ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন ২৫ স্থানে আধুনিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ যন্ত্র বসাবে

ঢাকা উত্তর সিটি করপোরেশন (ডিএনসিসি)-এর আওতাভুক্ত এলাকায় ২৫টি জনসমাগমস্থলে আধুনিক বায়ুমান পর্যবেক্ষণ যন্ত্র স্থাপনের উদ্যোগ নেয়া হয়েছে। এই প্রকল্পে সহায়তা করছে ব্লুমবার্গ ফিলানথ্রপিজ।
আজ সোমবার (৫ মে) 'বেজলাইন স্টাডি অন দ্য রোল অফ ভেজিটেশান ইন রিডুসিং টেম্পারেচার এন্ড এয়ার পলিউশন: এ স্টাডি ইন ইনফর্মাল সেটেলমেন্টস অফ ঢাকা নর্থ সিটি কর্পোরেশন' শীর্ষক এক অনুষ্ঠানে ডিএনসিসির প্রশাসক মোহাম্মদ এজাজ এ তথ্য জানান।
তিনি বলেন, 'আমরা যখন একটি শহরের কথা ভাবি, তখন বেশি ভবন আর কম গাছের চিত্র কল্পনা করি। আর গ্রাম মানেই বেশি গাছ আর কম ঘর। এই বৈষম্যটা আমরাই তৈরি করেছি।'
'ঢাকার সবুজ দিন দিন হারিয়ে যাচ্ছে। আমাদের শহরগুলোকে নতুন করে গড়ে তুলতে হবে। পরিকল্পিত বৃক্ষরোপণের মাধ্যমে ঢাকার তাপমাত্রা কমানো সম্ভব,' বলেন এজাজ।
তিনি বায়ুদূষণের মতোই তাপমাত্রার তথ্য নিয়মিত সংগ্রহের ওপর গুরুত্ব দেন এবং বিষয়টি গুরুত্বের সঙ্গে উল্লেখ করেন।
গুলশান-২ এর ডিএনসিসি নগর ভবনের মিলনায়তনে এই কর্মসূচির আয়োজন করে ডিএনসিসি, সেন্টার ফর অ্যাটমসফেরিক পলিউশন স্টাডিজ (ক্যাপস), কমিউনিটি টাউন ফেডারেশন (সিটিএফ) এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ।
অনুষ্ঠানে উপস্থিত ক্যাপসের চেয়ারম্যান অধ্যাপক আহমদ কামরুজ্জামান মজুমদার বলেন, 'গাছ আমাদের সবচেয়ে কাছের বন্ধু। গাছ শুধু অক্সিজেনই সরবরাহ করে না, তাপমাত্রা নিয়ন্ত্রণ এবং ক্ষতিকর গ্যাস শোষণের মাধ্যমে আমাদের পরিচ্ছন্ন বাতাস দেয়।'
'বৈজ্ঞানিক গবেষণার মাধ্যমে আমরা বুঝতে পারি কোন গাছ কোন পরিবেশে সবচেয়ে উপযোগী, কিভাবে নগরে সবুজায়ন বাড়ানো যায় এবং কোন গাছ দূষণ নিয়ন্ত্রণে কার্যকর।'
স্ট্যামফোর্ড বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রকৌশলী নাসির আহম্মেদ পাটোয়ারী বলেন, 'জলবায়ু পরিবর্তন এবং বায়ুদূষণের কারণে ঢাকা ও সারা দেশ মারাত্মক পরিবেশগত সমস্যার সম্মুখীন, যার মধ্যে রয়েছে তাপপ্রবাহ, বায়ুদূষণ। এসব সমস্যা মোকাবিলায় গাছ কার্বন ডাই-অক্সাইড শোষণ, অক্সিজেন সরবরাহ এবং পরিবেশ শীতল করে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা রাখে'
তিনি আরও জানান, এই প্রেক্ষাপটে ক্যাপস, ডিএনসিসি, ঢাকা উত্তর কমিউনিটি টাউন ফেডারেশন এবং ওয়ার্ল্ড ভিশন বাংলাদেশ যৌথভাবে একটি গবেষণা পরিচালনা করছে। এতে ১২ মাসব্যাপী ঢাকার পাঁচটি এলাকায় উদ্ভিদের প্রভাব ডিজিটাল যন্ত্র এবং স্যাটেলাইট চিত্রের মাধ্যমে বিশ্লেষণ করা হবে।
তরুণ সমাজ ও বস্তিবাসীদের সক্রিয় অংশগ্রহণ এই গবেষণাকে আরও কার্যকর করে তুলবে, ভবিষ্যৎ প্রজন্মকে পরিবেশ রক্ষায় উদ্বুদ্ধ করবে এবং নগর পরিকল্পনায় কার্যকর অবদান রাখবে বলে মন্তব্য করেন তিনি।
ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের উদ্ভিদবিজ্ঞান বিভাগের অধ্যাপক মোহাম্মদ জশিম উদ্দিন বলেন, 'ঢাকা আমাদের সবার। কিন্তু সময়ের সাথে সাথে আমরা আমাদের এই প্রিয় শহরের গাছ-গাছালি হারিয়ে ফেলেছি। সেই শান্ত, সবুজ সৌন্দর্য ফিরিয়ে আনতে হলে প্রকৃতির ছন্দ এবং ঋতুচক্র অনুযায়ী বৃক্ষরোপণ করতে হবে।'