সামরিক কুচকাওয়াজে ক্ষেপণাস্ত্র, ড্রোনসহ আরও কী কী নতুন অস্ত্র প্রদর্শন করল চীন?

চীনের রাজধানী বেইজিংয়ে আজ বুধবার (৩ সেপ্টেম্বর) অনুষ্ঠিত হয়েছে সামরিক কুচকাওয়াজ। দ্বিতীয় বিশ্বযুদ্ধের অবসানে জাপানের আত্মসমর্পণের ৮০ বছর পূর্তি উপলক্ষে আয়োজিত কুচকাওয়াজে অংশ নিয়েছেন বিশ্বের নানা প্রান্তের শীর্ষ নেতারা।
চীনের প্রেসিডেন্ট শি জিনপিং নিজে উপস্থিত থেকে এই সামরিক কুচকাওয়াজ তদারকি করেন। এতে আরও উপস্থিত ছিলেন রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিন ও উত্তর কোরিয়ার নেতা কিম জং উনও।
কুচকাওয়াজ চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মি (পিএলএ) প্রথমবারের মতো কিছু অস্ত্র জনসম্মুখে প্রদর্শন করেছে। এর মধ্য দিয়ে দেশটির সামরিক সক্ষমতা এবং দেশের বাইরে প্রভাব বিস্তারের সামর্থ্য স্পষ্টভাবে ফুটে উঠেছে।
ক্ষেপণাস্ত্র
চীন প্রথমবারের মতো এমন পারমাণবিক সক্ষমতার ক্ষেপণাস্ত্র প্রদর্শন করেছে, যা সমুদ্র, স্থল ও আকাশ—এই তিনটি মাধ্যম থেকে উৎক্ষেপণ করা যায়। দেশটি এটিকে 'ট্রায়াড' সক্ষমতা হিসেবে উল্লেখ করেছে।
এতে রয়েছে দীর্ঘ পাল্লার বিমানভিত্তিক ক্ষেপণাস্ত্র জিংলেই-১, সাবমেরিন থেকে উৎক্ষেপণযোগ্য আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র জুলাং-৩ এবং স্থলভিত্তিক আন্তঃমহাদেশীয় ক্ষেপণাস্ত্র ডংফেং-৬১ (ডিএফ-৬১) ও ডংফেং-৩১। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদ সংস্থা সিনহুয়ার প্রতিবেদনে বলা হয়েছে, এগুলো চীনের কৌশলগত 'মূখ্য' শক্তি এবং দেশের সার্বভৌমত্ব এবং মর্যাদা রক্ষায় গুরুত্বপূর্ণ।

বুধবার প্রদর্শিত ডংফেং-৫সি (ডিএফ-৫সি) হল ১৯৭০-এর দশকে শুরু হওয়া ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির সর্বশেষ সংস্করণ। এটি তরল জ্বালানি ব্যবহার করে এবং একাধিক স্বাধীন ওয়ারহেড একক লক্ষ্যবস্তুতে নিক্ষেপ করতে সক্ষম।
কুচকাওয়াজে জাহাজ বিধ্বংসী হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্রেরও প্রদর্শনী করা হয়েছে। চীন পূর্বে নকল মার্কিন বিমানবাহী নৌযানকে লক্ষ্যবস্তু বানিয়ে এই ক্ষেপণাস্ত্র পরীক্ষা করেছে। এর মধ্যে রয়েছে—ইয়িংজি-১৯, ইয়িংজি-১৭ এবং ইয়িংজি-২০।
অন্যান্য প্রদর্শিত ক্ষেপণাস্ত্রের মধ্যে রয়েছে—ক্রুজ ক্ষেপণাস্ত্র চাংজিয়ান-২০এ, ইয়িংজি-১৮সি, চাংজিয়ান-১০০০ এবং আরও কিছু হাইপারসনিক ক্ষেপণাস্ত্র ইয়িংজি-২১, ডংফেং-১৭ এবং ডংফেং-২৬ডি। চীনের রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যমের ভাষ্যমতে, এগুলো 'সকল পরিস্থিতিতে যুদ্ধক্ষম'।
লেজার অস্ত্র
চীন ড্রোন হামলার বিরুদ্ধে প্রতিরক্ষার জন্য লেজার অস্ত্র আপগ্রেড করছে। কুচকাওয়াজে প্রদর্শিত ড্রোন বিরোধী সিস্টেমের মধ্যে ছিল ক্ষেপণাস্ত্র গান, উচ্চ-শক্তির লেজার অস্ত্র এবং উচ্চ-শক্তির মাইক্রোওয়েভ অস্ত্র।
রাষ্ট্রীয় সংবাদমাধ্যম জানিয়েছে, এগুলো চীনের পিপলস লিবারেশন আর্মির (পিএলএ) ড্রোন বিরোধী সিস্টেমে 'ট্রায়াড'-এর সক্ষমতার প্রতিফলন।

ড্রোন
চীন এমন ড্রোন প্রদর্শন করেছে যা পানির নিচে এবং আকাশে—উভয় জায়গায় ব্যবহার করা সম্ভব। এর মধ্যে রয়েছে, অনুসন্ধান এবং লক্ষ্যবস্তুকে আঘাতের জন্য ব্যবহৃত ড্রোন।
এতে জাহাজ থেকে চলাচলের জন্য ডিজাইন করা মনুষ্যবিহীন হেলিকপ্টারও ছিল।
সমুদ্রভিত্তিক সিস্টেমের মধ্যে ছিল—সাবমেরিন, স্থিলে ব্যবহারযোগ্য জাহাজ এবং একটি মাইন-লেইং সিস্টেম।