অমরত্ব ও অঙ্গ প্রতিস্থাপন নিয়ে শি-পুতিনের আলাপ ধরা পড়ল মাইকে

চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং ও রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনকে বেইজিংয়ে এক সামরিক কুচকাওয়াজের ফাঁকে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের মাধ্যমে জীবন দীর্ঘায়িত করার বিষয়ে আলোচনা করতে শোনা গেছে।
পুতিন সেসময় মন্তব্য করেন, বায়োটেকনোলজির উদ্ভাবনের ফলে অনন্ত জীবনও সম্ভব হতে পারে।
বুধবারের (৩ সেপ্টেম্বর) কুচকাওয়াজের সময় ঘটনাটি ধরা পড়ে চীনা রাষ্ট্রীয় টেলিভিশনের সরাসরি সম্প্রচারে, যখন শি, পুতিন এবং উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উন চীনের ঐতিহাসিক তিয়েনআনমেন স্কয়ারে হাঁটছিলেন।
শি টানা ১৩ বছর ও পুতিন ২৫ বছর ধরে ক্ষমতায় আছেন। দুজনের কেউই এখনন পর্যন্ত পদ ছাড়ার কোনো ইঙ্গিত দেননি। উত্তর কোরিয়া ও রাশিয়ার নেতাদের পাশে দাঁড়িয়ে বিশ্বব্যবস্থার বিকল্প ধারণা তুলে ধরতে শি বিজয় দিবসের এ আয়োজনকে ব্যবহার করেছেন।
তবে ব্যক্তিগত কথোপকথনে বোঝা যায়, তাদের দৃষ্টি শুধু রাজনীতি বা অর্থনীতির মধ্যে সীমাবদ্ধ নয়।
তাদের কথোপকথনের সময় শির অনুবাদককে রুশ ভাষায় বলতে শোনা যায়, 'আগে ৭০ বছরের বেশি বয়সী মানুষ খুব কম ছিল। এখন তো বলা হয়, ৭০ বছর বয়সও কেবল শৈশব।'
এরপর পুতিন কিছু বলেন, যা শোনা যায়নি। তার পরই তার মান্দারিন দোভাষী যোগ করেন, 'বায়োটেকনোলজির উন্নয়নের মাধ্যমে মানুষের অঙ্গ বারবার প্রতিস্থাপন করা সম্ভব হচ্ছে। এতে মানুষ তরুণ থাকতে পারবে, এমনকি অমরত্বও অর্জন করতে পারবে।'
শির দোভাষী এরপর বলেন, 'বিশেষজ্ঞদের পূর্বাভাস, এ শতাব্দীতেই মানুষের গড় আয়ু ১৫০ বছরে পৌঁছতে পারে।'
পরে রুশ গণমাধ্যমে দেওয়া বক্তব্যেও একই প্রসঙ্গে কথা বলেন পুতিন।
রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা তাসকে তিনি বলেন, আধুনিক পদ্ধতি, চিকিৎসা ও অস্ত্রোপচারের মাধ্যমে অঙ্গ প্রতিস্থাপনের সুবিধা মানুষের জীবন দীর্ঘায়িত করার প্রত্যাশা তৈরি করছে। বিভিন্ন দেশে গড় আয়ু ভিন্ন হলেও তা উল্লেখযোগ্যভাবে বাড়বে।'
অন্যদিকে, দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানের ৮০তম বার্ষিকী উপলক্ষে আয়োজিত এ কুচকাওয়াজে চীন তার বিপুল অস্ত্রভাণ্ডার প্রদর্শন করেছে। যার মধ্যে পারমাণবিক ক্ষেপণাস্ত্রও ছিল।
এ সময় শি বলেন, 'বিশ্ব এখন শান্তি ও যুদ্ধের মধ্যে এক সঙ্কটময় মুহুর্তে দাঁড়িয়ে আছে।'
এ কুচকাওয়াজ ছিল প্রথমবারের মতো চীন, রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার নেতাদের প্রকাশ্যে একসঙ্গে দেখা যাওয়ার ঘটনা। অনেক পর্যবেক্ষক মনে করেন, পশ্চিমা দেশগুলোর প্রতি এটি ছিল একপ্রকার বার্তা।
পুতিন ও কিম ছাড়াও কুচকাওয়াজে অংশ নেন আরও ২৪ জন রাষ্ট্রীয় অতিথি। তাদের মধ্যে ছিলেন ইরানের প্রেসিডেন্ট মাসউদ পেজেশকিয়ান, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শেহবাজ শরিফ, ভিয়েতনামের লুয়ং কুয়ং ও জিম্বাবুয়ের এমারসন মানাঙ্গাগওয়া।
ডোনাল্ড ট্রাম্প প্রশাসনের শুল্ক আরোপের পর থেকেই যুক্তরাষ্ট্রের বিকল্প শক্তি হিসেবে নিজেদের তুলে ধরার চেষ্টা করছে চীন।
এদিন যুক্তরাষ্ট্রের প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেন, শি যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্র করছেন রাশিয়া ও উত্তর কোরিয়ার নেতাদের সঙ্গে।
ট্রাম্প তার 'ট্রুথ সোশ্যাল' অ্যাকাউন্টে লেখেন, 'ভ্লাদিমির পুতিন ও কিম জং উনকে আমার শুভেচ্ছা পৌঁছে দিন, যারা যুক্তরাষ্ট্রের বিরুদ্ধে ষড়যন্ত্রে লিপ্ত আছেন।'