হাতির শুঁড়ে বিয়ার! স্প্যানিশ পর্যটকের কাণ্ডে নিন্দার ঝড়, তদন্তে কেনিয়া
কেনিয়ার একটি বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্রে হাতির শুঁড়ে বিয়ার ঢেলে দেওয়ার ঘটনাকে কেন্দ্র করে ব্যাপক তোলপাড় শুরু হয়েছে। সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে এই ঘটনার ভিডিও ভাইরাল হওয়ার পর তীব্র ক্ষোভ দেখা দেয়। ঘটনায় সংশ্লিষ্ট স্প্যানিশ নাগরিকের বিরুদ্ধে কর্তৃপক্ষ একাধিক তদন্ত শুরু করেছে।
ইন্সটাগ্রামে পোস্ট করা ভিডিওটিতে দেখা যায়, ওই ব্যক্তি কেনিয়ার জনপ্রিয় বিয়ার 'টাস্কার' পান করছেন এবং বাকি বিয়ারটুকু হাতির শুঁড়ে ঢেলে দিচ্ছেন। ভিডিওটির ক্যাপশনে তিনি লেখেন, 'দাঁতওয়ালা এক বন্ধুর সাথে টাস্কার।'
ভিডিওটি সামাজিক যোগাযোগমাধ্যমে দ্রুত ছড়িয়ে পড়লে দেশজুড়ে নেটিজেনদের মধ্যে ক্ষোভের ঝড় ওঠে, অসংখ্য মন্তব্যে হাতির প্রতি এমন আচরণের নিন্দা জানানো হয়। পরে ওই স্প্যানিশ নাগরিক ভিডিওটি তার অ্যাকাউন্ট থেকে মুছে ফেলেন।
ভিডিওটির ফুটেজ বিশ্লেষণ করে এর সত্যতা নিশ্চিত করেছে বিবিসি। ভিডিওর দৃশ্যপট এবং একটি পরিচিত পুরুষ হাতি ইঙ্গিত দেয় যে এটি লাইকিপিয়ার কেন্দ্রীয় কাউন্টির 'ওল জোগি কনজারভেন্সি'তে ধারণ করা হয়েছে। এটি একটি ব্যক্তিগত মালিকানাধীন বন্যপ্রাণী সংরক্ষণ কেন্দ্র।
ভিডিওতে এই ধরনের আচরণ দেখে স্তম্ভিত হওয়ার কথা সেখানকার এক কর্মী। তিনি বলেন, ভিডিওগুলো সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের কাছে হস্তান্তর করা হবে এবং ঘটনাটি খতিয়ে দেখা হবে। ঘটনার পর বন্যপ্রাণীর প্রতি নিষ্ঠুর আচরণের জন্য ওই স্প্যানিশ নাগরিকের বিরুদ্ধে কঠোর ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি উঠেছে।
ওল জোগি কনজারভেন্সির ফ্রাঙ্ক নামের এক কর্মকর্তা বলেন, 'এমন ঘটনা কখনোই কাম্য ছিল না। আমরা এমন কিছু ঘটতে দিতে পারি না। এমনকি আমরা কাউকেই হাতির কাছাকাছি যেতেও দেই না।'
কেনিয়ার বন্যপ্রাণী সংস্থা ইতোমধ্যে এই ঘটনা তদন্ত করছে বলে জানিয়েছেন সংস্থাটির মুখপাত্র পল উদোতো।
যে হাতিটিকে বিয়ার দেওয়া হয়েছিল, অন্য ছবি ও ভিডিও থেকে প্রাপ্ত তথ্যানুসারে, হাতিটির বিবরণ ওল জোগির বন্ধুত্বপূর্ণ পুরুষ হাতি 'বুপা'র সঙ্গে মিলে যায়। বুপার ছবি প্রায়শই দর্শনার্থীরা শেয়ার করে থাকেন। বুপাকে ১৯৮৯ সালে জিম্বাবুয়ে থেকে উদ্ধার করে আট বছর বয়সে তাকে এই সংরক্ষণ কেন্দ্রে আনা হয়।
বিয়ারের ভিডিওতে দেখা ওই ব্যক্তি সোমবার আরেকটি ভিডিও পোস্ট করেছিলেন, যেখানে তাকে পাশের ওল পেজেতা কনজারভেন্সিতে একটি গণ্ডারকে গাজর খাওয়াতে দেখা যায়।
ওল পেজেতার কর্মকর্তা ডিলান হাবিল জানান, 'সে আমাদের নিয়ম ভেঙেছে। গণ্ডারদের স্পর্শ করার অনুমতি ছিল না, কারণ তারা পোষা প্রাণী নয়।'
