সব বিড়াল পানি ভয় পায় না; কিছু বন্য বিড়াল পারদর্শী ডুবসাঁতারেও

বিড়াল মানেই কি পানির ভয়? গা ভেজানো তো দূরের কথা, পানির ছিটেফোঁটাতেই তারা বিরক্ত —এমন ধারণাই সবচেয়ে প্রচলিত। কিন্তু যদি বলি, প্রকৃতির কিছু শিকারি বিড়াল আছে যারা পানিতে নামতে যেমন ভালোবাসে, তেমনি সাঁতারে ওস্তাদও বটে? নদী থেকে জলাভূমি, এমনকি আফ্রিকার গরম সাভানা পর্যন্ত, পানি যেন তাদের খেলার মাঠ।
শরীর ঠান্ডা রাখা, শিকার ধরা কিংবা নিজের এলাকা টহল যেকোনো কারণেই হোক, এই বুনো বিড়ালগুলো প্রমাণ করেছে সাঁতার তাদের কাছে জন্মগত দক্ষতা।
গৃহপালিত বেশিরভাগ বিড়াল প্রয়োজনে সাঁতার কাটতে পারে ঠিকই, কিন্তু তারা পানিকে এড়িয়ে চলে। এর মূল কারণ, তাদের পূর্বপুরুষরা এসেছে শুষ্ক মরু অঞ্চলে থেকে, যেখানে পানির দেখা মেলা ছিল বিরল। তাই স্বভাবতই পানি তাদের জীবনের অংশ হয়নি।
কিন্তু বুনো বিড়ালরা কেন পানিতে নামে? বাঘ থেকে জাগুয়ার—এসব বিড়ালদের কাছে সাঁতার প্রায় রুটিনের অংশ। শিকারও করে পানির কাছাকাছি। আসুন পরিচিত হই বিশ্বের সেরা কয়েকজন সাঁতারু বিড়ালের সঙ্গে:
মেছো বিড়াল (ফিশিং ক্যাট)
নামেই পরিচয়। এই বিড়াল পানিতে শিকার করার জন্য বিখ্যাত। পায়ের আঙুলের মাঝে পাতলা চামড়া থাকে, যা অনেকটা হাঁসের পায়ের মতো। এই পা আর বৈঠার মতো লেজ ব্যবহার করে তারা স্বচ্ছন্দে মাছ ধরে।

ওসিলেট
গাছে চড়া, লাফানো আর সাঁতার কাটা সবক্ষেত্রেই ওস্তাদ ওসিলেট। পানি, স্থল আর গাছ সবখানেই তার শিকার ক্ষেত্র। আর তার খাবারের তালিকায় আছে মাছ, পোকামাকড়, ছোট পাখি, সরীসৃপ সবই।

জাগুয়ারুন্ডি
ভোঁদড়ের মতো দেখতে এই মাঝারি আকারের বিড়াল সহজেই নদী সাঁতরে পার হয়। গাছেও চড়তে পারে দুর্দান্ত গতিতে।

সারভাল
লম্বা পা আর সরু শরীরের এই আফ্রিকান বিড়াল প্রায়ই জলাভূমিতে নেমে ফ্লেমিঙ্গো পাখি বা অন্যান্য মাছ ধরে।

বাঘ
বাঘ পানিকে সবচেয়ে বেশি ভালোবাসে। গরমে শরীর ঠান্ডা রাখতে তারা ঘণ্টার পর ঘণ্টা পানিতে ডুবে থাকে। শুধু প্রয়োজনে নয়, অনেক সময় আনন্দের জন্যও এরা সাঁতার কাটে।

জাগুয়ার
জলের সঙ্গে জাগুয়ারের সম্পর্ক সবচেয়ে নিবিড়। নদী বা জলাভূমিতে শিকার ধরতে এরা ডুব সাঁতারেও সিদ্ধহস্ত। এমনকি কুমির বা কচ্ছপের শক্ত খোলসও অনায়াসে ভেঙে ফেলতে পারে।

চিতাবাঘ (লেপার্ড)
চিতাবাঘও সাঁতার জানে, মাছ ও কাঁকড়াও খায়। তবে জাগুয়ারের মতো সব সময় পানির কাছে থাকে না। পাহাড়, সাভানা আর মরুভূমিই তাদের প্রধান এলাকা।

অনুবাদ: নাফিসা ইসলাম মেঘা