যেভাবে অর্ধ চন্দ্রাকৃতির গর্ত তানজানিয়ায় খরার বিরুদ্ধে লড়তে সাহায্য করছে

তানজানিয়া ও কেনিয়ায় খরা ও মরুকরণের বিরুদ্ধে লড়াইয়ে গ্রামের মানুষরা বেছে নিয়েছে এক অভিনব কিন্তু সহজ প্রযুক্তি—অর্ধ চন্দ্রাকৃতির অগভীর গর্ত খোঁড়া। বৃষ্টির পানি যাতে দ্রুত শুকিয়ে না যায় বরং জমে থাকে, সে জন্যই খনন করা হচ্ছে এই গর্ত। ডয়েচে ভেলে'র এক প্রতিবেদনে এমনটাই জানানো হয়েছে।
স্থানীয়ভাবে এই গর্তগুলো 'বান্ড' নামে পরিচিত। এসব গর্তে ঘাসের বীজ বপন করা হয়। বীজ অঙ্কুরিত হওয়ার পর তা মাটিকে শক্তভাবে আঁকড়ে ধরে, ফলে মাটি ক্ষয় হয় না এবং তাপমাত্রাও কম থাকে। এতে চারপাশের জমিতে নতুন সবুজ গাছপালা জন্মাতে পারে।
এই উদ্যোগটি চালু করেছে ডাচ-কেনিয়ান বেসরকারি সংস্থা জাস্টডিগিট। ২০১৩ সাল থেকে কেনিয়া ও তানজানিয়ার স্থানীয় সম্প্রদায়ের সঙ্গে কাজ করে আসছে সংস্থাটি। এখন পর্যন্ত দুই লাখের বেশি 'বান্ড' খোঁড়া হয়েছে।
জাস্টডিগিট শুধু 'বান্ড' খোঁড়াই নয়, বরং ঘাসের বীজ সংরক্ষণের ব্যাংক তৈরিতেও স্থানীয় মানুষদের সহায়তা করছে। পাশাপাশি 'ফার্মার ম্যানেজড ন্যাচারাল রিজেনারেশন' পদ্ধতিতে ইতিমধ্যে ৯০ লাখ গাছ রোপণ করেছে তারা।
তবে সংস্থাটির মূল লক্ষ্য মাঠপর্যায়ে সচেতনতা সৃষ্টি ও প্রশিক্ষণ। তাদের বিশ্বাস, মরুকরণ রোধে যত বেশি মানুষ এই সহজ পদ্ধতিগুলো শিখবে ও কাজে লাগাবে, ততই অঞ্চলটিকে খরা ও মরুকরণ থেকে রক্ষা করা সম্ভব হবে।
উদ্যোগের লক্ষ্য: তানজানিয়ার আরুশা অঞ্চলে মরুকরণ ঠেকিয়ে পশুর চারণভূমি ও কৃষিযোগ্য জমি বাড়ানো। পুনরায় বনায়নের মাধ্যমে এই অঞ্চলের ক্ষুদ্র জলবায়ুও ঠাণ্ডা রাখা সম্ভব হচ্ছে, যা মরুকরণ রোধে সহায়ক। একইসঙ্গে, বনায়ন কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণে ভূমিকা রাখে, যা জলবায়ু পরিবর্তন ঠেকাতেও সহায়ক।
মেয়াদ: ২০১৩ সালে শুরু হওয়া এই প্রকল্পের লক্ষ্য ২০৩০ সালের মধ্যে ১৩ কোটি হেক্টর অনুর্বর জমিকে পুনরুদ্ধার করা।
অর্থায়ন: এই প্রকল্পের অর্থ আসে দাতাদের অনুদান ও আন্তর্জাতিক কোম্পানির সঙ্গে অংশীদারিত্বের মাধ্যমে। ব্যক্তিগত দাতারা নির্দিষ্ট 'বান্ড' খননে অর্থ সহায়তা দেন। এছাড়া, বিভিন্ন কোম্পানি পাঁচ বছরব্যাপী তানজানিয়ার ১ কোটি গাছের রক্ষণাবেক্ষণের জন্য অর্থ বরাদ্দ করে।
অংশীদার: এই প্রকল্পে জাস্টডিগিট-এর পাশাপাশি অংশ নিচ্ছে লিড ফাউন্ডেশন ও জার্মানির দ্য ফুড ফ্যামিলি ফাউন্ডেশন।