মাইক্রোসফট ও এআই প্রতিষ্ঠানে যোগ দিলেন সাবেক ব্রিটিশ প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক

যুক্তরাজ্যের সাবেক প্রধানমন্ত্রী ঋষি সুনাক এবার প্রযুক্তি দুনিয়ায় পা রাখলেন। তিনি টেক জায়ান্ট মাইক্রোসফট এবং কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তা (এআই) বিষয়ক স্টার্টআপ অ্যানথ্রোপিকে বেতনভুক্ত উপদেষ্টা হিসেবে যোগ দিয়েছেন।
তবে সাবেক সরকারি কর্মকর্তাদের কার্যক্রম তদারককারী একটি স্বাধীন নজরদারি সংস্থা শর্ত জুড়ে দিয়েছে, আগামী দুই বছর তিনি এই প্রতিষ্ঠানগুলোর পক্ষে কোনো মন্ত্রীর কাছে তদবির বা লবিং করতে পারবেন না।
বর্তমানে রিচমন্ড ও নর্থ অ্যালারটনের এমপি ঋষি সুনাক বলেছেন, 'বিশ্বের শীর্ষস্থানীয় দুটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের সঙ্গে কাজ করতে পেরে আমি আনন্দিত।' তিনি জানান, এই দায়িত্ব থেকে পাওয়া অর্থ তিনি তার প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থায় দান করবেন।
প্রধানমন্ত্রিত্বের সময় ঋষি সুনাক প্রযুক্তি খাত, বিশেষ করে কৃত্রিম বুদ্ধিমত্তার নিরাপত্তাকে বিশেষ গুরুত্ব দিয়েছিলেন এবং ২০২৩ সালে একটি এআই নিরাপত্তা সম্মেলনের আয়োজন করেছিলেন।
গত বৃহস্পতিবার প্রকাশিত এক চিঠিতে 'অ্যাডভাইজরি কমিটি অন বিজনেস অ্যাপয়েন্টমেন্টস (অ্যাকোবা)' সুনাককে দেওয়া পরামর্শে জানায়, মাইক্রোসফটে তার কাজ হবে ভূ-রাজনৈতিক গতিপ্রকৃতির ওপর 'উচ্চ পর্যায়ের কৌশলগত দৃষ্টিভঙ্গি' উপস্থাপন করা। অন্যদিকে, ওপেনএআই ও গুগলের মতো প্রতিষ্ঠানের প্রতিযোগী অ্যানথ্রোপিকে তার ভূমিকা হবে 'অভ্যন্তরীণ থিঙ্কট্যাংকের মতো'।
অ্যাকোবা বলেছে, অ্যানথ্রোপিকের যুক্তরাজ্য সরকারের নীতির বিষয়ে যথেষ্ট আগ্রহ রয়েছে। ফলে সুনাকের এই নিয়োগ সরকারের মধ্যে 'অন্যায্য সুবিধা এবং প্রভাব বিস্তারের সুযোগ' তৈরি করতে পারে বলে আশঙ্কা রয়েছে। যুক্তরাজ্যে বড় বিনিয়োগকারী প্রতিষ্ঠান মাইক্রোসফটের ক্ষেত্রেও একই ধরনের ঝুঁকির কথা বলা হয়েছে।
এই দুটি প্রযুক্তি প্রতিষ্ঠানের পাশাপাশি সুনাক তার পুরনো কর্মস্থল গোল্ডম্যান স্যাকস ব্যাংকেও বেতনভুক্ত উপদেষ্টা হিসেবে কাজ করবেন বলে নিশ্চিত করা হয়েছে। এর আগে ২০০১ থেকে ২০০৪ সাল পর্যন্ত তিনি এই ব্যাংকে কাজ করেছিলেন।
২০২২ সালের অক্টোবর থেকে ২০২৪ সালের জুলাই পর্যন্ত প্রধানমন্ত্রীর দায়িত্বে থাকা সুনাক নির্বাচনের পরপরই সংসদ সদস্যের পদ ছেড়ে দিয়ে যুক্তরাষ্ট্রের সিলিকন ভ্যালিতে কোনো বড় পদে যোগ দেবেন বলে গুঞ্জন ছিল।
তবে প্রধানমন্ত্রী হিসেবে শেষ প্রশ্নোত্তর পর্বে সুনাক তার নির্বাচনী এলাকাতেই বেশি সময় কাটানোর প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন।
নতুন দায়িত্বগুলো থেকে প্রাপ্ত সমস্ত অর্থ সুনাক ও তার স্ত্রীর প্রতিষ্ঠিত দাতব্য সংস্থা 'দ্য রিচমন্ড প্রজেক্ট'-এ দান করা হবে, যা যুক্তরাজ্যে সংখ্যাগত সমস্যা নিরসনে কাজ করে।
নতুন দায়িত্ব পাওয়ার পর সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে সুনাক বলেন, তিনি নিশ্চিত করতে চান যে আসন্ন প্রযুক্তিগত পরিবর্তন 'সকলের জীবনে উন্নতি বয়ে আনবে।' তিনি আরও বলেন, 'আমরা এমন এক প্রযুক্তিগত বিপ্লবের দ্বারপ্রান্তে দাঁড়িয়ে আছি, যার প্রভাব শিল্পবিপ্লবের মতোই গভীর হবে এবং তা আরও দ্রুত অনুভূত হবে।'