ট্রাম্পের কোনো ‘অনৈতিক’ কার্যকলাপ দেখেননি, দাবি যৌন অপরাধী এপস্টিনের সহযোগীর
কারাগারে আটক জেফ্রি এপস্টিনের সহযোগী গিলেইন ম্যাক্সওয়েল বলেছেন, তিনি মার্কিন প্রেসিডেন্ট ডোনাল্ড ট্রাম্প বা সাবেক মার্কিন প্রেসিডেন্ট বিল ক্লিনটনের কোনো অনৈতিক আচরণ কার্যকলাপ দেখেননি। খবর বিবিসির।
যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগে আটক এপস্টিন সম্পর্কে তথ্য প্রকাশের জন্য চাপে রয়েছে ট্রাম্প প্রশাসন। কারণ এপস্টিনের সঙ্গে প্রেসিডেন্টের বন্ধুত্বপূর্ণ সম্পর্ক ছিল।
গত জুলাইয়ে কারাগার থেকেই এ বিষয়ে ম্যাক্সওয়েলের জবানবন্দি নেওয়া হয়। সম্প্রতি প্রকাশিত সেই জবানবন্দি অনুযায়ী, তিনি ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল টড ব্লাঞ্চকে বলেছেন যে ব্যাপকভাবে আলোচিত "ক্লায়েন্ট লিস্ট" বাস্তবে নেই।
তার এই সাক্ষ্য ভির্জিনিয়া গিফ্রের পরিবারকে ক্ষুব্ধি করেছে। ভির্জিনিয়া গিফ্রে ছিলেন এপস্টিনের বিরুদ্ধে একজন প্রধান অভিযুক্ত, যিনি চলতি বছর আত্মহত্যা করেন। ভির্জিনিয়ার পরিবার বলেন, সরকার ম্যাক্সওয়েলকে "ইতিহাস পুনঃলিখনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম" দিয়েছে।
ম্যাক্সওয়েল ট্রাম্পের কাছ থেকে ক্ষমার আবেদন করছেন এবং তাকে ফেডারেল কর্মকর্তাদের কাছে মিথ্যা বলার অভিযোগে অভিযুক্ত করা হয়েছে।
ট্রাম্পের ব্যক্তিগত আইনজীবী হিসেবে কাজ করা টড ব্লাঞ্চকে জবানবন্দি দেওয়ার কিছুক্ষন পর ম্যাক্সওয়েলকে ফ্লোরিডার একটি জেল থেকে টেক্সাসের একটি নতুন স্বল্প নিরাপত্তা কেন্দ্রে স্থানান্তর করা হয়। তবে স্থানান্তরের কারণ অজানা।
তিনি বর্তমানে একটি যৌন পাচারের মামলায় ২০ বছরের কারাদণ্ড ভোগ করছেন এবং তার সাজা বাতিলের জন্য মার্কিন সুপ্রিম কোর্টে আবেদন করেছেন। তার আইনজীবী বলেন, প্রেসিডেন্টের ক্ষমাকে তারা "স্বাগত জানাবেন"।
গিলেইন ম্যাক্সওয়েল বিচার বিভাগের কাছে এক জবানবন্দিতে প্রিন্স অ্যান্ড্রেু বিরুদ্ধে আনা অপ্রাপ্তবয়স্ক মেয়ের সঙ্গে যৌন কেলেঙ্কারির অভিযোগ 'একেবারে অবিশ্বাস্য' বলে অভিহিত করেছেন। যদিও মেয়েটির নাম প্রকাশ করা হয়নি, তবে প্রসঙ্গ থেকে এটা স্পষ্ট যে ম্যাক্সওয়েল ভার্জিনিয়া গিফ্রের কথাই বলছিলেন।
যদিও গিফ্রে দাবি করেছিলেন, ম্যাক্সওয়েলের বাড়িতে অ্যান্ড্রুর সঙ্গে যৌন সম্পর্ক করার জন্য তাকে অর্থ দেওয়া হয়েছিল। একটি সমালোচিত ছবিতে তাদের তিনজনকে একসাথে দেখা যায় তখন গিফ্রের বয়স ছিল ১৭।
ম্যাক্সওয়েল দাবি করেন ছবিটি নকল। তাছাড়া দায় স্বীকার না করলেও ২০২২ সালে প্রিন্স অ্যান্ড্রু বিষয়টি গিফ্রের সঙ্গে মীমাংসা করেন।
তবে গিফ্রের পরিবার ম্যাক্সওয়েলের সঙ্গে এ জবানবন্দির বিষয়বস্তু নিয়ে ক্ষুব্ধ প্রতিক্রিয়া জানিয়েছে।
পরিবারের দেওয়া একটি বিবৃতিতে বলা হয়েছে, ডেপুটি অ্যাটর্নি জেনারেল টড ব্লাঞ্চের সঙ্গে জবানবন্দি দেওয়ার সময় ম্যাক্সওয়েলকে আদালতে প্রমাণিত মিথ্যা সম্পর্কে কোনো চ্যালেঞ্জ করা হয়নি। বরং তাকে 'ইতিহাস পুনঃলিখনের জন্য একটি প্ল্যাটফর্ম' দেওয়া হয়েছে।
বিবৃতিতে আরও বলা হয়েছে, এটি ন্যায়বিচারের নামে প্রহসন। এটি সেই সাহসী বেঁচে থাকা ব্যক্তিদের অভিজ্ঞতাকে সম্পূর্ণভাবে অগ্রাহ্য করেছে, যারা ন্যায়বিচার পেতে নিজেদের নিরাপত্তা, সুরক্ষা এবং জীবন ঝুঁকিতে রেখেছিলেন, তার মধ্যে আমাদের বোনও ছিলেন।
হোয়াইট হাউস জোর দিয়ে বলেছে যে ম্যাক্সওয়েলের মামলায় "কোনও নমনীয়তা দেখানো হচ্ছে না বা আলোচনা করা হচ্ছে না।"
ট্রাম্প জানান, ২০০৪ সালে তিনি এপস্টিনের সঙ্গে সম্পর্ক ছিন্ন করেছেন।
প্রেসিডেন্ট অভিযোগ করেছেন যে তার রাজনৈতিক প্রতিদ্বন্দ্বীরা এই মামলাটি ব্যবহার করছেন, যাতে তার প্রশাসনের সাফল্য থেকে মনোযোগ সরানো যায়।
কিন্তু একই সঙ্গে তিনি এপস্টিন সম্পর্কিত তদন্তে আরও স্বচ্ছতার জন্য নিজের রিপাবলিকান দলের পক্ষ থেকেও চাপের মুখে রয়েছেন।
