 'ব্ল্যাকমেইল'?
ট্রাম্প প্রশাসন অভিবাসন দমন নীতির অংশ হিসেবে আফ্রিকার কিছু দেশকে অভিবাসী ফেরত পাঠানোর গন্তব্য হিসেবে ব্যবহার করার উদ্যোগ নিয়েছে।