ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা নিশ্চিত করতে না পেরে নেদারল্যান্ডসের পররাষ্ট্রমন্ত্রীর পদত্যাগ

ডাচ পররাষ্ট্রমন্ত্রী ক্যাসপার ভেল্ডক্যাম্প শুক্রবার সন্ধ্যায় পদত্যাগ করেছেন। গাজা যুদ্ধের কারণে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নতুন নিষেধাজ্ঞা আরোপে ব্যর্থ হওয়ার পর তিনি এ সিদ্ধান্ত নেন।
ভেল্ডক্যাম্প দেশটির পার্লামেন্টকে জানিয়েছিলেন, গাজা নগরীসহ ঘনবসতিপূর্ণ এলাকায় ইসরায়েলের পরিকল্পিত অভিযানের জবাবে তিনি নতুন পদক্ষেপ নিতে চান। তবে এ বিষয়ে জোটসঙ্গীদের সমর্থন তিনি পাননি।
ইসরায়েলে নিযুক্ত সাবেক রাষ্ট্রদূত ও ৬১ বছর বয়সী এ কূটনীতিক সাংবাদিকদের বলেন, তিনি মনে করেন নিজের নীতিই বাস্তবায়ন করতে পারছেন না এবং যে পথে এগোনো জরুরি বলে তিনি মনে করেন, তা আর সম্ভব হচ্ছে না।
ভেল্ডক্যাম্পের পদত্যাগের পর তার মধ্য-ডানপন্থী 'নিউ সোশ্যাল কনট্রাক্ট' দলের বাকি মন্ত্রীরাও পদত্যাগ করেছেন। এতে ডাচ সরকার অচলাবস্থায় পড়ে গেছে।
দলটির নেতা এডি ভ্যান হিজুম বলেন, 'সংক্ষেপে বললে, আমরা এর সঙ্গে আর নেই।' তিনি ইসরায়েল সরকারের পদক্ষেপকে 'আন্তর্জাতিক চুক্তির সঙ্গে সম্পূর্ণ সাংঘর্ষিক' বলে অভিহিত করেন।
ডাচ সরকার আসলে এর আগেই, গত জুন মাসে ভেঙে পড়ে। সে সময় অভিবাসন ইস্যুতে বিরোধ দেখা দেওয়ায় দেশটির চারদলীয় জোট সরকার থেকে ইসলামবিরোধী রাজনীতিক গির্ট উইলডার্স তার দলকে প্রত্যাহার করে নেন।
এরপর বাকি তিন দল অন্তর্বর্তী সরকার হিসেবে দায়িত্ব পালন করে আসছিল। আগামী অক্টোবরে নির্বাচনের আগ পর্যন্ত তারা দায়িত্ব পালন করবেন।
বিশ্বে খাদ্য সংকট বিষয়ে সর্বোচ্চ কর্তৃপক্ষ শুক্রবার জানিয়েছে, গাজার সবচেয়ে বড় শহর বর্তমানে দুর্ভিক্ষে ভুগছে। যুদ্ধবিরতি ও মানবিক সহায়তায় আরোপিত বিধিনিষেধ না সরালে এ দুর্ভিক্ষ গোটা এলাকায় ছড়িয়ে পড়তে পারে।
নেদারল্যান্ডসের পার্লামেন্টে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে নিষেধাজ্ঞা বিষয়ে বিতর্ক একাধিকবার পেছানো হয়েছে। বৃহস্পতিবারের আলোচনাও স্থগিত করা হয়, আর শুক্রবার বিকেলের মন্ত্রিসভা বৈঠকও ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে চলতে থাকে।
গ্রিন লেফট/লেবার জোটের সদস্য কাটি পিরি পার্লামেন্টে বলেন, 'গাজার ভেতরে দুর্ভিক্ষ, জাতিগত নির্মূল এবং গণহত্যা চলছে। অথচ আমাদের মন্ত্রিসভা ঘণ্টার পর ঘণ্টা ধরে বসে আছে এই ভেবে যে, কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হবে কি না। লজ্জাজনক।'
দখলকৃত ফিলিস্তিনি ভূখণ্ডে অবস্থিত ইসরায়েলি বসতি থেকে আমদানি নিষিদ্ধ করার প্রস্তাব করেছিলেন ভেল্ডক্যাম্প। এটি ছিল ইসরায়েলের পরিকল্পিত সামরিক অভিযানের জবাবে তার প্রস্তাবিত পদক্ষেপ।
তবে বিরোধী দলীয় রাজনীতিকরা ইসরায়েলের বিরুদ্ধে পদক্ষেপ না নেওয়ায় ক্ষোভ প্রকাশ করেন। তারা মন্ত্রীর বিরুদ্ধে অনাস্থা প্রস্তাব আনার আহ্বান জানান।